ঢাকা ১ শ্রাবণ ১৪৩২, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
English

বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়েই চলছে

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ১১:৩৫ এএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫, ১২:০১ পিএম
বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়েই চলছে

বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়েই চলছে। অর্থবছরের শেষে এসে এই চাপ আরও বেড়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) বৈদেশিক ঋণের সুদ ও আসল বাবদ অর্থ পরিশোধ ৪ বিলিয়ন বা ৪০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এযাবৎকালের মধ্যে সরকারকে বিদেশি ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চলতি অর্থবছর শেষে বিদেশি ঋণ শোধের পরিমাণ ৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) পক্ষ থেকে রবিবার প্রকাশিত বিদেশি ঋণ পরিশোধসংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের সুদ ও আসল বাবদ সরকার পরিশোধ করেছে ৩৭৮ কোটি মার্কিন ডলার। যেখানে গত অর্থবছরের পুরোটা সময়ে বিদেশি ঋণের আসল ও সুদ বাবদ পরিশোধ করতে হয়েছিল ৩৩৪ কোটি ডলার।

ইআরডির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল বাবদ সরকার পরিশোধ করেছিল প্রায় ৩০৭ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল বাবদ অর্থ পরিশোধের পরিমাণ ২৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে। গত জুলাই থেকে মে পর্যন্ত সরকার এ বাবদ যে অর্থ ব্যয় করেছে, তার মধ্যে ঋণের আসল বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ২৩৮ কোটি ডলার। ঋণের সুদ বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ১৪০ কোটি ডলার।

ইআরডির কর্মকর্তারা বলছেন, বিগত সময়ে নেওয়া বড় বড় মেগা প্রকল্প ও বাজেট সহায়তার ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে হওয়ায় বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ ক্রমাগত বাড়ছে। একই সঙ্গে বাজারভিত্তিক উচ্চ সুদহারের বিভিন্ন ঋণ গ্রহণও এতে প্রভাব ফেলেছে। কয়েক বছর ধরেই অর্থনীতিবিদরাও বিদেশি ঋণ গ্রহণের বিষয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছিলেন।

এদিকে বিদেশি ঋণ পরিশোধ বাড়লেও কমেছে বিদেশি ঋণছাড় ও ঋণের প্রতিশ্রুতি। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বিদেশি ঋণছাড় হয়েছে ৫৬০ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭০২ কোটি ডলার। একই সময়ে নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছে ৫৪৮ কোটি ডলারের। যদিও গত অর্থবছরের একই সময়ে ঋণ প্রতিশ্রুতি এসেছিল ৭৯২ কোটি ডলারের।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ৬০৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারের বিদেশি ঋণ পরিশোধ করেছে (সুদ ও আসল মিলিয়ে)। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পরিশোধ করা হয়েছিল ৪৭৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে সরকারের মোট বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭৮ দশমিক ১৮ বিলিয়ন (৭ হাজার ৮১৮ কোটি) ডলার।

ইআরডির কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি অর্থবছর শেষে সরকারের ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বাড়বে আরও  ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলারেরও বেশি। পর্যায়ক্রমে এ ঋণ পরিশোধের চাপ সামনের বছরগুলোয় আরও বাড়বে। কেননা গত অর্থবছরে বিদেশি ঋণের আসল পরিশোধ যে গতিতে বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি গতিতে বেড়েছে সুদ বাবদ খরচ। টাকার অবমূল্যায়নের ফলে বিদেশি ঋণের সুদের পরিমাণ বেড়ে গেছে। তা ছাড়া প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণের চাপও সামনে বাড়তে থাকবে।

অর্থনীতিবিদ ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘সামনের দিনগুলোয় সরকারের বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ আরও বাড়বে। এতে করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপরে চাপ পড়বে। বড় প্রকল্পগুলোয় গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে গেলে সুদ ও আসল দুটিই পরিশোধ করতে হবে। ফলে সামনে ঋণ পরিশোধের চাপ স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে। এ চাপ এমন একটি সময়ে আসছে, যখন দেশের রিজার্ভের পতন ঠেকানো গেলেও তা এমন পর্যায়ে নেই যে, ঋণ পরিশোধের চাপকে ধারণ করতে পারে। এ অবস্থায় আমাদের বিদেশি ঋণের শর্ত নমনীয় করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে দরকষাকষি করতে হবে। সম্প্রতি চীনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। অন্যদের সঙ্গেও এ ধরনের আলোচনা শুরু করাটা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে করে সহনীয়ভাবে ঋণ পরিশোধ করা যায়। পাশাপাশি নতুন করে বিদেশি ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে খুব সাবধান থাকতে হবে। আমাদের ঋণ পরিশোধের যে প্রক্ষেপণ করা হয়, সে ক্ষেত্রেও অস্পষ্টতা রয়েছে, সেগুলোকে ঠিক করতে হবে। তা না হলে নীতিনির্ধারকরা সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। কতটুকু চাপ আসবে, আগাম কোনো সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে কি না বিবেচনায় নিতে হবে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাজেট সহায়তা পেলে আমাদের জন্য কিছুটা সুবিধা হবে। পাশাপাশি ঋণ পরিশোধের অবস্থা ও রিজার্ভ কোথায় দাঁড়াতে পারে, সেই প্রক্ষেপণ বিবেচনায় নিয়ে নতুন ঋণ গ্রহণের কৌশল ঠিক করতে হবে।’

ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, বহুপক্ষীয় ও দ্বিপক্ষীয় দাতাদের সরকার ২০২৩-২৪ অর্থবছরে  ঋণের সুদ ও আসল মিলিয়ে পরিশোধ করেছে ৩৩৭ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ৩৭ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ। এর মধ্যে ২২ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা মূল ঋণ ও ১৪ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা সুদ রয়েছে। বহুপক্ষীয় দাতাসংস্থা হিসেবে সবচেয়ে বেশি ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংককে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সংস্থাটির অনুকূলে পরিশোধ করা হয়েছে ১৪ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। 

রাশিয়ার এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ১ হাজার ২৬৫ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ। এ ঋণের আসল এখনো পরিশোধ শুরু হয়নি। ২০২৭ সাল থেকে আসল পরিশোধের কথা থাকলেও সরকার  আরও দুই বছর পেছানোর উদ্যোগ নিয়েছে। আসল ও সুদসহ তখন বাংলাদেশকে প্রতিবছর প্রায় ৫০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ও ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, ‘সরকারের নিজের ঋণের পাশাপাশি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা  এবং এ ধরনের অন্যান্য যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোর নেওয়া বিদেশি ঋণও শেষ পর্যন্ত সরকারকেই পরিশোধ করতে হয়। এসব ঋণের ক্ষেত্রে সরকার গ্যারান্টি দিয়েছে। ঋণ নেওয়ার সময় চুক্তিতে যদিও বলা হয়ে থাকে যে প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের কাছ থেকে ঋণ হিসেবে এ অর্থ নিয়েছে এবং তাদের সেটি ফেরত দিতে হবে। কিন্তু দেখা যায় যে, যখন কিস্তি পরিশোধের সময় আসে তখন অনেক ক্ষেত্রে তারা এটি পরিশোধ করতে পারে না এবং তখন সরকারকেই সেটি পরিশোধ করতে হয়। এটিই দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। ফলে সার্বিকভাবে সুদাসলে সরকারের বিদেশি ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বাড়ছে। যত দিন যাবে এ ঋণ পরিশোধের বোঝা আরও বাড়বে। তাই বিদেশি ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সেটি গ্রহণের ন্যায্যতা, পরিশোধের সক্ষমতা ও ঋণের প্রয়োজনীয়তার দিকটি বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে আগামী দিনগুলোয় ঋণ পরিশোধের চাপের কারণে আরও বেসামাল অবস্থা হবে। এ জন্য সরকারকে একটি কার্যকর ও যথাযথ ঋণ ব্যবস্থাপনা কৌশল গ্রহণ করতে হবে।’

প্রকল্প সংস্কৃতি মহামারি আকার ধারণ করেছে: ড. হোসেন জিল্লুর রহমান

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৭:০৯ পিএম
আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৭:৫০ পিএম
প্রকল্প সংস্কৃতি মহামারি আকার ধারণ করেছে: ড. হোসেন জিল্লুর রহমান
ছবি: খবরের কাগজ

প্রকল্প সংস্কৃতি সব মন্ত্রণালয়ে মহামারি আকার ধারণ করেছে উল্লেখ করে বিবিএস শক্তিশালীকরণ বিশেষজ্ঞ টাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা ঋণদাতা সংস্থাগুলোকে বলব এটা যাতে তারা দেখে।’

বুধবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বিবিএস ভবনের সম্মেলন কক্ষে এক পরামর্শক সভা তিনি এ কথা বলেন। এ সময় কমিটির সদস্য ড. ফাহমিদা খাতুনসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পারটিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) হচ্ছে জাতীয়ভাবে অনুমোদিত তথ্য ব্যাংক। এটাকে কীভাবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শক্তিশালী করা যায় তার সুপারিশ করা হবে। সবার সঙ্গে সভা করে জানতে চাওয়া হচ্ছে বিবিএসের দুর্বলতা কোথায়। অনেকেই বলছেন, পরিসংখ্যানের যোগাযোগে দুর্বলতা রয়েছে। তাই মাঠ থেকে যে তথ্য সংগ্রহ করা হয় তা কীভাবে আসে তা দেখা হবে। কারণ বিবিএসকে পেশাদারিত্বের জায়গায় নিয়ে আসা হবে। আগামী আগষ্ট মাসে এর প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’

৮ সদস্য বিশিষ্ট টাস্কফোর্স কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- ড. মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ (সাবেক মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো), ড. ফাহমিদা খাতুন (নির্বাহী পরিচালক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)), ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক (চেয়ারম্যান, র‍্যাপিড, ড. সৈয়দ শাহাদৎ হোসেন, অধ্যাপক, আইএসআরটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সভাপতি, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান সমিতি), ড. মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম, (অধ্যাপক, পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), ড. অতনু রব্বানী (অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), ড. মোহাম্মদ ইউনুস (গবেষণা পরিচালক, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)।
বিবিএসের গুণগতমান বজায় রাখা, স্বচ্ছতা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ গত এপ্রিল মাসে এই কমিটি গঠন করেন।

জাহাঙ্গীর আলম/সুমন/

বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে ডলারের দাম বাড়ল

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৫ এএম
আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৪ এএম
বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে ডলারের দাম বাড়ল
প্রতীকী ছবি

সপ্তাহব্যাপী দরপতনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপের এক দিন পরই বেড়েছে ডলারের দাম। দাম বেড়েছে ১ টাকা ৪০ পয়সা। দাম বাড়ার পরও মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বাজার থেকে ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বোচ্চ ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে ১৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও নিলামে ২২টি ব্যাংক অংশগ্রহণ করেছিল। এর আগে গত রবিবার প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে নিলামে ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার কেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, দেশের মুদ্রাবাজারে মঙ্গলবার ডলারের সর্বোচ্চ দাম ১২১ টাকা ৫০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন দাম ১২০ টাকা ৮০ পয়সা ছিল। আগের দিন সোমবার যা ছিল সর্বোচ্চ ১২০ দশমিক ১০ টাকা ও সর্বনিম্ন ১১৯ দশমিক ৫০ টাকা। গতকাল ডলারের গড় দাম ছিল ১২১ দশমিক ১১ টাকা অর্থাৎ ডলারের বিক্রয়মূল্য বেড়েছে ১ টাকা ৪০ পয়সা।

দেশে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়লেও ডলারের চাহিদা কমেছে। ফলে ডলারের দাম টাকার তুলনায় কমতে শুরু করেছিল। এই পরিস্থিতিতে ডলারের দাম ধরে রাখতে নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার কেনার কারণে ডলারের মূল্যহ্রাসের ধারা থেমেছে বলে ধারণা করছেন বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। 

তারা বলছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে অন্যতম লক্ষ্য বললেও কেন বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দর ধরে রাখতে চাইছে তা বোধগম্য নয়। 

এই বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা খবরের কাগজকে বলেন, ‘মুদ্রার বিনিময় হার যেন হুট করে উঠানামা না করে সেই বিষয়টিই বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিয়ত নজরদারি করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব হলো সবদিক ঠিক রাখা। রপ্তানি, রেমিট্যান্স, মূল্যস্ফীতিসহ আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা ঠিক রাখাই বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ। এখন যদি ডলারের দাম হঠাৎ কমিয়ে দিই, রেমিট্যান্স আসা কমে যেতে পারে। আবার রপ্তানিকারকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

ব্যাংকাররা বলছেন, গত সপ্তাহে ডলারের দাম প্রায় ৩ টাকা কমে যাওয়ার পর নিলামে বেশি দামে ডলার কেনে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশি দর দিয়ে ডলার কিনে বাজারে দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দেয়। মঙ্গলবারও একই কাজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

এই বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে কিছুটা বেশি দরে ডলার কিনে বাজারে একটি ‘ইন্ডিকেটিভ রেট’ দিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ বাজারদর রিয়েল ইফেক্টিভ এক্সচেঞ্জ রেটের (আরইইআর) আশপাশে থাকার কথা। তার প্রভাবেই মঙ্গলবার ডলারের দাম কিছুটা বেড়েছে।” 

তবে ডলারের বাজার নিয়ে এখনই চূড়ান্ত কোনো মন্তব্য করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আরও কয়েক দিন বাজার পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’

পঞ্চগড়ে পুনরায় চালু তৃতীয় চা নিলাম বাজার

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১০:০৫ এএম
পঞ্চগড়ে পুনরায় চালু তৃতীয় চা নিলাম বাজার
ছবি: খবরের কাগজ

পঞ্চগড়ে পুনরায় চালু হয়েছে দেশের তৃতীয় চা নিলাম বাজার। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল থেকে ষষ্ঠ নিলামের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হয়। স্মল টি গার্ডেন ওনার্স অ্যান্ড টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ নিলামে চা বিক্রি হয়েছে চাহিদার চেয়ে বেশি দামে।

নিলামে কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ দর উঠেছে ২৩০ টাকা। গ্রিন ভ্যালি ব্রোকার হাউস ৩৪ হাজার ৬৬০ কেজি, হিমালয় ব্রোকার হাউস ১ লাখ ১০ হাজার ২২২ কেজি ও ইন্ডিগো ব্রোকার হাউস ২ হাজার ৯৯৪ কেজি চা তোলার জন্য উপস্থাপন করে। নিলাম বন্ধ থাকায় চা শিল্পে স্থবিরতা দেখা দিয়েছিল। গত ৬ মে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম নিলাম। দ্বিতীয় নিলাম হয় ২০ মে। এরপর সক্রিয় দুটি ব্রোকার হাউসের অনিয়মের কারণে নিলাম কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।

তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম নিলাম অনুষ্ঠিত হয়নি। পরে চা বোর্ডের শুনানিতে ইন্ডিগো ও হিমালয় ব্রোকার হাউসকে আর্থিক জরিমানা করা হয়। তারা ভবিষ্যতে এমন অনিয়ম করবে না বলে মুচলেকা দেয়। পরে চা বোর্ড তাদের কার্যক্রম পুনরায় চালুর অনুমতি দেয়। নিলাম চালু হওয়ায় খুশি কারখানা মালিক ও ব্যবসায়ীরা। নিলামে বিডারদের অংশগ্রহণ ছিল সক্রিয়। বেশির ভাগ চা বিক্রি হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকা কনটেইনার নিলামে উঠবে

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫২ এএম
আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫৭ এএম
চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকা কনটেইনার নিলামে উঠবে
চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার ইয়ার্ড (ফাইল ছবি)

চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকা ১০ হাজার ১২৪ টিইইউএস কনটেইনারের মধ্যে ৪৭৫ টিইইউএস নিলামে তোলা হচ্ছে। যা জমা থাকা কনটেইনারের মাত্র ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এরপরও নিলাম শুরু হওয়ায় আশার আলো দেখছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ বন্দরের ১৯ শতাংশ জায়গা দখল হয়ে আছে নিলামযোগ্য কনটেইনারে।

জানা যায়, বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ৪৭৫টি পণ্যবাহী কনটেইনার নিলামে তোলার কার্যক্রম শুরু করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্দেশনায় বন্দরের কনটেইনারজট কমাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, নিলামে গতি ফিরে এলে কনটেইনারে থাকা পণ্যের মান ঠিক থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের হাতে পৌঁছাতে পারে। অন্যথায় মান নষ্ট হয়ে গেলে সে পণ্য নিলাম ক্রেতারাও নিতে চান না। এতে সরকার রাজস্ব হারায়।

কাস্টমস ও বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) পর্যন্ত বন্দরে ৪২ হাজার ৯০৬ টিইইউএস কনটেইনার ছিল, যার মধ্যে ১০ হাজার ১২৪ টিইইউএস নিলামযোগ্য কনটেইনার দীর্ঘদিন ধরে বন্দর ইয়ার্ডে পড়ে আছে। সেগুলো খালাস না হওয়ায় নতুন কনটেইনার রাখার জায়গার সংকট দেখা দেয়।

কাস্টস হাউস সূত্র মতে, ২০১৩ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে যেসব পণ্য আমদানি হলেও খালাস হয়নি- সেগুলো ‘পরিত্যক্ত’ হিসেবে চিহ্নিত হয়। এসব কনটেইনারের সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার টিইইউএস। এনবিআরের নির্দেশনায় এসব কনটেইনার দ্রুত নিষ্পত্তির তাগাদা দেওয়া হয়েছে।
 এর জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার মো. তফছির উদ্দিন ভূঁইয়াকে প্রধান করে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমদানি-রপ্তানির গতি ফেরাতে নিলাম কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এনবিআরের নিদের্শনায় প্রথম ধাপে ৪৭৫টি কনটেইনার নিলামে তোলা হচ্ছে। কনটেইনার পণ্য ধ্বংসের জন্যও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব এ কাজ এগিয়ে নেওয়া হবে।’

কাস্টম হাউসের নিলাম শাখা জানিয়েছে, ১৫ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই দুপুর ২টা পর্যন্ত ই-অকশন কার্যক্রম চলবে। এবার চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে থাকা অখালাসকৃত, আটককৃত ও বাজেয়াপ্ত বিভিন্ন মালামাল যেখানে যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায় নিলামে বিক্রির জন্য ই-অকশন দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহী নিলাম ক্রেতারা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে নিলামে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। 

এদিকে বিডাররা সরেজমিনে পণ্য দেখার জন্য লটভুক্ত মালামাল ১৬ জুলাই সকাল থেকে ২২ জুলাই বিকাল ৪টা পর্যন্ত দেখতে পারবেন। ২৭ জুলাই সংশোধনী তালিকা প্রকাশ করা হবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের নিলাম শাখার ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ সাবিক হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘২০২৩ সালের আগের পড়ে থাকা কনটেইনারগুলো নিলামে তোলা হচ্ছে। যদিও এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। পণ্য চালান ধ্বংসেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এবার নিলামে তোলা কনটেইনারের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক, টাইলস, মেশিনারি পণ্য। নিয়ম মেনে কাস্টম হাউসের এ নিলামে যে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এখানে লটের মূল্যের ৬০ শতাংশ পূরণ হওয়ার বিধিবিধান থাকছে না। সর্বোচ্চ দরদাতাকে দিয়ে দেওয়া হবে।’

জানা গেছে, বন্দরে ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ের নিলামযোগ্য ৯ হাজার ৬৪৪টি কনটেইনার রয়েছে। পণ্যের পরিমাণ প্রায় দুই লাখ টন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নিলামযোগ্য কনটেইনার ছিল ৯ হাজার ৭৮৬ টিইইউএস। বর্তমানের ২০২৫ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত নিলামযোগ্য কনটেইনারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ১২৪ টিইইউএস। যার আর্থিক মূল্য প্রায় চার হাজার কোটি টাকা। অথচ সঠিক সময়ে নিলাম করা গেলে ওই পরিমাণ পণ্যের টাকা সরকার রাজস্ব পেত। নিলামযোগ্য কনটেইনারের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের ১৫০ কোটি টাকা বকেয়া ভাড়া আটকে রয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘নিলাম কনটেইনার সরানোর জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বারবার তাগাদা দিয়ে আসছে। এগুলোর কারণে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অথচ নিলামের কনটেইনারগুলো নিষ্পত্তি করা হলে ইয়ার্ডে নতুন কনটেইনার রাখা যেত।’

বিমা খাতে সিইও নিয়োগে সংশোধন হচ্ছে বিধান

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৪ এএম
বিমা খাতে সিইও নিয়োগে সংশোধন হচ্ছে বিধান
খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফি

দেশে ব্যবসারত বিমা কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগ জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে বিমা খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) প্রবিধানমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় হতে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের (এনএসআই) এক চিঠির জবাবে এমনটিই জানিয়েছে আইডিআরএ। 

আইডিআরএ নিবন্ধন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক মো. নূরুজ্জামান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় হতে যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল সেখানে তিনটি জীবন বিমা কোম্পানি ও ২টি নন-লাইফ বিমা কোম্পানির সিইও নিয়োগে জটিলতার বিষয়ে বলা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে মোট ১৯টি কোম্পানি বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। 

গত ৪ জুন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় হতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফআইডি) সচিব নাজমা মোবারেকের কাছে একটি চিঠি প্রেরণ করা হয়। যা আইডিআরএ-তেও পাঠানো হয়। চিঠিতে পাঁচ বিমা কোম্পানি আইন ভেঙে সিইওর চলতি দায়িত্ব পালন করছে উল্লেখ করে আইডিআরএ কর্তৃক পদক্ষেপ না নেওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এই প্রতিবেদনের পরামর্শের আলোকে আইডিআরএ পরবর্তী সময়ে কি ব্যবস্থা নিয়েছে তাও জানাতে বলা হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে চিঠির জবাবে আইডিআরএ জানিয়েছে, বিদ্যমান বিমা কোম্পানি (মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ) প্রবিধানমালা, ২০১২ তে কোম্পানিগুলোতে সিইও নিয়োগের জন্য যে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার কথা বলা হয়েছে তা পরিপালন করে প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এ সমস্যা সমাধানে প্রবিধানমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা ইতোমধ্যে খসড়া প্রস্তুত আকারে মতামতের জন্য আইডিআরএ ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। 

এক্ষেত্রে নিয়ম ভঙ্গ করে ভারপ্রাপ্ত সিইওর মাধ্যমে যেসব কোম্পানি পরিচালিত হচ্ছে সেসব কোম্পানির বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো, জরিমানা আরোপ ও রিট মামলা পরিচালনা করা হচ্ছে চিঠির জবাবে উল্লেখ করেছে আইডিআরএ। 

কোম্পানিগুলোত সিইও নিয়োগের জটিলতা নিরসনে গত ১০ জুলাই বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সঙ্গে একটি মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে সংস্থাটির চেয়ারম্যানও স্বীকার করেছেন কোম্পানিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে বিমা খাতে সিইও সংকট তৈরি করে রেখেছেন।
প্রবিধানমালা সংশোধানের বিষয়ে আইডিআরএ চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, কোম্পানিগুলো ইচ্ছা করে নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে সিইও নিয়োগের জন্য এ সেক্টেরে সিইও সংকট তৈরি করে রাখেন। আইন অনুযায়ী, বিমা কোম্পানির সিইও হতে হলে এর পূর্ববতী নিম্ন পদে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কিন্তু কোম্পানিগুলো ইচ্ছা করেই নিম্নপদে কাউকে নিয়োগ প্রদান করেন না। ফলে সিইও সংকট থাকায় কোম্পানিগুলো ভারপ্রাপ্ত সিইও এর মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছে।

তিনি আরও বলেন, ‘বিমা খাতের সিইও সমস্যা সমাধানে সংশোধিত প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে বিমা কোম্পানিতে ১২ বছরের অভিজ্ঞতা আর এএমডি হিসেবে এক বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে সিইও হিসেবে আবেদন করা যাবে। এ ছাড়া কারও বিমা কোম্পানিতে তিন বছরের ডিএমডিসহ ১ বছর সদর দপ্তরে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকলেও তিনি সিইও হতে পারবেন। তবে তার বিমা কোম্পানিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা লাগবে ১২ বছর। ১৫ বছরের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতাসহ তিন বছরের ডিএমডি ও এক বছরের এএমডি থাকলেও বিমা কোম্পানির সিইও হিসেবে আবেদন করা যাবে।’ 

চলতি বছরের ৭ মার্চ আইডিআরএ এক চিঠিতে জানিয়েছে, কোনো বিমা কোম্পানিতে ‘মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব)’ হিসেবে কাউকে নিয়োগ করা যাবে না। কোনো কোম্পানিতে ‘মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব)’ পদবি কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না। মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার নিয়োগ প্রস্তাব আইডিআরএর অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসরণ করে একজন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালককে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া যাবে।

আইডিআরএ পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সোনালী লাইফ কোম্পানিটিতে ২০২৪ সালের ২১ এপ্রিল প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু কোম্পানির মাধ্যমে প্রশাসক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে ১১টি রিট মামলা করা হয়েছে। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি প্রশাসকের পদত্যাগ গৃহীত হলে কোম্পানিটিকে সিইও নিয়োগের জন্য আইডিআরএ থেকে তাগিদ দেওয়া হয়। গত ২৫ মে কোম্পানিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিইও নিয়োগ চার মাস সময় প্রদানের আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 

মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোম্পানিটি শেখ আব্দুল রশিদকে সিইও হিসাবে নিয়োগের জন্য আইডিআরএতে আবেদন করেছে। আইডিআরএ পক্ষ থেকে কোম্পানির হালনাগাদ চেক লিস্ট অনুযায়ী পুনঃনিয়োগ প্রস্তাব দাখিলের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। 
কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোম্পানির সিইও পদ ছয় মাসের বেশি সময় শূন্য থাকায় ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর মোশাররফ হোসেনকে সিইও নিয়োগের আবেদন করলে আইডিআরএ থেকে তার অব্যবহিত নিম্নপদে থাকার প্রত্যয়পত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। যা এখনো প্রক্রিয়াধীন। 

রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ না হওয়ায় এখন পর্যন্ত কোম্পানিটিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তারপরও কোম্পানিটিতে এখনো সিইও নিয়োগ সম্পূর্ণ হয়নি। সর্বশেষ গত ২৫ মে কোম্পাটির প্রস্তাবিত সিইওর বিষয়ে আইডিআরএর কাছে রিভিউ আবেদন করে এবং ১৭ জুন আইডিআরএ- কোম্পানির নতুন চেকলিস্ট অনুযায়ী পুনরায় আবেদনের জন্য জানিয়েছে। 

এ বিষয়ে আইডিআরএর মুখপাত্র সাইফুন্নাহার সুমি খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিমা কোম্পানিতে সিইও নিয়োগের প্রবিধানমালা সংশোধনে ইতোমধ্যে এ খাতসংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আইডিআরএ- এ বিষয়ে খুবই সচেতন।’