ঢাকা ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দেশের ঋণমান পুনর্বিবেচনার আহ্বান বাংলাদেশ ব্যাংকের

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫৪ পিএম
দেশের ঋণমান পুনর্বিবেচনার আহ্বান বাংলাদেশ ব্যাংকের
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

বহুজাতিক কয়েকটি প্রধান ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা বাংলাদেশের রেটিং একাধিকবার কমিয়েছে। সংস্থাগুলোকে দেশের রেটিং পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কয়েকটি রেটিং এজেন্সির সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে রেটিং এজেন্সিগুলোকে বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমান বিভিন্ন সূচকের অগ্রগতি নিয়ে রেটিং এজেন্সিগুলো সন্তুষ্ট। তাদের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে রেটিংয়ের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।’ 

আরিফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ২০২৬ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবে। তখন বৈদেশিক ঋণ বা সহায়তা পাব না। যেটুকু সময় আছে তার থেকে যাতে বঞ্চিত না হয়, তাই রেটিং এজেন্সিগুলোকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করার কথা বলা হয়েছে।’ 

গত বছরের জুলাইতে বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঋণমান যাচাইকারী কোম্পানি এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের ঋণমান ‘বিবি মাইনাস’ থেকে কমিয়ে ‘বি প্লাস’ করেছে। এর আগে সর্বশেষ যে প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের ঋণমান অবনমন করেছিল, সেটি হলো ফিচ রেটিংস। গত মে মাসের শেষ দিকে তারা ৮ মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে দেয়। তখন প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের ফরেন কারেন্সি ইস্যুয়ার ডিফল্ট রেটিং (আইডিআর) ‘বিবি মাইনাস’ থেকে ‘বি প্লাস’ করে, যদিও দেশের অর্থনীতি সম্পর্কিত পূর্বাভাস স্থিতিশীল রাখে তারা। এরপর রেটিং এজেন্সি মুডিসও দীর্ঘমেয়াদে দেশের ঋণমান কমিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে দেশের বেশ কয়েকটি বড় ব্যাংকেরও ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে সংস্থাটি। 

সে সময়ই বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছিল, মুডিস রেটিংস বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান কমানো যথাযথ হয়নি। এই বিষয়ক এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছিল, গণ-অভ্যুত্থানের পর নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করেছে, তা মুডিস রেটিংসে যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি। মুডিসের প্রতিবেদনে ব্যাংক খাতের সংস্কার, ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিষয়ে বর্তমান সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে বলা হয়েছিল, ‘আমরা আশা করি, মুডিস শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের পর দেশের অর্থনীতির আরও ব্যাপকভাবে মূল্যায়ন করবে। তখন তারা সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও অভিজ্ঞ অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সরাসরি পরামর্শ করবে। এর ফলে সরকারের নেওয়া নীতি ও উন্নয়নের সঠিক মূল্যায়ন করতে সক্ষম হবে তারা।’

সোমবারের বৈঠকে মূল্যস্ফীতি, ডলার রেট, নতুন টাকা ও দুর্বল ব্যাংকসহ দেশের অর্থনীতির প্রতিটি সূচক নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র। 

তিনি বলেন, ‘দুর্বল ব্যাংকের অনিয়মের কারণে কয়েকটি ব্যাংকে তারল্য সংকট পড়ে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে দেওয়া হয়। এসব ব্যাংকের প্রকৃত চিত্র দেখার জন্য টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ব্যাংক রেজল্যুশন অ্যাক্ট করা হয়েছে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি কাঙ্ক্ষিত হারে কমানো যায়নি। তবে কিছুটা কমছে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ায় ডলারের দর স্থিতিশীল রয়েছে, এটা ভালো দিক। 

নতুন বাজেট অনুমোদন ২২ জুন: অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৮:২৫ পিএম
নতুন বাজেট অনুমোদন ২২ জুন: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ২২ জুন উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর মতামত দেওয়া যাবে ১৯ জুন পর্যন্ত।

গতকাল বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘মতামত দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রতিনিয়ত তা আসতে থাকবে। এক দিনে তো আর সব মতামত আসবে না।’

সাধারণত ২৯ জুন অর্থবিল পাস হয় এবং তার পরের দিন নতুন অর্থবছরের বাজেট পাস হয়। এবার যেহেতু সংসদ নেই। তাই রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আগেভাগেই বাজেট পাস করা হবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে দরিদ্র মানুষের জন্য সুখবর দেখা যাচ্ছে না বলে অনেকেই অভিমত দিয়েছেন। এ বিষয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সুখবর আছে। বাজেটের কোথায় কোথায় পরিবর্তন হয়েছে, তা দেখুন।’ এ বাজেট সাধারণ মানুষের মনে স্বস্তি ফেরাবে বলেও মনে করেন অর্থ উপদেষ্টা।

বৈঠকে পুলিশের জন্য গাড়ি কেনাসহ সার, এলএনজি ইত্যাদি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।

টানা ১০ দিনের ঈদের ছুটি অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থনীতি স্থবির হওয়ার সুযোগ নেই, ব্যবসায়ীরা তাদের মতো করে ব্যবসা করবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক বলে দিয়েছে, কোন কোন স্থানে ব্যাংক খোলা থাকবে। ফলে লেনদেনের সমস্যা হবে না।

বিশ্বের অন্যান্য দেশে আরও বেশি ছুটি থাকে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বড়দিনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে ২০ থেকে ২৫ দিন ছুটি থাকে। নেপালে দুর্গাপূজার সময় ৩০ দিন ছুটি থাকে।

যমুনা সেতুতে একদিনে টোল আদায় ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১১:৫৬ এএম
যমুনা সেতুতে একদিনে টোল আদায় ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা
ছবি: খবরের কাগজ

যমুনা সেতু দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ এবং এর বিপরীত ৩৩ হাজার ৫৬৪ যানবাহন পারাপার হয়েছে।

বুধবার (৪ জুন ) সকালে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার (২ জুন) রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার (৩ জুন) রাত ১২টা পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৫৬৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৭ হাজার ৬৫৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৫০ টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৫ হাজার ৯০৭ টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪১ লাখ ৮১  হাজার ৫০ টাকা।

নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই যানজট। যানজট নিরসনে যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য ৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সেতুর উপর কোন দুর্ঘটনা ঘটলে সেই জন্য দুইটি রেকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় আছে।সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা দিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে।মানুষ যেন নির্বিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারে।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ শরীফ বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে,নেই যানজট।এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে কাজ করে যাচ্ছে। পুলিশ মহাসড়কে সার্বক্ষণিক রাত-দিন কাজ করছে। মানুষ যেন নির্বিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারে সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

জুয়েল/মেহেদী/

২০২৫-২৬ বাজেট জীবনমান উন্নয়ন ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করবে: অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৫:২১ পিএম
জীবনমান উন্নয়ন ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করবে: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা এমন একটি বাজেট দিতে পেরেছি যা জনগণের জীবনমান উন্নয়ন ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করবে।’

মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘অনেকে বলছেন আমরা আগের ধারা অনুসরণ করেছি। হুট করেই বিপ্লব ঘটানো সম্ভব নয়। তবে একেবারেই ইনোভেশন নেই, সেটাও ঠিক নয়। বাজেট এখনো চূড়ান্ত নয়, এটি উন্মুক্ত থাকবে-সাজেশন নেব, তারপর ফাইনাল হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রতিকূল অবস্থায় সবার সহযোগিতা চাই। কোলাবোরেটিভ ও সহানুভূতিশীল মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই-চ্যালেঞ্জের মাঝেও ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব।’

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সামনের পথ কঠিন। তবে আমরা এনবিআরকে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছি। পাশাপাশি বিদেশি ঋণ আনার বিষয়েও ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সড়ক ও রেল উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাণিজ্য ও শিল্প উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন আর্থিক খাতের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

এমএ/

যমুনা সেতুতে একদিনে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা টোল আদায়

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৪:০৩ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৪:১৭ পিএম
যমুনা সেতুতে একদিনে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা টোল আদায়
ছবি: খবরের কাগজ

গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু থেকে দুই কোটি ৭৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ এবং এর বিপরীত ৩০ হাজার ১৬৭ টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ জুন ) যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, রবিবার (১জুন) রাত ১২টা থেকে সোমবার (২ জুন) রাত ১২টা পর্যন্ত ৩০ হাজার ১৬৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৫ হাজার ৩৯৮টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ১৩ হাজার টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৪ হাজার ৭৬৯ টি যানবাহন পারাপারে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩৮ লাখ ৩২ হাজার ৪০০ টাকা।

যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, 'মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই যানজট। যানজট নিরসনে যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য চারটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সেতুর উপর কোন দুর্ঘটনা ঘটলে সেই জন্য দুইটি রেকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় আছে। আমরা সবাই মিলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।মানুষ যেন নির্বিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারে।' 

জুয়েল রানা/রিফাত/

সুদ পরিশোধে চাপ বাড়বে, বরাদ্দ ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৩:৫৫ পিএম
সুদ পরিশোধে চাপ বাড়বে, বরাদ্দ ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

বাজেটে বরাদ্দের বড় একটি অংশ ব্যয় হয় ঋণের সুদ পরিশোধে। প্রতিবছর বাজেটে এই বরাদ্দ বাড়ছেই। ঋণের সুদ বাবদ ব্যয় এখন বাজেটের সর্বোচ্চ একক খাত। চলতি বছরের বাজেটেও একই ধারা অব্যাহত রয়েছে।

সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এর মধ্যে শুধু সুদ পরিশোধেই ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা। সুদ পরিশোধের এই ব্যয়ের পরিমাণ প্রস্তাবিত মোট বাজেটের ১৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এই ব্যয়ের বড় অংশই যাবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া ঋণের সুদ পরিশোধে। 

এই বিপুল বরাদ্দের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধে ২২ হাজার কোটি টাকা। অথচ চলতি অর্থবছরে ২০২৪-২৫ সংশোধিত বাজেটে সুদ পরিশোধের জন্য বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ব্যয় বাড়ছে ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত সরকারের সময়ে বেশ কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় অঙ্কের বৈদেশিক ঋণ নিয়েছিল সরকার। চলতি বছর কিছু বৈদেশিক ঋণের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় শুধু সুদ নয়, আসল অর্থও পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে। ফলে চাপ বেড়েছে দ্বিগুণ। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদের হার বেড়েছে। গত দুই বছরে মুদ্রার অবমূল্যায়নে বৈদেশিক ঋণের বোঝা আরও বড় হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও চাপের মুখে পড়তে পারে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘ঋণের বোঝা যেভাবে বাড়ছে তার বিপরীতে সুদ পরিশোধে বাজেটের বড় একটি অংশ খরচ হয়ে যাচ্ছে। এটি সরকারের জন্য দুশ্চিন্তার বিষয়। সুদ পরিশোধের চাপ কমাতে হলে সরকারকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ তথা রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে। তা না হলে সরকার কঠিন চাপের মুখে পড়বে।’

গত কয়েক বছরের সুদ পরিশোধের হিসাবও বড় ঋণ নির্ভরতার আভাস দেয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় ছিল ৭০ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। পরবর্তী বছর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৭ হাজার ৭৭৯ কোটি, ২০২২-২৩ সালে ৯০ হাজার ১৩ কোটি এবং ২০২৩-২৪ সালে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকায়। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছর তা বেড়ে ১ লাখ ২২ হাজার কোটিতে পৌঁছাতে চলেছে।

বাজেটে ঘাটতি পূরণের জন্য দুই উৎস থেকে ঋণ নেয় সরকার। এর মধ্যে একটি হচ্ছে অভ্যন্তরীণ এবং অন্যটি বিদেশি ঋণ। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে আবার ব্যাংক ব্যবস্থা এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ঋণ নেয় সরকার। আর বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বহুপক্ষীয় দাতা সংস্থা ও দ্বিপক্ষীয় দেশ থেকে বিদেশি ঋণ নেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক সংস্থার পাশাপাশি বাংলাদেশ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং বাজেট সহায়তার জন্য বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে ঋণ নেয়।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় জাপান, চীন, রাশিয়া ও ভারতের কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি ঋণ নিচ্ছে। আর বহুপক্ষীয় সংস্থার মধ্যে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও আইএমএফ থেকে ঋণ নেওয়া হয়। প্রতিবছর বাজেটে এই দুই উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এসব ঋণের বিপরীতে চড়া সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে। ফলে সুদের পেছনে ব্যয় বাড়ছেই।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ঋণ পরিশোধে খরচ হয়েছে ৩২১ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৮ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ২৫৭ কোটি ডলার (২৮ হাজার ২৮১ কোটি টাকা)। অর্থাৎ পরিশোধের চাপ বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি।