পরিবেশ দূষণের ফলে মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পরিবেশদূষণ বুদ্ধিমত্তার ব্যাপক হ্রাস ঘটায় এবং মানসিক রোগ ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রম ছাড়াও মানুষের শরীরের প্রতিটি অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই পরিবেশদূষণ রোধ করার পাশাপাশি জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় বুধবার (৫ মে) চ্যারিটি সংস্থা এইডমিইউকে আয়োজিত ‘এনভায়রনমেন্টাল কেয়ার ফর মেন্টাল রিপেয়ার’ শীর্ষক জনসচেতনতামূলক কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন।
যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সিটির শ্যামবলস কর্নারের সামনে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন এইডমিইউকের সিইও মাকসুদ রহমান, ফিন্যান্স ডিরেক্টর দেওয়ান ছয়েফ আহমেদ, প্রোজেক্ট ও প্ল্যানিং ডিরেক্টর জিহান আহমেদ চৌধুরী, হেড অব কমিউনিকেশনস রিয়াজ চৌধুরী, হেড অব ইভেন্ট আনামু হক কায়েস, হেড অব ভলেন্টিয়ার আব্দুস শহিদ, ইভেন্ট প্ল্যানার মোহাম্মদ তাজিম উল্লাহ।
কর্মসূচিতে বিভিন্ন গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বক্তারা বলেন, ‘পরিবেশ দূষণের কারণে বিষন্নতা, উদ্বেগ, সাইকোসিস এবং স্নায়ুরোগ ডিমেনশিয়া হতে পারে। কিশোর-কিশোরদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, দরিদ্র আবাসন, অত্যধিক ভিড়, সবুজ স্থানের অভাবের কারণে এসব মানসিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।’
যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, বায়ুদূষণের সংস্পর্শে এলে এতটাই গুরুতর মানসিক সমস্যা দেখা দেয় যে তাদের চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। লন্ডনবাসী ১৩ হাজার জনের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের সঙ্গে তুলনামূলক সামান্য বাড়তি সংস্পর্শেই কমিউনিটিভিত্তিক চিকিৎসার প্রয়োজন ৩২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় এবং হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি বাড়ে ১৮ শতাংশ। শুধু লন্ডনেই না বিশ্বের প্রায় সব বড় শহরের ক্ষেত্রেই এই ফলাফল প্রযোজ্য হতে পারে। লাখো মানুষকে বাঁচাতে হলে তাই বায়ু দূষণ দূর করতে হবে।
বায়ুদূষণের শারীরিক ও মানসিক প্রভাব নিয়ে বিশ্বব্যাংকের গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ হচ্ছে ঢাকায়। ঢাকায় যানজট ও নির্মাণাধীন প্রকল্পের কারণে যে পরিমাণ বায়ুদূষণ হয়, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বায়ুমানের চেয়ে ১৫০ শতাংশ বেশি এবং ইটভাটার কারণে যে দূষণ হয় তা ১৩৬ শতাংশ বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রা থেকে ১ শতাংশ দূষণ বাড়লে বিষণ্ণতায় ভোগা মানুষের সংখ্যা ২০ গুণ বেড়ে যেতে পারে।
রিয়াজ/সালমান/