ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

নীতি-সহায়তা পেলে আইসক্রিম রপ্তানি সম্ভব

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ০৯:০২ এএম
আপডেট: ০৪ মে ২০২৫, ০৯:৪৩ এএম
নীতি-সহায়তা পেলে আইসক্রিম রপ্তানি সম্ভব
ছবি : সংগৃহীত

গরম এলেই মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে পাওয়ার আগ্রহ তীব্র হয়ে ওঠে। আর গরম থেকে স্বস্তি পেতে ছোট-বড় সবারই দোকানে দোকানে চাওয়া থাকে আইসক্রিম। এখন নামিদামি অনেক ব্র্যান্ডের আইসক্রিমে সাজানো থাকে দোকানের ফ্রিজগুলোতে। সেই আইসক্রিমের বাজার এখন প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা, আর বছরে প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশের কাছাকাছি।

কোভিড-১৯-এর প্রভাবে প্রায় দুই বছর আইসক্রিমের ব্যবসায় মন্দা থাকলেও গত তিন চার বছরে আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে আইসক্রিম শিল্প। এই শিল্পের বিকাশে অনেক সংকট আছে এমন মন্তব্য শিল্প সংশ্লিষ্টদের। তারপরও তাদের প্রত্যাশা আগামী বাজেটে এ শিল্পের বিকাশে থাকবে সুস্পষ্ট নীতি-সহায়তা। 

দেশের আইসক্রিমের বাজারের দুই-তৃতীয়াংশের দখল রয়েছে আব্দুল মোনেম গ্রুপের ইগলু ও ঢাকা আইসক্রিম ইন্ডাস্ট্রিজের পোলার ব্র্যান্ডের। এ ছাড়া লাভেলো, স্যাভয়, বেলিসিমো, জা এন জি, ব্লুপ, কোয়ালিটিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত আইসক্রিম বাজারজাত করছে। 

দেশের আইসক্রিমের বাজার কে কতটা দখলে রেখেছে তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান দিতে পারেনি বাজারসংশ্লিষ্টরা। তবে এ ব্যবসায় সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, বর্তমানে দেশের আইসক্রিমের বাজারের আকার আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি। ২০২৫ সালে এটি বেড়ে ৩ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। প্রতিবছর দেশের আইসক্রিম শিল্পের প্রবৃদ্ধি ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। মূলত মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে আইসক্রিম বিক্রির মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর মধ্যে মার্চ থেকে জুনকে বলা হয় সুপার পিক এবং জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরকে সেমি-পিক সিজন হিসেবে গণ্য করা হয়। 

বেসরকারি আইসক্রিম প্রতিষ্ঠানের সম্প্রতি একটি গবেষণায় জানিয়েছে, ২০২১ সালে দেশের আইসক্রিমের বাজার আগের বছরের তুলনায় ৯৩ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৪১০ কোটিতে পৌঁছেছে। ২০২০ সালে দেশের আইসক্রিমের বাজার ছিল ৭৩০ কোটি টাকার। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৫ সাল শেষে এই শিল্পের বাজার ২ হাজার ৬০০ কোটিতে ছাড়িয়ে যাবে। 

খাতসংশ্লিষ্টরা বলেছেন, আইসক্রিম তৈরির বেশির ভাগ কাঁচামাল আমদানি করে নিয়ে আসতে হয়। দেশীয় উৎস থেকে শুধু চিনি, বাটার ও পানি সংগ্রহ করা হয়। এ ছাড়া চকলেট, মিল্ক ফ্যাট, ফুল ক্রিম দুধ, ফ্লেবারসহ অন্যান্য উপাদান আমদানি হয়। আর এসব পণ্য ডেনমার্ক, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। 

সম্প্রতি আব্দুল মোনেম লিমিটেডের পরিচালক যায়নাব মাইনুদ্দিন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনায় জানিয়েছেন, আইসক্রিম একটি স্পর্শকাতর তাপমাত্রা সংবেদনশীল পণ্য। তাই এর উৎপাদন থেকে শুরু করে পরিবহন ও বাজারজাতের প্রতিটি পর্যায়ে প্রশিক্ষিত জনবল প্রয়োজন। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত জনবলের নির্দিষ্ট কোনো প্রশিক্ষণ নীতিমালা নেই।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজাটে আইসক্রিম খাতের জন্য সংশ্লিষ্ট কাঁচামাল ও মেশিন আমদানির জন্য পৃথক এইচএস কোড নির্ধারণ করা জরুরি। এ ছাড়া আইসক্রিমের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে অন্যান্য শিল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উচ্চ শুল্কহারের পরিবর্তে ব্যবসাবান্ধব শুল্কহার ঘোষণা করা উচিত।

তিনি বলেন, ‘আইসক্রিম বিক্রি করতে সেলস জেনারেটিং অ্যাসেট (এসজিএ) অর্থাৎ প্রয়োজন ফ্রিজার। বর্তমানে ডিপ ফ্রিজে আমদানির ওপর ১০৪ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। দেশের বাজারে উন্নতমানের কমার্শিয়াল ফ্রিজার উৎপাদন হচ্ছে না। তাই ভ্যাট রেজিস্টার্ড আইসক্রিম উৎপাদন শিল্পের জন্যে ফ্রিজার আমদানির ওপর শুল্ক কমানো জরুরি।’ 

আইসক্রিম একটি দুগ্ধজাত পণ্য। দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে খুবই প্রয়োজনীয়। বিশেষ তাপমাত্রা বজায় রেখে উৎপাদন ও বিক্রি করতে হয় বলে খরচও অনেক বেশি। তাই আইসক্রিম বিক্রির ওপর সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। 

দেশের আইসক্রিম কোম্পানিগুলোর মধ্যে সরাসরি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তাওফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসি। এ ছাড়া গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। এই কোম্পানির একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান আছে গোল্ডেন হার্ভেস্ট আইসক্রিম লিমিটেড। 

তাওফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসি ইতোমধ্যে তাদের চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় মুনাফা বেড়েছে। 

এ বিষয়ে কোম্পানি সেক্রেটারি মো. মহিউদ্দিন সরদার খবরের কাগজকে বলেন, ‘এ সময়টিতে মূলত আইসক্রিমের চাহিদা বাড়ে। এ জন্য স্বাভাবিকভাবেই আয় বেড়েছে। আমাদের নতুন প্রকল্প নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি, আগামীতে আইসক্রিম বিক্রির মাধ্যমে আয় বাড়ানো সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।’ 

গত বছরের সেপ্টেম্বরে কোম্পানিটি তাদের দ্বিতীয় আইসক্রিম উৎপাদন কারখানা স্থাপনের জন্য ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা করেছে। ময়মনসিংহের ভালুকায় বিদ্যমান উৎপাদন কারখানাসংলগ্ন ৫৯.১৬ শতাংশ জমি কেনা হয়েছে নতুন কারখানা স্থাপনে। 

কোম্পানিটি সূত্রে জানা গেছে, নতুন কারখানায় উৎপাদন শুরু হওয়ার পর দৈনিক ২ লাখ ৫০ হাজার লিটার আইসক্রিম উৎপাদন হবে, এটি লাভেলোর বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি। প্রকল্পটি ২০২৫ সালে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকে নিট মুনাফা করেছে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা হয়েছিল ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

দেশের বাজারে ব্লুপ ব্র্যান্ডের আইসক্রিম বাজারজাত করছে গোল্ডেন হার্ভেস্ট আইসক্রিম লিমিটেড। গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রো ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের কোম্পানি সচিব ইব্রাহিম হোসেন বলেন, আইসক্রিম ফ্যাক্টরিটি সুইডেনের টেট্রা প্যাকের মাধ্যমে স্থাপন করা হয়েছে। এটি ডেনিশ কোম্পানির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। ব্লুপ ব্যান্ডটি প্রায় ৪০টি বিভিন্ন ধরণের পণ্য বাজারে সরবরাহ করছে। এর মধ্যে আছে আইসক্রিম স্টিক, কাপ, কোন, ক্যালিপ্পো, শরবত, টাব, কেক অন্যতম। 

অতি সম্প্রতি আইসক্রিম শিল্পের ওপর করা লংকাবাংলা গ্রুপের এক জরিপে বলা হয়েছে, দেশে বছরে ৬ কোটি লিটারের বেশি আইসক্রিমের চাহিদা রয়েছে। এই চাহিদার পুরোটাই যোগান দিচ্ছে দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তারা। এখন আলোচনায় আছে দেশ থেকে আইসক্রিম রপ্তানি’। জরিপে বলা হয়েছে, মোট চাহিদার ৩৮ শতাংশ যোগান দিচ্ছে আবদুল মোনেম লিমিটেডের ব্র্যান্ড ইগলু। ঢাকা আইসক্রিম ইন্ডাস্ট্রিজের পোলার চাহিদার ২৮ শতাংশ যোগান দিচ্ছে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে লাভেলো। প্রতিষ্ঠানটি মোট চাহিদার ১৫ শতাংশ উৎপাদন করেছে। কোয়ালিটি রয়েছে চতুর্থ পর্যায়ে, কোম্পানিটি বছরে মোট চাহিদার ৯ শতাংশ যোগান দিচ্ছে। বাকি ১০ শতাংশের যোগান দিচ্ছে জা এন জি, ব্লুপ, স্যাভয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।

আইসক্রিম প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মানসম্মত আইসক্রিমে অন্তত ১২ শতাংশ মিল্ক ফ্যাট থাকা প্রয়োজন। এই পণ্যের মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় তরল দুধ, গুঁড়ো দুধ, দুগ্ধজাত ক্রিম, কনডেন্সড মিল্ক, ভেজিটেবল ফ্যাটসহ বিভিন্ন দুগ্ধজাত ও চর্বিযুক্ত উপকরণ। এ সবের একটি বড় অংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়, বিশেষত অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, স্পেন, ডেনমার্ক, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর থেকে। স্বাদ ও গন্ধ বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত উপাদান যেমন ফলের নির্যাস, চায়ের আস্তরণ, কোকো পাউডার, বাদাম, নারকেলের নির্যাস ও চকলেট কোটিং- এসবও আমদানি করা হয় মালয়েশিয়া, চীন, স্পেন ও ফ্রান্স থেকে। এ ছাড়া, আইসক্রিম মোড়কজাত করতে যে বিশেষ ধরনের র‌্যাপার ব্যবহৃত হয়, তা আসে থাইল্যান্ড, চীন ও তুরস্ক থেকে।

পাল্টা শুল্কারোপে যুক্তরাষ্ট্রের লাভ না ক্ষতি

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০১:৪১ পিএম
পাল্টা শুল্কারোপে যুক্তরাষ্ট্রের লাভ না ক্ষতি
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যে নতুন হারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করছেন। এতে সেই সব দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে। কিন্তু এর প্রভাব থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেও মুক্ত থাকতে পারবে না। 

এই শুল্কের জেরে দেশটিতে ভোক্তা পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি নানা প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় চিড় ধরতে শুরু করেছে। এই অনিশ্চয়তা দীর্ঘমেয়াদি হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এসব তথ্য জানা গেছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের এই পাল্টা শুল্কের কারণে দেশটির ভোক্তাদের ব্যয় বেড়ে যেতে পারে, বিশেষ করে পোশাকের জন্য বেশি দাম দিতে হতে পারে। ফলে দেশটির অভ্যন্তরীণ ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওয়ালমার্ট, টার্গেটসহ অন্যান্য খুচরা বিক্রেতা, যারা বাংলাদেশের সস্তা পোশাকের ওপর নির্ভরশীল, তারা মুনাফা হারাতে পারে বা অন্য জায়গা থেকে তা সংগ্রহ করতে পারে, যদিও বিষয়টি সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল হয়ে উঠতে পারে।

ভোক্তা পণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে। এই পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির ফেডারেল রিজার্ভের পক্ষে নীতি সুদহার কমানো কঠিন হবে। ডোনাল্ড ট্রাম্প এমনিতেই সুদহার কমানোর জন্য চাপাচাপি করছেন। কিন্তু মূল্যস্ফীতি আবার বাড়তে শুরু করলে ফেডের পক্ষে সুদহার কমানো সম্ভব হবে না। 

শুল্ক আরোপের ফলে বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি অনেক কমে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের পূর্বাভাস, আমদানি কমতে পারে অন্তত ২০ শতাংশ। সার্বিকভাবে মার্কিন অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে। এ ছাড়া ট্রাম্পের শুল্কের জবাবে অন্যান্য দেশ যদি মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, তাহলে রপ্তানির বাজারও মার খাবে। 

গত ২ এপ্রিল ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার তিন দিন পরই বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মর্গ্যান মন্দার পূর্বাভাস দেয়। এই পূর্বাভাস দিতে যেমন বেশি সময় লাগেনি তাদের, তেমনি মন্দা আসতে বেশি সময় নাও লাগতে পারে বলে তাদের পূর্বাভাস। চলতি বছরেই আমেরিকান অর্থনীতি মন্দার মুখোমুখি হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
মন্দা হলে সেই সঙ্গে বেকারত্বও বাড়বে বা উল্টোভাবে বললে বেকারত্ব বাড়বে বলেই মন্দা আসবে। জেপি মর্গ্যান সেটাই বলেছে। কোম্পানির প্রধান অর্থনীতিবিদ মাইকেল ফেরোলি বলেছেন, চলতি বছরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্টস বা জিডিপি) সংকুচিত হতে পারে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কারণেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে চলেছে। আর যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা হলে তার প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতেও পড়বে। সারা বিশ্বে মন্দার আশঙ্কা ৬০ শতাংশ, জানিয়েছে জেপি মর্গ্যান। এর আগে তাদের পূর্বাভাস ছিল, মন্দার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ। 

তবে বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানিয়েছে, এ কারণে বিশ্বব্যাপী মন্দার ঝুঁকি নেই।

গৌরব হারাচ্ছে মার্কিন অর্থনীতি

যুক্তরাষ্ট্রের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করে বিশ্বের প্রায় সব দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু সেই শুল্ক ঘোষণা এবং এরপর তা স্থগিতের ঘোষণার ফল হয়েছে উল্টো। সেটা হলো, যে ডলার ছিল তার অন্যতম হাতিয়ার, সেই ডলার শক্তি হারাতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে কমছে বন্ডে বিনিয়োগ। 

২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক ঘোষণার পর যেভাবে মন্দার আশঙ্কা জেঁকে বসে, তাতে মার্কিন সরকারকে ঋণ দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা। এ ছাড়া চীনের সঙ্গে যেভাবে বড় ধরনের যুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে বিশ্ব অর্থনীতি দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থবির হয়ে পড়বে বলেও আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। ট্রেজারি বন্ডের চাহিদা কমে যাওয়ার অর্থ হলো ডলারে বিনিয়োগ কমে যাওয়া। পরিণতিতে ডলারের বিনিময় হার কমে যায়, এখন ঠিক তাই হচ্ছে।

সেরা ধনী মাস্ক, শীর্ষ দশে নেই বিল গেটস

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০১:০৯ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০১:১৮ পিএম
সেরা ধনী মাস্ক, শীর্ষ দশে নেই বিল গেটস
ইলন মাস্ক ও বিল গেটস

আবারও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকার শীর্ষ স্থান দখলে রেখেছেন টেসলা ও টুইটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গে প্রকাশিত ধনীদের তালিকায় ফের শীর্ষে উঠলেন তিনি। এর আগের তালিকায়ও তিনি শীর্ষে ছিলেন। তবে মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস শীর্ষ ১০ ধনীর তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। তার নিট সম্পদ প্রায় ৩০ শতাংশ কমে ১২৪ বিলিয়ন (১২ হাজার ৪০০) ডলারে নেমে এসেছে। মূলত তার সম্পদের একটা বিশাল অংশ দান করে দেওয়ায় তিনি শীর্ষ ১০-এ থাকতে পারেননি। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স অনুযায়ী এখন তার অবস্থান ১২তম স্থানে। এর আগে তিনি পঞ্চম স্থানে ছিলেন। আর তার স্থানে উঠে এসেছেন মাইক্রোসফটের সাবেক সিইও স্টিভ বালমার। তিনি বর্তমানে ১৭ হাজার ২০০ কোটি ডলারের মালিক।

বিল গেটস ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি আগামী দুই দশকে তার সম্পদের প্রায় সবই দান করে দেবেন গেটস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে।

ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সে থাকা শীর্ষ ব্যক্তিরা হলেন

১. ইলন মাস্ক (মোট সম্পদের পরিমাণ ৩৬ হাজার ১০০ কোটি ডলার)

২. মার্ক জাকারবার্গ (মোট সম্পদের পরিমাণ ২৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার)

৩. ল্যারি এলিসন (মোট সম্পদের পরিমাণ ২৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলার)

৪. জেফ বেজোস (মোট সম্পদের পরিমাণ ২৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার)

৫. স্টিভ বালমার (মোট সম্পদের পরিমাণ ১৭ হাজার ২০০ কোটি ডলার)

৬. ল্যারি পেইজ (মোট সম্পদের পরিমাণ ১৬ হাজার ৩০০ কোটি ডলার)

৭. বেরনার্ড আর্নল্ট (মোট সম্পদের পরিমাণ ১৬ হাজার ১০০ কোটি ডলার)

৮. সের্গেই ব্রেইন (মোট সম্পদের পরিমাণ ১৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার)

৯. ওয়ারেন বাফেট (মোট সম্পদের পরিমাণ ১৪ হাজার ৬০০ কোটি ডলার)

১০. জেনসেন হুয়াং (মোট সম্পদের পরিমাণ ১৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার)

১১. মাইকেল ডেল (মোট সম্পদের পরিমাণ ১৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার)

১২. বিল গেটস (মোট সম্পদের পরিমাণ ১২ হাজার ৪০০ কোটি ডলার)

বিল গেটসের এই সম্পদ কমার প্রধান এবং একমাত্র কারণ তার উদারতা ও দানশীলতা। কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণা খাতে গেটস-মেলিন্ডা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার দান করেছেন বিল গেটস। করোনা টিকা গবেষণা খাতেও বিশাল অঙ্কের অর্থ দান করেছিলেন তিনি।

কে এলেন গেটসের জায়গায়?

বিল গেটসের জায়গায় এখন এসেছেন মাইক্রোসফটের সাবেক সিইও স্টিভ বালমার, যিনি একসময় গেটসের সহকারী ছিলেন। তার বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ১৭ হাজার ২০০ কোটি ডলার। এটি গেটসের চেয়ে প্রায় ৫ হাজার কোটি ডলার বেশি। এ ঘটনা অনেকের কাছেই বিস্ময়কর, কারণ সাধারণত প্রতিষ্ঠাতা কর্মচারীর চেয়ে ধনী থাকেন।

কীভাবে বালমার এত সম্পদ অর্জন করলেন?

স্টিভ বালমার মাইক্রোসফটের সিইও হন ২০০০ সালে এবং ২০১৪ সালে কোম্পানি ছাড়েন। তিনি তখন কোম্পানির প্রায় ৪ শতাংশ শেয়ার নিজের কাছে রেখে দেন। এর পর থেকে মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে, ফলে বালমারের সম্পদও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে।
বালমার বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাস্কেটবল দল লস অ্যাঞ্জেলেস ক্লিপার্সের মালিক। তিনি একসময় বলেছিলেন, গেটস এবং পল অ্যালেন যখন তাদের শেয়ার বিক্রি করে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করেন, তখন তিনি তার মাইক্রোসফট শেয়ার ধরে রেখেছিলেন। এই সিদ্ধান্তই আজ তাকে গেটসের চেয়ে ধনী করে তুলেছে।

গেটসের দান ও ফাউন্ডেশনের ভবিষ্যৎ

বিল গেটস গত মে মাসে এক ব্লগ পোস্টে জানান, তার সম্পদ প্রায় ১০ হাজার ৮০০ কোটিতে নেমেছে এবং আগামী দুই দশকে তিনি এর প্রায় সবই দান করে দিতে চান। তিনি বলেন, গেটস ফাউন্ডেশন ২০৪৫ সালের মধ্যে ২০ হাজার কোটি ডলারের বেশি ব্যয় করবে। 

গেটসের এই ঘটনাটি বিশ্বে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে, যেখানে একজন প্রতিষ্ঠাতা তার দানের মাধ্যমে নিজের সম্পদ স্বেচ্ছায় কমিয়ে দিয়েছেন এবং তার এক সাবেক কর্মচারী তাকে সম্পদের দিক থেকে ছাড়িয়ে গেছেন। এটি শুধু ধন-সম্পদের গল্প নয়, বরং মূল্যবোধ, দান এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ সিদ্ধান্তের এক অনন্য উদাহরণ। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

রেমিট্যান্সে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে শীর্ষে সৌদি আরব

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৫ এএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৬ এএম
রেমিট্যান্সে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে শীর্ষে সৌদি আরব
প্রতীকী ছবি

সদ্য বিদায়ি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। ২৮ জুন পর্যন্ত ৩ হাজার ৪ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ বেশি। এর আগে এত বেশি রেমিট্যান্স আসেনি দেশে। এই আয়ে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছেন সৌদি আরব প্রবাসীরা। যদিও ২০২২ সালের জুলাই থেকে গত মার্চ পর্যন্ত রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষ দেশ হিসেবে কখনো সংযুক্ত আরব আমিরাত, কখনো যুক্তরাষ্ট্র, কখনো যুক্তরাজ্যকে দেখানো হচ্ছিল। গত এপ্রিলে আবার শীর্ষ দেশ হিসেবে সৌদি আরবের নাম উঠে এসেছে, যা মে মাসেও অব্যাহত রয়েছে। জুন মাসেও একই চিত্র দেখা যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

তাদের মতে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে প্রবাসীরা অনেক বেশি পরিমাণে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। আগে যার অর্ধেক আসত ব্যাংকিং চ্যানেলে। আহসান মনসুর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার পর ডলারের দর একদফায় অনেকখানি বাড়িয়ে ১২২ টাকা নির্ধারণ করেন। এতে প্রবাসীরা বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন। বর্তমানে আইএমএফের পরামর্শে ডলারের দর বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। তারপরও স্থিতিশীল রয়েছে ডলারের বাজার। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, মে মাসে মোট ২৯৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্সের মধ্যে সৌদি আরব থেকে এসেছে ৫৩ কোটি ৩৩ লাখ ডলার; যা মোট রেমিট্যান্সের ১৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ। আর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছে ৩৫ কোটি ১৪ লাখ ডলার। যা মোট রেমিট্যান্সের ১১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ৩৪ কোটি ডলার নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্য। চতুর্থ অবস্থানে থাকা মালয়েশিয়া থেকে ৩৪ কোটি ডলার এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ২২ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। পর্যায়ক্রমে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় রয়েছে ওমান, ইতালি, কুয়েত, কাতার ও সিঙ্গাপুর।

দেশের ইতিহাসে একক মাসে সর্বোচ্চ ৩৩০ কোটি ডলার রেমিট্যান্সের রেকর্ড হয় গত মার্চে। ওই মাসে শীর্ষ আহরণকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৫৪ কোটি ৬১ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স আসে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আসে ৫০ কোটি ৮৩ লাখ ডলার। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ডলার আসে সৌদি আরব থেকে। চতুর্থ যুক্তরাজ্য এবং পঞ্চম দেখানো হয় মালয়েশিয়াকে। গত অর্থবছরও শীর্ষ দেশ হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত, দ্বিতীয় যুক্তরাষ্ট্র, তৃতীয় যুক্তরাজ্য, চতুর্থ সৌদি আরব এবং পঞ্চম অবস্থানে ছিল মালয়েশিয়া। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে সরাসরি ব্যাংক এবং এক্সচেঞ্জ হাউস- এই দুই মাধ্যমে দেশে আসে। এক্সচেঞ্জ হাউসের সংগ্রহ করা রেমিট্যান্স ব্যাংকগুলো কিনে নিয়ে সুবিধাভোগীকে টাকা পরিশোধ করে। দেশের মোট রেমিট্যান্সের বেশি অংশ আসে এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে। যেসব দেশের এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আসে, এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিবন্ধিত কোম্পানি বেশি। ফলে প্রবাসীরা যে দেশ থেকেই অর্থ পাঠান না কেন, ক্লিয়ারিং হয় এক্সচেঞ্জ হাউসের নিবন্ধিত দেশ থেকে। অবশ্য প্রতিষ্ঠানগুলো দেশভিত্তিক আলাদাভাবে রেমিট্যান্সের হিসাব করে। তবে ব্যাংকগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আলাদাভাবে না দেখিয়ে ওই দেশের রেমিট্যান্স হিসেবে রিপোর্ট করে। এই ভুল রিপোর্টিংয়ের কারণে প্রায় তিন বছর শীর্ষ রেমিট্যান্স আহরণকারী হিসেবে অন্য দেশের নাম উঠে আসছে। এখন থেকে ব্যাংকগুলোকে যে দেশের রেমিট্যান্স, সেই দেশের আয় হিসেবে দেখানোর নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে চলতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যে কারণে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশি কোনো ব্যাংক হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ১০ লাখ ডলার কিনেছে। সেখানে পাঁচ দেশের রেমিট্যান্স আছে। এটি দেশভিত্তিক আলাদাভাবে না দেখিয়ে পুরোটাই হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের রেমিট্যান্স হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিপোর্ট করে আসছিল। এতে করে প্রকৃত চিত্র প্রতিফলিত হতো না। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কথাও উঠেছে। এখন থেকে ব্যাংকগুলোকে দেশভিত্তিক প্রকৃত চিত্রের আলোকে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। সব ব্যাংক যথানিয়মে রিপোর্ট করলে আর ভুল রিপোর্টিং হবে না।

২০২২ সালের জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত সব মাসেই সৌদি আরব শীর্ষে ছিল। হঠাৎ করে ওই মাসে যুক্তরাষ্ট্রকে শীর্ষ আয়ের দেশ দেখানো হয়। দ্বিতীয় ছিল সৌদি আরব এবং তৃতীয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। অবশ্য সব মিলিয়ে ওই অর্থবছরে সৌদি আরব শীর্ষে, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান উঠে আসে দ্বিতীয়। আর তৃতীয় ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলেন, দেশে ডলার সরবরাহের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি আয়। বিগত সরকারের সময়ে রেমিট্যান্স কম আসায় দেশে ডলারের চরম সংকট দেখা দেয়। এতে রিজার্ভ কমে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে নেমে যায়। তবে সরকার পরিবর্তনের পর থেকে প্রবাসীদের আয়ে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। এখন পর্যন্ত রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে শক্তিশালী করছেন প্রবাসীরা। ফলে বিপুল পরিমাণ বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ থাকা সত্ত্বেও দেশের রিজার্ভ স্থিতিশীল রয়েছে। 

জানা গেছে, আলোচ্য সময়ে জনশক্তি রপ্তানিও খুব বেশি বাড়েনি। কয়েক বছর ধরেই বিদেশের মাটিতে দেশের শ্রমবাজার ধারাবাহিকভাবে সংকুচিত হচ্ছে। গত এক বছরেই বৈশ্বিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ৩০ ভাগ কমেছে। আর বিশ্বের মাত্র তিনটি দেশের ওপর নির্ভর করেই এখন চলছে বৈদেশিক শ্রমবাজারের ৯০ ভাগ, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বিদেশে নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি না হওয়া এবং কয়েকটি বড় শ্রমবাজার বন্ধ থাকায় ক্রমেই কমে যাচ্ছে জনশক্তি রপ্তানি। 

বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে ১০ লাখ ১১ হাজার ৮৬৯ জন কর্মী বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে ৯৫ ভাগ কর্মী গেছেন মাত্র পাঁচটি দেশ সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। তবে এই সংখ্যা ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় ৩০ ভাগ কম। ২০২৩ সালে ১৩ লাখ ৭ হাজার ৮৯০ জন কর্মীকে বিদেশ পাঠানো হয়। বিএমইটির তথ্যে আরও জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি যে তিনটি দেশে জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- সৌদি আরব ৭৩ শতাংশ, কাতারে ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং সিঙ্গাপুরে ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ। অর্থাৎ এই তিনটি দেশ মোট জনশক্তি রপ্তানির ৯০ ভাগ পূরণ করেছে। বিশ্বের বাকি দেশগুলোতে গেছে মাত্র ১০ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, জনশক্তি রপ্তানি বাড়াতে সরকারকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীতে রেমিট্যান্স আরও বাড়বে। এদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তির অন্যতম শর্ত হচ্ছে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানো।

আকু বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ২৪ বিলিয়ন ডলার

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:২০ এএম
আকু বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ২৪ বিলিয়ন ডলার
ছবি: সংগৃহীত

আমদানি বিল বাবদ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধের পর দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা কমে ২৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

এর আগে, গত ২ জুলাই রেমিট্যান্স প্রবাহের অব্যাহত বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার ঋণ ছাড় হওয়ায় রিজার্ভ বেড়ে ২৬ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) আকু বিল বাবদ ২ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আকু বিল পরিশোধের পর আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। এ সময় গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়াও কমেছে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ বা এনআইআর। তবে তা আইএমএফের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বেশি রয়েছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘বর্তমানে দেশের রিজার্ভের অবস্থা স্বস্তিদায়ক আছে। তাই আকু পেমেন্টের পরও এর খুব একটা প্রভাব পড়বে না।’

এর আগে, গত ৩ জুলাই পর্যন্ত বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছিল ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ বা এনআইআর।

আকু হলো একটি আন্তদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মায়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। এ ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করে। তবে এখন আকুর সদস্যপদ নেই শ্রীলঙ্কার। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে আমদানি ব্যয় পরিশোধের বিভিন্ন শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটির আকু সদস্যপদ সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, বাংলাদেশ প্রতি দুই মাস অন্তর আকুর বিল পরিশোধ করে থাকে। এর আগে গত ৬ মে মার্চ ও এপ্রিল মাসের আমদানির জন্য ১.৮৮ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছিল, যার ফলে বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ নেমে গিয়েছিল ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। তবে সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণের অর্থ ডলারের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় রিজার্ভ প্রায় চার বিলিয়ন ডলার বেড়েছে।

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে বাড়ছে নারীদের অংশগ্রহণ

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:১৭ এএম
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে বাড়ছে নারীদের অংশগ্রহণ
ছবি: খবরের কাগজ

বর্তমানে শাখাবিহীন ব্যাংকিংয়ে ঝুঁকছে ব্যাংকগুলো। এতে একদিকে ব্যাংকের খরচ কমছে অন্যদিকে গ্রামীণ অর্থনীতিও চাঙা হচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের প্রচার ও প্রসার। চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষে এজেন্টের সংখ্যার পাশাপাশি বেড়েছে আমানত, ঋণ বিতরণ ও রেমিট্যান্স আহরণসহ সব ধরনের কার্যক্রম। এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমে পুরুষদের তুলনায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। অর্থাৎ এই উদ্ভাবনী পদ্ধতিটি গ্রামীণ এলাকার মানুষের বিশেষ করে নারীদের ক্ষমতায়ন, বিভিন্ন আর্থিক কর্মকাণ্ডে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। 

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলোচ্য সময়ে নারী এজেন্ট এবং হিসাব সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রামীণ এলাকার তুলনায় শহরাঞ্চলে নারী এজেন্টের সংখ্যা বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি মার্চে নারী এজেন্টের সংখ্যা ৪৮ জন বেড়েছে। এর মধ্যে শহরাঞ্চলে বেড়েছে ১০ দশমিক ১ শতাংশ এবং গ্রামীণ এলাকায় ২ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। নারীদের আমানত এবং ঋণ হিসাবও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে আমানতের পরিমাণও। 

ব্যাংকের শাখা না থাকলেও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এখন সারা দেশের মানুষ ব্যাংকিং সেবা পাচ্ছে। পরিচালন ব্যয় কমাতে বর্তমানে ব্যাংকগুলো শাখার পরিবর্তে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মতো বিকল্প সেবার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। এতে গ্রামীণ মানুষ আরও বেশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে পারছেন। এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী এখন সহজেই ব্যাংকে টাকা জমা রাখতে পারছে। প্রয়োজনে ঋণও নিতে পারছে। প্রবাসীদের পাঠানো অর্থও সহজে পৌঁছে যাচ্ছে সুবিধাভোগীদের কাছে। এর মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা ছড়িয়ে পড়ছে গ্রামগঞ্জে। চাঙা হচ্ছে প্রত্যন্ত এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য। এর ফলে শক্তিশালী হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি। 

৪১ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, মূলত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীই এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানত রাখছেন। চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর। আর শহরাঞ্চলের আমানতের পরিমাণ ৮ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা। এসব আমানতের ৮১ দশমিক ৩৬ শতাংশ গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর। মার্চ প্রান্তিক শেষে ঋণ বিতরণও বেড়েছে। এ সময় মোট ঋণ বিতরণের পরিমাণ ১০ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে শহরে বেড়েছে ৫১ শতাংশ আর গ্রামে বেড়েছে মাত্র ৪ শতাংশ। 

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৩১টি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব ব্যাংকের মোট এজেন্টের সংখ্যা ১৫ হাজার ৮৩৮টি, যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় ১ দশমিক ১ শতাংশ কম। এসব এজেন্টের ৮৬ শতাংশ ও আউটলেটের ৮৭ শতাংশই গ্রামে। 
জানা গেছে, দেশের সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দিতেই ২০১৪ সালে চালু হয় এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম। এ জন্য বাড়তি চার্জ গুনতে হয় না গ্রাহককে। ব্যাংকের ডেবিট কার্ড ব্যবহারের সুযোগও পাচ্ছেন তারা। ফলে এই সেবা দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পরিচালন ব্যয় কম হওয়ায় এখন ব্যাংকগুলোও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে মনোযোগ দিচ্ছে। এতে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে গ্রাহক সংখ্যা, সেই সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণও। 

এই প্রসঙ্গে ব্যাংক এশিয়ার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের দেশের বিরাট জনগোষ্ঠী এখনো ব্যাংকিং সেবার বাইরে রয়েছে। তাদের ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে এজেন্ট ব্যাংকিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গত ৯ বছরে এই এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। কেননা এর মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহ অনেক বেড়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতে এজেন্ট ব্যাংকিং আগামী দিনে আরও বড় ভূমিকা রাখবে। 

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে একদিকে কোনো খরচ ছাড়াই ব্যাংকের লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে ব্যাংকের গ্রাহক সংখ্যাও বাড়ছে কোনো খরচ ছাড়াই। আর গ্রাহকরাও সহজেই এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছেন।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দিতে এজেন্ট ব্যাংকিং চালুর উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। সঠিকভাবে পরিচালনা করলে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি ঘরে ঘরে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। এ ছাড়া এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সংগৃহীত আমানতের অর্থে সিংহভাগ গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগের সুযোগ করা গেলে তা গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও শক্তিশালী ও সচল রাখতে, বিশেষ করে গ্রামের নারীদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেন তারা। আগামী দিনে সেই চেষ্টাই করা হবে বলেও জানান তারা। 

জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর এজেন্ট ব্যাংকিং নীতিমালা জারির পর ২০১৪ সালে প্রথম এ সেবা চালু করে বেসরকারি খাতের ব্যাংক এশিয়া। এখন পর্যন্ত এ সেবায় শীর্ষে অবস্থান করছে বেসরকারি খাতের ডাচ-বাংলা ব্যাংক। এরপরই রয়েছে ব্যাংক এশিয়া এবং ইসলামী ব্যাংক। 

প্রসঙ্গত, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হিসাব খোলা, টাকা জমা ও উত্তোলন, টাকা স্থানান্তর (দেশের ভেতর), রেমিট্যান্স উত্তোলন, বিভিন্ন মেয়াদি আমানত প্রকল্প চালু, ইউটিলিটি সার্ভিসের বিল পরিশোধ, বিভিন্ন প্রকার ঋণ উত্তোলন ও পরিশোধ এবং সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় সরকারি সব ধরনের ভর্তুকি গ্রহণ করা যায়। এজেন্টরা কোনো চেক বই বা ব্যাংক কার্ড ইস্যু করতে পারে না। এজেন্টরা বৈদেশিক বাণিজ্যসংক্রান্ত কোনো লেনদেনও করতে পারেন না। এ ছাড়া এজেন্টদের কাছ থেকে কোনো চেকও ভাঙানো যায় না। মোট লেনদেনের ওপর পাওয়া কমিশন থেকেই এজেন্টরা আয় করেন।