
পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ প্রকল্পটি ঠিক সময়ে ও নির্ধারিত খরচে বাস্তবায়ন করতে পারেনি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এ জন্য সময় ও খরচ বাড়ছে। তাই সংশোধন করতে হচ্ছে।
রবিবার (২৩ মার্চ) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী পরিষদ সভায় এটিসহ ১৫টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ২৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের অর্থায়ন ১৪ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা, বিদেশি ঋণ ৬ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৪০৭ কোটি টাকা। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
একনেক সভায় উপস্থিত ছিলেন অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, খাদ্য এবং ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো: নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ (২য় সংশোধিত) প্রকল্প। এর খরচ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৫ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। প্রথমে এর খরচ ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা। প্রথমে বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছিল ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। দ্বিতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হলো। এরপর রয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদ্যমান রানওয়ে ও টেক্সিওয়ের শক্তি বৃদ্ধিকরণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প। এর খরচ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৬২২ কোটি টাকা। সময় বাড়ানো হলো ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এভাবে সাতটি প্রকল্পে সময় ও খরচ বাড়ানোর জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো-স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ৩টি প্রকল্প- চট্টগ্রাম মহানগরীর কালুরঘাট এলাকায় পয়ঃশোধনাগার নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প এবং সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার প্রকল্প ফেজ-৩ (২য় সংশোধিত) প্রকল্প। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণ (২য় সংশোধিত) প্রকল্প; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল কানেকটিভিটি শক্তিশালীকরণে সুইচিং ও ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক উন্নয়ন (৩য় সংশোধিত) প্রকল্প; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পঞ্চবটি হতে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও দোতলা রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প (১ম সংশোধন) প্রকল্প।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন প্রকল্প; শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঢাকা শহর সন্নিকটবর্তী এলাকায় ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প (২য় সংশোধিত) প্রকল্প; প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি প্রকল্প; খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সারা দেশে অবস্থিত ক্ষতিগ্রস্ত খাদ্য গুদাম এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক অবকাঠামোর মেরামত ও সংস্কার প্রকল্প; ভূমি মন্ত্রণালয়ের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্থাপিত রেকর্ড রুম সংস্কার ও মেরামত প্রকল্প; মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রভেন বুল তৈরি প্রকল্প এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভৌত সুরক্ষা ব্যবস্থা নির্মাণ (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।