
দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে শুল্ক আদায়ে ট্রাকের চাকার স্লাব নির্ধারণ করে দেওয়ায় ফল, মাছ, টমেটো, পানসহ এসব পণ্যের আমদানি কমেছে। ফলে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
জানা যায়, ফলসহ এসব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ভারতীয় ছয় চাকার ট্রাকে ১৮ টন, ১০ চাকার ট্রাকে ২০ টন, ১২ চাকার ট্রাকে ২২ টন, ১৪ চাকার ট্রাকে ২৫ টন, ১৬ চাকার ট্রাকে ২৬ টন পণ্য ধরে শুল্কায়ন করা হয়। এর নিচে আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নির্দেশনা নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের সর্ববৃহৎ এই স্থলবন্দর দিয়ে চাকার স্লাব ঘোষণার আগে প্রতিদিন ফল, মাছ, টমেটো, চাল, পান ইত্যাদি পণ্যের ১৫০ থেকে ২০০ ট্রাক আমদানি হতো। তখন সময় সরকারের রাজস্ব আয় হতো ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা। আর স্লাব ঘোষণার পর এসব পণ্য ২০ থেকে ২৫ ট্রাক আমদানি হচ্ছে। এখানে সরকারের রাজস্ব আয় হচ্ছে ৫ থেকে ৭ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর ট্রাকের চাকার স্লাব ঘোষণার প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৯ মার্চ চাপাইনবাবগঞ্জের আমদানিকারক মেজবাহ উদ্দিন খান উচ্চ আদালতে রিট করেন। এরপর ২০২২ সালের ১৬ মার্চ হাইকোর্ট এনবিআরের চাকার স্লাবের নির্দেশনা অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
ওই আদেশে বলা হয়, চাকা বেশির কারণে আমদানিকারকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত যে টাকা গ্রহণ করা হয়েছে সেটি ফেরত দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ২৩ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আবারও বিভিন্ন ফল, মাছ, টমেটো, চাল, পান ইত্যাদি আমদানিতে ট্রাকের চাকার স্লাব পুনর্বহালের ঘোষণা দেয়। এই নির্দেশনার পর আমদানিকারক বেনাপোলের ফেমাস ট্রেডার্সের ইমদাদুল হক আদালতে একটি রিট করেন। যা রায় ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
ফল আমদানিকারক আলেয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক তারেক হোসেন বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নতুন করে আবারও চাকার স্লাব নির্ধারণ করে দেওয়ার ফলে প্রতি ট্রাকে অতিরিক্ত ট্যাক্স দেওয়া লাগছে। আর আমরা প্রতিনিয়ত আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন জানান, ট্রাকের চাকার স্লাব নির্ধারণ করে দেওয়ায় আমদানিকারকদের অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হচ্ছে। এতে আমদানিকারকরা আর্থিক লোকসানের মধ্যে পড়ছেন। ফলে ফল আমদানিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন তারা।
বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান জানান, পুনরায় চাকার স্লাব সিস্টেম চালুর মূল উদ্দেশ্য হলো শুল্ক ফাঁকি রোধ করা। আমদানিকারকদের যথাযথ শুল্ক প্রদান নিশ্চিত করা এবং রাজস্ব বাড়িয়ে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।
নজরুল ইসলাম/অমিয়/