ঢাকা ১৭ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

পুঁজিবাজার এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বোচ্চ দরপতন

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪০ এএম
এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বোচ্চ দরপতন
এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড

সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দরপতনের শীর্ষে উঠে এসেছে এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

বুধবার (১৬ মার্চ) ফান্ডটির ইউনিট দর আগের দিনের চেয়ে ৪০ পয়সা বা ৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ কমেছে।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের শেয়ার দর আগের দিনের চেয়ে ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ কমেছে। আর তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের দর কমেছে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ইস্টার্ন কেবলস, রিলায়েন্স ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ড, ফার্স্ট জনতা ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ড, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড, বিএসসি এবং এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড।

বাংলাদেশ এখন আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল নয়: অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২০ পিএম
আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৬ পিএম
বাংলাদেশ এখন আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল নয়: অর্থ উপদেষ্টা
সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের ওপর নির্ভর করে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আইএমএফের সহায়তা ছাড়াই বাংলাদেশের রিজার্ভ স্থিতিশীল। তারা বাজেট সহায়তা যেটা দিতে চেয়েছে তা না দিলে বাংলাদেশ সরকার নিজেরাই সেটা করতে পারবে। আইএমএফের ঋণ কর্মসূচি বজায় রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ কঠিন সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকে অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফিরে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ গতকালই প্রথম অফিস করেন। ওই বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার প্রমুখ যোগ দিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে ২১ এপ্রিল শুরু হয়ে ২৬ এপ্রিল শেষ হয় এ বৈঠক। বসন্তকালীন বৈঠকের ফাঁকে আইএমএফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সাইডলাইনে আলাদা বৈঠক হয়।

এর আগে, চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির পর্যালোচনা করতে আইএমএফের একটি মিশন দুই সপ্তাহের জন্য ঢাকা ঘুরে গেছে। কিন্তু ঢাকা বা ওয়াশিংটন- কোথাও আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচি থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ পাওয়া নিয়ে ইতিবাচক কোনো বার্তা পাওয়া যায়নি।

এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, আইএমএফের সব শর্ত মেনে আমরা ঋণ নিতে চাই না। তারা যে শর্ত দিয়েছে এর সব আমরা বাস্তবায়ন করব না। আমাদের স্বার্থেই আমরা নেব। তারা অযৌক্তিকভাবে যদি ঋণ না দেয় সেটা তাদের সমস্যা। আমরা তো ঋণের বোঝা নিতে চাই না। আমি যদি ঋণ নিতে থাকি, টাকার বিনিময় হার কমে গেলে আমার যেখানে ৩ বিলিয়ন ডলার শোধ করার কথা, পরে ওটা ৫ বিলিয়ন ডলার হয়ে যাবে। তখন আমার ১৬০-১৮০ টাকা করে ডলার কিনতে হবে। আমরা এসব বিষয় চিন্তাভাবনা করছি। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে এখন আমরা আর আইএমএফ নির্ভরশীল না। ওই দিন চলে গেছে। বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার শর্ত রয়েছে আইএমএফের; এ কথা উল্লেখ করে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তারা বলেছে, বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে। আমরা বলেছি, বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তা পুরোপুরি বাজারে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তখন বিনিময় হার পাকিস্তান বা শ্রীলঙ্কার মতো হয়ে যেতে পারে।’ অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নেব আমাদের মতো। এতে আইএমএফ কিস্তি দিলে দেবে, না দিলে নিজেদের মতো করে বাজেট করব।’ তিনি বলেন, আইএমএফ থেকে টাকা পয়সা না নিয়েই ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেট ও রিজার্ভ স্থিতিশীল আছে। এই সরকার আসার পর কিন্তু আমরা আইএমএফ থেকে কোনো টাকা পাইনি। তাদের বলেছি তোমাদের টাকা ছাড়াই আমরা সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীল আনতে পেরেছি। তাই আমরা চিন্তাভাবনা করছি নিজেদের মতো করে বাজেট দিতে চেষ্টা করব।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বাজেট সাপোর্ট নিয়ে আলোচনা চললেও বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আমাদের প্রজেক্ট সাপোর্ট দিতে চেয়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রজেক্ট ঋণ ওরা বলেছে কন্টিনিউ করবে। এডিবিও পাইপলাইনে আছে। এ ছাড়া এআইবি থেকে ১ মিলিয়ন ডলার চেয়েছি। এনডিবি ও ইসলামি ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক থেকে সহায়তা চেয়েছি। ফলে প্রজেক্ট সাপোর্টের ব্যাপারে তেমন কোনো সমস্যা দেখছি না। 

দেশের ঋণমান পুনর্বিবেচনার আহ্বান বাংলাদেশ ব্যাংকের

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫৪ পিএম
দেশের ঋণমান পুনর্বিবেচনার আহ্বান বাংলাদেশ ব্যাংকের
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

বহুজাতিক কয়েকটি প্রধান ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা বাংলাদেশের রেটিং একাধিকবার কমিয়েছে। সংস্থাগুলোকে দেশের রেটিং পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কয়েকটি রেটিং এজেন্সির সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে রেটিং এজেন্সিগুলোকে বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমান বিভিন্ন সূচকের অগ্রগতি নিয়ে রেটিং এজেন্সিগুলো সন্তুষ্ট। তাদের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে রেটিংয়ের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।’ 

আরিফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ২০২৬ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবে। তখন বৈদেশিক ঋণ বা সহায়তা পাব না। যেটুকু সময় আছে তার থেকে যাতে বঞ্চিত না হয়, তাই রেটিং এজেন্সিগুলোকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করার কথা বলা হয়েছে।’ 

গত বছরের জুলাইতে বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঋণমান যাচাইকারী কোম্পানি এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের ঋণমান ‘বিবি মাইনাস’ থেকে কমিয়ে ‘বি প্লাস’ করেছে। এর আগে সর্বশেষ যে প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের ঋণমান অবনমন করেছিল, সেটি হলো ফিচ রেটিংস। গত মে মাসের শেষ দিকে তারা ৮ মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে দেয়। তখন প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের ফরেন কারেন্সি ইস্যুয়ার ডিফল্ট রেটিং (আইডিআর) ‘বিবি মাইনাস’ থেকে ‘বি প্লাস’ করে, যদিও দেশের অর্থনীতি সম্পর্কিত পূর্বাভাস স্থিতিশীল রাখে তারা। এরপর রেটিং এজেন্সি মুডিসও দীর্ঘমেয়াদে দেশের ঋণমান কমিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে দেশের বেশ কয়েকটি বড় ব্যাংকেরও ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে সংস্থাটি। 

সে সময়ই বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছিল, মুডিস রেটিংস বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান কমানো যথাযথ হয়নি। এই বিষয়ক এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছিল, গণ-অভ্যুত্থানের পর নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করেছে, তা মুডিস রেটিংসে যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি। মুডিসের প্রতিবেদনে ব্যাংক খাতের সংস্কার, ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিষয়ে বর্তমান সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে বলা হয়েছিল, ‘আমরা আশা করি, মুডিস শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের পর দেশের অর্থনীতির আরও ব্যাপকভাবে মূল্যায়ন করবে। তখন তারা সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও অভিজ্ঞ অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সরাসরি পরামর্শ করবে। এর ফলে সরকারের নেওয়া নীতি ও উন্নয়নের সঠিক মূল্যায়ন করতে সক্ষম হবে তারা।’

সোমবারের বৈঠকে মূল্যস্ফীতি, ডলার রেট, নতুন টাকা ও দুর্বল ব্যাংকসহ দেশের অর্থনীতির প্রতিটি সূচক নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র। 

তিনি বলেন, ‘দুর্বল ব্যাংকের অনিয়মের কারণে কয়েকটি ব্যাংকে তারল্য সংকট পড়ে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে দেওয়া হয়। এসব ব্যাংকের প্রকৃত চিত্র দেখার জন্য টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ব্যাংক রেজল্যুশন অ্যাক্ট করা হয়েছে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি কাঙ্ক্ষিত হারে কমানো যায়নি। তবে কিছুটা কমছে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ায় ডলারের দর স্থিতিশীল রয়েছে, এটা ভালো দিক। 

হকারদের শৃঙ্খলায় আসতে হবে: মেয়র শাহাদাত

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৮ এএম
আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫৮ এএম
হকারদের শৃঙ্খলায় আসতে হবে: মেয়র শাহাদাত
চসিক কার্যালয়ে হকার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন মেয়র ডা. শাহদাত হোসেন। ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম নগরীর যানজট কমাতে হকারদের শৃঙ্খলায় আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকালে চসিক কার্যালয়ে হকার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মেয়র এ কথা বলেন। 

তিনি বলেন, ‘আগ্রাবাদ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক এলাকা। এখানে ৫টার আগে হকাররা বসতে পারবেন না এবং রাস্তায় যত্রতত্র চৌকি বসানো যাবে না। নিউ মার্কেটে দুপুর ৩টার পর বসবেন। নগরীতে যত্রতত্র হকাররা বসতে পারবেন না। আমি যেভাবে নিয়ম করে দিয়েছি সেভাবে ব্যবসা করেন। হকারদের ব্যবসা করার স্থান নির্ধারণের জন্য আমি জায়গা খুঁজছি। আমরা প্রয়োজনে হকারদের তালিকা করব। ফ্লাইওভারের নিচে পে-মার্কেট মডলে হকারদের ব্যবসা করার জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে।’

সভায় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, বিএনপির কেন্দ্রীয় শ্রমিক সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দিন, কাজী নুরুল্লা বাহার, শ ম জামাল উদ্দিন, তাহের আহমদ, মো. আনোয়ার, মো. দুলাল, মো. বাতেন, মো জসিম প্রমুখ। 

সভায় চট্টগ্রাম সম্মিলিত হকার্স ফেডারেশনের পক্ষে হকারদের প্রস্তাবিত দাবিসমূহ: ১. জাতীয় শ্রমনীতির আলোকে সিটি করপোরেশন কর্তৃক হকার্স পুনর্বাসন নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে হকারদের পুনর্বাসন করা। পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত হকার অধ্যুষিত এলাকায় ফুটপাতের একপাশে শৃঙ্খলার সহিত ব্যবসা করার সুযোগ প্রদান করা। ২. সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নগরীতে কর্মরত হকার শ্রমিকদের তালিকা প্রণয়ন করে ই-ট্রেড লাইসেন্স ও যৌক্তিকভাবে ফি নির্ধারণ করা। ৩. শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রম দপ্তর নিবন্ধিত ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনসমূহের প্রতিনিধি সিটি করপোরেশন কর্মকর্তার দ্বারা হকার সব সদস্যের তালিকা প্রণয়ন করা। ৪. চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন/ শ্রম অধিদপ্তর/ হকার সংগঠন জাতীয় শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে যৌথ কমিটি গঠন করা। ৫. সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ-ছিনতাই প্রতিরোধসহ নগরীর আইন-শৃঙ্খলা উন্নয়নে করপোরেশনের উদ্যোগে শ্রমিক-হকার নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা।

তাওফিক/ 

বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর শেয়ারে মার্জিন ঋণ না দেওয়ার প্রস্তাব টাস্কফোর্সের

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০০ এএম
বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর শেয়ারে মার্জিন ঋণ না দেওয়ার প্রস্তাব টাস্কফোর্সের
প্রতীকী ছবি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর শেয়ার ক্রয়ে মার্জিন ঋণ না দেওয়ার প্রস্তাব করেছে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে গঠিত সংস্কার টাস্কফোর্স। এ ছাড়া যেসব বিনিয়োগকারীর দুটি বিও হিসাব রয়েছে, তার একটি যদি মার্জিন ঋণের মাধ্যম বিনিয়োগ করে লোকসান হয়, তাহলে অপর নন-মার্জিন হিসাবের শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের প্রস্তাব করা হয়েছে। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) আগারগাঁও বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে মার্জিন ঋণের বিষয়ে টাস্কফোর্সের চূড়ান্ত সুপারিশ প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে টাক্সফোর্সের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে টাস্কফোর্সের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এই প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে আমরা এ-সংক্রান্ত সব অংশীজনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছি। তারপরও আমাদের এই প্রতিবেদনে কোনো অংশ নিয়ে কারও কোনো দ্বিমত থাকলে আমরা অনুরোধ জানাব, আপনারা আমাদের সংশোধন করে দেবেন।’ 

সংবাদ সম্মেলনে প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি এবং সিইও মো. মনিরুজ্জামান সার্বিক বিষয় উপস্থাপন করে বলেন, মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স ‘মার্জিন রুলস’সংক্রান্ত চূড়ান্ত সুপারিশ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) জমা দেওয়া হয়েছে। সেখানে একজন বিনিয়োগকারী ১:১ অনুপাতে সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত মার্জিন ঋণ নিতে পারবেন বলে সুপারিশ করা হয়েছে। তবে টাস্কফোর্সের কাছে ১:০.৫ অনুপারে মার্জিন ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন পুঁজিবাজার অংশীজনরা। 

নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী ৩০ দিন পর্যন্ত যেই কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ের ক্ষেত্রে মার্জিন ঋণ না দেওয়ার বিধান আছে। কিন্তু টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে তা অন্তত তিন মাস পর্যন্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই তিন মাসের সেই কোম্পানির কোনো না কোনো প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী সেই কোম্পানি মার্জিন ঋণ পাবে কি না, সেটি নির্ধারণ করা যাবে। 

তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বিষয়ে টাস্কফোর্সের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চুক্তিভিত্তিক হয়ে থাকে। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেল সেগুলোর নতুন করে অনুমোদন পাবে কি না তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। এ জন্য এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের শেয়ার ক্রয়ের ক্ষেত্রে মার্জিন ঋণ না দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। 

বলা হয়েছে, যেকোনো বিনিয়োগকারীর দুটি অ্যাকাউন্ট থাকে এবং এর একটি যদি মার্জিন ঋণের হিসাব হয় আর অপরটি নন-মার্জিন অ্যাকাউন্ট হয় তাহলে মার্জিন ঋণের হিসাবে শেয়ারের দাম ক্রয়মূল্যের চেয়ে কমে গেলে অপর অ্যাকাউন্টের শেয়ার বিক্রি করে তার হিসাব সমন্বয় করা যাবে। এমন প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মার্জিন ঋণের অ্যাকাউন্ট নেগেটিভ হলে ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান তারল্য সমস্যার সম্মুখীন হন এবং সেই বিনিয়োগকারীও লোকসানের কারণে নতুন বিনিয়োগ করতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে অপর হিসাব থেকে ঋণ সমন্বয় করা হলে প্রতিষ্ঠানের জন্য তা ভালো হবে। বিনিয়োগকারীও ঋণমুক্ত হবেন। 

পেনশনহোল্ডার, শিক্ষার্থী বা গৃহিণীদের নিয়মিত আয়ের ব্যবস্থা থাকে না। তারা মার্জিন ঋণ নিলে অনেক সময় সমস্যায় পড়ে যান। নিয়মিত আয় না থাকায় মার্জিন ঋণ পরিশোধ তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে যায়। সে জন্য যাদের নিয়মিত আয় আছে মার্জিন ঋণ নিলে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হন না, বাজারও ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। এ জন্য আমরা যাদের নিয়মিত আয়ের ব্যবস্থা আছে, তাদের জন্যই মার্জিন ঋণের সুপারিশ করা হয়েছে। 

টাস্কফোর্সের সুপারিশে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি বাড়ি ভাড়া পান, তার কিন্তু আয়ের একটা ব্যবস্থা আছে। মার্জিন ঋণ তার জন্য রেস্ট্রিক্টেড না। কিন্তু যাদের নিয়মিত আয় থাকে না, যেমন- অবসরের পর যে ভাতা পাওয়া যায় তা দিয়ে এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগের ঋণ পরিশোধ করা কঠিন। 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর কোথাও মার্জিন ঋণ দীর্ঘ সময়ের জন্য দেওয়া হয় না। এ ঋণ নিয়ে সাধারণত বাজার সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকা দক্ষ বিনিয়োগকারীরা ব্যবসা করেন। তারা স্বল্প সময়ের জন্য ঋণ নিয়ে তা দ্রুত পরিশোধ করে দেন।

এর আগে গত রবিবার বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ কাছে মার্জিন রুলস, ১৯৯৯-এর যুগোপযোগীকরণে চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দেন পুঁজিবাজারের উন্নয়নে গঠিত সংস্কার টাস্কফোর্স। এ সময় কমিশনার মো. আলী আকবর ও কমিশনার ফারজানা লালারুখ উপস্থিত ছিলেন। 

এ ছাড়া সংস্কার টাস্কফোর্সের পক্ষে টাস্কফোর্সের সদস্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিএসই বিভাগের অধ্যাপক মো. মোস্তফা আকবর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন উপস্থিত ছিলেন। 

গত ৭ অক্টোবর ২০২৪ পুঁজিবাজার উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক মানের সুশাসন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার সংস্কারের সুপারিশের জন্য পাঁচ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। 

পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট টাস্কফোর্সের সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান, নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোংয়ের জ্যেষ্ঠ অংশীদার এ এফ এম নেসারউদ্দীন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিএসই বিভাগের অধ্যাপক মো. মোস্তফা আকবর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন।

বিএসইসি গঠিত পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের কার্যপরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭টি। এরই মধ্যে মার্চেন্ট ব্যাংক, আইপিও ও মার্জিন ঋণের বিষয়ে টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে কমিশনে। এর মধ্যে রয়েছে পুঁজিবাজারের আকার, তথা জিডিপি ও বাজার মূলধন অনুপাত কম হওয়ার প্রধান কারণগুলো চিহ্নিত করা ও উন্নতির জন্য নীতি প্রণয়নের প্রস্তাব, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে ব্যাংকঋণের বদলে পুঁজিবাজার থেকে অর্থায়নে সরকারের নীতি প্রণয়ন ও এ–সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিএসইসির প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের সুপারিশ করা; বাজারের সুশাসনের উন্নতির জন্য বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো বিশ্লেষণ করে সমাধানের সুপারিশ প্রণয়ন; বিএসইসির প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সুপারিশ; ডিএসই, সিএসই, সিডিবিএল, সিসিবিএলের তদারকি কার্যক্রম বিশ্বমানে উন্নীত করাসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সুশাসন নিশ্চিতে সুপারিশ প্রণয়ন; প্রাইভেট প্লেসমেন্টসংক্রান্ত সিকিউরিটিজ নীতিমালা যুগোপযোগী করতে সুপারিশ; তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন, করপোরেট ঘোষণাসহ বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা ও বাজারের গভীরতা বৃদ্ধির সুপারিশ প্রণয়ন; বাজার মধ্যস্থতাকারীদের জন্য বিদ্যমান আইন ও বিধিবিধান যুগোপযোগী করতে সুপারিশ করা; বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও আস্থা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান; বাজারে কারসাজি, অনিয়মের বিচার ও জরিমানার সমতা আনতে সুনির্দিষ্ট পেনাল কোড এবং শাস্তির বিধিমালা প্রণয়ন করা; নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের জন্য একটি মানসম্মত পদ্ধতি বা নির্দেশিকা প্রণয়ন; তালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে অ–তালিকাভুক্ত কোম্পানি একীভূত, অধিগ্রহণসংক্রান্ত হাইকোর্টের অনুমোদনের আগে বিএসইসির অনাপত্তি গ্রহণসংক্রান্ত সুপারিশ করা ইত্যাদি।

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০২ এএম
নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমে এক গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করেছে।

ডিএসসিসির গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’ অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো একদিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদনই ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি ঢাকা জেলায় পাঁচটি উপজেলা রয়েছে। সাভার, ধামরাই, কেরানীগঞ্জ, দোহার ও নবাবগঞ্জ- এই পাঁচ উপজেলার মধ্যে শুধু সাভারের ছয়টি রেস্তোরাঁর লাইসেন্স রয়েছে।

বেইলি রোডের আগুনের পর রাজধানীজুড়ে অভিযান শুরু করে সরকারের পাঁচ সংস্থা- রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। মাঝে মাঝে সংস্থাগুলোর ‘বিচ্ছিন্ন’ অভিযানে রেস্তোরাঁ ভেঙে ফেলা, সিলগালা করে দেওয়া, কর্মীদের গ্রেপ্তার ও জরিমানার ঘটনা ঘটে। এর বাইরে সারা বছরই রেস্তোরাঁয় অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন সংস্থা। রেস্তোরাঁর মালিকদের অভিযোগ, সারা বছর সংস্থাগুলোর অসাধু কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করেই তাদের চলতে হয়।

তখন নগর পরিকল্পনাবিদ ও স্থপতিরা বলেছেন, রেস্তোরাঁয় উদ্যোক্তাদের কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। এতে লাখো মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। রেস্তোরাঁগুলোকে নিয়মের মধ্যে আনা দরকার। কিন্তু বিচ্ছিন্ন অভিযানে কোনো সমাধান আসবে না।