ঢাকা ২০ বৈশাখ ১৪৩২, শনিবার, ০৩ মে ২০২৫

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী আর্ট মেলায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৩ এএম
মালয়েশিয়ায় প্রবাসী আর্ট মেলায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ
ছবি: সংগৃহীত

‘মালয়েশিয়া ও প্রবাসী আর্ট মেলা ২০২৪’-এ প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করেছে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান শুক্রবার (২৬ জুলাই) মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। কুয়ালালামপুরে প্যাভিলিয়ন দামানসারা হাইটসে ২২ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত চলমান এই মেলায় বাংলাদেশসহ ১১টি দেশ অংশ নিচ্ছে। এ বিষয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাতে এ কথা জানিয়েছে বাসস।

সোরিয়াতা রিসোর্সেস এবং আর্ট মার্কেট মালয়েশিয়া এ মেলা আয়োজন করে। মেলায় আর্ট, কারুশিল্প, পণ্যদ্রব্য এবং চিত্রপ্রদর্শনী হচ্ছে। এতে অংশগ্রহণকারী অন্য দেশগুলো হলো কাজাকিস্তান, হাঙ্গেরি, চীন, ভিয়েতনাম, কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান, মালদোভা, উগান্ডা এবং স্বাগতিক মালয়েশিয়া। 

মেলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে ‘উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ট্রাস্ট (ডব্লিউই)’, মালয়েশিয়া চ্যাপ্টার অংশগ্রহণ করছে। দুটি প্রদর্শনী বুথে বৈচিত্র্যময় পরিসরে বাংলাদেশি হস্তশিল্প, গৃহসজ্জা, ঐতিহ্যবাহী পোশাক, গহনা, খাবার এবং প্রাণ ফুডসের খাদ্য ও পানীয় পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে করপোরেট কমিউনিকেশন ট্যুরিজম মালয়েশিয়ার পরিচালক মোহাম্মদ শাহরীর মোহাম্মদ আলী, কাতার দূতাবাসের কাউন্সিলের ইব্রাহীম আল-শেরাইম, প্যাভিলিয়নের পরিচালক ম্যাডাম সুয়ান ওয়াই, আর্ট মার্কেট মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠাতা রিতা হাত্তা, বিভিন্ন দেশের শিল্পী ও মিডিয়াকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান তার বক্তব্যে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ শিল্প ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরেন এবং মালয়েশিয়ায় শিল্প-সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্যে ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের সম্পৃক্ততার ওপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি বসবাসের সুবাদে স্থানীয় মালয়েশিয়ানদের মাঝে বাংলাদেশের শিল্প, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়। এ মেলার আয়োজন আগত অতিথিদের অংশগ্রহণকারী দেশ সম্পর্কে জানার সুযোগ সৃষ্টি করবে।’ 

তিনি জানান, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি পণ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে প্রথমবারের মতো এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নতুন পণ্য, বিশেষ করে হস্তশিল্পের বাজার সৃষ্টির সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা করা যায়। রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য বেশি করে রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুসৃত ‘অর্থনৈতিক কূটনীতি’ অনুসরণের ধারাবাহিকতায় কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করে যাচ্ছে।

মেলায় শুরু থেকেই বাংলাদেশি স্টলগুলোয় দর্শনার্থীদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। দর্শনার্থীরা বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশি পণ্য, বিশেষ করে হস্তশিল্পের ভূয়সী প্রশংসা করেন। 

বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ছাড়া মালয়েশিয়া বাংলাদেশে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ। মালয়েশিয়ায় প্রায় ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন প্রবাসী ছাড়াও প্রায় ৫ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন।

ইসলামাবাদে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন

প্রকাশ: ০২ মে ২০২৫, ০৮:৩৫ পিএম
ইসলামাবাদে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন
ছবি: বাসস

ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩২’ উদযাপন করা হয়েছে।

শুক্রবার (২ মে) ঢাকায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইসলামাবাদে স্যার সৈয়দ মেমোরিয়াল সোসাইটির বৃহৎ ‘সিদ্ধ রোড কালচারাল সেন্টারে’ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ হাইকমিশন দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান এবং হাইকমিশনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা অতিথিদের অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন করান। 

পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ফেডারেল সচিব আমব্রিন জান প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানকে অলংকৃত করেন। অনুষ্ঠানটি হাইকমিশনের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ স্ট্রিমিং করা হয়।

এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত-হাইকমিশনার ও কূটনীতিক, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, সংগীতজ্ঞ, চিত্রশিল্পী, প্রবাসী বাংলাদেশিসহ দেড় সহস্রাধিক অতিথি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত ও বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে হাইকমিশনার তার বক্তব্যে বলেন, পহেলা বৈশাখ সম্প্রীতি ও মহামিলনের দিন। এ দিন ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সমগ্র বাঙালি জাতি জেগে ওঠে নবপ্রাণে, নব অঙ্গীকারে। 

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে পরিবেশিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সুসজ্জিত হয়ে শিল্পীরা আবৃত্তি, নাচ ও গান পরিবেশন করেন।

বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের ছেলেমেয়েরা, বাংলাদেশ কমিউনিটির শিল্পী ও পাকিস্তানি শিল্পীরা অনুষ্ঠানে নাচ ও গান পরিবেশন করেন। পাকিস্তানে সফররত বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও এতে অংশগ্রহণ করেন এবং গান পরিবেশন করেন। 

অনুষ্ঠান চলাকালে ইসলামাবাদে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছিল। সব মিলিয়ে সবাই বৈশাখের আমেজ উপভোগ করেন।
বাঙালি ধারায় আমন্ত্রিত অতিথিদের সম্ভাষণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং হরেক রকমের সুস্বাদু বাংলাদেশি খাবার দিয়ে আপ্যায়ন ছিল এই উৎসবের মূল আকর্ষণ। 

এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানস্থল আলোকসজ্জা, ব্যানার, ফেস্টুন, ঘুড়ি, ফুল ও ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি লোকজ শিল্পপণ্য দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়। অতিথিরা বাংলাদেশের নাচ ও গান, খাবার, লোকজ শিল্পপণ্য, স্টান্ডিজ ও ভিডিও অত্যন্ত আগ্রহসহকারে পরিদর্শন ও উপভোগ করেন।

অনুষ্ঠান চলাকালীন আমন্ত্রিত অতিথিদের মাঝে বাংলাদেশি ফুসকা, মাঠা, লেবুর শরবত, তরমুজ, শসা, কাঁচা আম, পিচ ও লোকাট ফল পরিবেশন করা হয়। 

হাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যদের প্রস্তুত করা দুধ-লাউয়ের ফিরনি, আচার, গাজরের হালুয়া, ডিমের হালুয়া, গোলাপ পিঠা, নকশি পিঠা, পাটিসাপ্টা পিঠা ও তেলের পিঠা এবং পান্তাভাতের সঙ্গে আলু ভর্তা, বেগুন ভর্তা, বাদাম ভর্তা, টাকি মাছের ভর্তা, মসুর ডাল ভর্তা, লইট্টা শুঁটকি ভর্তা, কালিজিরা ভর্তা, চিংড়ি ভর্তা, চ্যাপা শুঁটকি ভর্তা, টমেটো ভর্তা, বরবটি ভর্তা, ধনিয়া পাতা ভর্তা ও করলা ভাজি পরিবেশন করা হয়। 

এ ছাড়া বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কাচ্চি ও খিচুড়ি দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়। সূত্র: বাসস

ফিনল্যান্ডে মে দিবস পালন: শ্রমিক অধিকারের প্রতি সম্মান ও ঐক্যের বার্তা

প্রকাশ: ০২ মে ২০২৫, ১০:২৯ এএম
আপডেট: ০২ মে ২০২৫, ১২:০২ পিএম
ফিনল্যান্ডে মে দিবস পালন: শ্রমিক অধিকারের প্রতি সম্মান ও ঐক্যের বার্তা
শ্রমিক দিবস বা ‘ভাপ্পু’ উদযাপন করছেন ফিনল্যান্ডবাসীরা

ফিনল্যান্ডে যথাযোগ্য মর্যাদা ও উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস বা মে দিবস পালিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১ মে) রাজধানী হেলসিঙ্কিসহ দেশের প্রধান শহরগুলোতে নানা অনুষ্ঠান ও র‌্যালির মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়।

এ সময় শ্রমিক সংগঠন, রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ পতাকা, ব্যানার ও স্লোগানসহ অংশ নেন রাস্তায় রাস্তায়। হেলসিঙ্কির সেনাট স্কয়ার, হাকানিয়েমি এবং কাম্পি এলাকায় বিশাল জনসমাগম দেখা গেছে।

ফিনল্যান্ডে দিনটি ‘ভাপ্পু’ (Vappu) নামে পরিচিত এবং এটি শুধু শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসকেই নয়, বরং বসন্তের আগমনের আনন্দও প্রকাশ করে।

আন্দোলনের ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধা

মে দিবসের মূল উদ্দেশ হলো শ্রমিকশ্রেণির অধিকার, ন্যায্য মজুরি এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশের দাবি। ফিনল্যান্ডে ১৮৯০ সাল থেকে মে দিবস উদযাপন হয়ে আসছে। এটি ১৯৪৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে স্বীকৃতি পায়। প্রতিবছর এই দিনে মানুষ শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসকে স্মরণ করে, যার মধ্যে আট ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবি অন্যতম।

সমাজতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক বার্তা

বিভিন্ন বামপন্থি রাজনৈতিক দল ও ট্রেড ইউনিয়ন মে দিবসে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করে। এ বছরও অর্থনৈতিক বৈষম্য, শ্রমবাজার সংস্কার এবং অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণ নিয়ে আলোচনা হয়। বেশ কয়েকটি সংগঠন সরকারের নীতির সমালোচনা করে এবং ন্যায়বিচারমূলক সমাজ গঠনের আহ্বান জানায়।

মে দিবস শুধু রাজনৈতিক বা শ্রমিক অধিকার দিবস নয়, বরং এটি ফিনিশ সংস্কৃতিতে এক বিশাল উৎসবের দিন। তরুণ-তরুণীরা মাথায় সাদা টুপি পরে রাস্তায় বের হয়, বিভিন্ন পার্কে বসে আনন্দ করে এবং ঐতিহ্যবাহী ‘Sima’ (এক ধরনের মিষ্টি পানীয়) ও Munkki (ডোনাট জাতীয় মিষ্টি) খেয়ে থাকেন।

এটি ফিনল্যান্ডের সবচেয়ে বর্ণাঢ্য সামাজিক উৎসবগুলোর মধ্যে একটি। প্রবাসী কমিউনিটিগুলোর মধ্যে বিশেষ করে বাংলাদেশি অভিবাসীরাও এই দিনটিকে উদযাপন করে নানা আয়োজনে।

মে দিবস ফিনল্যান্ডে কেবল একটি ছুটির দিন নয় এটি হলো শ্রদ্ধা, সচেতনতা, ঐতিহ্য এবং আনন্দের সম্মিলন। শ্রমিকদের অধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর পাশাপাশি, এই দিনটি ফিনিশ সমাজে সাম্যের বার্তা পৌঁছে দেয়।

পপি/

বিশ্বসভায় বাংলাদেশ ও বাঙালির জয়গান

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:১৮ পিএম
আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৮ পিএম
বিশ্বসভায় বাংলাদেশ ও বাঙালির জয়গান
নিউইয়র্কের ক্যাপিটাল হিলে গভর্নর হাউসে বাংলা নববর্ষের স্বীকৃতিস্বরূপ গৃহীত হলো জে২৩৪ নম্বর রেজুলেশন। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ক্যাপিটাল হিলে স্টেট গভর্নর হাউজে ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের স্বীকৃতিস্বরূপ জে২৩৪ নম্বর রেজুলেশন গৃহীত হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) এই রেজুলেশন গৃহীত হওয়ার মধ্য দিয়ে দিনটি বিশ্বসভায় বাংলাদেশ ও বাঙালির জয়গান নতুন মাত্রায় উদ্ভাসিত হলো।

বলা যায়, বাংলা নববর্ষ উদযাপনে নিউইয়র্ক স্টেট সিনেট এদিন উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল। বাংলা গান ও নাচের সঙ্গে পাঁচ সিনেটরের নাচ ও গানের ভঙ্গিমা সত্যিই বাঙালি সংস্কৃতির জন্য ছিল অভিনব। 

এর আগে বিদেশিদের মধ্যে এ ধরণের মুখরিত হয়ে ওঠার দৃশ্য দেখা যায়নি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সিনেটর সেপুলভেদা সবাইকে স্বাগত জানান। দুই শতাধিক বাঙালি ও আমেরিকানের অংশগ্রহণে মিলনমেলায় পরিণত হয় বাংলা নববর্ষ উদযাপন।

সিনেটর সেপুলভেদা তার বক্তব্যে নিউইয়র্ক প্রবাসী বাঙালিদের অবদান তুলে ধরে বাংলা নববর্ষকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের অন্যতম উৎসব হিসেবে চিহ্নিত করেন। 

সিনেটর ফার্নান্দেজ এবং অন্যান্য সিনেটররা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাঙালিদের পক্ষে বক্তব্য দেন এনআরবি ওয়ার্ল্ডওয়াইডের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি বিশ্বজিত সাহা,  মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ড. নজরুল ইসলাম এবং শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়। 

সবাই বিশ্বায়নের যুগে বাংলা সংস্কৃতির জয়গান করেন এবং সিনেটরদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

বিশ্ববাঙালির কাছে এই উদযাপন স্মৃতি হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন রথীন্দ্রনাথ রায়।

অনুষ্ঠানে সিনেটর ফার্নান্দেজের পৃষ্ঠপোষকতায় মধ্যাহ্নভোজ শেষে শুরু হয় সমাবেশ কক্ষ (Assembly chamber) পর্ব। সেখানে বিশ্বজিত সাহা, ড. নজরুল ইসলাম, রথীন্দ্রনাথ রায়, সংগীত পরিচালক মহিতোষ তালুকদার তাপস এবং শিল্পী লুতফুন নাহার লতার উপস্থিতিতে রেজুলেশনটি পাস হয়।

বিকেলে সিনেটকক্ষে পাস হওয়া রেজুলেশন পাঠ এবং সেপুলভেদাসহ সিনেটরদের মন্তব্য ও আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা আনন্দঘন পরিবেশ সৃজন করে। বিশেষত টাইমস স্কয়ারে নববর্ষ উদযাপন কমিটির শিল্পীরা মহিতোষ তাপসের নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলেন।

একক ফোক সংগীত পরিবেশন করেন শাহীন হোসেন। নৃত্য পরিবেশন করেন ভাষা সাহা। 

বাংলা নববর্ষ আন্তর্জাতিক বিশ্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন এটিই প্রথম।

অমিয়/

বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসে আনন্দমুখর পরিবেশে গণশুনানির আয়োজন

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০১ এএম
আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩০ এএম
বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসে আনন্দমুখর পরিবেশে গণশুনানির আয়োজন
বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসে আনন্দমুখর পরিবেশে গণশুনানি আয়োজন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) মানামার হল রুমে এক আনন্দঘন পরিবেশে গণশুনানির আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাহরাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত মো. রইস হাসান সরোয়ার, এনডিসি।

গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন বাহরাইনে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক এবং বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের নেতাসহ দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান এবং এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে দূতাবাস প্রবাসীদের সমস্যাগুলো সরাসরি জানার সুযোগ পায়, যা প্রবাসীদের প্রতি দূতাবাসের সহায়তার মনোভাবকে আরও সুদৃঢ় করে।

রাষ্ট্রদূত মো. রইস হাসান সরোয়ার বলেন, ‘গণশুনানি হলো এক দুর্দান্ত সুযোগ- যেন প্রবাসীরা সরাসরি তাদের সমস্যা আমাদের কাছে তুলে ধরতে পারেন। আমি সবাইকে অনুরোধ করছি, দূতাবাসের কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধিতে গঠনমূলক পরামর্শ দিন।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনো সমস্যায় প্রবাসীরা যেন দূতাবাসের অফিসারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেন।’

রাষ্ট্রদূত বাহরাইনের আইনকানুন মেনে চলার এবং বৈধভাবে দেশটিতে অবস্থান করার জন্য সব প্রবাসীকে অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘আপনারা যেন বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট না করেন, সেই বিষয়েও সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।’ এ ছাড়া রেমিট্যান্স প্রেরণে বৈধ চ্যানেল ব্যবহার করার প্রতি গুরুত্ব দেন তিনি।

দূতাবাসের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে গণশুনানির জন্য প্রবাসীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শতাধিক প্রবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিত হন। অনুষ্ঠানে প্রবাসীরা তাদের বিভিন্ন সমস্যা রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাদের কাছে তুলে ধরেন, যার জন্য রাষ্ট্রদূত তাৎক্ষণিকভাবে বেশকিছু প্রশ্নের সমাধান দেন।

অনুষ্ঠানের শেষে রাষ্ট্রদূত প্রবাসীদের পরামর্শ দেন, তাদের সমস্যা লিখিত আকারে দূতাবাসে পাঠালে আরও কার্যকরীভাবে সমাধান করা সম্ভব হবে।

বিজ্ঞপ্তি/তাওফিক/ 

ফিনল্যান্ডে বর্ণিল আয়োজনে বর্ষবরণ উৎসব

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০০ পিএম
ফিনল্যান্ডে বর্ণিল আয়োজনে বর্ষবরণ উৎসব
ফিনল্যান্ডে বর্ণিল আয়োজনে বর্ষবরণ উৎসব

ফিনল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রাণের সংস্কৃতি আর উৎসবের ছোঁয়ায় আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপিত হলো বাংলা নববর্ষ ১৪৩২।

হেলসিঙ্কির নিকটবর্তী এসপো শহরের ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ক্যাম্পাসে আয়োজিত এই বর্ষবরণ উৎসবের আয়োজন করে ফিনল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘প্রত্যাশা’।

সহস্রাধিক প্রবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে পুরো ক্যাম্পাস পরিণত হয় এক টুকরো বাংলাদেশে। ডাক-ঢোলের তালে, বৈশাখী আল্পনায় রাঙিয়ে, আর বাহারি পোশাকে সজ্জিত হয়ে প্রবাসীরা নতুন বাংলা বছরকে বরণ করে নেয় প্রাণভরে।

উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। স্থানীয় প্রবাসী শিল্পীদের পরিবেশনায় গান, কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য ও দেশীয় সুরে ফিরে আসে বাংলার মাটি ও মানুষের গল্প। বৈশাখ বরণের নানা প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয় গানের গানে, যা শ্রোতাদের আবেগে ছুঁয়ে যায়।

অনুষ্ঠানজুড়ে জমে ওঠে প্রাণবন্ত আড্ডা, বহুদিন পর পরিচিতজনকে কাছে পাওয়ার আনন্দ, আর স্মৃতির পাতা উল্টে দেখার মুহূর্ত।

আবৃত্তির ফাঁকে ফাঁকে চলছিল হাস্যরস আর প্রাণখোলা কথোপকথন।

খাবারের স্টলগুলো ছিল ভোজনরসিকদের অন্যতম আকর্ষণ। পান্তা-ইলিশ, দেশীয় পিঠা, বিরিয়ানি, ভর্তা, মিষ্টান্নসহ নানা রকমের দেশি খাবার ছিল স্টলে, যা দেশের স্বাদ ফিরিয়ে এনেছিল প্রবাসীদের জিভে ও মনে।

এবারের বর্ষবরণ উৎসব দর্শকসংখ্যার দিক থেকে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। সহস্রাধিক অংশগ্রহণকারী প্রাণভরে উপভোগ করেছেন এই আয়োজন, যা প্রবাসের মাটিতে বাঙালি সংস্কৃতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।

আয়োজক সংগঠন ‘প্রত্যাশা’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী বছর থেকে আরও বড় পরিসরে ও নিয়মিতভাবে এ ধরনের আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও উৎসবমুখর আনন্দের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে এই আয়োজন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলেও তারা জানান।