
অনুচ্ছেদ লিখন
নারী অধিকার
মানুষ ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব। এ সেরা জীবে নর-নারীর ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় কিছু খারাপ মানুষের নারী বিদ্বেষী মনোভাবের জন্য নারীরা অনেক পিছিয়ে পড়েছে। তাই আজকে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টি একটি প্রাসঙ্গিক ও খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা শুধু নর বা পুরুষদের দিয়ে সমাজে উন্নতি সাধন হয় না। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘গাড়ির দুটি চাকার মধ্যে একটি চাকা নষ্ট হলে ওই গাড়ি বেশি দূর যেতে পারে না। তেমনি একটি দেশের উন্নতির জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীরও দরকার।’ কারণ, তারা এ পৃথিবীতে অনেক কল্যাণকর কাজ করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে। অথচ তাদের প্রাপ্তিকে পুরোপুরিভাবে স্বীকার করা হচ্ছে না। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাই ‘নারী’ কবিতায় আক্ষেপ করে বলেছেন, ‘কোন রণে কত খুন দিল নর, লেখা আছে ইতিহাসে / কত নারী দিল সিঁথির সিঁদুর, লেখা নেই তার পাশে।’ ১৯৮৪ সাল থেকে প্রতি বছর সারা বিশ্বে ৮ মার্চ ‘বিশ্ব নারী দিবস’ পালন করা হয়।
আরো পড়ুন : ১টি অনুচ্ছেদ লিখন, ৪র্থ পর্ব, এসএসসি বাংলা ২য় পত্র
কিন্তু তবুও এখনো অনেক নারী শ্রমিক ঠিকভাবে তাদের পারিশ্রমিক পায় না। নারীরা খুব জরুরি কাজে ঘর থেকে বাইরে গেলে নিরাপত্তা পায় না। এমনকি কিছু নারী ঘরেও নিরাপত্তা পায় না। প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায়, ইভটিজিং, ধর্ষণ, যৌতুক, খুন, আত্মহত্যা ইত্যাদি করুণ ঘটনা। কিন্তু কেন ঘটবে এসব ঘটনা। নারীরা তো আমাদের কারো বোন, কারও স্ত্রী, কারও মা, সর্বোপরি তারাও মানুষ। তাই তাদের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে শুধু নীতিমালা করলেই হবে না, সেগুলো বাস্তবে প্রয়োগও করতে হবে। আমাদের ধর্মীয় নৈতিকতাবোধ বেশি করে জাগ্রত করতে হবে। নারীদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ না করে তাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে ভালোবাসতে হবে। তাহলেই সমাজে শান্তি বিরাজ করবে।
লেখক : সিনিয়র শিক্ষক (বাংলা)
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা
কবীর