ঢাকা ৫ চৈত্র ১৪৩১, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
English

ভেনামি চিড়িংতে সম্ভাবনা ব্যাপক, নীতি-সহায়তার ঘাটতি

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৫ এএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৬ এএম
ভেনামি চিড়িংতে সম্ভাবনা ব্যাপক, নীতি-সহায়তার ঘাটতি
ছবি: সংগৃহীত

একসময়ে এ দেশের খামারিরা দেশ-বিদেশে বাগদা, গলদা, হরিণাসহ বিভিন্ন জাতের চিংড়ির রমরমা ব্যবসা করলেও গত কয়েক বছরে তা কমেছে। বিশ্বব্যাপী জায়গা করে নিয়েছে ভেনামি চিংড়ি। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশে এখনো ভেনামি চিংড়ির চাষ সাধারণ খামারি পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েনি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণ খামারিদের ভেনামি চিংড়ি চাষে আগ্রহী করতে হলে সরকারকে অল্প সুদে ঋণ, নগদ ও নীতি সুবিধা দিতে হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে ডলারসংকটর কারণে সব ধরনের চিংড়ি উৎপাদনেই খরচ বেড়েছে। খরচ কমাতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার বাড়াতে হবে। এতে সাধারণ মানুষ কম দামে চিংড়ি কিনতে পারবেন। রপ্তানিও বাড়বে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, বিভিন্ন ধরনের নিয়মকানুন মেনে ভেনামি চিংড়ি চাষ করতে হয়। তা না হলে এসব চিংড়ি সহজে মরে যায়। ফলে খামারিরা লোকসানে পড়বেন। এ জন্য সরকারকে ভেনামি চাষে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করতে হবে।

বাংলাদেশের হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিকারকরা বলছেন, বর্তমান বিভিন্ন দেশ থেকে রপ্তানি হওয়া চিংড়ির সিংহভাগই ভেনামি। হিমায়িত করে এসব চিংড়ি রপ্তানি করা হয়। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া চিংড়ির বেশির ভাগই বাগদা। চিংড়ির উচ্চফলনশীল জাত ভেনামির চাষও পুরোপুরি শুরু হয়নি। এতে স্বাভাবিকভাবেই হিমায়িত চিংড়ির রপ্তানি কমেছে। গত অর্থবছর তার আগের অর্থবছরের তুলনায় হিমায়িত চিংড়ির রপ্তানি কমেছে ২৫ শতাংশ। এতে চিংড়ির রপ্তানি প্রায় ৪১ কোটি ডলার থেকে কমে গত বছর ৩২ কোটি ডলারে নেমেছে।

ভেনামি উচ্চফলনশীল পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের উন্নত জাতের চিংড়ি। উচ্চফলনের পাশাপাশি প্রতিরোধক্ষমতার জন্যও এই চিংড়ি সারা পৃথিবীতে ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে উৎপাদিত চিংড়ির ৮০ শতাংশই ভেনামি জাতের। দেশে ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমতি চেয়ে সরকারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে দেনদরবার করেছেন রপ্তানিকারকরা। পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে- এ যুক্তিতে শুরুতে ভেনামি চাষে উৎসাহ বা অনুমতি কোনোটিই দেয়নি মৎস্য অধিদপ্তর। বাংলাদেশ ২০১৯ থেকে এ চিংড়ির পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়। চার বছর ধরে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এ চিংড়ির বাণিজ্যিক উৎপাদনে অনুমতি দিয়েছে সরকার। বছর দুয়েক থেকে ভেনামি চিংড়ির চাহিদা বেড়েছে। তবে বাংলাদেশ এখনো পুরোপুরি ভেনামি চিংড়ি চাষে যেতে পারেনি।

মৎস্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভেনামি চিংড়ি চাষে বায়োসিকিউরিটি নিশ্চিত করতে পানি ও বর্জ্য শোধন, ভৌত অবকাঠামোর বিচ্ছিন্নতা, বায়ু সঞ্চালন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, রোগের তথ্য সংরক্ষণ, খাদ্য প্রয়োগসহ অন্যান্য তথ্যও হালনাগাদ রাখতে হবে। সনাতন পদ্ধতির বদলে আধা নিবিড় বা নিবিড় পদ্ধতিতে ভেনামি চিংড়ির চাষ করতে হবে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ এ চিংড়িকে যথাযথভাবে মানসম্মত খাদ্য দিতে হবে। কোনোভাবেই অননুমোদিত অ্যান্টিবায়োটিক, রাসায়নিক বা কীটনাশক প্রয়োগ করা যাবে না। আর বাজারজাত করার ৮ থেকে ১০ দিন আগে চিংড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নিতে হবে। কোনো কারণে ভেনামি চিংড়িতে রোগ দেখা দিলে মৎস্য অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মৎস্য হ্যাচারি আইন, মৎস্য হ্যাচারি বিধিমালা ও মৎস্য সংগনিরোধ আইন অনুসরণ করে দ্রুত ওই সব সংক্রমিত চিংড়ি ধ্বংস করতে হবে। রোগাক্রান্ত খামার সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত করে আবার উৎপাদনে যেতে হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের চাষিরা ভেনামি চিংড়ি চাষের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে আগ্রহী খামারিদের বাণিজ্যিকভাবে ভেনামি চিংড়ি চাষের জন্য বায়োসিকিউরিটি, সংগনিরোধসহ ভৌত অবকাঠামোগত সুবিধা থাকতে হবে। অনুমোদন পেতে আগ্রহী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত ছকে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করতে হবে। অনুমোদিত খামারের নির্বাচিত স্থানের বাইরে ভেনামি চিংড়ি চাষ করা যাবে না।

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সংক্রান্ত তথ্যভান্ডার ওইসি ওয়ার্ল্ডের তথ্যানুযায়ী, গত কয়েক বছরে বিশ্ব চিংড়ি রপ্তানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ রপ্তানি করেছে ইকুয়েডর। তারপর ভারত ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ, ভিয়েতনাম ১০ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ ও আর্জেন্টিনা ৫ শতাংশ রপ্তানি করেছে। বিশ্ব চিংড়ি রপ্তানিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ১ দশমিক ৫০ শতাংশ। 

ভেনামিতে সফল হতে ভারতের ৫-১০ বছর সময় লেগেছে। বাংলাদেশের খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, বরগুনা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী ও ময়মনসিংহে চিংড়ি চাষ হয়। রপ্তানির জন্য বড় মাপের শতাধিক চিংড়ি প্রক্রিয়াজাত কারখানা রয়েছে। বড় মাপের ৩০টির মতো কারখানায় ভেনামি চিংড়ি চাষ হচ্ছে। 

বাণিজ্যিক চিংড়ি খামার রাসনা হ্যাচারির মালিক আবদুল খালেক খবরের কাগজকে বলেন, দুই দশক আগে থেকে দামে সস্তা হওয়ায় দুনিয়াজুড়ে 
ভেনামি চিংড়ির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বাংলাদেশে এসব চিংড়ির চাষ বাড়াতে হবে। এর জন্য সরকারকে সহায়তা দিতে হবে।
সাহানা মৎস্য ফার্মের মালিক রণজিত সাহা খবরের কাগজকে বলেন, চিংড়ির ব্যবসা বলতে এখন ভেনামি চিংড়ি চাষ করা হয়। ভেনামি চিংড়ির বাণিজ্যিক লাভ কতটা, তা সাধারণ খামারিরা জানতে পারলে ভেনামি চিংড়ি চাষে আগ্রহী হবেন। এ জন্য সরকারকে ভেনামি চাষের ভালো দিকগুলো নিয়ে প্রচার করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ভেনামি চাষে আগ্রহী করতে সরকারকে নগদ সহায়তা দিতে হবে। নীতি-সহায়তা দিতে হবে। একই সঙ্গে অল্প সুদে ঋণ দিতে হবে। এসব সুবিধা পেলে সাধারণ খামারিরা ভেনামি চিংড়ি চাষে আসবেন। এতে সারা দেশের চিংড়ির চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে। সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে। বিশ্ববাজারে ভেনামি চিংড়ির চাহিদা রয়েছে। উৎপাদন বাড়লে রপ্তানিও বাড়বে। 

হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিকারক সমিতির সাবেক সভাপতি আমিন উল্লাহ বলেন, ভেনামিতে সফল হতে ভারতের ৫-১০ বছর সময় লেগেছে। ধরে নেওয়া যায়, বাংলাদেশেরও সময় লাগবে। ভেনামি চাষ সফল করতে চাষিদের মূলধনের জোগান দিতে ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। বর্তমানে বাগদা চাষে প্রতি একরে ১-২ লাখ টাকা লাগে। ভেনামি করতে হবে সেমি-ইনসেনটিভ পদ্ধতিতে। তাতে প্রতি একরে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে। তবে খরচ বাড়লেও উৎপাদন কয়েক গুণ বেশি হয়। ফলে লাভ থাকে।’

এমইউ সি ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্যামল দাস খবরের কাগজকে বলেন, ‘বাগদা চিংড়ি রপ্তানিতে টিকতে হলে উৎপাদন খরচ কমাতে হবে। যুদ্ধের আগে এক পাউন্ড চিংড়ির (মাথাবিহীন ১৬-২০ পিস চিংড়ি) দাম ছিল গড়ে ১৪-১৫ ডলার। এখন গড়ে ১০-১১ ডলারের বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। উৎপাদন বাড়াতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের হ্যাচারিতে যেসব পোনা পাওয়া যায়, সেগুলোর স্বাস্থ্য ভালো, রোগবালাইও কম। আমাদের হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিতে ঘুরে দাঁড়াতে হলে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি মানসম্মত পোনার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

ঈদের দিন শুল্ক স্টেশনে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৪:৪৬ পিএম
ঈদের দিন শুল্ক স্টেশনে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)

আসন্ন ঈদুল ফিতরের ছুটিতে কাস্টম হাউস বা স্টেশনগুলোতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সীমিত আকারে চালু এবং ঈদের দিন সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

বুধবার (১৯ মার্চ) এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (কাস্টমস নীতি) মুকিতুল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য নিরবচ্ছিন্ন রাখতে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত (ঈদের দিন ব্যতীত) সাপ্তাহিক ছুটি ও ঈদের ছুটির দিনগুলোতে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কার্যক্রম সীমিত আকারে চলমান রাখার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

ঢাকা, চট্টগ্রাম, বেনাপোল, আইসিডি, কমলাপুর, মোংলা, পানগাঁও কাস্টম হাউসের কমিশনারদের কাছে এ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা (উত্তর), ঢাকা (পশ্চিম), ঢাকা (পূর্ব), ঢাকা (দক্ষিণ), চট্টগ্রাম, রাজশাহী, যশোর, খুলনা, সিলেট, রংপুর, কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কমিশনারকেও এমন নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। সূত্র: বাসস

অমিয়/

মুদ্রা বিনিময় হার: ১৯ মার্চ, ২০২৫

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৪:০০ পিএম
আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৪:২৮ পিএম
মুদ্রা বিনিময় হার: ১৯ মার্চ, ২০২৫
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

দিন দিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্প্রসারিত হচ্ছে বাংলাদেশের ব্যবসা–বাণিজ্য। তাছাড়া, পড়াশোনা, চিকিৎসা, ভ্রমণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রয়োজনে বিদেশি মুদ্রার সঙ্গে আমাদের দেশের মুদ্রা বিনিময় করতে হয়।

একটা বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, মুদ্রার বিনিময় হার প্রতিদিন পরিবর্তিত হয়। আমরা প্রতিদিন সর্বশেষ বিনিময় হার তুলে ধরছি। আরও বিস্তারিত জানতে স্থানীয় ব্যাংক বা বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা বা তাদের ওয়েবসাইট পরিদর্শন করা যেতে পারে।

মুদ্রা ক্রয় (টাকা) বিক্রয় (টাকা)
ইউএস ডলার ১২১.০০ ১২২.০০
ইউরো ১৩৩.৫০ ১৩৩.৫৪
ব্রিটেনের পাউন্ড ১৫৮.৬০ ১৫৮.৬২
অস্ট্রেলিয়ান ডলার ৭৭.৬০ ৭৭.৬২
জাপানি ইয়েন ০.৮১৭৩ ০.৮১৭৪
কানাডিয়ান ডলার ৮৫.৩০ ৮৫.৩২
সুইস ক্রোনা ১২.১৪ ১২.১৬
সিঙ্গাপুর ডলার ৯১.৬৯ ৯১.৭০
চায়না ইউয়ান ১৬.৮৭ ১৬.৮৮
ইন্ডিয়ান রুপি ১.৪০৯৯ ১.৪১০৭
সৌদি রিয়াল ৩২.২৫ ৩২.৫৪
আরব আমিরাত দেরহাম ৩২.৯৪ ৩৩.২২

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ার ছাড়ার প্রস্তাব

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ১২:১১ পিএম
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ার ছাড়ার প্রস্তাব
খবরের কাগজ

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুরোধ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চিঠি দিয়েছে পুঁজিবাজারের স্টক ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। গতকাল মঙ্গলবার (১৮ মার্চ)  ডিবিএর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে এই আবেদন জানানো হয়।

আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার গত ১৫ বছর ধরে চরম অনিয়ম, অপশাসন ও অস্থিরতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে। নানান অনিয়মের ফলে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান প্রায় অকার্যকর ও ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকৃত রিটার্ন এবং মূলধন হ্রাস পেয়ে বাজার প্রকৃত অর্থে প্রায় ৪০ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, অতীতে বিভিন্ন প্রতিকূল ঘটনা এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক ঘটনার কারণে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বিশেষ করে ১৯৯৬ এবং ২০১০ সালের স্ক্যামগুলো বাজারের আর্থিক সংকট হিসাবে দাঁড়িয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা এবং বাজারের সামগ্রিক অখণ্ডতার স্থায়ী ক্ষতি করেছে। এ সময়ে অসংখ্য কোম্পানির শেয়ারের মূল্য কৃত্রিমভাবে বৃদ্ধির ফলে বিনিয়োগকারীদের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। 

২০২০ সালে কোভিড-১৯ এবং পরবর্তী সময়ে প্রায় ২০ মাস ধরে শেয়ারের দামের ওপর ফ্লোর প্রাইস আরোপের ফলে বাজারের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক ফান্ড ম্যানেজাররা বাংলাদেশ থেকে দূরে সরে গেছে এবং স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের সঞ্চয় ও বিনিয়োগের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো, মানহীন আইপিও তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে, যার ফলে বাজারে স্থায়ী তারল্যসংকট ও আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, পরিচালনাকারী সংস্থা, তালিকাভুক্ত কোম্পানি, বাজার মধ্যস্থতাকারী এবং আর্থিক নিরীক্ষক, রেটিং এজেন্সিসহ অন্য স্টেকহোল্ডারদের মাঝে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি ঘাটতির কারণে আস্থার মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। আপনার নেতৃত্বে আমরা যদি এই সংকট থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসতে না পারি, তাহলে আমরা বাজারকে ঘুরে দাঁড়ানোর, এতে শৃঙ্খলা আনার এবং রাষ্ট্রের জন্য ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য মূলধন সংগ্রহের পরিবেশ তৈরি করার একটি চমৎকার সুযোগ হারাব।

তাই জবাবদিহি কাঠামো নিয়ে কাজ করার সময় আমাদের অবশ্যই আইপিও দিয়ে বাজারকে সমৃদ্ধ করতে হবে এবং বাজার মধ্যস্থতাকারী ও বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের দুর্ভোগ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য নতুন পণ্য ও কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে হবে। কম বাণিজ্যের পরিমাণ, বিনিয়োগযোগ্য স্টকের অভাব এবং সরবরাহের অসামঞ্জস্যতা, অনুমানমূলক এবং ম্যানিপুলেটিভ কৌশলগুলোর জন্য প্রজনন ক্ষেত্রের দিকে পরিচালিত করে। এ পরিবেশ থেকে বাঁচতে যত দ্রুত সম্ভব উচ্চমানের আইপিও পুঁজিবাজারে আনা প্রয়োজন।

বাণিজ্যিক ও অবকাঠামো খাতে আমাদের অসংখ্য লাভজনক রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগ রয়েছে। যদি এসব সংস্থা বাজারে তালিকাভুক্ত হয়, তবে বাজারে মানের স্টকগুলোর ক্রমবর্ধমান সরবরাহ থাকবে, যা চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করতে সহায়তা করবে। এটি বিনিয়োগকারীদের বাজারে ফিরিয়ে আনবে এবং বাজারে তারল্য সমস্যার সমাধান করবে।

বাংলাদেশে অনেক সুশাসিত, বড় বহুজাতিক কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে, তাদের মধ্যে কিছু শত বছরের, দেশের অবকাঠামোগত, আর্থিক ও মানবসম্পদকে একত্রিত করছে। আমরা সরকারকে সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে থাকা তার অংশীদারত্ব অফলোড করা জরুরি।

ডিবিএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারের বৃহৎ স্বার্থে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আবেদনটি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবেন এবং এর বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

লেনদেনের শীর্ষে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ১২:০৫ পিএম
লেনদেনের শীর্ষে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন
ছবি: সংগৃহীত

গতকাল মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। এর মধ্যে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

গতকাল কোম্পানিটির ১৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা স্কয়ার ফার্মার ১৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর ১৩ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করায় তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছে ফু-ওয়াং ফুড লিমিটেড।

এদিন লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হলো শাইনপুকুর সিরামিক, হাক্কানি পাল্প, ওরিয়ন ইনফিউশন, ইউসিবি, কাট্টলী টেক্সটাইল, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স এবং আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

দুই পুঁজিবাজারে কমেছে লেনদেন

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ পিএম
দুই পুঁজিবাজারে কমেছে লেনদেন
ছবি: সংগৃহীত

টানা দুই কার্যদিবস দরপতনের পর গতকাল মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে বেড়েছে প্রধান মূল্যসূচক। তবে কমেছে অন্য দুই সূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

এদিন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠান। এতে বাজারটিতেও প্রধান মূল্যসূচক কিছুটা বেড়েছে। তবে ডিএসইর মতো এই বাজারেও কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

এদিন ডিএসইতে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়লেও বেশি দাপট দেখিয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড। লেনদেনে অংশ ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩২টির দাম বেড়েছে। অন্যদিকে ১টির কমেছে এবং ৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ‘জেড’ গ্রুপের ৯৫টি কোম্পানির মধ্যে ২৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৩৯টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এদিকে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ভালো কোম্পানি বা ‘এ’ গ্রুপের ২২০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১৭টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৮৩টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ‘বি’ গ্রুপের ৪০টি কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। আর কমেছে ৩৪টি এবং ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৮৬টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৬টির। আর ৫৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২১০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৮২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

মূল্যসূচক মিশ্র থাকার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৫১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫০৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৫৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৭টির এবং ৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪ কোটি ৪ লাখ টাকা।