
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) অধিকতর শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে তিনি সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির কম পদ্ধতি কী হবে সে বিষয়টি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
কমিটি সদস্যরা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। সদস্যসচিব বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ফারজানা লালারুখ। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকুল ইসলাম এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ইন্স্যুরেন্স ও ক্যাপিটাল মার্কেট ডিপার্টমেন্টের একজন অতিরিক্ত সচিব।
গত বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএসইসি জনসংযোগ কর্মকর্তা ও সহকারী মুখপাত্র মো. মোহাইমিনুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কমিটির সভাপতি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা কমিশনে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকুল ইসলাম, কমিটির সদস্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বিমা ও পুঁজিবাজার অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাঈদ কুতুব ও কমিটির সদস্যসচিব বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখ।
এ ছাড়া বিশেষ আমন্ত্রণের ভিত্তিতে ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের নাজমা মোবারেক, বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী ও বিএসইসির কমিশনার মো. আলী আকবর।
অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) শক্তিশালীকরণসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় ও দিক নিয়ে আলোচনা হয়। কার্যপরিধি অনুযায়ী কমিটির কাজের পদ্ধতি প্রণয়ন এবং পরবর্তী করণীয়সংক্রান্ত বিষয়ে ওই সভায় আলোচনা হয়।
গত ৫ মার্চ একজন নির্বাহী পরিচালকের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোকে কেন্দ্র করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতির পর সংস্থাটিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ সামনে আসে। তারই ধারবাহিকতায় গত ১৭ মার্চ গঠন করা হয় চার সদস্যের কমিটি, যারা সংস্থাটিকে অধিকতর শক্তিশালীকরণ ও উন্নয়নের কাজ করবে।
বিএসইসি কর্মকর্তাদের এমন আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এফআইডির কাছে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এই কমিটি গঠন করে। কমিটি নিয়ন্ত্রক ও পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম জোরদার, বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং বাজার স্থিতিশীল করার উপায়গুলোও সুপারিশ করবে।
এ ছাড়া এটি বাজারে তারল্য বৃদ্ধি, করপোরেট সুশাসন উন্নত করা এবং নতুন কোম্পানিগুলোর পুঁজিবাজারে প্রবেশের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য পরামর্শ প্রদান করবে।
এর আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে দেওয়া বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো বিবেচনায় বিএসইসির নিরাপত্তায় সশস্ত্র আনসার নিয়োগের সিদ্ধান্তের কথাও জানানো হয়। এ ছাড়া কমিশনের কাজে গতি আনতে প্রেষণে জরুরি ভিত্তিতে ১৯ কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই ১৯ কর্মকর্তার মধ্যে ৩ জন কমিশনের নির্বাহী পরিচালক পদমর্যাদার, ৩ জন পরিচালক পদমর্যাদার, ১ জন কমিশন সচিব ও ১২ জন যুগ্ম বা অতিরিক্ত পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা চাওয়া হয়েছে।
বিএসইসিতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাইরে বহিরাগত কেউ জড়িত রয়েছেন কি না, তা গোয়েন্দাদের মাধ্যমে খতিয়ে দেখতেও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বিএসইসি। সেই সঙ্গে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের নিরাপত্তা জোরদারেরও সুপারিশ করা হয়েছে।
বিএসইসির চিঠিতে সব মিলিয়ে ১২টি সুপারিশ করা হয়। এসব সুপারিশের মধ্যে আরও রয়েছে বিএসইসির সাংগঠনিক কাঠামো সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত সিএমডিপি প্রকল্পের অর্থ তছরুপের ঘটনা তদন্ত, এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া মাশরুর রিয়াজের নিয়োগের বিষয়ে বিএসইসির কর্মকর্তাদের বিরোধিতার বিষয় তদন্তেরও সুপারিশ করা হয়।