
ঈদ শেষ হয়েছে ১০ দিন। রমজানে বেড়ে থাকা মাংস বেগুন, শসা লেবুর দাম এখনো কমেনি। বরং এক মাসের ব্যবধানে মুরগির মাংসের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা। চিকন চালের দামও কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। চাহিদা কমলেও বেগুন, শসা সেঞ্চুরির ওপরে। ফুলকপির দাম দ্বিগুণ হয়ে ৮০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। অন্য সবজির দামও কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। তবে আলু, পেঁয়াজ, ডিম, চিনি, আটা, সয়াবিন তেলের দাম বাড়েনি।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্রয়লারের কেজি ২১০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, মোকামের (আড়ৎ) দামের ওপর বাজার নির্ভর করে। আমরা দাম কম পেলে কম দামেই বিক্রি করতে পারি, বেশি হলে ভোক্তাদের টাকা বেশি লাগে।
এ ব্যাপারে হাতিপুল বাজারের সবুজ পোলট্রি ফার্মের আবুল বাশার খবরের কাগজকে বলেন, ‘দামের ব্যাপারে আমাদের করার কিছু নেই। যেভাবে কেনা, সেভাবেই বিক্রি করা হয়। রমজান মাসের প্রথমে চাহিদা বেশি ছিল। তার পরও ব্রয়লার ১৭৫ থেকে ১৮০, সোনালি ২৭০-২৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা বিক্রি হয়েছে। কিন্তু মাসখানেক পরে সেই দর আর নেই। ব্রয়লার মুরগি ২১০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।’
এদিকে টাউন হল বাজারের গাজীপুর ব্রয়লার হাউসের স্বত্বাধিকারী মো. রানা মাসুদসহ অন্যরাও বলেন, ‘আগের চেয়ে মুরগির দাম বেড়েছে। তাই ব্রয়লার মুরগি ২০০ ও সোনালি ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।’
তবে মুরগির দাম চড়লেও ডিমে একটু স্বস্তি দেখা গেছে। আগের মতোই ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে আগের মতোই রুই, কাতল মাছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি, পাবদা ৪০০, চিংড়ি ৮০০-১০০০ টাকা পাঙাশ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
চোখ রাঙাচ্ছে সবজি
রমজানের প্রথম দিকে বেগুন, শসা, লেবুর চাহিদা বাড়তে থাকায় সেগুলোর দাম সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে যায়। ঈদের আগের দিন বাজারে আরও উত্তাপ ছড়ায়। ঈদ শেষে দাম একটু কমেছে। কিন্তু যেভাবে বেড়েছে সেইভাবে আর কমেনি। হাতিরপুল বাজারের সবজি বিক্রেতা তাজুল ইসলাম ও টাউন হল বাজারের সবজি বিক্রেতা ইব্রাহীম শেখ প্রায় একই সুরে কথা বলেন।
তাদের কথায় উঠে আসে, ‘অধিকাংশ সবজির দাম বেড়ে গেছে। লম্বা বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, সবুজ বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, হাইব্রিড শসার কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা ও দেশিজাতের শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বড় লেবুর হালি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ছোট লেবু ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। কাঁচা মরিচের কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। তবে ফুলকপির দাম দ্বিগুণ হয়েছে। প্রতি পিস ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা পিস, করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি, পটোল ও ঢ্যাঁড়শ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।’
খুচরা বিক্রেতারা বলেন, আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, দেশি আদা ১৩০ টাকা, আমদানি করা আদা ২২০, দেশি রসুন ১২০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এদিকে রমজানকে কেন্দ্র করে দেশে এবার প্রচুর আমদানি হলেও রমজানে খেজুরের দাম কমেনি। ঈদ শেষেও তা কমেনি।
চাহিদা কমলেও চিকন চালের দাম চড়া
রমজানে চালের চাহিদা কমে যাওয়ায় বিক্রি কমে যায়। তার পরও কিন্তু দাম কমেনি। বরং এক মাসের ব্যবধানে চিকন চালের দাম কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে ভালো মানের মোজাম্মেল কোম্পানির চাল ৯০ টাকা থেকে বেড়ে ৯৬ টাকা কেজি হয়ে গেছে। তবে রশিদ, সাগরসহ অন্য মিনিকেট চাল ৭৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি, আটাশ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা ও মোটা চাল ৫২ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার ১৭৫ টাকা, ২ কেজির আটা ১২০ টাকা, ছোলার কেজি ১০৫ টাকা, মসুর ডাল ১২০ থেকে ১৩৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।