ঢাকা ১০ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

নতুন নোটের রমরমা ব্যবসা

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৮ এএম
নতুন নোটের রমরমা ব্যবসা
ছবি: সংগৃহীত

নতুন জামা-জুতার সঙ্গে ঈদ আনন্দে বাড়তি মাত্রা যোগ করে ঈদ সালামি। আর সেই সালামিটা হওয়া চাই নতুন নোটে। ঈদ উপলক্ষে প্রতিবছর বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে নতুন নোট ছাড়ে। চলতি বছরও সে রকমই প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিযুক্ত টাকা আর বাজারে ছাড়া যাবে না- এমন নিষেধাজ্ঞার কারণে শেষ পর্যন্ত নতুন টাকা বিনিময়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমন সিদ্ধান্তে গ্রাহকরা ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনের ফুটপাত থেকে বেশি দাম দিয়ে নতুন টাকা কিনছেন। 

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কোন কোন শাখার মাধ্যমে নতুন নোট বিনিময় করা যাবে, তা জানিয়ে একটি সার্কুলার প্রকাশ করে। সার্কুলার অনুযায়ী, ঈদ উপলক্ষে গতকাল বুধবার থেকে আগামী ২৫ মার্চ মঙ্গলবার পর্যন্ত নতুন নোট বিতরণ করার কথা ছিল। রোজা শুরুর আগেই এসব শাখায় চাহিদা অনুযায়ী নতুন নোট পৌঁছে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বিপরীতে এসব ব্যাংক থেকে সমপরিমাণ টাকা নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিযুক্ত নোট ছাড়া নিয়ে বিতর্কের মুখে গত ১০ মার্চ নোট বিতরণ স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তে ফুটপাতে জমে উঠেছে নতুন টাকার রমরমা ব্যবসা। সারা বছরই তারা এই ব্যবসা করলেও ঈদের আগে চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। এক বান্ডিলে থাকে ১০০টি নোট। এবারে ১০ টাকার এক বান্ডিল নতুন নোট নিতে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য নোটের ক্ষেত্রেও আনুপাতিক হারে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে। যেমন ২০ টাকার নোটে তারা অতিরিক্ত নিচ্ছে ৬০০ টাকা, ৫০ টাকার নোটে ৩০০, ১০০ টাকার নোটে ৫৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না ২ এবং ৫ টাকার নোটেও। ২ টাকার নোটে নিচ্ছে ১৫০ আর ৫ টাকার নোটে নিচ্ছে ২৫০ টাকা। ব্যাংকে না পাওয়ার কারণে এবার ফুটপাতের দোকানিরা দাম হাঁকছেন বেশি। গতবারও নতুন নোট চাহিদার তুলনায় কম ছাড়ায় ব্যবসায়ীরা প্রতি বান্ডিলে সর্বোচ্চ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা করে বেশি নিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক তো এবার নতুন টাকা দিচ্ছে না। তাহলে বাইরে বিক্রির জন্য নতুন টাকা আপনারা কোথায় পেয়েছেন জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী বিক্রেতা বলেন, ‌‘যারা টাকা নিয়ে আসে, তাদের কাছ থেকেই আমরা কিনে নিচ্ছি। ব্যাংকের পিয়ন থেকে শুরু করে অনেকেই এ টাকা নিয়ে আসেন।’

অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি টাকা দিয়ে আমাদের কিনতে হচ্ছে। ফলে আমাদের লাভ খুব বেশি থাকছে না। তিনি বলেন, ‘রোজার দিনে সারা দিন রোদে দাঁড়িয়ে থেকে আমরা প্রতি নোটে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ১০০ টাকা পাচ্ছি।’ 

নোট কিনতে আসা আরেফিন আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘ঈদে বাড়ি যাব। ছোট ভাইবোনদের সালামি হিসেবে প্রতিবছর নতুন টাকা দেই। তখন ওদের হাসিমুখ দেখতে খুব ভালো লাগে। এবার তো ব্যাংকে নতুন টাকা দিচ্ছে না। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে থেকে ১০ টাকার দুটি নোট নিয়েছি। এ জন্য অবশ্য আমাকে ৮০০ টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে ছাড়াও রাজধানীর গুলিস্তান, সদরঘাট, মিরপুর, ফার্মগেট, রায়সাহেব বাজার এলাকায় নতুন নোটের পসরা বসিয়ে থাকেন নিয়মিত ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

ফুটপাতে নতুন নোট কীভাবে আসে, সেই প্রশ্ন নতুন নয়। এর সঠিক উত্তর কখনো মেলেনি। এ প্রশ্নে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এবার নতুন নোট বিতরণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তাও নতুন নোট বিনিময় করতে পারছেন না। তারপরও কীভাবে নতুন নোটের কারবারিরা সেটি পাচ্ছেন, তা বোধগম্য নয়। এবার ব্যাংক থেকে নতুন টাকা নেওয়ার সুবিধা বন্ধ রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাজারে যে পরিমাণ নোট প্রচলিত রয়েছে, এতে যদি এখন আবার ফ্রেশ নোট বাজারে ছাড়া হয়, তাহলে বাজারে টাকার পরিমাণ বেড়ে যাবে। এ ছাড়া যেহেতু খুব শিগগিরই নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে ছাড়া হবে, তাই এখন আর বাজারে নতুন নোট না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ 

এদিকে, এবার নতুন নোট বিনিময় না করার সিদ্ধান্তের পর ব্যাংকগুলোতে সংকট তৈরি হয়েছে। ঢাকায় বিভিন্ন ব্যাংকের ৮০টি শাখার ভল্টে ৫, ২০ ও ৫০ টাকার নতুন নোটের বিশাল ভান্ডার থাকলেও তা কোনো কাজে আসছে না। আবার এসব নোট ফেরতও নিচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে শাখার ভল্টের বড় একটি অংশজুড়ে রয়েছে নোটগুলো। আরেক দিকে প্রতিটি শাখার উল্লেখযোগ্য পরিমাণের টাকা আটকা পড়েছে। এ তালিকায় সংকটে থাকা ব্যাংকের ১৯টি শাখাও রয়েছে। ব্যাংকগুলোর জন্য এসব নতুন টাকা যেন এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্যাংকাররা জানান, প্রতিটি শাখার ভল্টের ধারণক্ষমতার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ একটি সীমা নির্ধারিত আছে। কোথাও ওই সীমার বেশি টাকা জমা হলে তা পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা সোনালী ব্যাংকের ‘চেস্ট’ শাখায় জমা দিতে হয়। প্রতিটি ব্যাংকে সাধারণত ৫০০ ও ১ হাজার টাকার নোট থাকে বেশি। এতে জায়গা লাগে কম। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে বাজারে ছাড়ার জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২, ৫, ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নোট বাজারে ছাড়ার জন্য শাখাগুলোতে পাঠানো হয়েছে। এতে ভল্টের পুরো জায়গা ভরে গেছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন সিদ্ধান্তে সমস্যায় পড়েছে এ শাখাগুলো। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘নতুন নোট ছাড়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছিল। শাখাগুলোতে নতুন নোট পাঠিয়েও দিয়েছিল। কিন্তু সেসব টাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকও নতুন নোট বাজারে ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। এতে নতুন টাকা নিয়ে ব্যাংকগুলো সংকটে পড়ে যায়।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরবর্তী করণীয় নির্ধারিত না হওয়ায় এখনই ফেরত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের ভল্টে নোট পাঠানোর জন্য একটি খরচ আছে। আবার নোট ফেরত আনতেও খরচ আছে। যে কারণে কিছুটা সময় নেওয়া হচ্ছে।’

হিলি বন্দরের প্রধান সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা, কমেছে ট্রাক চলাচল ও রাজস্ব আদায়

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৭ এএম
হিলি বন্দরের প্রধান সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা, কমেছে ট্রাক চলাচল ও রাজস্ব আদায়
দিনাজপুরের হিলি বন্দরের প্রধান সড়কগুলোতে দীর্ঘদিন গর্ত ও খানাখন্দ থাকায় চলাচলে ভোগান্তি বাড়ছে। খবরের কাগজ

দিনাজপুরের হিলি বন্দরের প্রধান সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় গর্ত ও খানাখন্দ থাকায় চলাচলে ভোগান্তি বাড়ছে। এতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে প্রভাব পড়ছে। কমেছে ট্রাক চলাচল ও রাজস্ব আদায়। স্থানীয়রা দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। ২০১৯ সালে ফোর লেন করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও ভূমি অধিগ্রহণ সমস্যায় কাজ বন্ধ আছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ বলছে, কিছু জায়গায় কাজ শুরু হয়েছে। তবে কবে পুরো কাজ শেষ হবে, তা অনিশ্চিত।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, আগে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাক পণ্য আমদানি হতো। এখন তা নেমে এসেছে ৮০ থেকে ১০০ ট্রাকে। এতে রাজস্ব কমে গেছে প্রায় দ্বিগুণ। প্রতি বছর হিলি বন্দর থেকে সরকার ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব পায়। এত রাজস্ব আদায়ের পরও অবহেলায় পড়ে আছে বন্দরের সড়ক।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জিরো পয়েন্ট থেকে বন্দরের প্রবেশমুখ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের কিছু অংশে কাজ হলেও বাকি অংশে রয়েছে বড় বড় গর্ত। চারমাথা মোড় থেকে মহিলা কলেজ পর্যন্ত সড়কের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। সেখানে ছড়িয়ে আছে ছোট-বড় গর্ত। সড়ক ও জনপদ বিভাগের কাছে জানা যায়নি কাজ কবে শেষ হবে।

পথচারী এনামুল হক বলেন, ‘মহিলা কলেজ থেকে চারমাথা এবং সিপি থেকে বিরামপুর পর্যন্ত রাস্তা খারাপ। গর্তের কারণে চলাফেরা খুব কষ্টের।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাবেক সরকার আমলে এই সড়ক ফোর লেন করার কথা থাকলেও এখনো কিছু হয়নি। দেখার যেন কেউ নেই।’

আরেক পথচারী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘হিলি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর। প্রতিদিন শত শত ট্রাক এখানে আসে। রাস্তায় গর্ত থাকার কারণে ট্রাক উল্টে যায়। পথচারী, শিক্ষার্থী, অ্যাম্বুলেন্স—সবাই ভোগে।’ তিনি বলেন, ‘গর্তের কারণে পরিবহন চালকদের সময়ও বেশি লাগে। দ্রুত রাস্তার কাজ শুরু করা জরুরি।’

ট্রাকচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘সব জায়গায় উন্নয়ন হলেও হিলির রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ। পিচঢালা রাস্তার ওপর ইট দিয়ে সলিং করে কাজ চালানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি হলে রাস্তা হয়ে যায় গর্তে ভরা। তখন রাস্তা হয়ে ওঠে মরণফাঁদ। দুর্ঘটনা লেগেই থাকে।’
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী বলেন, ‘প্রতিদিন শত শত পণ্যবাহী ট্রাক এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। ভারী ট্রাক চলাচলের ফলে সড়ক ভেঙে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘হিলি-দিনাজপুর, হিলি-জয়পুরহাট সড়কও একইভাবে গর্তে ভরা। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সবাই ভোগান্তিতে পড়েছে।’

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায় বলেন, ‘মহিলা কলেজ থেকে চারমাথা এবং সিপি থেকে বিরামপুর রাস্তায় গর্ত হয়েছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ সংস্কার কাজ শুরু করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জিরোপয়েন্ট থেকে পানামা পোর্ট এবং চারমাথা থেকে মহিলা কলেজ পর্যন্ত ২ দশমিক ২ কিলোমিটার রাস্তা ফোর লেন করার কথা। ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ কোটি টাকা। তবে জমি অধিগ্রহণ সমস্যায় কাজ বন্ধ আছে।’

আরও ৫ লাখ পরিবারকে কম দামে চাল খাওয়াবে সরকার

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৩ এএম
আরও ৫ লাখ পরিবারকে কম দামে চাল খাওয়াবে সরকার
প্রতীকী ছবি

গরিব মানুষকে সাশ্রয়ী দামে চাল খাওয়াতে সারা দেশে একটি কর্মসূচি চালু রয়েছে। ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি’ নামের আওতায় বর্তমানে ৫০ লাখ পরিবারের কাছে কম দামে চাল বিক্রি করা হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতা আরও বাড়ানো হচ্ছে। ৫০ লাখ সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়িয়ে ৫৫ লাখে উন্নীত করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বর্তমানে চাল বিক্রি করা হয় বছরে পাঁচ মাস। এটা বাড়িয়ে ছয় মাস করা হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ানোর মাধ্যমে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বর্তমান সরকার। 

বর্তমানে প্রত্যেক পরিবারের কাছে ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল বিক্রি করা হয়। চালের পরিমাণ ও দাম অবশ্য একই রাখা হচ্ছে। সূত্র জানায়, দেশের গ্রাম এলাকার গরিব মানুষের কথা মাথায় রেখে ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় চালু করা হয় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি। ২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায় এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫০ লাখ পরিবারকে বছরে ৫ মাস ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার উদ্দেশ্যে কর্মসূচিটি চালু করা হয়, যা বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় খাদ্য অধিদপ্তর।

সরকারের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, প্রতিবছরের মার্চ ও এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর গরিব মানুষের কাজের অভাব থাকে। তাই এ পাঁচ মাস নামমাত্র দামে পরিবারগুলোকে চাল কেনার সুযোগ দেওয়া হয়। এখন তা ছয় মাস করা হচ্ছে।

কর্মসূচিটি বাস্তবায়নে ইউনিয়ন পর্যায়ে বসবাসরত বিধবা, বয়স্ক, পরিবারপ্রধান নারী, নিম্ন আয়ের দুস্থ পরিবারপ্রধানদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়ার একটি তালিকা করা হয় তখন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে অবশ্য কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়ে চালের দাম করা হয় ১৫ টাকা।

মাঝখানে করোনা আসার পর ২০১৯-২০ অর্থবছরে উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়িয়ে ৬২ লাখ ৫০ হাজার করা হয়েছিল। একই সঙ্গে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছিল তখন পাঁচ মাসের পরিবর্তে সাত মাস। করোনো চলে যাওয়ার পর উপকারভোগী কমিয়ে আবার নিয়ে আসা হয় ৫০ লাখে, আর কার্যক্রম চলে ৫ মাস।

উপকারভোগীদের কাছ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করা হলেও তা সমতল এলাকার ডিলারদের কাছে ১৩ টাকা ৫০ পয়সা এবং দুর্গম এলাকার ডিলারদের কাছে ১৩ টাকা দরে চাল বিক্রি করে সরকার।

দেশে এখন মোট উপজেলা ৪৯৫টি। এর মধ্যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি পরিচালিত হয় ৮ বিভাগের ২৫৬টি উপজেলায়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপ অনুযায়ী গরিব-প্রবণ অঞ্চল চিহ্নিত করার মাধ্যমে করা হয় তালিকা।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকতা বলেন, ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি আমরা সম্প্রসারণ করতে চাই। সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে আপাতত উপকারভোগী পরিবার ৫৫ লাখে উন্নীত করছি। আর ৫ মাসের বদলে ৬ মাস দেওয়া হবে চাল। সম্ভব হলে পরে সুবিধা আরও বাড়ানো হবে।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ উপকারভোগীর একটি তথ্যভান্ডার রয়েছে খাদ্য অধিদপ্তরে। সে অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি উপকারভোগী রয়েছেন রংপুর বিভাগে। এ বিভাগের ৮টি জেলায় উপকারভোগী ৮ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৫ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৪৪ হাজার ৫১০ জন রংপুর জেলায়, সর্বনিম্ন ৫০ হাজার ৯৫৪ জন পঞ্চগড় জেলায়।

বিভাগ অনুযায়ী সবচেয়ে কম উপকারভোগী সিলেটে, ২ লাখ ৩৮ হাজার ২৩০ জন। এ বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলায় সবচেয়ে বেশি ৮৯ হাজার ৫০৩ জন, সবচেয়ে কম সিলেট জেলায় ২৭ হাজার ৫১০ জন।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি উপকারভোগী টাঙ্গাইল জেলায়, ১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৬৬ জন এবং কম মুন্সিগঞ্জ জেলায়, ৩৩ হাজার ৬৩৬ জন।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় উপকারভোগী ৫ লাখ ৯২ হাজার ৮৯৩ জন, যা ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৭৭৭ জন, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ৬ লাখ ৩১ হাজার ৫৮৮ জন, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ৪ লাখ ৮৩ হাজার ২০৫ জন এবং রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় ৭ লাখ ৭২ হাজার ৮৩২ জন।

দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টির চাহিদা পূরণে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) নামের একটি কর্মসূচি চালু রয়েছে ২০১৩ সাল থেকে। খাদ্য অধিদপ্তর চাল সরবরাহ করলেও এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভিডব্লিউবি কর্মসূচিও চলবে। এর আওতায় ১৭০টি উপজেলায় ১০ লাখ ৪০ হাজার পরিবারকে ভিটামিন এ, বি১, বি১২, ফলিক অ্যাসিড, আয়রন ও জিংক-সমৃদ্ধ চাল ৩০ কেজি করে সারা বছর বিনামূল্যে দেওয়া হবে।

চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরে এ কর্মসূচিতে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টন চাল বরাদ্দ রয়েছে। তবে প্রতিবছর কর্মসূচিটির আওতা ১০ শতাংশ করে বাড়ানোর কথা থাকলেও তা কার্যকর হচ্ছে না।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, কর্মসূচি চলবে। তবে আওতা বৃদ্ধি সার্বিক বাস্তবতার ওপর নির্ভর করবে। দুই বছর পরপর নতুন তালিকা তৈরি করা হয়।

আবাসন খাতে নেতিবাচক প্রভাব  পড়েছে

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৩ এএম
আবাসন খাতে নেতিবাচক প্রভাব  পড়েছে
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) কারণে আবাসনের পাশাপাশি সংযোগ শিল্পের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

রিহ্যাব সভাপতি বলেন, আবাসন খাত ভালো থাকলে সংযোগ শিল্পগুলো স্বাভাবিকভাবেই ভালো থাকে। এখন তারাও ভালো নেই। কারণ, বৈষম্যমূলক নতুন ড্যাপ ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে আবাসনশিল্প সমস্যায় আছে।
মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, নির্মাণ উপকরণের সবচেয়ে বড় উপাদান রড। কিন্তু রডের চাহিদা প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। একইভাবে চাহিদা কমেছে সিমেন্ট, ইটসহ অন্যান্য উপকরণের। চাহিদা কমে যাওয়ায় উৎপাদন কমেছে। অনেক লোকবল ছাঁটাই হয়েছে। ভবিষ্যতে অনেক প্রতিষ্ঠান সেই দিকে হাঁটবে।

রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে গতকাল মঙ্গলবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিহ্যাবের সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, বৈষম্যমূলক ও ত্রুটিপূর্ণ ড্যাপ নিয়ে জমির মালিক, আবাসন ব্যবসায়ী ও সংযোগ শিল্পের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনতে অবশ্যই অবসান ও সংযোগ শিল্পের স্থবিরতা থেকে অতি দ্রুত উত্তরণ ঘটাতে হবে। সরকারকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে।

রিহ্যাব ও আবাসন খাতের সহযোগী শিল্পের বাণিজ্য সংগঠনের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ মাসাদুল আলম, বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি শামীম আহমেদ, রিহাবের সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া প্রমুখ।

রিহ্যাব সভাপতি আরও বলেন, ড্যাপে ফার (ফ্লোর এরিয়া রেশিও) সমস্যার কারণে ভবনের উচ্চতা ও আয়তন একেবারে কমে গেছে। ২০২২ সালে ড্যাপের প্রজ্ঞাপন হওয়ার পর জমির মালিকরা ডেভেলপ করার জন্য আবাসন কোম্পানিকে জমি দিচ্ছেন না। এ কারণে নতুন আবাসন প্রকল্পের সংখ্যা কমে গেছে। এতে সংযোগ শিল্পগুলোর পণ্যের চাহিদা ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, ‘দিল্লিতে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৩৬২ জন মানুষ বসবাস করে। তারপরও তাদের ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ফার বেশি। ঢাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে বসবাস করে ১ হাজার ১১৯ জন। ফলে আমাদের কম জায়গায় বেশি ফার প্রয়োজন।’

আবাসনশিল্পের কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করে রড, সিমেন্ট, ইট, টাইলস, ক্যাবল, রং, লিফট, থাই, স্যানিটারিসহ প্রায় ২০০ সংযোগ শিল্প—এসব খাত অর্থনীতির চাকা গতিশীল রেখেছে। এসব শিল্পে ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে বলে জানান রিহ্যাব সভাপতি।

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তায় হটলাইন চালু হচ্ছে

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৮ এএম
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তায় হটলাইন চালু হচ্ছে
ছবি: সংগৃহীত

বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখন থেকে পুলিশের নির্ধারিত জরুরি যোগাযোগ লাইনে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন। এ উদ্যোগের মাধ্যমে যেকোনো নিরাপত্তাজনিত ঘটনা তাৎক্ষণিক জানানো এবং দ্রুত সহায়তা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হলো।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের সভাপতিত্বে গত সোমবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। তারা সম্প্রতি গাজায় হামলা নিয়ে বিক্ষোভের সময় বিদেশি কোম্পানিগুলোর কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ছয়টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছিল- নেসলে বাংলাদেশ, কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজেস, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, বাটা শু কোম্পানি বাংলাদেশ, রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ, পেপসিকো ও জুবিল্যান্ট ফুড ওয়ার্কস বাংলাদেশ।

বৈঠকে জানানো হয়, ৭ ও ৮ এপ্রিল দেশের বিভিন্ন শহরে এসব কোম্পানির কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় অন্তত ১৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং প্রায় এক ডজন মামলা হয়েছে।

বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, আইজিপি, সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা ও বিডার কর্মকর্তাদের একসঙ্গে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বসা শুধু সময়োপযোগী নয়, নজিরবিহীন। এটি কেবল একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়। এটি এক ধরনের বার্তা যে, বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের পাশে আছে, বিশেষ করে যখন চ্যালেঞ্জ আসে।

তিনি আরও বলেন, এ কোম্পানিগুলো হাজার হাজার কর্মজীবী ও তাদের পরিবারের জীবিকার উৎস। প্রতিবাদের অধিকার আছে, কিন্তু যে প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মসংস্থান, স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করে, সেগুলো ধ্বংস করা কোনো সমাধান নয়। বিডা চেয়ারম্যান পুলিশের তাৎক্ষণিক সাড়া ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতির জন্য প্রশংসা করেন।

প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা ভাঙচুর, ক্ষয়ক্ষতি ও কার্যক্রমে বিঘ্ন নিয়ে সরাসরি অভিজ্ঞতার কথা বলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় আইজিপি কার্যালয় জানায়, ভুক্তভোগী কোম্পানিগুলোর জন্য নির্দিষ্ট জরুরি যোগাযোগ লাইন চালু করা হবে, যার মাধ্যমে তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশি সহায়তা পাবে।

আইজিপি বাহারুল আলম বিনিয়োগকারীদের পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, আমরা কেবল প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য এখানে আসিনি, বরং আস্থা গড়ে তুলতে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন না ঘটে, তা নিশ্চিত করতেই এসেছি।

এ আলোচনার ফলে বিডা, পুলিশ এবং ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে একটি প্রতিরোধ পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নতুন নিরাপত্তা প্রটোকল, দ্রুত সাড়া দেওয়া ইউনিট এবং উন্নত সংকট যোগাযোগ চ্যানেল।

বিডা চেয়ারম্যান বলেন, এ সংলাপ কেবল প্রতিক্রিয়ার জন্য নয়। এটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য। আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে, এটি সরকারের অঙ্গীকার প্রতিফলিত করে যে, আমরা বিনিয়োগকারীদের পাশে থাকি শুধু ভালো সময়ে নয়, প্রতিকূল সময়েও।

কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা বিডা ও বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণ পরিকল্পনার প্রতি নতুন আস্থা ব্যক্ত করেন।

এ উদ্যোগ বিডার বৃহত্তর মিশনের অংশ, যার লক্ষ্য হলো বাংলাদেশকে একটি নিরাপদ, টেকসই ও বিনিয়োগবান্ধব গন্তব্য হিসেবে গড়ে তোলা, যা অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।

সোনার দামে রেকর্ডের পর রেকর্ড, বাড়ল রূপার দামও

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৪ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩১ এএম
সোনার দামে রেকর্ডের পর রেকর্ড, বাড়ল রূপার দামও
ছবি: সংগৃহীত

এক দিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে আবার বেড়েছে সোনার দাম। এ দফায় ভরিপ্রতি বেড়েছে ৫ হাজার ৩৪১ টাকা। তাতে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৭ টাকা। দেশের বাজারে এটিই এখন স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম বাড়ানোর কথা জানায়। বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) দাম বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে আবার দাম সমন্বয় করা হয়েছে। নতুন দাম আজ বুধবার থেকে কার্যকর হবে। এর আগে গত সোমবার প্রতি ভরি সোনার দাম ৪ হাজার ৭১৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ৫ হাজার ৩৪১ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৫ হাজার ১০৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮০৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৪ হাজার ৩৭৪ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ৩ হাজার ৭৩২ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৫১২ টাকা।

এর আগে গত সোমবার ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ৪ হাজার ৭১৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের ভরিতে ৪ হাজার ৪৯১ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৬ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ৩ হাজার ৮৬০ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার ভরিতে ৩ হাজার ২৮৯ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ টাকা। গতকাল এ দামেই সোনা কেনাবেচা হয়েছে।

সোনার দাম বাড়ানোর পাশাপাশি রূপার দামও বাড়ানো হয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপায় ২৮৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৮৪৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের রূপার ভরিতে ২৬৯ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২ হাজার ৭১৮ টাকা। এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি রূপায় ২২২ টাকা বাড়িয়ে ২ হাজার ৩৩৩ টাকা আর সনাতন পদ্ধতির রূপায় ভরিপ্রতি ১৬৪ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৭৫০ টাকা।