ঢাকা ১১ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
English

৯ দিন সূচক পতনের পর উত্থানে পুঁজিবাজার

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৯ এএম
আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৯ এএম
৯ দিন সূচক পতনের পর উত্থানে পুঁজিবাজার

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সেচেঞ্জে (ডিএসই) টানা ৯ দিন সূচক পতনের পর গতকাল রবিবার উত্থানে ফিরেছে। দর বেড়েছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৫টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটের। ধারাবাহিক এমন পতনের পর সূচকের উত্থানকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা। 

তারা বলছেন, এক দিন সূচক বৃদ্ধির মাধ্যমে লোকসান হওয়া বিনিয়োগ ফিরে আসবে না। প্রয়োজন উত্থানের ধারাবাহিকতা। এর জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। 

টানা এই পতনে গত চার বছরের মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রথমবারের মতো পাঁচ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমেছে।

সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের এমন ধারাবাহিক পতনের পেছনে বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের অযোগ্যতাকে দায়ী করছেন। ইতোমধ্যে চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে বিনিয়োগকারীরা মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। 

পাশাপাশি পুঁজিবাজারের মন্দাবস্থার জন্য বর্তমান কমিশনকে দায়ী করে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের কাছেও চিঠি দিয়েছে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ। 

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত জাতীয় ঐক্যের সভাপতি আনম আতাউল্লাহ নাঈম বলেন, ধারাবাহিক পতনের পর গতকাল সূচকের উত্থানকে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা যায়। তবে এমন উত্থানের ধারাবাহিকতা না থাকলে বিনিয়োগকারীদের হতাশা আরও বাড়বে।

টানা ৯ দিনের পতন ইতোপূর্বে বিনিয়োগকারীরা আগে কখনো দেখেনি। বর্তমান কমিশনের সময় যেহেতু এমন পতন হয়েছে তাই এর দায় তাদেরই নিতে হবে বলে জানান তিনি। 

এনএলআই সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী আব্দুল্লাহ বলেন, পুঁজিবাজারে গুজব আছে বিএসইসি চেয়ারম্যান পদত্যাগ করছেন। মূলত এ কারণেই গতকাল সূচক বেড়েছে। আর সূচকের পতন থামায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও হতাশা কিছুটা কেটেছে। 

ডিএসইর লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ১৩ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সূচকের পতন ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এই সময়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২৩৩ পয়েন্ট। আর গতকাল রবিবার সূচক বেড়েছে ২২ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট। 

তবে অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দরপতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে রবিবার। বাজারটিতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে সিএসইতে টানা ১০ কার্যদিবস দরপতন হলো।

গতকাল লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দামতে শুরুকরে। এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫০ পয়েন্ট কমে যায়। ফলে আবারও দরপতনের শঙ্কা পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের। কিন্তু লেনদেনের শেষ ঘণ্টার বদলে যায় বাজারের চিত্র।

দাম কমার তালিকা থেকে বেরিয়ে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। দুপুর ১টার পর থেকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সব কটি মূল্যসূচক বেড়েই ডিএসইতে লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ২৩৫ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৯টির। এ ছাড়া ৬৩টির দাম অপরিবর্তিত ছিল।

এদিন লেনদেন হওয়া ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির মধ্যে ১১৯টির শেয়ারের দাম বেড়েছে এবং ৬৫টির দাম কমেছে। এছাড়া ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হওয়া ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির মধ্যে ৬৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। কমেছে ১১টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের।  

সার্বিকভাবে দাম বাড়ার তালিকায় বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠান থাকায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৯৯৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। 

অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১০৮ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এ ছাড়া বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৮৫২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সব কটি মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৩৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৬৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৯৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০০টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশ্বস্ত গন্তব্য হবে বাংলাদেশ: গভর্নর

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ০৫:৫১ পিএম
বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশ্বস্ত গন্তব্য হবে বাংলাদেশ: গভর্নর
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ স্থানীয় ও বিদেশি উভয় বিনিয়োগকারীদের জন্যই একটি বিশ্বস্ত গন্তব্যে পরিণত হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

তিনি বলেন,  ‘বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কেবল আমাদের টাকা নিয়ে চলে যাবে এই ধারণাটি একটি ভুল ধারণা।’ 

মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘গুগল পে’ সেবার উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গুগল, মাস্টারকার্ড ও ভিসার সহযোগিতায় সিটি ব্যাংক পিএলসি এই ডিজিটাল লেনদেন সেবা চালু করেছে।

এখন থেকে সিটি ব্যাংকের গ্রাহকেরা তাদের মাস্টারকার্ড বা ভিসা কার্ডটি গুগল ওয়ালেটে সংযুক্ত করে ‘গুগল পে’ ব্যবহার করে দ্রুত, নিরাপদ ও স্পর্শবিহীন পেমেন্ট করতে পারবেন।

পরিষেবাটি সিটি ব্যাংকের গ্রাহকরা দেশে বা বিদেশে নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন (এনএফসি) সুবিধাসম্পন্ন যেকোনো পয়েন্ট-অব-সেল (পিওএস) টার্মিনালে শুধু অ্যান্ড্রয়েড ফোন স্পর্শ করেই লেনদেন করতে পারবেন।

ব্যবহারকারীদের তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ‘গুগল পে’ উন্নত এনক্রিপশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে। আলাদা প্লাস্টিকের কার্ড বহন করার প্রয়োজন নেই। বিমান ভ্রমণ থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কেনাকাটা পর্যন্ত সবকিছুর জন্য ‘গুগল পে’ ব্যবহার করা যেতে পারে।

মনসুর তার বক্তৃতায় দেশের অভ্যন্তরে প্রযুক্তি এবং ব্যবস্থাপনার উন্নতির ওপর জোর দেন।

তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশি কোম্পানিগুলো যদি ১০ থেকে ২০ বছর চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা করে এবং পরে তা ফেরত দেয় তাহলে আমরা অর্জিত দক্ষতা থেকে উপকৃত হব এবং অন্যান্য দেশে বন্দর পরিচালনা করতে পারব। আমাদের বর্তমান প্রযুক্তি দিয়েই আমরা সবকিছু করতে পারি এমন বিশ্বাস করা অবাস্তব।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান বলেন, গুগল পে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বৃহত্তর লক্ষ্যের একটি অংশ। দেশের প্রতিটি নাগরিককে ব্যাংকিং ও আর্থিক ব্যবস্থার আওতায় আনতে হবে। এজন্য ব্যাংকগুলোকে স্কুলের সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

গভর্নর আরও বলেন, আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) কমাতে নিয়ন্ত্রক পর্যায়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে যাতে অতীতের ভুলগুলো পুনরাবৃত্তি না হয়।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে একটি প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, অগ্রগতি হচ্ছে এবং মূল্যস্ফীতি পাঁচ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং আমানতকারীদের পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন, সিটি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হোসেন খালেদ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাশরুর আরেফিন। -বাসস

অমিয়/

একনেকে ৮৯৭৪ কোটি টাকার ১৭ প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ০৩:৪১ পিএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫, ০৪:৩৪ পিএম
একনেকে ৮৯৭৪ কোটি টাকার ১৭ প্রকল্প অনুমোদন
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: পিআইডি

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৮ হাজার ৯৭৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৭টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেকের চেয়ারপারসন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, অনুমোদিত ১৭টি প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৮ হাজার ৯৭৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন থেকে ব্যয় করা হবে ৩ হাজার ১৮০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে আসবে ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থাকবে ২৩০ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

সভায় অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ প্রকল্প, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগণের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প, বিভাগীয় শহরে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মাদক নিরাময় কেন্দ্র নির্মাণ, নতুন ৪টি মেরিন একাডেমিতে প্রশিক্ষণ সুবিধা স্থাপন, আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সম্প্রসারণে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন, বিভিন্ন জেলায় নতুন সার গোডাউন নির্মাণ, অ্যাক্সেস টু জাস্টিস ফর উইমেন প্রকল্প, কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সেবা জোরদারকরণ, টিভিইটি শিক্ষক উন্নয়ন প্রকল্প, দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি প্রকল্প, উন্নয়ন বাজেট ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল ডাটাবেজ স্থাপন, পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম উন্নয়ন, সরকারি কেনাকাটা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং পরিসংখ্যান দক্ষতা ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।

সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব উপস্থিত ছিলেন।

সালমান/

ব্যবসা কার্যক্রম পরিদর্শনের নির্দেশ বিএসইসির

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ০১:০৫ পিএম
ব্যবসা কার্যক্রম পরিদর্শনের নির্দেশ বিএসইসির
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষায় কোম্পানিটি ভবিষ্যতে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার মতো সক্ষমতার অভাব হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

সম্প্রতি বেশ কিছু নির্দেশনা সাপেক্ষে বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ৩০ জুন ২০২৩-২৪ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষিত বেশ কিছু বিষয়ে আপত্তি বা মতামত জানিয়েছে। ওই মতামতের ভিত্তি কোম্পানির সার্বিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিদর্শন করা প্রয়োজন বলে মনে করে কমিশন।

এ-সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ২০২০-এর রুল ১৭ এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (লিস্টিং) রেগুলেশন, ২০১৫-এর রেগুলেশন ৫৪(১)-এর অধীনে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের বিষয়গুলোর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে একটি পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করার নির্দেশ দেওয়া হলো। একই সঙ্গে পরিদর্শন কার্যক্রম সম্পন্ন করার পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে পরিদর্শন প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হলো।

৩০ জুন ২০২৩-২৪ সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানির  লোকসান ১০৪ কোটি ২৯ লাখ ৭৯ হাজার ৯১০ টাকা এবং ঋণের পরিমাণ ২৬ কোটি ৮৪ লাখ ৭৪ হাজার ৭৫১ টাকা। কিন্তু কোনো ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি কোম্পানিটি। ফলে স্ট্যাটুটরি অডিটর (বিধিবদ্ধ নিরীক্ষক) কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সেই সঙ্গে ব্যবসা অব্যাহত রাখার ক্ষমতা নিয়েও সন্দেহ পোষণ করেছে। এই পরিস্থিতিতে কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরীক্ষা করা এবং চলমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগসংক্রান্ত কোনো হুমকি আছে কি না, তা পরীক্ষা করবে পরিদর্শন কমিটি।

৩০ জুন ২০২৩-২৪ সমাপ্ত অর্থবছরে নিরীক্ষকের মতামতের ভিত্তিতে ব্যাংক-ব্যালেন্স নিশ্চিতকরণসহ প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের মতিঝিল শাখার কোম্পানির বর্তমান আমানত এবং অন্যান্য আমানত পরীক্ষা করবে পরিদর্শন কমিটি।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের শ্যামলী শাখায় কোম্পানির বর্তমান আমানত এবং অন্যান্য আমানত পরীক্ষা করা হবে। এর সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় পরিদর্শন করে দেখবে পরিদর্শন কমিটি।

বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষায় সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবসায়িক কার্যক্রম টিকিয়ে রাখা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাই কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিদর্শন করে উল্লিখিত অসংগতিগুলো খতিয়ে দেখাতে ডিএসইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিদর্শন কার্যক্রমে কোনো অসংগতি পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো লভ্যাংশ প্রদান করেনি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস। এদিকে সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে শূন্য দশমিক ৩৫ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল শূন্য দশমিক ৩৭ টাকা। ২০২৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক শূন্য ৬ টাকা।

সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০১৩ সালে। ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানির মোট পরিশোধিত মূলধন ১১৯ কোটি ৮০ লাখ ৮৪৪ টাকা। সে হিসাবে কোম্পানির মোট শেয়ারসংখ্যা ১১ কোটি ৯৮ লাখ ৮৪৪টি। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কোম্পানির উদ্যোক্তাদের হাতে ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৬ দশমিক ২০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৮৬ দশমিক ১৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। রবিবার কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৯ টাকা ৪০ পয়সা। 

সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এটি বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটাগরির একটি কোম্পানি। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১১৯ কোটি ৮০ লাখ ৮৪৪ টাকা। মোট শেয়ারসংখ্যা ১১ কোটি ৯৮ লাখ ৮৪৪টি।

পুঁজিবাজারে দুই ঘণ্টায় ২০৯ কোটি লেনদেন

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ১২:৪৫ পিএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫, ০১:৪৪ পিএম
পুঁজিবাজারে দুই ঘণ্টায় ২০৯ কোটি লেনদেন
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)

সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে। সে সঙ্গে বেড়েছে দুই পুঁজিবাজারের সব সূচক। 

লেনদেনের দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৮৮ কোটি টাকা। এবং সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি টাকা। 

মঙ্গলবার (২৪ জুন) লেনদেনে শুরুর দুই ঘণ্টায় পুঁজিবাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এ সময়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে মাত্র ২৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে। কমেছে ৩০টির ও দর অপরিবর্তিত আছে ৬৫টির।

একইসময়ে সিএসইতে মোট ১২১টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৮২টি কোম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ২৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬টি কোম্পানির শেয়ারের দর।

বেলা ১২টায় ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৭৩৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তালিকাভুক্ত শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ১১ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৫ পয়েন্টে। এ ছাড়া বাছাই করা সবচেয়ে ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৫ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৭৭৮ পয়েন্টে লেনদেন চলছে।  

এদিন বেলা ১২টা পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানি হলো- তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসি, অগ্নি সিস্টেমস পিএলসি, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড, বিচ হ্যাচারি, খান ব্রাদাস্‌ পি পি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি, মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, রিলায়েন্স ওয়ান দা ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়েন্স ইন্সুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড, মাগুরা মাল্টিপ্লেক্স পিএলসি, ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি।

অপরদিকে লেনদেন শুরুর দুই ঘণ্টা পর অর্থাৎ বেলা ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সিএএসপিআই সূচক ৬৯ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ১৮১ পয়েন্টে। 

সাখাওয়াত সুমন/অমিয়/

সূচক বাড়ল পুঁজিবাজারে

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
সূচক বাড়ল পুঁজিবাজারে
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার পুঁজিবাজারে বড় দরপতনের এক দিন পরই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দিনে শেষ বেড়েছে সূচক। 

সোমবার (২৩ জুন) প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ফলে বেড়েছে সব কটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার তালিকায় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান থাকলেও মূল্যসূচক বেড়েছে।

সোমবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে। লেনদেনের শেষ দিকে দাম বাড়ার তালিকা আরও বড় হয়। ফলে বড় পতনের পরদিনই পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২২০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৪টির। আর ৭৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৬৯৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৭৬৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সব কটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে ২৭৬ কোটি ৫৩ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৭১ কোটি ৭০ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে লাভেলো আইসক্রিম। কোম্পানিটির ২০ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ১ লাখ টাকার। ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।

সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৪টির এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।