
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, রাজস্ব আদায় বাড়াতে আইএমএফ চাপ দিচ্ছে। কাজেই, আয় বাড়াতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের আয়োজনে আগামী অর্থবছরের বাজেটসংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির ৪৫তম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক নিয়ে সে দেশের সঙ্গে আমরা দর-কষাকষি করব। তবে পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে তাদের চটাব না। এ নিয়ে আলোচনার জন্য ৯০ দিন সময় আছে। এর মধ্যে বিষয়টির সমাধান না হলে আমরা আরও সময় চাইব।’
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খানের সভাপতিত্বে এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বিন হারুন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআইর প্রশাসক হাফিজুর রহমান।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আইএমএফের ঋণের ব্যাপারে আমরা খুব একটা চিন্তিত নই। ইতোমধ্যে সামষ্টিক অর্থনীতিতে কিছুটা উন্নতি হয়েছে।’ কর ছাড় বা কর রেয়াতের দিন চলে গেছে মন্তব্য করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘রেয়াতের দিন চলে গেছে। কোনো খাতে রেয়াত দেওয়া মানে, সেখান থেকে কর পাব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনেক গালমন্দ খাচ্ছি। কাজ করতে গেলে গালমন্দ খেতে হবে। এটা গায়ে মাখছি না।’
বাজেট নিয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট দেব। আমরা বাজেটে প্রত্যাশার ফুলঝুড়ি দেব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বিভিন্ন বৈশ্বিক সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করছি।’
এবারের বাজেট বাস্তবসম্মত হবে মন্তব্য করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার বাজেট নিয়ে এখন যা বলছে সেভাবেই করা হবে। যাতে এই সরকার চলে গেলেও মানুষ বলে বাজেট ভালো হয়েছিল।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এবারের বাজেট বাস্তবসম্মত করা হবে। চিরাচরিত বাজেটের মতো হবে না। বাজেট নিয়ে এখন যা বলছে সরকার, সেভাবেই করার চেষ্টা থাকবে। যেন এই সরকার চলে গেলেও যাতে মানুষ বলে বাজেট ভালো হয়েছিল। বিগত সময়ে বড় বাজেট দেওয়া হতো, কিন্তু পুরোপুরি বাস্তবায়ন হতো না। কিন্তু এই সরকার যে বাজেট দেবে তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা থাকবে।
তিনি বলেন, ‘ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বাড়বে। ব্যবসায়ীদেরও প্রতিযোগী হতে হবে। ব্যবসায়ীরা কর দিলে সুবিধা পাবেন। কিন্তু অনেকেই কর অব্যাহতি বা কর রেয়াতি সুবিধা চায়। ব্যবসায়ীদের বুঝতে হবে অব্যাহতির দিন চলে গেছে। রাজস্ব আয় বাড়ানো নিয়ে এ সরকারের ওপর অনেক চাপ আছে। ব্যবসায়ীরা যে কর দেন তার সুবিধাও তারা ভোগ করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায়ে যেসব ব্যবসায়ী আছেন বা যে চেম্বারগুলো রয়েছে অনেক সময় তাদের কথা শোনা হয় না। তবে সরকার তাদের জন্য কাজ করছে।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারের দায়িত্বে থাকায় এখন অনেক গালমন্দ খেতে হচ্ছে। সরকারের ভুলত্রুটি থাকতে পারে। তবু সরকার চেষ্টা করছে সাধারণ মানুষকে স্বস্তিতে রাখতে।’ তিনি বলেন, ‘সরকার শুধু আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেনি। অন্যান্য সব পক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছে। আইএমএফের সঙ্গে এখনো শর্ত মেলেনি। কঠোর দর কষাকষি হচ্ছে। চেষ্টা চলছে।’