ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

কৃষিঋণে খেলাপির হার কম

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৭ এএম
আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৬ এএম
কৃষিঋণে খেলাপির হার কম
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

ব্যাংক খাতে মোট বিতরণকৃত ঋণে খেলাপি ঋণের পাহাড় জমলেও কৃষিঋণে খেলাপি ঋণের হার খুব কম। চলতি অর্থবছরের সাত মাসে কৃষিঋণে খেলাপির হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ। জানুয়ারি শেষে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৫৫ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। যার মধ্যে খেলাপির পরিমাণ মাত্র ৪ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এই তথ্য জানা গেছে।   

বাংলাদেশ ব্যাংকের অপর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। আগের বছর ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। সে হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ লাখ ১৩২ কোটি টাকা। এই পরিমাণ খেলাপি ঋণের বেশির ভাগই আটকে আছে বড় বড় কিছু শিল্পগ্রুপের কাছে। যারা ঋণ নিয়ে ফেরত দিচ্ছেন না। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কৃষকরা কখনো ঋণ জালিয়াতি করেন না। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়েন তারা। কিন্তু দেশের বৃহৎ শিল্পগ্রুপের মতো ঋণখেলাপির প্রবণতা তাদের মধ্যে একেবারেই নেই। তবুও কৃষকদের ঋণ বিতরণে এবং স্বল্প অর্থের ঋণ আদায়ে বেশি তৎপর ব্যাংকগুলো। যদিও ব্যাংকগুলোর উচিত বড় বড় শিল্পগ্রুপকে কম ঋণ দিয়ে কৃষি এবং এসএমই খাতে বেশি ঋণ বিতরণ করা।  

এই প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বড় ঋণের চেয়ে কৃষিঋণে তহবিল ব্যবস্থাপনা খরচ অনেক বেশি। সে কারণেই ব্যাংকগুলো কৃষিঋণ বিতরণে অনীহা দেখায়। এ ছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর উপজেলা পর্যায়ে শাখাও নেই। আবার সরকারি ব্যাংকগুলোর অনেক শাখা বিস্তৃত থাকলেও বিভিন্ন ধরনের অনিয়মে জর্জড়িত হওয়ার কারণে তারাও প্রয়োজন অনুযায়ী ঋণ বিতরণ করতে পারছে না। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই খাতে ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলোকে কীভাবে আরও বেশি উদ্বুদ্ধ করা যায়, সেই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। 

একই বিষয়ে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আলী খবরের কাগজকে বলেন, ব্যাংকগুলোর হাতে এখন পর্যাপ্ত তারল্য রয়েছে। যা এতদিন ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করে আসছিল। বর্তমানে ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহার কমায় ব্যাংকগুলো এখন বেসরকারি খাতে বিশেষ করে কৃষি এবং এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ বাড়াবে। কারণ সেখানে সুদহার বেশি। তাছাড়া এসব ঋণে খেলাপির পরিমাণও কম। তার পরও বেশ কয়েকটি ব্যাংক নির্ধারিত হারে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ করছে না- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামীতে নিশ্চয়ই ব্যাংকগুলো তাদের নির্ধারিত হারে কৃষিঋণ বিতরণ করবে। কারণ কৃষকরা চেষ্টা করে সবসময়ই ঋণ ফেরত দিতে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়লে কেবল তারা সমস্যায় পড়ে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলোকে সবসময়ই তাগিদ দিয়ে থাকে। বছরের শুরুতেই তাদের একটা লক্ষ্য ঠিক করে দেওয়া হয়। এবং লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলে ব্যাংকগুলোকে জরিমানা করারও বিধান রাখা হয়েছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোকে ৩৮ হাজার কোটি টাকার কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই থেকে জানুয়ারি) ব্যাংকগুলো ১৯ হাজার ২১৫ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। যা লক্ষ্যমাত্রার ৫০ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এ সময় ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা কৃষি ও পল্লীঋণের মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৮ হাজার ৯৩ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংকগুলো ৭৮৩ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। এ সময়ে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১০ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা।

তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে কৃষি খাতে বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে আদায় হয়েছে ২০ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। আর জানুয়ারি শেষে এই খাতে বকেয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা।  

জানা গেছে, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষি ও কৃষিসংশ্লিষ্ট কাজে অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য মোট ঋণের অন্তত ২ শতাংশ কৃষি খাতে বিতরণ বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেসব ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃষিঋণ বিতরণ করবে না, তাদের জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেসব ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার অর্থ বিতরণে ব্যর্থ হবে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট তহবিলে ওই অর্থ জমা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এর ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে কৃষিঋণ বিতরণ। বছরের শুরুতে লক্ষ্যও ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। যাতে ১২ মাসেই বিশেষ করে ফসল চাষের শুরুতে কৃষকরা সময় মতো ঋণ পান। 

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলোচিত ৭ মাসে ২০ শতাংশের কম ঋণ বিতরণ করেছে মোট ১৪টি ব্যাংক। এসব ব্যাংকের মধ্যে ১০ দশমিক ৫৯ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে শরিয়াহভিত্তিক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ১১ দশমিক ৬২ শতাংশ বিতরণ করেছে আইএফআইসি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক ১৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ, শাহাজালাল ইসলামী ব্যাংক ১৭ শতাংশ এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক বিতরণ করেছে ১৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ ছাড়া সিটিজেনস ব্যাংক ২০ শতাংশ এবং ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসের সবচেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। জুলাই-জানুয়ারি সময়ে মোট ৪ হাজার ৯১২ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকটি। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটি এক হাজার ৯৬২ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এ ছাড়া রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ১ হাজার ৪১৪ কোটি, সোনালী ব্যাংক ৮৮৩ কোটি, ব্র্যাক ব্যাংক ৬৫১ কোটি, এক্সিম ব্যাংক ৬১৭ কোটি এবং পূবালী ব্যাংক বিতরণ করেছে ৬০৭ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৪৫ কোটি টাকার কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণ করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।

মেঘনা গ্রুপের বিরুদ্ধে ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ তদন্তে দুদক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০৭ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:১০ পিএম
মেঘনা গ্রুপের বিরুদ্ধে ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ তদন্তে দুদক
মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ ও এর মালিক মোস্তফা কামাল

ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে ৮০ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের একটি দল গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গত ৮ এপ্রিল দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এক চিঠির মাধ্যমে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, কমিশনের অনুমোদনের ভিত্তিতে উপপরিচালক আহসানুল কবির পলাশকে দলনেতা করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। অন্যান্য সদস্যরা হলেন- সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক ও উপসহকারী পরিচালক নিজাম উদ্দিন।

চিঠিতে কমিশনের সিদ্ধান্তের আলোকে অভিযোগটি বিধি মোতাবেক অনুসন্ধান করে সুনির্দিষ্ট মতামতসহ (মতামত/সুপারিশের সপক্ষে রেকর্ডপত্র পতাকা চিহ্নিত করে) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়।

তদন্ত দল গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপপরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত-১) মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন।

উল্লেখ্য, মেঘনা গ্রুপের বিরুদ্ধে বিশাল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ ওঠায় এটি এখন দেশের অন্যতম আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে। দুদকের তদন্তের ফলাফল কী হয়, তা দেশের অর্থনৈতিক খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তাছাড়া, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক মোস্তফা কামাল, তার স্ত্রী বিউটি আক্তার এবং তাদের সন্তানের ব্যাংক হিসাবও ইতোমধ্যে জব্দ করা হয়েছে।

গত ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠায়।

চিঠিতে বলা হয়, মোস্তফা কামাল, তার স্ত্রী বিউটি আক্তার ও তাদের সন্তানদের ব্যক্তি হিসাব আগামী ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখতে হবে। একইসঙ্গে এসব ব্যক্তি ও তাদের সন্তানদের লেনদেন বিবরণী, হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসিসহ যাবতীয় তথ্য বিএফআইইউতে পাঠাতে হবে।

জানা যায়, মেঘনা গ্রুপের ৫৫টি প্রতিষ্ঠানে ৩১টি ব্যাংক ও তিনটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ১৬ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা।

অমিয়/

মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৮ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০৭ পিএম
মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ
মেঘনা গ্রুপ


ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করেছে  বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। একইসঙ্গে তাদের লেনদেনসহ যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে। 

গত ১০ এপ্রিল বিএফআইইউ দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, মোস্তফা কামাল, তার স্ত্রী বিউটি আক্তার ও তাদের সন্তানদের ব্যক্তি হিসাব আগামী ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখতে হবে। একইসঙ্গে এসব ব্যক্তি ও তাদের সন্তানদের লেনদেন বিবরণী, হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসিসহ যাবতীয় তথ্য বিএফআইইউতে পাঠাতে হবে।

অমিয়/

স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড, ভরিতে বাড়ল ৩০৩৩ টাকা

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪৬ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫২ পিএম
স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড, ভরিতে বাড়ল ৩০৩৩ টাকা
ছবি : সংগৃহীত

দেশের বাজারে ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম। সর্বশেষ ৩ হাজার ৩৩ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ২০৯ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। 

নতুন মূল্য আজ বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়।

বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে পিওর গোল্ড বা তেজাবি স্বর্ণের দামে ঊর্ধ্বগতির কারণে এ দাম পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৩ এপ্রিল রাতে স্বর্ণের দাম ভরিপ্রতি সর্বোচ্চ ১ হাজার ৩৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬২ হাজার ১৭৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়, যা গতকাল রাত পর্যন্ত কার্যকর ছিল।

খবরে বলা হয়েছে, বিশ্ববাজারেও চলছে স্বর্ণের দামের উল্লম্ফন। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের প্রতি আউন্সের দাম ৩ হাজার ৩০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা সর্বকালের সর্বোচ্চ।

স্বর্ণের দামে বড় ধরনের পরিবর্তন এলেও রুপার দামে কোনো পরিবর্তন হয়নি। বাজুসের নির্ধারিত দর অনুযায়ী ২২ ক্যারেট রুপা ২ হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেট ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ৫৮৬ টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, নিরাপদ বিনিয়োগের ঝোঁক এবং স্থানীয় বাজারে সরবরাহ সংকট মিলিয়ে স্বর্ণের দামে এই রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। দাম আরও বাড়তে পারে এমন শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন অনেক ব্যবসায়ী।

রপ্তানির বিকল্প বাজার খুঁজতে হবে: রেহমান সোবহান

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৩৭ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০১ পিএম
রপ্তানির বিকল্প বাজার খুঁজতে হবে: রেহমান সোবহান
ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কে বাংলাদেশে প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া নিয়ে আয়োজিত সংলাপে বক্তব্য রাখছেন রেহমান সোবহান। ছবি: খবরের তকাগজ

আগামী পাঁচ বছর রপ্তানির বিকল্প বাজার খুঁজতে হবে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান।

তিনি বলেন,  ‘আগামী পাঁচ বছর বাংলাদেশের উচিত হবে, রপ্তানির বিকল্প বাজার খোঁজা। ট্রাম্পের শুল্ক নীতি নিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।  যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রপ্তানির একক বৃহত্তম বাজার। সেখানে এত অনিশ্চয়তা থাকলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমাদের বাজার বড় করার পাশাপাশি বিকল্প বাজার খুঁজতে হবে।’ 

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) আয়োজনে ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কে বাংলাদেশে প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া নিয়ে আয়োজিত সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। 

সংলাপে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন সংলাপ সঞ্চালনা করেন। 

মূল প্রবন্ধে মোস্তাফিজুর বলেন, ‘২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানিতে ১৮ কোটি ডলার আমদানি শুল্ক পাওয়া গেছে। তার বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্যে ১২৭ কোটি ডলার শুল্ক আদায় করেছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হওয়া শীর্ষ তিন পণ্যে শুল্ক শূন্য করলে অন্য দেশকে সমান সুবিধা দিতে হবে। এতে বাংলাদেশের মোট শুল্ক লোকসান হবে ১৭ কোটি ডলার। ফলে নিছক শুল্ক হ্রাস করে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যাবে, বিষয়টি তেমন নয়।’ 

রেহমান সোবহান বলেন,  ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির প্রধান লক্ষ্যবস্তু চীন। তাদের মধ্যকার সম্পর্ক কেমন হবে, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। আরও সময় লাগবে। বিশ্ব অর্থনীতিতে সেটাই হবে সবচেয়ে বড় বিষয়। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আছে, তার মধ্যে থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমাদের বাজার বড় করার চেষ্টা করতে হবে। কেননা সেখানে আরও কয়েক বছর বাংলাদেশের জন্য শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা আছে। সেই সঙ্গে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের বাজার অনুসন্ধান করতে হবে। এশিয়ার বাজারও আছে; এই মহাদেশ আগামী দিনে বিশ্বের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রবৃদ্ধির মূল কেন্দ্র হবে। আগামী ২৫ বছরের মধ্যে এশিয়াই হবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সবচেয়ে বড় জায়গা।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ট্যারিফ অ্যান্ড ট্রেড কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান বলেন, ‘প্রথমেই বুঝতে হবে, এটা পারস্পরিক শুল্ক নয়। ফলে আমরা যতই সাড়া দিই না কেন, লাভ নেই। আমাদের বুঝতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র কী চায়। সে জন্য আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।’ 

তিনি বলেন, ‘কোনো পণ্যে শুল্ক কমালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আমদানি বাড়বে, তা নিশ্চিত নয়। আরেকটি উপায় হলো, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করা যায়।’

মৃত্তিকা/পপি/

জব্দ হিসাব থেকে টাকা তুলে নিয়েছেন এইচ বি এম ইকবাল

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩২ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৪ পিএম
জব্দ হিসাব থেকে টাকা তুলে নিয়েছেন এইচ বি এম ইকবাল
আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এইচ বি এম ইকবাল

জব্দ করা অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এইচ বি এম ইকবাল। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে ইকবাল, তার দুই স্ত্রী ও সন্তান এবং তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব লেনদেন স্থগিত করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এরপরও এইচ বি এম ইকবাল তার নামে থাকা ব্যাংক হিসাব থেকে ১ কোটি ১১ লাখ টাকা ও ৩০ হাজার ডলার উত্তোলন করেন। 

বিষয়টি বিএফআইইউয়ের নজরে আসার পর ইকবালের মালিকানাধীন প্রিমিয়ার ব্যাংকের কাছে জানতে চাইলে সদুত্তর মেলেনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনের ২৩-এর ৬ ধারা অনুযায়ী জরিমানা করা হয়। আইনে বলা আছে, কোনো হিসাব জব্দ বা স্থগিত করার পর মানতে ব্যর্থ হলে ব্যাংককে স্থিতির সমপরিমাণ জরিমানা করতে পারবে। 

এইচ বি এম ইকবাল প্রিমিয়ার ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দেন। তবে ব্যাংকটি এখনো তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান তার ছেলে ইমরান ইকবাল। 

প্রিমিয়ার ব্যাংক সূত্র জানায়, ওই হিসাবে থাকা পুরো টাকা ও ডলারই উত্তোলন করে ফেলা হয়েছে। এইচ বি এম ইকবাল ও তার পরিবারের সদস্যরা সরকার পরিবর্তনের পরেই দুবাইয়ে চলে যান। এরপরও নানা কৌশলে ব্যাংক থেকে সুবিধা নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ইকবাল পরিবারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, দুবাইয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে তুলেছেন এইচ বি এম ইকবাল। সেখানে কাচের কারখানা ও তারকা হোটেলে বিনিয়োগ করেছেন তারা।