
আসন্ন ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ ৯ দিনের ছুটির আগে বৃহস্পতিবারই (২৭ মার্চ) ছিল স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রমের শেষ দিন। আগামীকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) থেকে শুরু হচ্ছে সাপ্তাহিক, ঈদ ও বিশেষ ব্যবস্থার দীর্ঘ ছুটি। চলবে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত। তবে এর মধ্যে আগামী শুক্র ও শনিবার বিশেষ ব্যবস্থায় গার্মেন্টস এলাকাগুলোতে সীমিত সময়ের জন্য ব্যাংকগুলোর কিছু শাখা খোলা থাকবে। এ ছাড়া ঈদের ছুটিতে এটিএম বুথ, অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা সার্বক্ষণিকভাবে চালু থাকবে।
আজ স্বাভাবিক লেনদেনের শেষ কার্যদিবস হওয়ায় ব্যাংকে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। সরেজমিনে মতিঝিল, পল্টন, মগবাজারসহ বেশকিছু এলাকার অবস্থা ছিল এ রকম। এদিন সকাল থেকেই ব্যাংকের শাখাগুলোতে লেনদেনের চাপ ছিল অন্য দিনগুলোর তুলনায় বেশি। গ্রাহকরা নগদ টাকা উত্তোলন, ঋণ গ্রহণ, রেমিট্যান্স ডলার ভাঙানো, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা উত্তোলনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করেন।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেন, গ্রাহকদের চাপ সামাল দিতে অতিরিক্ত ব্যবস্থা নিয়েছেন যাতে নির্বিঘ্নে লেনদেন সম্পন্ন করা যায়। জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল অফিসের ম্যানেজার বলেন, প্রতিবছরই ঈদের আগের কার্যদিবসে গ্রাহকের লেনদেনের পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যায়। আর এবার ঈদের ছুটি দীর্ঘ হওয়ায় চাপ আরও বেশি। তবে আমরা চেষ্টা করছি গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে।
মগবাজারে উত্তরা ব্যাংকের দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে থাকা গ্রাহক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার বাবা হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ঈদের পরদিন তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা রয়েছে। সে জন্য আগেই টাকা তুলে রাখতে হচ্ছে।
এদিকে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের বাংলামোটর শাখায় আসা গ্রাহক হোসনে আরা বলেন, আমার স্বামী সৌদি আরব থেকে টাকা পাঠিয়েছে। সেই টাকা তুলতেই এসেছি। ভিড় থাকলেও লেনদেনের গতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান।
এদিকে অন্য ব্যাংকগুলো খোলা না থাকলেও পোশাকশিল্প এবং বেসরকারি শিক্ষকদের লেনদেনের সুবিধার্থে আগামী দুই দিন নির্দিষ্ট কিছু শাখা সীমিত সময়ের জন্য খোলা থাকবে। এর মধ্যে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এবং পরদিন শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ওই সব শাখা খোলা রাখা হবে। এই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামসহ সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যাংকের শাখায়। এদিকে ঈদের আগে বেশির ভাগ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ও উৎসব ভাতার টাকা পরিশোধ করতে শুক্রবার খোলা থাকছে রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংক। সোনালী, রূপালী, অগ্রণী ও জনতা ব্যাংক শুক্রবার খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়ে বৃহস্পতিবার সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তবে ঈদের ছুটিতে ব্যাংক বন্ধ থাকলেও গ্রাহকরা নির্বিঘ্নে এটিএম বুথ, অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং করতে পারবেন। এ সময় টাকা তোলা এবং জরুরি লেনদেনের জন্য ডিজিটাল সেবার ওপর গ্রাহকদের নির্ভর করতে হবে।