ঢাকা ১০ আষাঢ় ১৪৩২, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
English

শ্রমিকদের স্বল্প সুদে গৃহঋণ দেওয়ার সুপারিশ

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০২ এএম
আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১১ এএম
শ্রমিকদের স্বল্প সুদে গৃহঋণ দেওয়ার সুপারিশ
ছবি : খবরের কাগজ

শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য শিল্পাঞ্চলে হাসপাতাল স্থাপন ও ‘শ্রমিক স্বাস্থ্য কার্ড’ চালুর সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। এ ছাড়া স্বল্পমূল্যে আবাসন নিশ্চিতে ‘শ্রমিক আবাসন তহবিল’ গঠনের পাশাপাশি স্বল্প সুদে গৃহঋণ ও আবাসন ভর্তুকির জন্য বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে কমিশন।

রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) ও বাইরের শ্রমিকদের জন্য একক শ্রম আইন প্রণয়নের কথাও বলা হয়েছে শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে। কমিশন বলেছে, ইপিজেডের জন্য যদি আলাদা শ্রম আইন করতেও হয়, তবে সেটি যেন সাধারণ শ্রম আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদের নেতৃত্বাধীন শ্রম সংস্কার কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেয় ১৮ সদস্যের শ্রম সংস্কার কমিশন। ‘শ্রম জগতের রূপান্তর-রূপরেখা: শ্রমিক অধিকার, সুসমন্বিত শিল্প সম্পর্ক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে মোট ২৫টি সুপারিশ রয়েছে।

শ্রম সংস্কার কমিশন বিভিন্ন খাতের শ্রমিকের মজুরি তিন বছর পরপর মূল্যায়ন ও পুনর্নির্ধারণ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মজুরি না দিলে ক্ষতিপূরণ, মূল্যস্ফীতির ভিত্তিতে বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধি, রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের জন্য আপৎকালীন তহবিল, ট্রেড ইউনিয়ন করার শর্ত শিথিল, স্থায়ী কাজের জন্য আউটসোর্সিং নিয়োগ বন্ধ, নারী শ্রমিকের মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস, স্থায়ী শ্রম কমিশন প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেছে।

শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের জন্য নির্দিষ্ট হাসপাতাল স্থাপন এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসা, সঠিক পরামর্শ ও সেবা নিশ্চিতের সুপারিশ করেছে কমিশন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রমিকের প্রয়োজন বিবেচনায় হাসপাতালে বিনামূল্যে সন্ধ্যাকালীন সেবা থাকতে হবে। শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য শ্রমিক স্বাস্থ্য কার্ড চালু করতে হবে, যা তাদের স্বাস্থ্যতথ্য ও প্রাপ্য সুবিধাদি গ্রহণে সাহায্য করবে; পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টা টোল ফ্রি টেলিমেডিসিন সেবা দিতে হবে, যাতে শ্রমিকরা যেকোনো সময় স্বাস্থ্যসংক্রান্ত পরামর্শ নিতে পারেন। এ ছাড়া শ্রমিকরা যাতে কম খরচে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারেন, সে জন্য সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যবিমা চালু করার সুপারিশ করেছে কমিশন।

স্বল্প মূল্যে আবাসন নিশ্চিতে ‘শ্রমিক আবাসন তহবিল’ গঠনের পাশাপাশি স্বল্প সুদে গৃহঋণ ও আবাসন ভর্তুকির জন্য বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে। কমিশন বলছে, শ্রমিকদের জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্বল্প সুদে গৃহঋণের সুবিধা চালু করা দরকার; পাশাপাশি শ্রমিকের আবাসন নিশ্চিতে শিল্পমালিককে উৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেওয়ার জন্য একটি নীতিমালা করতে হবে। এ ছাড়া ‘শ্রমিক আবাসন নীতি’ করে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে শিল্পাঞ্চল ও শ্রমঘন এলাকায় সাশ্রয়ী আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা 
দরকার।

সব কর্মস্থল বা অঞ্চলভিত্তিক শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র বা ডে কেয়ারের ব্যবস্থা চালু করতে আইন সংশোধনের সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। এ বিষয়ে কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারখানা বা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ডে কেয়ারের পাশাপাশি শিল্পাঞ্চল ও শ্রমিকের বসবাসের এলাকায় সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে কমিউনিটি-ভিত্তিক ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন করতে হবে। ডে কেয়ার পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান, স্থানীয় সরকার ও সমবায় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি সমন্বিত কাঠামো তৈরিরও প্রস্তাব করা হয়েছে।

শিশুশ্রম নিরসনে রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকার, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের লক্ষ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে কর্মে নিয়োজিত হওয়ার বয়স ১৬ বছরে উন্নীত করার সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনের পক্ষ থেকে। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-তরুণদের এমন কাজে নিয়োগের সুযোগ থাকা উচিত, যা তাদের দক্ষতা ও সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়ক। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে শ্রম মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

ক্ষতিপূরণের শর্ত শিথিল: বর্তমানে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। এটি অপ্রতুল উল্লেখ করে ক্ষতিপূরণের হার বৃদ্ধি করে সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারণের সুপারিশ করেছে কমিশন। এ ছাড়া মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণের জন্য দুই বছরের চাকরির শর্ত বাতিল করে এক বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। চাকরি থেকে বরখাস্তের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার বিধান বাতিল শ্রমিকের পূর্ববর্তী চাকরির ভিত্তিতে প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ বা গ্র্যাচুইটি ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিতেরও প্রস্তাব করা হয়। কমিশন বলেছে, শ্রমিকের চাকরি যেভাবেই শেষ হোক না কেন, সবার জন্য গ্র্যাচুইটি বা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আইনি নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে হবে।

কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেকোনো শিল্প খাত, বিশেষায়িত শ্রম অঞ্চল, প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক এবং কাজের ধরন–নির্বিশেষে সব শ্রমিকের জন্য সমানভাবে শ্রম আইনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এই লক্ষ্য অর্জনে বিদ্যমান শ্রম আইনের ব্যাপক সংস্কার অথবা নতুন ও সমন্বিত এক বা একাধিক শ্রম আইন প্রণয়ন করতে হবে। শ্রম আইনের সব ক্ষেত্রে ‘মালিক’ শব্দের পরিবর্তে ‘নিয়োগকারী’ শব্দটি ব্যবহার করতে হবে।

রাইড শেয়ার করা চালকদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে শ্রম অধিকার, ন্যায্য মজুরি ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে কমিশন। একই সঙ্গে রাইড শেয়ারিংয়ে কোম্পানিগুলোর কমিশনের হার যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনা, বিশেষ মজুরি কাঠামো নির্ধারণ, শ্রমিকদের অ্যাকাউন্ট স্থগিত বা বাতিল করার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে।
শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ বলেন, আমরা কোনো অবাস্তব সুপারিশ করিনি। সব শ্রমিকের জন্য ন্যূনতম সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করেছে কমিশন।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুরুতে কোন কাজগুলো বাস্তবায়ন করা যায় এবং কোন মন্ত্রণালয় কীভাবে সেগুলো করতে পারে, তার একটি রূপরেখা আমরা দেব। সেই রূপরেখায় বর্তমান সরকার কী কী বাস্তবায়ন করতে পারে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনি ইশতেহারে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে।’

একনেকে ৮৯৭৪ কোটি টাকার ১৭ প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ০৩:৪১ পিএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫, ০৪:৩৪ পিএম
একনেকে ৮৯৭৪ কোটি টাকার ১৭ প্রকল্প অনুমোদন
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: পিআইডি

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৮ হাজার ৯৭৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৭টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেকের চেয়ারপারসন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, অনুমোদিত ১৭টি প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৮ হাজার ৯৭৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন থেকে ব্যয় করা হবে ৩ হাজার ১৮০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে আসবে ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থাকবে ২৩০ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

সভায় অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ প্রকল্প, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগণের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প, বিভাগীয় শহরে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মাদক নিরাময় কেন্দ্র নির্মাণ, নতুন ৪টি মেরিন একাডেমিতে প্রশিক্ষণ সুবিধা স্থাপন, আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সম্প্রসারণে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন, বিভিন্ন জেলায় নতুন সার গোডাউন নির্মাণ, অ্যাক্সেস টু জাস্টিস ফর উইমেন প্রকল্প, কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সেবা জোরদারকরণ, টিভিইটি শিক্ষক উন্নয়ন প্রকল্প, দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি প্রকল্প, উন্নয়ন বাজেট ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল ডাটাবেজ স্থাপন, পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম উন্নয়ন, সরকারি কেনাকাটা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং পরিসংখ্যান দক্ষতা ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।

সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব উপস্থিত ছিলেন।

সালমান/

ব্যবসা কার্যক্রম পরিদর্শনের নির্দেশ বিএসইসির

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ০১:০৫ পিএম
ব্যবসা কার্যক্রম পরিদর্শনের নির্দেশ বিএসইসির
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষায় কোম্পানিটি ভবিষ্যতে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার মতো সক্ষমতার অভাব হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

সম্প্রতি বেশ কিছু নির্দেশনা সাপেক্ষে বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ৩০ জুন ২০২৩-২৪ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষিত বেশ কিছু বিষয়ে আপত্তি বা মতামত জানিয়েছে। ওই মতামতের ভিত্তি কোম্পানির সার্বিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিদর্শন করা প্রয়োজন বলে মনে করে কমিশন।

এ-সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ২০২০-এর রুল ১৭ এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (লিস্টিং) রেগুলেশন, ২০১৫-এর রেগুলেশন ৫৪(১)-এর অধীনে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের বিষয়গুলোর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে একটি পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করার নির্দেশ দেওয়া হলো। একই সঙ্গে পরিদর্শন কার্যক্রম সম্পন্ন করার পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে পরিদর্শন প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হলো।

৩০ জুন ২০২৩-২৪ সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানির  লোকসান ১০৪ কোটি ২৯ লাখ ৭৯ হাজার ৯১০ টাকা এবং ঋণের পরিমাণ ২৬ কোটি ৮৪ লাখ ৭৪ হাজার ৭৫১ টাকা। কিন্তু কোনো ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি কোম্পানিটি। ফলে স্ট্যাটুটরি অডিটর (বিধিবদ্ধ নিরীক্ষক) কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সেই সঙ্গে ব্যবসা অব্যাহত রাখার ক্ষমতা নিয়েও সন্দেহ পোষণ করেছে। এই পরিস্থিতিতে কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরীক্ষা করা এবং চলমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগসংক্রান্ত কোনো হুমকি আছে কি না, তা পরীক্ষা করবে পরিদর্শন কমিটি।

৩০ জুন ২০২৩-২৪ সমাপ্ত অর্থবছরে নিরীক্ষকের মতামতের ভিত্তিতে ব্যাংক-ব্যালেন্স নিশ্চিতকরণসহ প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের মতিঝিল শাখার কোম্পানির বর্তমান আমানত এবং অন্যান্য আমানত পরীক্ষা করবে পরিদর্শন কমিটি।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের শ্যামলী শাখায় কোম্পানির বর্তমান আমানত এবং অন্যান্য আমানত পরীক্ষা করা হবে। এর সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় পরিদর্শন করে দেখবে পরিদর্শন কমিটি।

বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষায় সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবসায়িক কার্যক্রম টিকিয়ে রাখা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাই কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিদর্শন করে উল্লিখিত অসংগতিগুলো খতিয়ে দেখাতে ডিএসইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিদর্শন কার্যক্রমে কোনো অসংগতি পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো লভ্যাংশ প্রদান করেনি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস। এদিকে সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে শূন্য দশমিক ৩৫ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল শূন্য দশমিক ৩৭ টাকা। ২০২৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক শূন্য ৬ টাকা।

সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০১৩ সালে। ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানির মোট পরিশোধিত মূলধন ১১৯ কোটি ৮০ লাখ ৮৪৪ টাকা। সে হিসাবে কোম্পানির মোট শেয়ারসংখ্যা ১১ কোটি ৯৮ লাখ ৮৪৪টি। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কোম্পানির উদ্যোক্তাদের হাতে ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৬ দশমিক ২০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৮৬ দশমিক ১৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। রবিবার কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৯ টাকা ৪০ পয়সা। 

সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এটি বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটাগরির একটি কোম্পানি। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১১৯ কোটি ৮০ লাখ ৮৪৪ টাকা। মোট শেয়ারসংখ্যা ১১ কোটি ৯৮ লাখ ৮৪৪টি।

পুঁজিবাজারে দুই ঘণ্টায় ২০৯ কোটি লেনদেন

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ১২:৪৫ পিএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫, ০১:৪৪ পিএম
পুঁজিবাজারে দুই ঘণ্টায় ২০৯ কোটি লেনদেন
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)

সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে। সে সঙ্গে বেড়েছে দুই পুঁজিবাজারের সব সূচক। 

লেনদেনের দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৮৮ কোটি টাকা। এবং সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি টাকা। 

মঙ্গলবার (২৪ জুন) লেনদেনে শুরুর দুই ঘণ্টায় পুঁজিবাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এ সময়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে মাত্র ২৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে। কমেছে ৩০টির ও দর অপরিবর্তিত আছে ৬৫টির।

একইসময়ে সিএসইতে মোট ১২১টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৮২টি কোম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ২৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬টি কোম্পানির শেয়ারের দর।

বেলা ১২টায় ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৭৩৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তালিকাভুক্ত শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ১১ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৫ পয়েন্টে। এ ছাড়া বাছাই করা সবচেয়ে ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৫ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৭৭৮ পয়েন্টে লেনদেন চলছে।  

এদিন বেলা ১২টা পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানি হলো- তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসি, অগ্নি সিস্টেমস পিএলসি, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড, বিচ হ্যাচারি, খান ব্রাদাস্‌ পি পি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি, মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, রিলায়েন্স ওয়ান দা ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়েন্স ইন্সুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড, মাগুরা মাল্টিপ্লেক্স পিএলসি, ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি।

অপরদিকে লেনদেন শুরুর দুই ঘণ্টা পর অর্থাৎ বেলা ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সিএএসপিআই সূচক ৬৯ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ১৮১ পয়েন্টে। 

সাখাওয়াত সুমন/অমিয়/

সূচক বাড়ল পুঁজিবাজারে

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
সূচক বাড়ল পুঁজিবাজারে
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার পুঁজিবাজারে বড় দরপতনের এক দিন পরই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দিনে শেষ বেড়েছে সূচক। 

সোমবার (২৩ জুন) প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ফলে বেড়েছে সব কটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার তালিকায় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান থাকলেও মূল্যসূচক বেড়েছে।

সোমবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে। লেনদেনের শেষ দিকে দাম বাড়ার তালিকা আরও বড় হয়। ফলে বড় পতনের পরদিনই পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২২০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৪টির। আর ৭৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৬৯৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৭৬৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সব কটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে ২৭৬ কোটি ৫৩ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৭১ কোটি ৭০ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে লাভেলো আইসক্রিম। কোম্পানিটির ২০ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ১ লাখ টাকার। ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।

সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৪টির এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

রিজেন্ট টেক্সটাইলের শেয়ারদর কমেছে ৬.৪৫ শতাংশ

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ১২:২৯ পিএম
রিজেন্ট টেক্সটাইলের শেয়ারদর কমেছে ৬.৪৫ শতাংশ
রিজেন্ট টেক্সটাইল। ছবি: সংগৃহীত

সোমবার (২৩ জুন) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ারদর কমেছে রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি দর আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়সা বা ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ কমেছে। 

দরপতনের শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফার্স্ট ফাইন্যান্সের দর কমেছে আগের দিনের তুলনায় ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ দর কমে যাওয়ায় পতনের শীর্ষ তালিকার তৃতীয় স্থানে জায়গা নিয়েছে রেনউইক যজ্ঞেশ্বর।

ডিএসইতে দরপতনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে প্যাসিফিক ডেনিমসের, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং, জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, ফ্যামিলিটেক্স লিমিটেড এবং অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজ লিমিটেড।