
চট্টগ্রামের বাজারগুলোয় অধিকাংশ সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ সংকটের কারণে সবজির দাম বেড়েছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। নগরের বিভিন্ন বাজারে কয়েক পদের সবজির দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। পাশাপাশি অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকার উপরে। এদিকে সবজির দাম বাড়ায় ক্রেতারা অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। তবে মাছ, মাংসের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর কাজীর দেউড়ি চকবাজার ও বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি পটোল ৭০ টাকা, কাঁকরোল ১৪০ টাকা, করলা ৮০ টাকা ও কচুরলতি ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ঝিঙ্গা কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সবজিও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। বাজারে প্রতিকেজি ঢ্যাঁড়শ ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুমুখী ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা ও কাঁচা পেঁপে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।
বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. শরীফ বলেন, ‘শীতকালে বাজারে সবজির ভরপুর সরবরাহ ছিল। তাই দামটাও ছিল একেবারে কম। বর্তমানে আড়তে সবজির সরবরাহ কমায় বাজারেও এর আচ পড়েছে। তাই দাম বেড়ে গেছে।’ একই বাজারে কথা হয় ক্রেতা মো. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শুধু আলু ছাড়া অন্য সব সবজির দাম বাড়তি। সবজিই যদি ১০০ টাকা দিয়ে কিনে খেতে হয় তা হলে আমরা সাধারণ মানুষ কীভাবে টিকে থাকব। এটা খুবই দুঃখজনক। বাজার তদারকিব্যবস্থা জোরদার করা দরকার।’
রিয়াজুদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক শিবলী জানিয়েছেন, গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ বেড়ে গেলে তখন সব ধরনের সবজির দাম কমে আসবে।
তবে খুচরা বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খাতুনগঞ্জে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। এসব পেঁয়াজ খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। তা ছাড়া খুচরায় সীমিত পরিমাণে সরবরাহ দেখা গেছে ভারতীয় পেঁয়াজের। এসব পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। পাশাপাশি খুচরা পর্যায়ে সপ্তাহের ব্যবধানে চায়না রসুনের কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে প্রতি কেজি কেরালা আদা আগের ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন খবরের কাগজকে বলেন, বাজারে পণ্যের সরবরাহ কেমন, খুচরা বিক্রেতা কত দামে কিনছেন, কত দামে বিক্রি করছেন- এসব বিষয় খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তা হলে খুচরা ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফা করার সাহস পাবে না।
এদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে মাংসের বাজার। বাজারে প্রতি কেজি হাড়সহ গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, হাড় ছাড়া গরুর মাংস ৯৫০ টাকা, গরুর কলিজা ৫০০ টাকা ও খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা ও সোনালি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিম ডজনে ১০ টাকা বেড়ে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তা ছাড়া মাছের বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০ টাকা, লইট্টা ২২০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, মৃগেল ২৬০ টাকা, কাঁচকি ৬০০ টাকা ও বড় আকারের রূপচাঁদা মাছ ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মুদি দোকানে প্রতি কেজি খোলা আটা ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছু কিছু দোকানে ৪২ টাকা চাইতে দেখা গেছে। প্রতি কেজি প্যাকেট আটা ৫৫ টাকা ও প্রতি কেজি প্যাকেট ময়দা ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা ছাড়া প্রতি কেজি খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। পাশাপাশি প্রতি কেজি ছোলা ১২০ টাকা, মসুর ডাল (মোটা) ১১০ টাকা, মসুর ডাল (চিকন) ১৩৫ টাকা, মুগডাল (মোটা) ১৪০ টাকা, বুটের ডাল ১২০ টাকা, খোলা চিনি ১২০ টাকা ও প্যাকেট চিনি ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।