ঢাকা ৬ চৈত্র ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১

ঢাকায় আন্তর্জাতিক পোলট্রি মেলা শুরু ২০ ফেব্রুয়ারি

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:০১ পিএম
ঢাকায় আন্তর্জাতিক পোলট্রি মেলা শুরু ২০ ফেব্রুয়ারি
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘বিল্ডিং এ রেজিলিয়েন্ট পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ; ইভোলুশন, চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি’ শীর্ষক সেমিনার

আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তিন দিনের ১৩তম আন্তর্জাতিক পোলট্রি শো। বিশ্বের ১৭টি দেশের দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও পণ্যের পসরা নিয়ে এতে হাজির হবে। 

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘বিল্ডিং এ রেজিলিয়েন্ট পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ; ইভোলুশন, চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য জানায় ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি) এবং বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)। ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্ট ফোরাম (এফএলজেএফ) এই সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে জানানো হয়, আগামী ১৮ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক পোলট্রি সেমিনার। আর ২০ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পূর্বাচলে বাংলাদেশ চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে ১৩তম আন্তর্জাতিক পোলট্রি শো। পোলট্রি মেলা সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কুড়িল বিশ্বরোডের ৩০০ ফিট থেকে সারা দিন বিনামূল্যে শাটল বাসের ব্যবস্থা রেখেছে মেলার আয়োজক কর্তৃপক্ষ। 

ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, ‘আসন্ন রমজানে ডিম ও মুরগির মাংসের দাম সহনশীল থাকবে। আমরা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে পুরো রমজান মাস সুলভ মূল্যে ডিম ও মুরগি বিক্রি করব।’

ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সভাপতি মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে খামারিদের লোকসান হলেও তা জোর গলায় বলার মতো পরিস্থিতি ছিল না। সে সময় যারাই পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে সামনে এসেছিলেন, তাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এখনো অনেক মামলা নিষ্পত্তি হয়নি।’

ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘খামারি ও উদ্যোক্তাদের ঝরে পড়া ঠেকাতে হবে। পোলট্রিশিল্পকে টেকসই ও মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে।’ 

এফএলজেএফ সভাপতি মুন্না রায়হানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ডিবিসি নিউজের সম্পাদক লোটন একরাম, আরটিভির হেড অব নিউজ ইলিয়াস হোসেন ও এফএলজেএফের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান।

ঈদ উপলক্ষে কর্মচঞ্চল জামদানি পল্লি

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১১:৫৫ এএম
ঈদ উপলক্ষে কর্মচঞ্চল জামদানি পল্লি
ছবি: খবরের কাগজ

আসন্ন ঈদ উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের নোয়াপাড়া বিসিক জামদানি পল্লি কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে। তাঁত বোনার খটখট শব্দে মুখর চারদিক। কারিগরদের ব্যস্ততা তুঙ্গে, কেনাবেচাও জমজমাট। এই ব্যস্ততা চলবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা আশাবাদী, বিক্রি ৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা কাজে লাগিয়ে অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে প্রচুর জামদানি। বিভিন্ন পেজ খুলে ছবি আপলোড করলেই অর্ডার আসছে।
প্রায় ৬ হাজার তাঁতি কাজ করেন বিসিক জামদানি পল্লিতে। যুগ যুগ ধরে এ এলাকাটি জামদানি তৈরির ঐতিহ্য বহন করছে। শুধু শাড়ি নয়, তৈরি হচ্ছে পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস, লুঙ্গিসহ নানা পোশাক। তারাব পৌরসভার রূপসী, খাদুন, কাজীপাড়া, মুড়গাকুল, পবনকুল ও বরাব এলাকায় জামদানি বোনা হয়।

তাঁতিরা সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকেন সুতা তৈরি, রং করা, বুনন ও নকশার কাজে। ঐতিহ্যবাহী জামদানির মধ্যে বল, প্লেন, বটপাতা, পানসি, ময়ূরপঙ্খী ও জলপাড় ডিজাইন জনপ্রিয়। এসব শাড়ি ভারত, নেপাল, ভুটান, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। দাম শুরু হয় কয়েক হাজার টাকা থেকে। যেটি ২ লাখ পর্যন্ত হয়ে থাকে।

হাছিনা জামদানি ঘরের স্বত্বাধিকারী ইয়াছিন ভূঁইয়া বলেন, ‘৩৫ বছর ধরে জামদানি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আছি। বর্তমানে ২০ জন কারিগর কাজ করছেন। অনেক সময় শাড়ির খরচ তুলতেই কষ্ট হয়, কখনো কখনো বাকিতে বিক্রি করতে হয়। অনলাইনে নগদে বিক্রি করায় এখন সমস্যা কিছুটা কমেছে। সরকার যদি সরাসরি জামদানি সংগ্রহ করত, তাহলে আমরা উপকৃত হতাম। ঈদে বিক্রি ভালো, আশা করি পরিবার নিয়ে সুন্দর ঈদ কাটাতে পারব।’

আরেক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কারিগর আনতে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা অগ্রিম দিতে হয়। পুঁজিসংকটে বড় পরিসরে ব্যবসা সম্ভব হয় না। ব্যাংক যদি কম সুদে ঋণ দিত, তাহলে ব্যবসা আরও সম্প্রসারিত করা যেত। সুতা ও রঙের দাম বাড়ছে, সরকারকে এদিকে নজর দিতে হবে।’

জামদানি কারিগর শফিকুল জানান, ‘সামনে ঈদ, তাই দিনরাত ব্যস্ত। ২৫ বছর ধরে এই পেশায় আছি। ঈদ ছাড়া প্রতি শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত হাট বসে, যেখানে শাড়ি বিক্রি করতে হয়। তাই সারা সপ্তাহ ব্যস্ত থাকতে হয়।’

রূপগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী জামদানি ছড়িয়ে দিতে কাজ করছি। করোনার পর অনলাইনে বিক্রি বেড়েছে। এখন বিক্রির প্রায় অর্ধেক অনলাইনে হয়, বাকিটা হাট ও অন্যান্য মাধ্যমে।’

দিনাজপুরে ১ হাজার টন মধু উৎপাদন লক্ষ্য

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
দিনাজপুরে ১ হাজার টন মধু উৎপাদন লক্ষ্য
দিনাজপুরের মাউদপাড়া লিচুবাগানে মৌ-বাক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহ করছেন মৌখামারিরা। খবরের কাগজ

দিনাজপুর লিচুর জেলা হিসেবে পরিচিত। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারির শুরুতেই লিচুগাছে মুকুল আসে। মুকুল আসার আগেই বাগানিরা পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তারা গাছে পানি দেওয়া, স্প্রে করাসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করেন। 

মার্চের শুরু থেকে মাসের শেষ পর্যন্ত প্রতিটি গাছে মুকুলে ভরে যায়। এ সময় মধু আহরণের লক্ষ্যে মৌখামারিরা লিচুবাগানে শত শত মৌ-বাক্স স্থাপন করেন। দিনাজপুরের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকেও মৌখামারিরা এখানে আসেন।

মুকুল থাকাকালে মৌখামারিরা মধু সংগ্রহে ব্যস্ত থাকেন। তাদের অতিরিক্ত শ্রমিক প্রয়োজন হয়। এ বছর দিনাজপুরের বিভিন্ন লিচুবাগানে সহস্রাধিক মৌখামারি মৌ-বাক্স স্থাপন করেছেন। তাদের লক্ষ্য ১ হাজার টন মধু উৎপাদন। এর বাজারমূল্য ২০০-২২০ কোটি টাকা।

দিনাজপুর শহরের প্রমথতরী মাউদ পাড়ার লিচুবাগানে মৌ-বাক্স স্থাপন করে তাক লাগিয়েছেন মৌখামারি মাহবুবুর রহমান। এতে মধু সংগ্রহ যেমন হচ্ছে, তেমনি মৌমাছির মাধ্যমে পরাগায়নের ফলে লিচুর ফলনও বাড়ছে। এতে বাগানিরা খুশি।

জেলার সদর, বিরল, চিরিরবন্দরসহ ১৩টি উপজেলায় লিচু চাষ হচ্ছে। এ বছর লিচু চাষের জমির পরিমাণ ৫ হাজার ৬৮৯ হেক্টর এবং বাগানের সংখ্যা সাড়ে ৪ হাজারের বেশি। মাসিমপুর ও বিরলের মাদববাটিতে মৌ-বাক্স স্থাপনকারী খামারির সংখ্যা বেশি।
আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মাউদ পাড়ার লিচুবাগানে রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও মাহবুবুর রহমান মিলে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি মৌ-বাক্স স্থাপন করেছেন। তাদের কাজে আরও পাঁচজন যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘সারা বছর আমরা লিচুর মুকুল থেকে মধু আহরণের অপেক্ষায় থাকি। এবার মার্চের শুরুতেই ৪৫০ বাক্স স্থাপন করেছি। মাসে ২০০ মণ মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। প্রতি বাক্স থেকে ছয়-সাত কেজি মধু সংগ্রহ হচ্ছে।’
মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের খামারে পাঁচ-সাতজন শ্রমিক কাজ করছেন। আমরা ছয়-সাত দিন পর মধু হারভেস্ট করি। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি মধু সংগ্রহ সম্ভব।’

লিচু বাগানি মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার এক একর জমিতে লিচু বাগান রয়েছে। মৌখামারিরা মৌ-বাক্স স্থাপন করায় ৩০-৩৫ শতাংশ ফলন বৃদ্ধি পায়। আলাদা পাহারাদারের দরকার হয় না।’

মাসিমপুরের লিচু বাগানি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘মৌ-বাক্স স্থাপন করায় মৌমাছির মাধ্যমে পরাগায়ন হয়। ফলে লিচুর আকৃতি, মিষ্টতা ও উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। স্প্রের প্রয়োজন কম হয়, খরচও কমে যায়।’

মধু ক্রেতা লুৎফর রহমান বলেন, ‘লিচুর ফুলের খাঁটি মধু সরাসরি খামারিদের কাছ থেকে কিনতে পারছি। বাজারের তুলনায় কম দামে পাচ্ছি।’

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক জাফর ইকবাল বলেন, ‘দিনাজপুর লিচুর জেলা। পরাগায়নের জন্য মৌ-বাক্স স্থাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে লিচুর উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং বিপুল পরিমাণ মধু আহরণ সম্ভব হয়। এতে অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মৌ-বাক্স স্থাপন দুপক্ষের জন্যই লাভজনক।’

বরিশালে ২০ হাজার কোটি টাকার তরমুজ বেচাকেনার সম্ভাবনা

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৫ এএম
বরিশালে ২০ হাজার কোটি টাকার তরমুজ বেচাকেনার সম্ভাবনা
বরিশাল নগরীর পোর্টরোড এলাকায় পাইকারি তরমুজের বাজার। খবরের কাগজ

বরিশালে আগাম তরমুজ চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষিরা ভালো দাম পাচ্ছেন। স্থানীয় বাজার ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে এখানকার তরমুজ। ব্যবসায়ীরা জানান, ২০ হাজার কোটি টাকার তরমুজ বেচাকেনার সম্ভাবনা আছে। ফলন ভালো হলেও খুচরা বাজারে দাম বেশি। মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে কৃষকরা তেমন লাভবান হচ্ছেন না। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে চাষ হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ কঠোর হলে কৃষক ও ভোক্তা—দুজনই উপকৃত হবেন।

বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ হাজার ২০৭ হেক্টর বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। ২০২৩-২৪ মৌসুমে বরিশাল বিভাগে ৪৮ হাজার ৪৭ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছিল। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮ হাজার ৩৪৪ হেক্টর। তবে আবাদ হয়েছে ৫৪ হাজার ৫৫১ হেক্টর। প্রতি হেক্টরে আবাদের হার ১১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে তরমুজ বাজারে এসেছে। চলতি মাস পর্যন্ত তা বাজারে থাকবে। ব্যবসায়ীরা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বরিশালে ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার তরমুজ বেচাকেনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভোলার চরফ্যাশনের তরমুজ চাষি জাকির হোসেন বলেন, ‘এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। মৌসুমের তরমুজ এখনো তুলিনি। আগাম জাতের তরমুজে ভালো দাম পাচ্ছি। বড় ধরনের ঝড়-বন্যা না হলে লাভবান হবো।’

পটুয়াখালীর বাউফলের কৃষক শাহ আলম বলেন, ‘গত বছর ঝড়-বন্যায় তরমুজ গাছ নষ্ট হয়েছিল। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। আকার ও মানভেদে প্রতি ১০০ পিস তরমুজ ১৬-২৪ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। প্রথম ধাপে ৮ হাজার পিস তরমুজ বরিশাল পোর্টরোড বাজারে এনেছি।’

বাকেরগঞ্জের তরমুজ ব্যবসায়ী মিরাজ ঢালি বলেন, ‘৪০০ তরমুজ কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু দাম বেশি। মাঝারি সাইজের প্রতি ১০০ পিস তরমুজ ১৩ হাজার টাকা চাইছে। আমি ১২ হাজার পর্যন্ত বলেছি।’ 

আড়তদার ইমন বলেন, ‘এ বছর আগামজাত তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে প্রচুর তরমুজ উঠলেও দাম বেশি। আমরা চাষিদের সঙ্গে কমিশনে ব্যবসা করি। খুচরা বিক্রেতারা আমাদের কাছ থেকে কিনে কেজি দরে বিক্রি করেন।’

সুজন বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণে আড়তদারদের হাত নেই। খুচরা বিক্রেতারা বেশি লাভের আশায় দাম বাড়ায়। এতে অস্থিরতা তৈরি হয়।’
সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা এস এম মাহবুব আলম বলেন, ‘এখন বাজারে আসা তরমুজ আগাম জাতের। এটি মূল লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে গণনা করা হবে না। তবে ফলন ভালো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, চলতি মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে কয়েক হাজার কোটি টাকার তরমুজ বাণিজ্য হবে। তরমুজ এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’

উদ্যান বিশেষজ্ঞ জি এম এম কবীর খান বলেন, ‘দেশের দুই-তৃতীয়াংশ তরমুজ বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় উৎপাদিত হয়। কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে কৃষকরা লাভবান হতে পারছে না। তাদের সুরক্ষা দিতে হলে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। বাজার ব্যবস্থাপনা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’

নতুন নোটের রমরমা ব্যবসা

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৮ এএম
নতুন নোটের রমরমা ব্যবসা
ছবি: সংগৃহীত

নতুন জামা-জুতার সঙ্গে ঈদ আনন্দে বাড়তি মাত্রা যোগ করে ঈদ সালামি। আর সেই সালামিটা হওয়া চাই নতুন নোটে। ঈদ উপলক্ষে প্রতিবছর বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে নতুন নোট ছাড়ে। চলতি বছরও সে রকমই প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিযুক্ত টাকা আর বাজারে ছাড়া যাবে না- এমন নিষেধাজ্ঞার কারণে শেষ পর্যন্ত নতুন টাকা বিনিময়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমন সিদ্ধান্তে গ্রাহকরা ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনের ফুটপাত থেকে বেশি দাম দিয়ে নতুন টাকা কিনছেন। 

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কোন কোন শাখার মাধ্যমে নতুন নোট বিনিময় করা যাবে, তা জানিয়ে একটি সার্কুলার প্রকাশ করে। সার্কুলার অনুযায়ী, ঈদ উপলক্ষে গতকাল বুধবার থেকে আগামী ২৫ মার্চ মঙ্গলবার পর্যন্ত নতুন নোট বিতরণ করার কথা ছিল। রোজা শুরুর আগেই এসব শাখায় চাহিদা অনুযায়ী নতুন নোট পৌঁছে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বিপরীতে এসব ব্যাংক থেকে সমপরিমাণ টাকা নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিযুক্ত নোট ছাড়া নিয়ে বিতর্কের মুখে গত ১০ মার্চ নোট বিতরণ স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তে ফুটপাতে জমে উঠেছে নতুন টাকার রমরমা ব্যবসা। সারা বছরই তারা এই ব্যবসা করলেও ঈদের আগে চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। এক বান্ডিলে থাকে ১০০টি নোট। এবারে ১০ টাকার এক বান্ডিল নতুন নোট নিতে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য নোটের ক্ষেত্রেও আনুপাতিক হারে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে। যেমন ২০ টাকার নোটে তারা অতিরিক্ত নিচ্ছে ৬০০ টাকা, ৫০ টাকার নোটে ৩০০, ১০০ টাকার নোটে ৫৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না ২ এবং ৫ টাকার নোটেও। ২ টাকার নোটে নিচ্ছে ১৫০ আর ৫ টাকার নোটে নিচ্ছে ২৫০ টাকা। ব্যাংকে না পাওয়ার কারণে এবার ফুটপাতের দোকানিরা দাম হাঁকছেন বেশি। গতবারও নতুন নোট চাহিদার তুলনায় কম ছাড়ায় ব্যবসায়ীরা প্রতি বান্ডিলে সর্বোচ্চ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা করে বেশি নিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক তো এবার নতুন টাকা দিচ্ছে না। তাহলে বাইরে বিক্রির জন্য নতুন টাকা আপনারা কোথায় পেয়েছেন জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী বিক্রেতা বলেন, ‌‘যারা টাকা নিয়ে আসে, তাদের কাছ থেকেই আমরা কিনে নিচ্ছি। ব্যাংকের পিয়ন থেকে শুরু করে অনেকেই এ টাকা নিয়ে আসেন।’

অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি টাকা দিয়ে আমাদের কিনতে হচ্ছে। ফলে আমাদের লাভ খুব বেশি থাকছে না। তিনি বলেন, ‘রোজার দিনে সারা দিন রোদে দাঁড়িয়ে থেকে আমরা প্রতি নোটে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ১০০ টাকা পাচ্ছি।’ 

নোট কিনতে আসা আরেফিন আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘ঈদে বাড়ি যাব। ছোট ভাইবোনদের সালামি হিসেবে প্রতিবছর নতুন টাকা দেই। তখন ওদের হাসিমুখ দেখতে খুব ভালো লাগে। এবার তো ব্যাংকে নতুন টাকা দিচ্ছে না। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে থেকে ১০ টাকার দুটি নোট নিয়েছি। এ জন্য অবশ্য আমাকে ৮০০ টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে ছাড়াও রাজধানীর গুলিস্তান, সদরঘাট, মিরপুর, ফার্মগেট, রায়সাহেব বাজার এলাকায় নতুন নোটের পসরা বসিয়ে থাকেন নিয়মিত ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

ফুটপাতে নতুন নোট কীভাবে আসে, সেই প্রশ্ন নতুন নয়। এর সঠিক উত্তর কখনো মেলেনি। এ প্রশ্নে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এবার নতুন নোট বিতরণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তাও নতুন নোট বিনিময় করতে পারছেন না। তারপরও কীভাবে নতুন নোটের কারবারিরা সেটি পাচ্ছেন, তা বোধগম্য নয়। এবার ব্যাংক থেকে নতুন টাকা নেওয়ার সুবিধা বন্ধ রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাজারে যে পরিমাণ নোট প্রচলিত রয়েছে, এতে যদি এখন আবার ফ্রেশ নোট বাজারে ছাড়া হয়, তাহলে বাজারে টাকার পরিমাণ বেড়ে যাবে। এ ছাড়া যেহেতু খুব শিগগিরই নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে ছাড়া হবে, তাই এখন আর বাজারে নতুন নোট না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ 

এদিকে, এবার নতুন নোট বিনিময় না করার সিদ্ধান্তের পর ব্যাংকগুলোতে সংকট তৈরি হয়েছে। ঢাকায় বিভিন্ন ব্যাংকের ৮০টি শাখার ভল্টে ৫, ২০ ও ৫০ টাকার নতুন নোটের বিশাল ভান্ডার থাকলেও তা কোনো কাজে আসছে না। আবার এসব নোট ফেরতও নিচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে শাখার ভল্টের বড় একটি অংশজুড়ে রয়েছে নোটগুলো। আরেক দিকে প্রতিটি শাখার উল্লেখযোগ্য পরিমাণের টাকা আটকা পড়েছে। এ তালিকায় সংকটে থাকা ব্যাংকের ১৯টি শাখাও রয়েছে। ব্যাংকগুলোর জন্য এসব নতুন টাকা যেন এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্যাংকাররা জানান, প্রতিটি শাখার ভল্টের ধারণক্ষমতার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ একটি সীমা নির্ধারিত আছে। কোথাও ওই সীমার বেশি টাকা জমা হলে তা পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা সোনালী ব্যাংকের ‘চেস্ট’ শাখায় জমা দিতে হয়। প্রতিটি ব্যাংকে সাধারণত ৫০০ ও ১ হাজার টাকার নোট থাকে বেশি। এতে জায়গা লাগে কম। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে বাজারে ছাড়ার জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২, ৫, ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নোট বাজারে ছাড়ার জন্য শাখাগুলোতে পাঠানো হয়েছে। এতে ভল্টের পুরো জায়গা ভরে গেছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন সিদ্ধান্তে সমস্যায় পড়েছে এ শাখাগুলো। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘নতুন নোট ছাড়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছিল। শাখাগুলোতে নতুন নোট পাঠিয়েও দিয়েছিল। কিন্তু সেসব টাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকও নতুন নোট বাজারে ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। এতে নতুন টাকা নিয়ে ব্যাংকগুলো সংকটে পড়ে যায়।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরবর্তী করণীয় নির্ধারিত না হওয়ায় এখনই ফেরত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের ভল্টে নোট পাঠানোর জন্য একটি খরচ আছে। আবার নোট ফেরত আনতেও খরচ আছে। যে কারণে কিছুটা সময় নেওয়া হচ্ছে।’

আরও তিনটি কারখানা পেল পরিবেশবান্ধব সনদ

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৩ এএম
আরও তিনটি কারখানা পেল পরিবেশবান্ধব সনদ
ফাইল ছবি

বাংলাদেশের আরও তিনটি তৈরি পোশাক কারখানা পরিবেশবান্ধব সনদ পেয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশের মোট ২৪০টি কারখানা এখন পরিবেশবান্ধব সনদ পেল।

তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এ তথ্য জানিয়েছে। গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ইকোটেক্স লিমিটেড, বোর্ডবাজারের এলিট গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও শ্রীপুরের ইউরো নিট স্পিন লিমিটেড- এই তিনটি কারখানা প্লাটিনাম সনদ পেয়েছে। অর্থাৎ পরিবেশবান্ধব কারখানার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি পেয়েছে তারা।

বাংলাদেশের যে ২৪০টি কারখানা এখন পর্যন্ত পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি পেয়েছে, তার মধ্যে ৯৮টি কারখানা প্লাটিনাম সনদ, ১২৮টি গোল্ড সনদ পেয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের কারখানাগুলো সর্বোচ্চ মানের পরিবেশবান্ধব কারখানার শর্ত পূরণ করতে পারছে। বাকি ১৪টি কারখানার মধ্যে সিলভার সদনপ্রাপ্ত কারখানা ১০টি এবং সার্টিফায়েড সদনপ্রাপ্ত কারখানা ৪টি।

বিজিএমইএর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি পরিবেশবান্ধব কারখানার মধ্যে ৬৬টি কারখানাই এখন বাংলাদেশের।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) থেকে এই পরিবেশবান্ধব সনদ পেয়েছে তিনটি কারখানা। এ সনদ পাওয়ার জন্য কিছু শর্ত পরিপালন করতে হয়। মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে কোনো কারখানা ৮০-এর বেশি পেলে ‘লিড প্লাটিনাম’, ৬০-৭৯ পেলে ‘লিড গোল্ড’, ৫০-৫৯ নম্বর পেলে ‘লিড সিলভার’ ও ৪০-৪৯ নম্বর পেলে ‘লিড সার্টিফায়েড’ সনদ দেওয়া হয়।

বিশ্বের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান পরিবেশবান্ধব স্থাপনার সনদ দিয়ে থাকে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি)। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউএসজিবিসি যে সনদ দেয়, তার নাম ‘লিড’। লিডের পূর্ণাঙ্গ রূপ হলো- লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন। এ সনদ পেতে প্রতিটি প্রকল্পকে ইউএসজিবিসির তত্ত্বাবধানে স্থাপনা নির্মাণের কাজ থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে মান রক্ষা করতে হয়।