ঢাকা ৪ ফাল্গুন ১৪৩১, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১

৭ দিনের ব্যবধানে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম!

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৬ পিএম
৭ দিনের ব্যবধানে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম!
নতুন বছরে এ নিয়ে দ্বিতীয় দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলো।

দেশের বাজার আবারও বেড়েছে স্বর্ণের দাম। নতুন বছরে এ নিয়ে দ্বিতীয় দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলো। এবারে ভরি প্রতি ১ হাজার ৯৮৩ টাকা বাড়িয়ে নতুন মূল্য ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) থেকে এ দাম কার্যকর হবে।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঘোষিত নতুন মূল্য সম্পর্কে জানিয়ে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

দাম বাড়ানোর ফলে ভরি প্রতি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট স্বর্ণের নতুন দাম হবে ১ লাখ ৪১ হাজার ৪২৬ টাকা। যা ছিল ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেট ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ১৫ হাজার ৭১৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম হবে ৯৫ হাজার ৬১ টাকা।

এর আগে, গত ১৫ জানুয়ারি দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সেদিন ভরিতে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১৫৫ টাকা বাড়িয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়।

সেদিন প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেট ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয় ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা।

২০২৪ সালে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।

সিফাত/

ফেব্রুয়ারির ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৩১ কোটি ডলার

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩৫ পিএম
ফেব্রুয়ারির ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৩১ কোটি ডলার
ছবি: সংগৃহীত

চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ১৫ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩১ কোটি ২২ লাখ মার্কিন ডলার। প্রতিদিন গড়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৮ কোটি ৭৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।

রবিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন এ তথ্য জানায়। প্রতিবেদন অনুসারে দেশীয় মুদ্রার হিসাবে (ডলারপ্রতি ১২২ টাকা দরে) ১৬ হাজার ৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা রেমিট্যান্স এসেছে এই অর্ধেক মাসে।

শুধু রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৬ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৮৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭৫ কোটি ৩৯ লাখ ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩০ লাখ ডলার।

১ ফেব্রুয়ারি রেমিট্যান্স এসেছে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। ২ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি দেশে এসেছে ৬৫ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার ডলার।

এমএ/

বেনাপোলে চাকার স্লাবে শুল্ক আদায়, কমছে রাজস্ব

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪০ পিএম
আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪১ পিএম
বেনাপোলে চাকার স্লাবে শুল্ক আদায়, কমছে রাজস্ব
ছবি : খবরের কাগজ

দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে শুল্ক আদায়ে ট্রাকের চাকার স্লাব নির্ধারণ করে দেওয়ায় ফল, মাছ, টমেটো, পানসহ এসব পণ্যের আমদানি কমেছে। ফলে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

জানা যায়, ফলসহ এসব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ভারতীয় ছয় চাকার ট্রাকে ১৮ টন, ১০ চাকার ট্রাকে ২০ টন, ১২ চাকার ট্রাকে ২২ টন, ১৪ চাকার ট্রাকে ২৫ টন, ১৬ চাকার ট্রাকে ২৬ টন পণ্য ধরে শুল্কায়ন করা হয়। এর নিচে আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নির্দেশনা নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের সর্ববৃহৎ এই স্থলবন্দর দিয়ে চাকার স্লাব ঘোষণার আগে প্রতিদিন ফল, মাছ, টমেটো, চাল, পান ইত্যাদি পণ্যের ১৫০ থেকে ২০০ ট্রাক আমদানি হতো। তখন সময় সরকারের রাজস্ব আয় হতো ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা। আর স্লাব ঘোষণার পর এসব পণ্য ২০ থেকে ২৫ ট্রাক আমদানি হচ্ছে। এখানে সরকারের রাজস্ব আয় হচ্ছে ৫ থেকে ৭ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর ট্রাকের চাকার স্লাব ঘোষণার প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৯ মার্চ চাপাইনবাবগঞ্জের আমদানিকারক মেজবাহ উদ্দিন খান উচ্চ আদালতে রিট করেন। এরপর ২০২২ সালের ১৬ মার্চ হাইকোর্ট এনবিআরের চাকার স্লাবের নির্দেশনা অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। 

ওই আদেশে বলা হয়, চাকা বেশির কারণে আমদানিকারকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত যে টাকা গ্রহণ করা হয়েছে সেটি ফেরত দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

২০২৪ সালের ২৩ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আবারও বিভিন্ন ফল, মাছ, টমেটো, চাল, পান ইত্যাদি আমদানিতে ট্রাকের চাকার স্লাব পুনর্বহালের ঘোষণা দেয়। এই নির্দেশনার পর আমদানিকারক বেনাপোলের ফেমাস ট্রেডার্সের ইমদাদুল হক আদালতে একটি রিট করেন। যা রায় ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

ফল আমদানিকারক আলেয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক তারেক হোসেন বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নতুন করে আবারও চাকার স্লাব নির্ধারণ করে দেওয়ার ফলে প্রতি ট্রাকে অতিরিক্ত ট্যাক্স দেওয়া লাগছে। আর আমরা প্রতিনিয়ত আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন জানান, ট্রাকের চাকার স্লাব নির্ধারণ করে দেওয়ায় আমদানিকারকদের অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হচ্ছে। এতে আমদানিকারকরা আর্থিক লোকসানের মধ্যে পড়ছেন। ফলে ফল আমদানিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন তারা।

বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান জানান, পুনরায় চাকার স্লাব সিস্টেম চালুর মূল উদ্দেশ্য হলো শুল্ক ফাঁকি রোধ করা। আমদানিকারকদের যথাযথ শুল্ক প্রদান নিশ্চিত করা এবং রাজস্ব বাড়িয়ে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।

নজরুল ইসলাম/অমিয়/

মুদ্রা বিনিময় হার: ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৪ পিএম
আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৫৩ পিএম
মুদ্রা বিনিময় হার: ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
প্রতীকী ছবি

দিন দিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্প্রসারিত হচ্ছে বাংলাদেশের ব্যবসা–বাণিজ্য। তাছাড়া, পড়াশোনা, চিকিৎসা, ভ্রমণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রয়োজনে বিদেশি মুদ্রার সঙ্গে আমাদের দেশের মুদ্রা বিনিময় করতে হয়।

একটা বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, মুদ্রার বিনিময় হার প্রতিদিন পরিবর্তিত হয়। আমরা প্রতিদিন সর্বশেষ বিনিময় হার তুলে ধরছি। আরও বিস্তারিত জানতে স্থানীয় ব্যাংক বা বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা বা তাদের ওয়েবসাইট পরিদর্শন করা যেতে পারে।

মুদ্রা ক্রয় (টাকা) বিক্রয় (টাকা)
ইউএস ডলার ১২১.০০ ১২২.০০
ইউরো ১২৭.৯৯ ১২৮.০৪
ব্রিটেনের পাউন্ড ১৫৩.৫৪ ১৫৩.৫৭
অস্ট্রেলিয়ান ডলার ৭৭.৪৭ ৭৭.৫২
জাপানি ইয়েন ০.৮০০৭ ০.৮০০৯
কানাডিয়ান ডলার ৮৫.৯৯ ৮৬.০৪
সুইস ক্রোনা ১১.৪১ ১১.৪২
সিঙ্গাপুর ডলার ৯০.০৫ ৯১.১২
চায়না ইউয়ান ১৬.৮০ ১৬.৮১
ইন্ডিয়ান রুপি ১.৪০৮১ ১.৪০৮৫
সৌদি রিয়াল - ৩২.৩০
আরব আমিরাত দেরহাম - ৩২.৯৮

আশুগঞ্জ সার কারখানায় গ্যাস সংকট, উৎপাদন ঘাটতি

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৫ এএম
আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৭ এএম
আশুগঞ্জ সার কারখানায় গ্যাস সংকট, উৎপাদন ঘাটতি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানা। খবরের কাগজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানায় গ্যাস সংকট ও পুরোনো যন্ত্রপাতির কারণে উৎপাদন বন্ধ থাকে বেশির ভাগ সময়। ফলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে কারখানাটি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১ লাখ টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে মাত্র ৪৮ হাজার টন ইউরিয়া সার উৎপাদিত হয়েছে। কারখানাটি চালু রাখতে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি ও যন্ত্রপাতি সংস্কারের প্রয়োজন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি সঠিকভাবে চালু হলে লাভজনক হয়ে দেশের সার আমদানি নির্ভরতা কমানো সম্ভব।

আশুগঞ্জ সার কারখানা ১৯৮০ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার চরচারতলা এলাকায় মেঘনা নদীর তীরে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮১ সালের ১৫ ডিসেম্বর এটি পরীক্ষামূলকভাবে ইউরিয়া সার উৎপাদন শুরু করে। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৩ সালের জুলাই থেকে বাণিজ্যিকভাবে এর উৎপাদন শুরু হয়। গুণগত মানসম্পন্ন ইউরিয়া সার উৎপাদন করে আশুগঞ্জ সার কারখানা দ্রুত কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বর্তমানে সাড়ে ৭০০ সার ডিলারের মাধ্যমে সাতটি জেলার কৃষকদের মধ্যে ইউরিয়া সরবরাহ করা হয়।

যে সময় কারখানাটি চালু হয়, তখন এর দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ১ হাজার ৬০০ টন। তবে যন্ত্রপাতির অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ায় উৎপাদন ক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে কারখানাটি প্রতিদিন ১ হাজার ১৫০ টন ইউরিয়া সার উৎপাদন করতে সক্ষম।

গ্যাস সংকটের কারণে বছরের অর্ধেক সময় কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ থাকে। সর্বশেষ ২০২৩ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল। শ্রমিকদের আন্দোলনের পর, ১৫ নভেম্বর গ্যাস সরবরাহ শুরু হলেও উৎপাদন শুরু হতে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এই গ্যাস সংকট ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বারবার ব্যর্থ হয়েছে কারখানাটি।

২০২০-২১ অর্থবছরে ২ লাখ ৪০ হাজার টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১ লাখ ৪২ হাজার ৫৫৭ টন সার উৎপাদন হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৯৬ হাজার ৪৬ টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৪২০ টন ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪৮ হাজার ৪৫৩ টন ইউরিয়া সার উৎপাদন হয়েছে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একটি চক্রের মাধ্যমে আশুগঞ্জসহ অন্য দেশীয় সার কারখানাগুলোর গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এতে বিদেশ থেকে সার আমদানি করে ব্যবসা শুরু করা হয়েছিল। এখনো আশুগঞ্জ সার কারখানায় গ্যাসের চাপ কম থাকায় উৎপাদন পর্যাপ্ত হয় না।
বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গ্যাস সরবরাহের জন্য বিসিআইসি কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী চাপ দেওয়া হয়। তবে জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের সংকটের কারণে আশুগঞ্জ সার কারখানাকে প্রয়োজনীয় চাপ সরবরাহ করা সম্ভব হয় না।

আশুগঞ্জ সার কারখানার এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু কাউসার জানান, কারখানাটির কোনো আর্থিক দায় নেই। যদি সারা বছর গ্যাস সরবরাহ করা যায়, কিছু যন্ত্রপাতি নতুন করে সংযোজন করা যায়, তবে এটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারবে।

আশুগঞ্জ সার কারখানার অ্যামোনিয়া প্লান্টের ইনচার্জ মো. ফারুক হোসেন জানান, কারখানাটি ৪০ বছরেরও বেশি পুরোনো এবং গ্যাসের পাশাপাশি যন্ত্রপাতি সমস্যার মুখোমুখি। তবে বিসিআইসি কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় এই সমস্যাগুলো সমাধান করা হচ্ছে। গ্যাসের চাপ বাড়লে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে, বলে আশাবাদী কারখানা কর্তৃপক্ষ।

ছোলার প্রচুর আমদানি, দামও কমেছে

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৬ এএম
ছোলার প্রচুর আমদানি, দামও কমেছে
ছবি: সংগৃহীত

রোজাদারের জন্য খেজুরের মতো ছোলাও ইফতারির জন্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হয়ে গেছে। অভিজাত পরিবার থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের মানুষেরও ইফতারির থালায় ছোলা থাকে। রমজান মাসে এর চাহিদা বেড়ে যায়। এ সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী দাম বাড়ানোর সুযোগ নেয়।

গত রমজানে হঠাৎ কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে যায়। রমজান সামনে রেখে এবার প্রচুর ছোলা আমদানি হওয়ায় বাজারে ছোলার সরবরাহ বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলেছেন, আসন্ন রমজানে ছোলার দাম বাড়বে না। বরং কমবে। 

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও বর্তমানে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায় নেমেছে। এক মাসের ব্যবধানে ১০ থেকে ১৭ শতাংশ কমেছে। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে বার্ষিক ছোলার চাহিদা দেড় লাখের মতো। সে হিসাবে মাসে লাগে সাড়ে ১২ হাজার টন। কিন্তু দেশে খুবই কম উৎপাদন হয়। আমদানি করেই চাহিদা মেটাতে হয়। রমজানে চাহিদা দ্বিগুণ অর্থাৎ ২৫ হাজার টনে দাঁড়ায়। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘নাবিল গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপসহ চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা ছোলা আমদানি করে। তারা দাম বাড়ালেই বাজারে বেড়ে যায়। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবারে আমদানি বেশি হওয়ায় দাম কমেছে ছোলার। সরকারি সংস্থা টিসিবিও বলছে, গত বছরের রমজানের আগে ৮৫-৯০ টাকা কেজি ছোলা বিক্রি হয়েছে। কিন্তু রমজানে বেড়ে ৯৫ থেকে ১১০ টাকায় ঠেকে। রমজান শেষে চাহিদা কমে গেলেও দাম কমেনি। বরং ডলারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণে ছোলার দাম ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় পৌঁছে। টিসিবির তথ্য বলছে, জানুয়ারি মাসেও ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে ছোলা। কিন্তু রমজান ঘনিয়ে আসায় আমদানিও প্রচুর বেড়েছে। এ জন্য দাম কমতে শুরু করেছে। পাইকারি পর্যায়ে ৯৫ টাকায় নেমেছে। সেই ছোলা বাজারে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।  

অস্ট্রেলিয়া থেকে চাহিদার ৮০ শতাংশ ছোলা আমদানি হয়। বাকি ছোলা ভারত, পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, রাশিয়া, ইউক্রেন, তানজানিয়া, মায়ানমার ও কানাডা থেকে আমদানি করা হয়। আমদানিকারকরা এবার বিশ্ববাজার থেকে কম দামে ছোলা সংগ্রহ করছে। এ জন্য দামও কমেছে। 

গত বছর থেকেই নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন হয়ে পড়ে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি রেকর্ড ১৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। তাই আসন্ন রোজায় আট ধরনের খাদ্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খোলার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে ন্যূনতম পর্যায়ে নগদ মার্জিন রাখতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত ১৭ জানুয়ারি এক নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশ দেয়, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মতো ব্যাংক-গ্রাহকের সম্পর্কের ভিত্তিতে নগদ এ মার্জিনের হার নির্ধারণ করতে হবে। ভোজ্যতেল, ছোলা, ডাল, মটর, পেঁয়াজ, মসলা, চিনি এবং খেজুর আমদানির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে। 

অভ্যন্তরীণ বাজারে এসব পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমদানির ঋণপত্র খোলায় অগ্রাধিকার দিতে বলা হয় নির্দেশনায়। তা কাজে লাগিয়ে আমদানিকারকরা প্রচুর ছোলা আনেন। 

আগামী ১ মার্চ থেকে রোজার মাস শুরু হতে পারে। এই সময়ে ইফতারের জন্য বিভিন্ন পদের খাবার তৈরিতে বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের চাহিদা বছরের অন্য সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে বাড়ে ছোলার চাহিদাও। 

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ এবং রাজধানীর লালবাগের পাইকারি বাজারেও কমেছে ছোলার দাম। মাস খানেক আগে পাইকারিতে প্রতি মণ ছোলার দাম ছিল ৪ হাজার ২০০ টাকা, যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৭০০ টাকায়। অর্থাৎ মণে কমেছে ৫০০ টাকা। কেজিতে ১২ টাকার বেশি। তার প্রভাবে খুচরা বাজারেরও ছোলার দাম কমেছে।

চট্টগ্রামের এবারে প্রচুর ছোলা আমদানি হয়েছে। বাজারে ছোলার কোনো সংকট নেই। সরবরাহও আগের চেয়ে বেড়েছে। নারায়নগঞ্জের নিতাইগঞ্জ, ঢাকার লালবাগের রহমতগঞ্জ থেকেও পাইকারি পর্যায়ে ছোলা বিক্রি হয়। 

এ ব্যাপারে রহমতগঞ্জের ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শফি মাহমুদ বলেন, ‘আমরা দাম বাড়াই না। আমদানিকারকরা বেশি দামে বিক্রি করলে আমাদের বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হয়। কেজিতে সামান্য লাভ থাকে। এবারে রমজান উপলক্ষে প্রচুর ছোলা আমদানি হয়েছে। আগে বেশি দামে বিক্রি করা হলেও বর্তমানে ৩ হাজার ৭০০ টাকা বস্তা (৪০ কেজি), ৯৫ টাকার মধ্যে ছোলা বিক্রি করা হচ্ছে।’ 

পাইকারিতে দাম কমায় খুচরা বাজারেও কমতে শুরু করেছে। নিউমার্কেটের সাথী এন্টারপ্রাইজের মো. মোক্তার হোসেন বলেন, ‘আগের চেয়ে ছোলার দাম কমেছে। এক মাস আগেও ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করতাম। পাইকারিতে কমেছে। এ জন্য আমরাও কম দামে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি করছি।’ 

মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারের মনির স্টোরের আনোয়ার হোসেনও বলেন, ‘আগের চেয়ে ছোলার দাম কমেছে, ১১০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। কম দামে কেনা। তাই কম দামেই বিক্রি করতে পারছি।’ কৃষি মার্কেটের মুদি বিক্রেতা নাইম শেখও জানান, আগের চেয়ে কমেছে ছোলার দাম। বর্তমানে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। সেটা আগে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি ছিল। 

কারওয়ান বাজারের মেসার্স একতা ট্রেডার্সের বিক্রয়কর্মী রায়হান বলেন, ‘এক মাস ধরে ধাপে ধাপে কমছে ছোলার দাম। বর্তমানে ১০০ টাকার মধ্যেই বিক্রি করা হচ্ছে।’ একই বাজারের খুচরা বিক্রেতা ফরিদগঞ্জ স্টোরের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গত রমজানের আগে কম দামে ৮০-৯০ টাকা কেজি ছোলা বিক্রি করেছি। রমজানে বেড়ে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি করা হয়। রমজানের পর আরও বেড়ে যায়। তবে কয়েক দিন ধরে কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি করছি।’  

শুধু বড় বড় বাজারে নয়, বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার দোকানেও কম দামে ছোলা বিক্রি করা হচ্ছে বলে খুচরা বিক্রেতারা জানান। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের জনতা মার্কেটের আক্তার হোসেনও বলেন, ‘মাস খানেক থেকে ছোলার দাম কমেছে। আগে ১২০ টাকার বেশি বিক্রি করা হলেও কয়েক দিন ধরে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি করছি।’