
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই শুল্ক ও ভ্যাট বাড়ানো এবং গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব করায় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ (এফবিসিসিআই)।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ উদ্বেগ জানানো হয়।
এ সময় সংগঠনটির আহ্বায়ক জাকির হোসেন নয়নের সভাপতিত্বে অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তারা বলেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই গত ৯ জানুয়ারি শুল্ক ও ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। তাছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে গ্যাসের মূল্যও বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
জাকির হোসেন নয়ন বলেন, দীর্ঘমেয়াদী সহায়ক কর কাঠামো প্রাপ্তি সাপেক্ষে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করে থাকেন। হঠাৎ কোনো আলোচনা ছাড়াই ভ্যাট বা শুল্ক বৃদ্ধি করা হলে নীতি প্রয়োগের ধারাবাহিকতা থাকে না। ফলে উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হন। যার প্রভাব বিনিয়োগের উপর পড়ে। তাই হঠাৎ করে কর হারের পরিবর্তনের পথ থেকে আমাদের ফিরে আসতে হবে। নীতিমালার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হলে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান স্বাভাবিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
দেশের সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে এবং দেশের স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষের উপর হঠাৎ করের বোঝা না চাপিয়ে বিকল্প উপায়ে সরকার রাজস্ব বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে পারে। করের হার না বাড়িয়ে করের আওতা বৃদ্ধি করা জরুরি। যাতে সবসময় একই করদাতাকে করের জন্য চাপ প্রয়োগ না করা হয়। তাছাড়া সরকারের অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় সংকোচন এবং স্বচ্ছতা ও সততা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির প্রচেষ্টা গ্রহণ করা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, আমরা গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছি যে, সরকার আবারও শিল্পখাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এমনিতে দেশের শিল্পখাত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। তদুপরি গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে এবং স্থানীয় শিল্প প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাবে। স্থানীয় শিল্পের স্বার্থে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে গ্যাসের অপচয় রোধ ও অবৈধ সংযোগগুলিকে বিচ্ছিন্ন করার মাধ্যমে গ্যাসের সঠিক যথাযথ ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দেওয়ার অনুরোধ জানান।
সুদের হার কমানো, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ও বাজার সরবরাহ স্থিতিশীল রাখা, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ, যানযট নিরসন, বন্দরসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ ফ্যাসিলিটেশন কার্যক্রম জোরদার করার জন্য বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি আবেদন জানান জাকির হোসেন নয়ন।
জাহাঙ্গীর আলম/অমিয়/