ঢাকা ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

কলকাতায় ধ্রুপদী ভাষা বাংলা নিয়ে ছায়ানটের অনুষ্ঠান ৮ নভেম্বর

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৬ পিএম
কলকাতায় ধ্রুপদী ভাষা বাংলা নিয়ে ছায়ানটের অনুষ্ঠান ৮ নভেম্বর
ছায়ানট (কলকাতা)

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় ধ্রুপদী ভাষা বাংলা নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ছায়ানট।

আগামী শুক্রবার (৮ নভেম্বর) কলকাতার উইসডম্ ট্রি ক্যাফেতে (উইসডম্ ট্রি, ৪৯, যতীন দাস রোড, কলকাতা - ৭০০০২৯) ছায়ানট (কলকাতা)এর বিনম্র নিবেদন ‘মোদের গরব, মোদের আশা/ আ-মরি বাংলা ভাষা’।

অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে।

অনুষ্ঠানটি পরিকল্পনা ও পরিচালনা করবেন কলকাতা ছায়ানটের সভাপতি সোমঋতা মল্লিক। 

সম্প্রতি ভারতে ধ্রুপদী’ ভাষার মর্যাদা পেল বাংলা ভাষা। মারাঠি, পালি, প্রাকৃত, অসমীয়ার সঙ্গে বাংলাকেও ‘ধ্রুপদী’ ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়। এই তালিকায় জায়গা পাওয়া ভাষার সংখ্যা দাঁড়াল বর্তমানে ১১টি। যা আগে ছিল ছয়টি।

আগে এই তালিকায় ছিল তামিল, সংস্কৃত, তেলেগু, কন্নড়, মালায়লাম এবং ওড়িয়া। বাংলা ভাষা ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পাওয়ায় স্বভাবতই খুশি বাংলা ভাষাভাষীরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বিশেষ আলোচনামূলক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন ইন্সটিটিউট অব ল্যাঙ্গুয়েজ স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চের (আইএলএসআর) অধিকর্তা ড. স্বাতী গুহ, ইন্সটিটিউট অফ ল্যাঙ্গুয়েজ স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চের (আইএলএসআর) স্কুল অব লিঙ্গুস্টিক স্টাডিজ অধ্যাপক অমিতাভ দাস, লিঙ্গুইস্ট ড. রাজীব চক্রবর্তী।

এই পর্বের সঞ্চালনা করবেন রয় চৌধুরী। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান এবং পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান। 

দীর্ঘদিন বাংলা ভাষাকে কাজের মাধ্যম হিসেবে নির্বাচন করার জন্য চার বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সম্মানিত করবে ছায়ানট (কলকাতা)। তারা হলেন- লেখক ও প্রতিবিম্ব পত্রিকার সম্পাদক প্রশান্ত মাজী, বাচিক শিল্পী এবং রেডিও ব্যক্তিত্ব রাজা দাস, ক্যুইজ মাস্টার দেবাশীষ সরকার ও শব্দবাজির প্রতিষ্ঠাতা রয় চৌধুরী।

বাংলা ভাষা নিয়ে বিভিন্ন কবির লেখা কবিতা আবৃত্তি করবেন ছায়ানটের বাচিকশিল্পীরা। 

বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে বাংলা শব্দের মজাদার খেলার অনুষ্ঠান শব্দবাজি খেলা।

অনুষ্ঠান শেষে প্রশান্ত মাজী সম্পাদিত প্রতিবিম্ব পত্রিকার ৫০ বছর উপলক্ষে নির্মিত অরিন্দম সাহা সরদার পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্যের কথাচিত্র ‘একটি তরবারির রূপকথা’ প্রদর্শিত হবে।

অমিয়/

কানাডায় ভারতীয় দূতাবাসের সামনে বাংলাদেশিদের বিক্ষোভ

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩৭ পিএম
কানাডায় ভারতীয় দূতাবাসের সামনে বাংলাদেশিদের বিক্ষোভ
অটোয়ায় বাংলাদেশি কমিউনিটির উদ্যোগে আগরতলায় বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশনে হামলা, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ

কানাডার রাজধানী অটোয়ায় বাংলাদেশি কমিউনিটির উদ্যোগে আগরতলায় বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশনে হামলা, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অটোয়ার স্থানীয় সময় বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে এই সমাবেশে প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকরা অংশ নেন।

অত্যন্ত দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে বাংলাদেশি নাগরিকরা এ বিক্ষোভের আয়োজন করেন।

বাংলাদেশি কমিউনিটি অব অটোয়ার আয়োজনে এ বিক্ষোভে বাংলাদেশে ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি’, এবং ‘হাইকমিশনে হামলা কেন, দিল্লি তুই জবাব দে’ ইত্যাদি স্লোগানে প্রতিবাদ জানানো হয়।

প্রতিবাদ সভায় বৃটেনে নিযুক্ত সাবেক বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘ভারত ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী অতিথি রাষ্ট্রকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার কথা থাকলেও অত্যন্ত গর্হিতভাবে সন্ত্রাসী আরএসএসের পাণ্ডাদের উসকে দিয়ে পুলিশের উপস্থিতেতে বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলা এবং ভাঙচুর চালিয়েছে এবং আমাদের জাতীয় পতাকা পুড়িয়েছে। তাদের উচিত নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং অবিলম্বে  বাংলাদেশবিরোধী মিথ্যা প্রচারণা বন্ধ করা।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘হাসিনার আমলের বাংলাদেশ আর ’২৪ পরবর্তী বাংলাদেশ এক নয়। বাংলাদেশকে সমীহ করে না চললে, সম্মান না দিলে তারাও আর একচেটিয়া সম্মান পাবে না।’

বাংলাদেশি কমিউনিটি অব অটোয়ার সদস্য মিসবাহুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ আর ভারতীয় আগ্রাসন সহ্য করবে না। হিন্দুদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের কল্পিত কাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সব ধর্ম-বর্ণ এবং মতের মানুষ এক হয়েছে, এই মিথ্যচারের মাধ্যমে এ ঐক্যে ফাটল ধরানো যাবে না।’

কমিউনিটির পক্ষ থেকে বক্তব্যে আব্দুল্লাহ মাসউদ বলেন, ‘ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে জোরালো ভূমিকা এবং কমিউনিটিকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন ছিল, কিন্তু দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের পক্ষ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া মেলেনি।’

তিনি হাইকমিশনারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের স্মরণ করিয়ে দেন যে - ’২৪ এর বিপ্লবের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার পক্ষে ভূমিকা পালন না করলে বাংলাদেশি কমিউনিটি বাংলাদেশ দূতাবাসের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।’

তিনি ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পৃথিবীর সবদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশি কমিউনিটি অব অটোয়ার আরেক সদস্য মাসুদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে। ভারতের হস্তক্ষেপ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি একটি সরাসরি আঘাত। 

তারা উল্লেখ করেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকা উচিত, কিন্তু তা কখনোই আধিপত্যবাদের রূপ নিতে পারে না। ভারত সরকার বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছে এবং দেশের প্রাকৃতিকসম্পদ ও অর্থনৈতিক স্বার্থকে নিজেদের প্রভাব বলয়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। 

তারা বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী ষড়যন্ত্রের অংশ।

প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা জানান, এটি ছিল একটি শুরু। ভবিষ্যতেও প্রয়োজন হলে তারা এ ধরনের কর্মসূচি আয়োজন করবে এবং বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় প্রবাস থেকে ভূমিকা রাখবে।

কমিউনিটির নেতাদের মধ্যে মনোয়ার হোসেন আকাশ, ইফতেখার চৌধুরী রকি, আনোয়ার হোসাইন, মুসতাইম বিল্লাহ রাতিন, নজরুল রহমান, ইউসুফ হারুন, শামা-সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অমিয়/

আমিরাতে আরও ৭৫ বাংলাদেশিকে সাধারণ ক্ষমা

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৪ পিএম
আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৯ পিএম
আমিরাতে আরও ৭৫ বাংলাদেশিকে সাধারণ ক্ষমা
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও নিপীড়নের প্রতিবাদে সংযুক্ত আরব আমিরাতে মিছিল ও বিক্ষোভ করায় আটক আরও ৭৫ প্রবাসী বাংলাদেশিকে ক্ষমা করেছে দেশটির সরকার।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা ম. শেফায়েত হোসেনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। 

এতে বলা হয়, নতুন করে মুক্তি পাওয়া ৭৫ জনসহ এ পর্যন্ত মোট ১৮৮ জনকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় মুক্তি দিয়েছে আরব আমিরাত।

এর আগে, ৩ সেপ্টেম্বর এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছিলেন, ‘২৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের। সেখানে প্রধানত ৫৭ বাংলাদেশির শাস্তি মওকুফের বিষয়টি ছিল। প্রধান উপদেষ্টা প্রেসিডেন্টকে প্রবাসী শ্রমিকদের ক্ষমা করে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট তার কথা রেখেছেন। প্রধান উপদেষ্টা এই সুখবরটি পেয়েছেন।’

বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় ৫৭ বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছিলেন দেশটির আদালত। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

মাহফুজ/এমএ/

 

মন্দিরে কবি নজরুলের স্মৃতিফলক স্থাপন কলকাতা ছায়ানটের

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৩ পিএম
আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৪ পিএম
মন্দিরে কবি নজরুলের স্মৃতিফলক স্থাপন কলকাতা ছায়ানটের

পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার নবদ্বীপে মানবতার কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত শ্রী শ্রী রাধামদনমোহন জীউর মন্দিরে তাঁর নামে স্মৃতিফলক স্থাপন করেছে নজরুল চর্চাকেন্দ্র ছায়ানট (কলকাতা)।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা এই স্মৃতিফলক উন্মোচন করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ছায়ানটের (কলকাতার) সভাপতি সোমঋতা মল্লিক।

এ সময় মন্দিরের সেবায়ত গোস্বামী পরিবারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন- প্রভুপাদ শ্রী নিত্যগোপাল গোস্বামী, প্রেমগোপাল গোস্বামী।

নজরুল সম্পর্কিত আলোচনায় অংশ নেন নবদ্বীপের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম।

কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করেন পীতম ভট্টাচার্য এবং সুকন্যা রায়।

এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে নবদ্বীপের শ্রী শ্রী রাধামদনমোহন জীউর মন্দিরে নজরুলের স্মৃতি জড়িয়ে থাকার বিষয়টি জানতে পারেন ছায়ানটের (কলকাতার) সভাপতি সোমঋতা মল্লিক। পরে তিনি গত ২৩ এবং ২৪ সেপ্টেম্বর শ্রী শ্রী রাধামদনমোহন জীউর মন্দির দর্শন করেন এবং মন্দিরের সেবায়ত গোস্বামী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন।

এ সময় গোস্বামী পরিবারের পক্ষ থেকে উপহারসস্বরূপ প্রভুপাদ শ্রীল মদনগোপাল গোস্বামীর লেখা ‘শ্রী শ্রী প্রাণগোপাল চরিতামৃত কণা ও কথামৃত কণিকা’ বইটি সোমঋতার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এই বইয়ে গোস্বামী পরিবার এবং প্রভুপাদ শ্রীল শ্রীযুক্ত প্রাণগোপাল গোস্বামী সম্পর্কে বহু তথ্য পাওয়া যায়।

প্রভুপাদ শ্রীনিত্যগোপাল গোস্বামীর মতে, নজরুল পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার নবদ্বীপের শ্রী শ্রী রাধামদনমোহন জীউর মন্দিরে একাধিকবার এসেছিলেন।

নজরুলের জীবন ছিল বর্ণময়। বহুজায়গায় তিনি গেছেন, বহু পরিবারের সঙ্গেই ছিল তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। স্বভাবগত দিক থেকে তিনি ছিলেন আড্ডাপ্রিয় মানুষ। যেখানেই যেতেন, তাঁর নিজস্ব গুণেই তিনি হয়ে ওঠতেন আড্ডার মধ্যমণি। ঘন্টার পর ঘন্টা চলতো আড্ডা আর গান। 

নবদ্বীপে নজরুলের আগমন সম্পর্কে জানতে হলে তাই স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মদনমোহন মন্দিরের সেবায়ত গোস্বামী পরিবারের স্মৃতিচারণার ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। বংশপরম্পরায় এই তথ্য মৌখিকভাবে প্রচারিত হয়েছে। নজরুল যে ঘরে থাকতেন কিংবা তাঁর ব্যবহৃত চেয়ারটি এখনও পারিবারিকভাবে সংরক্ষিত রয়েছে। সেই সময় বৈষ্ণবমন্দিরে বিধর্মী নজরুলের একাধিকবার আগমন প্রমাণ করে গোস্বামী পরিবার চিরকালই উদারমনস্ক। 

গোস্বামী পরিবারের সঙ্গে নজরুলের সম্পর্ক কিভাবে গড়ে ওঠে সেই সম্পর্কে আলোকপাত করেন বর্তমানে শ্রী শ্রী রাধামদনমোহন জীউর মন্দিরের সেবায়ত প্রভুপাদ শ্রীনিত্যগোপাল গোস্বামী।

তিনি সোমঋতাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘আমার পিতামহ প্রভুপাদ যদুগোপাল গোস্বামী। তাঁর তিন পুত্র - রাধাকৃষ্ণ গোস্বামী, যদুকৃষ্ণ গোস্বামী এবং মদনগোপাল গোস্বামী। প্রভুপাদ যদুগোপাল গোস্বামী ছিলেন বিষ্ণুপর ঘরানার প্রসিদ্ধ শিল্পী ভগবান সেতারীর ছাত্র। পারিবারিক সাঙ্গীতিক ঐতিহ্যের হাত ধরেই খুব ছোটবেলা থেকে রাধাকৃষ্ণ গোস্বামী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হন। পরবর্তীকালে বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে তিনি তালিম নেন। ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় আমার জ্যেঠামশাইকে এতোটাই স্নেহ করতেন যে কখনও কখনও নবদ্বীপে আমাদের বাড়িতে এসেই সঙ্গীত শিক্ষা দিতেন। ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের অন্যতম শিষ্য ভুলু সেন এবং রাধাকৃষ্ণ গোস্বামীর মধ্যে অন্তরঙ্গতা ছিল। ভুলু সেনের সঙ্গে কাজী নজরুল ইসলামেরও যোগাযোগ ছিল। ভুলু সেনের মাধ্যমেই রাধাকৃষ্ণ গোস্বামীর সঙ্গে নজরুলের পরিচয় হয় এবং নজরুল তাঁকে খুব স্নেহ করতেন। এই সূত্র ধরেই নবদ্বীপের শ্রী শ্রী রাধামদনমোহন জীউর মন্দিরে নজরুলের আগমন।

নজরুল তাঁর বিখ্যাত গান ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’ নিজে হাতে আমার জ্যেঠামশাইকে শেখান। ১৯৩৭-৩৮ সাল থেকে রাধাকৃষ্ণ গোস্বামীর সঙ্গে নজরুলের সখ্যতা গড়ে ওঠে। আমার বাবার থেকে শোনা- নবদ্বীপে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পথপরিক্রমায় নজরুল অংশগ্রহণ করেন। আমার বাবা আমাদের মন্দিরে নজরুলকে দেখেছিলেন। ১৮৯২-৯৩ সালে আমার প্রপিতামহ প্রভুপাদ প্রাণগোপাল গোস্বামী পূর্ববঙ্গ থেকে নবদ্বীপে আসেন এবং বর্তমানে মন্দিরের যে অবয়ব তা তাঁরই হাতে সৃষ্ট। আমার পিতামহের জ্যেঠীমা রাধারানী দেবী, যিনি বড়মা নামে পরিচিত ছিলেন, তিনি নিজে হাতে পরিবেশন করে নজরুলকে খাওয়াতেন। প্রকৃত গবেষণার অভাবে এই সমস্ত তথ্য এখনও বইয়ে স্থান পায়নি।

শুধু কাজী নজরুল ইসলামই নন, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, অচল মিত্রসহ বহু মানুষ আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। আমার প্রপিতামত ঢাকার অনুশীলন সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। তাঁর অনেক শিষ্যকে অনুপ্রাণিত করেন এই দলে যোগ দেওয়ার জন্য। ব্রিটিশদের নজর এড়াতে এই সমস্ত কাজ খুব গোপনেই হতো, সেই সময় সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি।’’

নদিয়ার সঙ্গে নজরুলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ১৯২৬ সালের ৩ জানুয়ারি বন্ধু হেমন্ত সরকারের আমন্ত্রণে তিনি সপরিবারে কৃষ্ণনগরের গোলাপট্টিতে আসেন। ওই বছরেই নজরুল থাকতে শুরু করেন চাঁদ সড়ক এলাকায় গ্রেস কটেজে। ছিলেন ১৯২৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই বসবাসকাল কবির সৃষ্টিশীল জীবনের অন্যতম গৌরবময় সময়। 

১৯৩৭ সালে নজরুল রচিত অন্যতম ভক্তিসঙ্গীত ‘বর্ণচোরা ঠাকুর এলো রসের নদীয়ায়’ রেকর্ড আকারে প্রকাশিত হয়। এই গানের সুরকার ছিলেন সত্যেন চক্রবর্তী, শিল্পী লতিকা মিত্র। এই গানটি ১৯৫০ সালে আবারও রেকর্ড আকারে প্রকাশিত হয়। সুরকার নিতাই ঘটক এবং শিল্পী উত্তরা দেবী।

২০০৮ সালের মে মাসের মাঝামাঝি থেকে ছায়ানটের (কলকাতা) পথচলা শুরু। কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টির বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্যে কলকাতার কয়েকজন নজরুলপ্রেমী একত্রিত হয়ে শুরু করেছিলেন ছায়ানট (কলকাতা)।

শুধুমাত্র কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী কিংবা প্রয়াণ দিবস পালন করা নয়, সারা বছর ধরেই তাঁর সৃষ্টি নিয়ে চর্চা করাই ছায়ানটের উদ্দেশ্য। বছরে বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা ছাড়াও প্রতিমাসে বৈঠকী আড্ডা, সেমিনার ইত্যাদি আয়োজন করার একমাত্র উদ্দেশ্য কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টিকে আরও বেশি করে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া।

ছায়ানট প্রথমবারের মতো কলকাতায় শুরু করে নজরুল মেলা। নজরুল স্মৃতিবিজড়িত জায়গাগুলোর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে নজরুলপ্রেমীদের অবগত করাও ছায়ানটের কার্যক্রমের অংশ। আলিপুর জেল মিউজিয়ামে ছায়ানটের (কলকাতা) উদ্যোগে নজরুল কক্ষ নির্মাণ, কলকাতার কফি হাউসে নজরুল স্মরণ, নৈহাটী স্টেশনে নজরুল স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, নজরুল স্মৃতিবিজড়িত গ্রেস কটেজে বিদ্রোহী কবিতার শতবর্ষ উদযাপন, দার্জিলিঙে নজরুল স্মৃতিকে ফিরে দেখা, রাঁচিতে সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব সাইক্রিয়াটিতে (সিআইপি) নজরুল স্মরণে অনুষ্ঠান - এরই ধারাবাহিকতায় নবদ্বীপে নজরুল স্মৃতিকে সবার সামনে তুলে ধরার প্রয়াস। 

কাজী নজরুল ইসলাম তার সংকল্প কবিতায় লিখেছিলেন - ‘বিশ্ব-জগৎ দেখবো আমি আপন হাতের মুঠোয় পুরে’। কবির এই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে অনেকাংশেই।

দেশপ্রেমিক প্রভুপাদ প্রাণগোপাল গোস্বামী সম্পর্কে প্রভুপাদ মদনগোপাল গোস্বামী লিখেছেন, ‘প্রভুপাদের দেশপ্রেমের নিদর্শনস্বরূপ এখন আর একটি চমকপ্রদ ঘটনার উল্লেখ করছি - যেটি শ্রবণে আমরা উপলব্ধি করতে পারব, ন্যায় ও সত্যের জন্য প্রভুপাদ কতখানি নির্ভীক হতে পারতেন। প্রভুপাদের শ্রীধাম নবদ্বীপে বর্ত্তমান ব্রজানন্দ গোস্বামী রোডস্থিত (প্রাচীন নাম বৈঞ্চবপাড়া বা অভ্যাগত) শ্রীরাধামদনমোহন মন্দিরটি ছিল আত্মগোপনকারী বিপ্লবীদের আত্মগোপনের একটি নির্ভরযোগ্য ঘাঁটি। কারন প্রভুপাদ বিপ্লবীদের আশ্রয় দিতেন এবং তাঁর গোপনীয়তা রক্ষা করতেন এমন কঠোরভাবে যে বাড়ীর একজনও এমন কি নিকটতম আত্মীয়রাও বিপ্লবীদের প্রকৃত পরিচয় জানতে পারত না।... আমি এখানে এমন একজন বিপ্লবীর নাম করব যাঁকে এককথায় সকলেই চিনতে পারবে। এই বিপ্লবীটির সঙ্গে প্রভুপাদের মিলন হয় একাশী নম্বর ল্যানস ডাউন রোডে সলিসিটার অচল মিত্র মহাশয়ের বাড়ীতে। ইনি আর কেউ নন, ইনিই তদানিন্তন কালের স্বনামধন্য বিপ্লবী শ্রী রাসবিহারী বসু মহাশয়। দেশবন্ধুর আগ্রহেই শ্রী বোস মহাশয়ের সঙ্গে প্রভুপাদের মিলন হয়। ছদ্মবেশে শ্রী বসু মহাশয় উক্ত মিত্র মহাশয়ের বাড়ীতে দেখা করেন এবং তাঁর আত্মগোপনের প্রয়োজনীয়তার কথা প্রভুপাদকে জানান। শ্রীল প্রভুপাদ শ্রী বসু মহাশয়ের কথা শোনা মাত্র তাঁকে শ্রীধাম নবদ্বীপস্থ তাঁর শ্রীমদনমোহন জীউর মন্দিরে আশ্রয় গ্রহণের ব্যাপার অনুমোদন করেন।’

এভাবেই প্রভুপাদ প্রাণগোপাল গোস্বামী অনেক বিপ্লবীকেই আশ্রয় দিয়েছিলেন।

প্রভুপাদ মদনগোপাল গোস্বামী আরও লিখেছেন, ‘প্রভুপাদ প্রাণগোপাল গোস্বামী ভারতের এপ্রান্ত থেকে সেপ্রান্ত পর্যন্ত ভাগবতী সভার মাধ্যমে ভাগবত ধর্ম প্রচার করে বেড়াতেন, তাই হাজার হাজার লোকের সম্মুখে তাঁর যে কোন বক্তব্য রাখার সুযোগ পেতেন অফুরন্ত। প্রভুপাদ এই সুযোগটিই কাজে লাগিয়েছিলেন দেশ সেবার কাজে। তিনি তাঁর ভাগবত পাঠের অন্তে তাঁর পাঠে মুগ্ধ হাজার হাজার শ্রোতা যাঁরা প্রভুপাদের মুখনিঃসৃত তত্ত্বকথা শ্রবণে শ্রীকৃষ্ণই পরতত্ত্ব অনুভূতিতে ভরপুর হয়ে যেতেন, সেই তাঁদের মাঝখানে দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করতেন - দেখুন! মনপ্রাণ খুলে কৃষ্ণভজন করতে হলে সর্বপ্রথম দেশটাকে স্বাধীন করা প্রয়োজন। নইলে হয়তো বা কোনদিন কৃষ্ণ ফেলে খৃষ্ট ভজতে হতে পারে। দেখুন! সামর্থ্য এবং যোগ্যতার তারতম্যে হয়ত বা আমাদের সকলের পক্ষে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়া সম্ভব হয়ে উঠছে না কিন্তু একটু ইচ্ছা করলেই যাঁরা প্রত্যক্ষ সংগ্রামে নেমেছেন, আমরা অনায়াসে আমাদের সামর্থ্য মত তাঁদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা সকলে তা তো করছিই না বরং আমাদের অনেকের আচরণই স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিপাকে ফেলছে। আমরা এত ভীরু এবং স্বার্থপর হয়ে গিয়েছি যে, একান্ত প্রয়োজনে একজন আত্মাগোপনকারী দেশসেবীকে একটি রাতের জন্যও গোপনে আশ্রয় দিতে পর্যন্ত কার্পণ্য করি। যারা দেশ আর দশের কথা না ভাবে তারা কখনোই শ্রীকৃষ্ণের পরিপূর্ণ কৃপায় কৃতার্থ হতে পারে না। উপস্থিত শ্রোতৃমণ্ডলীর কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা আমার পূর্বের কথাগুলোর মত আমার এই শেষের কথা কটিও মনে রাখবেন।’

আমাদের প্রাণের কবি কাজী নজরুল ইসলামকে আমরা বহু বিশেষণে ভূষিত করি। কখনও তিনি ‘বিদ্রোহী’ কবি, কখনও আবার প্রেমিক কবি, কখনও মানবতার কবি আবার কখনও অসাম্প্রদায়িক কবি, সাম্যবাদী কবি। কিন্তু নজরুলের গান ও কবিতা তৎকালীন সময়ে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কিভাবে উদ্বুদ্ধ করেছিল তা নিয়ে আলোচনা কমই হয়।

নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু বলেছিলেন - ‘আমরা যখন যুদ্ধে যাবো, তখন সেখানে নজরুলের যুদ্ধের গান গাওয়া হবে। আমরা যখন কারাগারে যাবো, তখনও তাঁর গান গাইবো।’

নজরুল তাঁর সম্পাদিত পত্রিকা ধূমকেতুতে ভারতবর্ষের পূর্ণ স্বাধীনতা দাবি করেন। ধূমকেতুতে প্রকাশিত হয় নজরুলের লেখা ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতাটি। এই কবিতার জন্যই তাঁকে প্রায় এক বছর কারাগারে থাকতে হয়। এ ছাড়াও নজরুলের বেশ কিছু বই ব্রিটিশ সরকার বাজেয়াপ্ত করে। কিন্তু এতকিছুর পরও নজরুল আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান ছিলেন। তাই স্বদেশপ্রেমী নজরুলের সঙ্গে মদনমোহন মন্দিরের সেবায়ত গোস্বামী পরিবারের যে খুব সহজেই একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে, তা নজরুলপ্রেমীদের বুঝতে অসুবিধে হয় না। 

প্রভুপাদ শ্রীনিত্যগোপাল গোস্বামীর মতে, নজরুল শ্রী শ্রী রাধামদনমোহন জীউর মন্দিরে একাধিকবার এসেছিলেন। তাই সহজেই বোঝা যায়, নজরুল নিশ্চয়ই এই পরিবারে তার সমমনস্ক মানুষ খুঁজে পেয়েছিলেন।

কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সৃষ্টি এবং তাঁর স্মৃতিবিজড়িত জায়গাগুলি সম্পর্কে এখনও গবেষণার অবকাশ রয়েছে। সবকিছু এখনও লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হয়নি। নজরুল গবেষকরা প্রতিনিয়ত খোঁজার চেষ্টা করছেন। বিশ্বব্যাপী নজরুলপ্রেমীদের সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে।

অমিয়/

বাংলা ধ্রুপদি মর্যাদা পাওয়ায় কলকাতায় ছায়ানটের অনুষ্ঠান

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫০ পিএম
আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৬ পিএম
বাংলা ধ্রুপদি মর্যাদা পাওয়ায় কলকাতায় ছায়ানটের অনুষ্ঠান
পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান এবং পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরানের হাতে স্মারক তুলে দিচ্ছেন সোমঋতা মল্লিক

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় বাংলা ভাষা ধ্রুপদি ভাষার মর্যাদা পাওয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ-মরি বাংলা ভাষা’ অনুষ্ঠান।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে কলকাতার যতীন দাস রোডে উইসডম্ ট্রি ক্যাফেতে কলকাতা ছায়ানটের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠান হয়।

অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেন ছায়ানটের সভাপতি সোমঋতা মল্লিক।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান এবং পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান।

সম্প্রতি ভারতে বাংলা ভাষা ধ্রুপদি ভাষার মর্যাদা পেয়েছে। মারাঠি, পালি, প্রাকৃত, অসমীয়ার সঙ্গে বাংলাকেও ধ্রুপদি ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়। ভারতে এই তালিকায় জায়গা পাওয়া ভাষার সংখ্যা এখন ১১টি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল বিশেষ আলোচনামূলক অনুষ্ঠান। এতে অংশ নেন ইনস্টিটিউট অব ল্যাঙ্গুয়েজ স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চের (আইএলএসআর) অধিকর্তা ড. স্বাতী গুহ, স্কুল অব লিঙ্গুস্টিক স্টাডিজের অধ্যাপক অমিতাভ দাস, লিঙ্গুইস্ট ড. রাজীব চক্রবর্তী প্রমুখ।

এই পর্বটি সঞ্চালনা করেন রয় চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে দীর্ঘদিন বাংলা ভাষাকে কাজের মাধ্যম হিসেবে নির্বাচন করার জন্য চার ব্যক্তিকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তারা হলেন- লেখক ও প্রতিবিম্ব পত্রিকার সম্পাদক প্রশান্ত মাজী, বাচিকশিল্পী এবং রেডিও ব্যক্তিত্ব রাজা দাস, ক্যুইজ মাস্টার দেবাশীষ সরকার, শব্দবাজির প্রতিষ্ঠাতা রয় চৌধুরী।

তা ছাড়া বাংলা ভাষা নিয়ে বিভিন্ন কবির লেখা কবিতা আবৃত্তি করেন ছায়ানটের বাচিক শিল্পীরা।

কবিতা পাঠে অংশগ্রহণ করেন স্বপ্নিকা দাস রায়, স্বর্ণিকা দাস রায়, তিস্তা দে, অরণ্য স্পন্দন ভদ্র, সুকন্যা রায়, দেবযানী বিশ্বাস, সুজল দত্ত, ইন্দ্রাণী লাহিড়ী, দেবলীনা চৌধুরী, সৃজিতা ঘোষ, সোনালী সাহা চৌধুরী, অভিদীপ্তা পাল, সোহালিয়া সিং, শ্রীকান্ত গোস্বামী, অনিন্দিতা ঘোষ এবং মৌমিতা ঘোষ। 

বিশেষ আকর্ষণ ছিল বাংলা শব্দের মজাদার খেলার অনুষ্ঠান শব্দবাজি।

অনুষ্ঠান শেষে প্রশান্ত মাজী সম্পাদিত প্রতিবিম্ব পত্রিকার ৫০ বছর উপলক্ষে নির্মিত অরিন্দম সাহা সরদার পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্যের কথাচিত্র একটি তরবারির রূপকথা প্রদর্শিত হয়।

অমিয়/

জেনেভায় হেনস্তার শিকার উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৭ এএম
আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২২ পিএম
জেনেভায় হেনস্তার শিকার উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে ঘিরে তার সঙ্গে তর্কে জড়ান একদল লোক। ছবি : ভিডিও থেকে নেওয়া

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে দেশে ফেরার পথে হেনস্তার শিকার হয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এই ঘটনার পর জেনেভাস্থ বাংলাদেশের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। 

তারা বলছেন, দেশের একজন উপদেষ্টা বিদেশে গেলে তার প্রটোকলসহ সব রকম দায়-দায়িত্ব রাষ্ট্রদূতের। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রদূত কী ভূমিকা পালন করলেন! রাষ্ট্রদূত তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেননি বলে মনে করছেন অনেকেই। এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) আইএলও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে দেশে ফিরছিলেন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। এ সময় জেনেভা বিমানবন্দরে কিছু বাংলাদেশির হাতে হেনস্তার শিকার হন তিনি।

জেনেভাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশন সূত্রে যতটুকু জানা গেছে, আইএলওর গভর্নিং বডি এবং সংস্থাটির গুরত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার দেশে ফিরছিলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। দূতাবাসের প্রটোকলে তিনি গাড়ি করে জেনেভা বিমানবন্দরে পৌঁছান। এ সময় তার সঙ্গে দূতাবাসের প্রটোকল ছিল। গাড়ি থেকে বিমানবন্দরে নামার পর একদল লোক এসে আইন উপদেষ্টাকে ঘিরে ধরেন এবং উপদেষ্টা বিমানবন্দরে প্রবেশ করার আগ পর্যন্ত তাকে বিরক্ত করেন।

এই হেনস্তার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও দেখে সুইজারল্যান্ডের বেশ কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, আইন উপদেষ্টাকে হেনস্তাকারীদের মধ্যে সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম জমাদার ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল খানকে দেখা গেছে।

আসিফ নজরুলকে হেনস্তা করার এক মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একদল লোক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে ঘিরে তার সঙ্গে উত্তেজিত ভাষায় তর্ক করছেন, বারবার প্রশ্ন করছেন, ‘আপনি মিথ্যা বলেছেন।’ 

এ সময় ভিডিওতে শোনা যায়, আসিফ নজরুল বলছেন, ‘আপনি গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন?’ 

এ সময় হেনস্তাকারীদের ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

জেনেভাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘আইন উপদেষ্টা ব্যক্তিগত কোনো সফরে সুইজার‌ল্যান্ড আসেননি। তিনি আইএলও গভর্নিং বডির মিটিংয়ে এসেছেন। আইএলওতে বাংলাদেশের দুটি মামলা চলছে। সে জন্য উপদেষ্টা এখানে এসেছেন। তিনি আইএলওর মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে জেনেভা সময় বৃহস্পতিবার বিকেলে দেশে ফেরার জন্য বিমানবন্দরে প্রবেশের পথে কিছু লোক উপদেষ্টার সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেছেন।’

এই কর্মকর্তা বলেন, ‘শুনেছি আইন উপদেষ্টা গাড়ি থেকে নামার পর কিছু লোক এসে তাকে ঘিরে ধরে। সঙ্গে দূতাবাসের লোকজন ছিল। ওনাকে প্রটোকল দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ করে এসে কিছু লোক এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে।’

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিদেশে কূটনৈতিক মিশনগুলোর দায়িত্বজ্ঞান সম্পর্কে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলছেন, উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলতে দেওয়ার মতো সুযোগ দেওয়াই উচিত হয়নি। এমন ঘটনা যদি ঘটে, তা হলে কেমন প্রটোকল ছিল? রাষ্ট্রদূত কি তা হলে তার দায়িত্বে অবহেলা করেছেন?

আইএলওর গভর্নিং বডির বৈঠকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ছাড়াও শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীও অংশ নেন। 

'), descriptionParas[2].nextSibling); } if (descriptionParas.length > 6 && bannerData[arrayKeyTwo] != null) { if (bannerData[arrayKeyTwo].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyTwo].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyTwo].file)), descriptionParas[5].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyTwo].custom_code), descriptionParas[5].nextSibling); } } if (descriptionParas.length > 9 && bannerData[arrayKeyThree] != null) { if (bannerData[arrayKeyThree].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyThree].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyThree].file)), descriptionParas[8].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyThree].custom_code), descriptionParas[8].nextSibling); } } });