বাহরাইনের মানামায় বাংলাদেশ দূতাবাসে আনন্দমুখর পরিবেশে বাংলাদেশ-বাহরাইন কূটনৈতিক সর্ম্পকের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন হয়েছে।
সোমবার (৩ জুন) বাহরাইনের দ্যা ডিপ্লোম্যাট রেডিসন হোটেলে এ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এ কে এম মহিউদ্দিন কায়েসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাহরাইন কাউন্সিল অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার আহমেদ বিন সালমান আল-মুসালাম, বাহরাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি ফর পলিটিকাল অ্যাফেয়ার্স ড. শেখ আব্দুলাহ বিন আহমেদ বিন আব্দুল্লাহ আল খলিফা, নর্দান গভর্নর আলী বিন আল শেখ আব্দুল হুসাইন আল-আসফুর ও জনপ্রশাসন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাইখা রানা বিনতে ঈসা বিন দাইজ আল খলিফা।
এ ছাড়াও শূরা কাউন্সিল এবং কাউন্সিল অব রিপ্রেজেন্টেটিভের সদস্য, বাহরাইনে দায়িত্বরত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক, বাহরাইন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পেশার লোকজন এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস ও বাংলাদেশ-বাহরাইনের কূটনৈতিক সর্ম্পকের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি দুদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়।
কূটনৈতিক সর্ম্পকের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বিশেষ আয়োজনের মধ্যে ছিল বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাহরাইন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে যৌথভাবে স্মারক লোগো উন্মোচন ও বিশেষ প্রকাশনা এবং কেক কাটা।
যৌথভাবে প্রকাশিত এই ম্যাগাজিনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিব এবং বাহরাইনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন।
ম্যাগাজিনে কূটনৈতিক সর্ম্পকের ৫০ বছরের উপর দূতাবাস এবং দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত আর্টিকেলসহ উভয় দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং দূতাবাসের কার্যক্রম বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
মার্চ মাসে পবিত্র রমজান মাস থাকায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ৫৩তম বার্ষিকী বাংলাদেশ-বাহরাইন কূটনৈতিক সর্ম্পকের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের সঙ্গে একত্রে আয়োজন করা হয়েছে।
চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স তার স্বাগত বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা শাহাদাতবরণ করেছেন সে সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
তিনি বিশেষভাবে বাহরাইনের মহামহিম রাজা হামাদ বিন ঈসা আল খালিফা এবং ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী শেখ সালমান বিন হামাদ আল খালিফার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৪ সালের ৬ জুন তারিখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই বাংলাদেশ এবং বাহরাইনের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।’
এ প্রেক্ষিতে তিনি বাংলাদেশের রূপকল্প ২০৪১-এ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ভ্রাতৃপ্রতিম বাহরাইনের সর্বোপরি সহযোগিতার কামনা করেন এবং একইভাবে বাহরাইনের অর্থনৈতিক ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়িত করতে বাংলাদেশের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে মর্মে উল্লেখ করেন।
চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ও বাহরাইনের মধ্যকার দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন এবং দুই দেশের সঙ্গে ঐতিহাসিক মিল রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ‘১৯৭১ সালে দুই দেশেরই জন্ম হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর দুই দেশের কাছে সমানভাবে গুরত্বপূর্ণ। এ ছাড়া বিশ্বে শান্তি বিরাজমান ও প্রতিষ্ঠায় দুই দেশ অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।’
তিনি ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ, সৌহার্দ্য, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সার্বিক কল্যাণকর কাজ আরও সুসংহত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স অনুষ্ঠানের আগত সকল অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ স্কুল বাহরাইন এর শিক্ষার্থীরা দেশীয় গানের সঙ্গে মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করে।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স অতিথিদেরকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ও বাহরাইনের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য তুলে ধরার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও বাহরাইনের যে দুটি কর্ণার স্থাপন করা হয়েছিল তা ঘুরে ঘুরে দেখান।
এ ছাড়াও এই অনুষ্ঠানে দুই দেশের ফটোগ্রাফি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
সাদিয়া নাহার/অমিয়/