
নমুনা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর-৩
উদ্দীপকটি পড়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ।
এমএ পাস করা জামিল মা-বাবার সঙ্গে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন গরিব ঘরের এক মা-বাবা মেয়ের অমতে মেয়েকে গ্রামের এক বৃদ্ধ মাতব্বরের সঙ্গে বিয়ে দিচ্ছেন। জামিল এর প্রতিবাদ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি তার মা-বাবার সঙ্গে পরামর্শ করে এবং ওই মেয়ের মতামত নিয়ে নিজেই তাকে বিয়ে করেন।
ক. হাশেমের চোখে কান্না এল কার কথা ভেবে?
খ. বহিপীর বইয়ের ভাষায় কথা বলেন কেন?
গ. উদ্দীপকের জামিল ও ‘বহিপীর’ নাটকের হাশেমের মধ্যে সাদৃশ্য নিরূপণ করো।
ঘ. উদ্দীপকের জামিল সম্পূর্ণরূপে ‘বহিপীর’ নাটকের হাশেম হতে পারেনি, যৌক্তিক বিশ্লেষণ করো।
(ক) নম্বর প্রশ্নের উত্তর
হাশেমের চোখে কান্না এল তার পিতা হাতেম আলির কথা ভেবে।
(খ) নম্বর প্রশ্নের উত্তর
বিভিন্ন অঞ্চলের মুরিদদের সঙ্গে সহজ বোধগম্য ভাষায় যোগাযোগের জন্য বহিপীর বইয়ের ভাষার কথা বলেন।
‘বহিপীর’ নাটকে বহিপীরের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মুরিদ আছে। বিভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা বিদ্যমান। কিন্তু এত ভাষা, আয়ত্ত করা সম্ভব নয় বলে শুধু এক ভাষাতেই কথা বলে বহিপীর তার মনোভাব প্রকাশ করেন। বইয়ের ভাষা সবার বোধগম্য বলে তিনি বইয়ের ভাষায় কথা বলেন।
আরো পড়ুন : ১টি নমুনা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর, ২য় পর্ব
(গ) নম্বর প্রশ্নের উত্তর
উদ্দীপকের জামিল ও ‘বহিপীর’ নাটকের হাশেম উভয়ের মধ্যে পরোপকারের দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে।
‘বহিপীর’ নাটকের হাশেম আলী জমিদার হাতেম আলির ছেলে। তাদের বজরায় তারা তাহেরা নামক এক মেয়েকে আশ্রয় দেন, যার বিয়ে ঠিক হয়েছিল এক বুড়োর সঙ্গে। কিন্তু তাহেরা এ বিয়ে মেনে নেননি। হাশেম আলিও তাহেরার কথা বুঝতে পেরে তার সঙ্গে সম্মতি প্রকাশ করেন। বহিপীর বুড়োর সঙ্গে বিয়ে থেকে তাহেরাকে বাঁচানোর জন্য তাকে নিয়ে পালিয়ে যান।
উদ্দীপকের জামিলও হাশেম আলির মতো একটি মেয়েকে অন্যায় বিয়ে থেকে বাঁচান। তিনি জানতে পারেন যে, গরিব ঘরের এক মা-বাবা মেয়ের অমতে মেয়েকে গ্রামের এক বৃদ্ধ মাতব্বরের সঙ্গে বিয়ে দিচ্ছেন। তখন মেয়েটির কল্যাণের জন্য তিনি এগিয়ে আসেন এবং মা-বাবার সঙ্গে পরামর্শ করে নিজেই তাকে বিয়ে করেন। তাই উদ্দীপকের জামিল ও ‘বহিপীর’ নাটকের হাশেম উভয়ের মধ্যে এক অসহায় মেয়েকে বিয়ে করার মাধ্যমে পরোপকারের সাদৃশ্যময় দিকটি ফুটে উঠেছে।
(ঘ) নম্বর প্রশ্নের উত্তর
‘বহিপীর’ নাটকের হাশেমের বৈশিষ্ট্য জামিলের মধ্যে প্রকাশ না পাওয়ায় আলোচ্য মন্তব্যটি ছিল যথার্থ।
‘বহিপীর’ নাটকের হাশেম সমাজের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা একজন শিক্ষিত ছেলে, তিনি গ্রাম-বাংলার সাধারণ মানুষের মতো কুসংস্কারে আচ্ছন্ন নন। মানুষের প্রতি তিনি তার সহানুভূতি প্রকাশ করেন। এ ছাড়া বাবার অসহায়ত্বের কথা তার মনকে আলোড়িত করে। তাহেরাকে বাঁচানোর জন্য তিনি তাকে নিয়ে পালিয়ে যান।
উদ্দীপকের এমএ পাস করা জামিল মা-বাবার সঙ্গে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, গরিব ঘরের মেয়েকে এক বুড়োর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মেয়েটিকে বাঁচানোর জন্য তিনি ‘বহিপীর’ নাটকের হাশেম আলির মতো নিজেই মেয়েটিকে বিয়ে করেন।
পরিশেষে বলা যায় যে, হাশেম আলির সঙ্গে জামিলের চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে। তারা উভয়েই বুড়োদের হাত থেকে দুটি মেয়েকে রক্ষা করে বিয়ে করেছেন। কিন্তু হাশেম আলির মতো নিজের বাবার প্রতি সহানুভূতি, কুসংস্কারে বিশ্বাস না করা ইত্যাদি গুণ জামিল সাহেবের চরিত্রের মধ্যে নেই। তাই হাশেম আলির সব বৈশিষ্ট্য উদ্দীপকের জামিলের মধ্যে না থাকায় তিনি সম্পূর্ণরূপে ‘বহিপীর’ নাটকের হাশেম আলি হতে পারেননি।
লেখক : সিনিয়র শিক্ষক (বাংলা)
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা
কবীর