ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

রাষ্ট্রদূত আনসারীকে নিয়ে নিউইয়র্কে মতবিনিময় সভা

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৮ এএম
আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০০ পিএম
রাষ্ট্রদূত আনসারীকে নিয়ে নিউইয়র্কে মতবিনিময় সভা
ঈদ পুনর্মিলনী ও মতবিনিময় সভায় মুশফিকুল ফজল আনসারী

মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও হোয়াইট হাউসের সাবেক করেসপনডেন্ট মুশফিকুল ফজল আনসারীর সঙ্গে ঈদ পুনর্মিলনী ও মতবিনিময়ের আয়োজন করেছে নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনসাল জেনারেলের অফিস।

নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ কনসুলেট অফিসে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা।

আনসারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি ও জাতিসংঘের কূটনৈতিক রিপোর্টার ছিলেন।

সভায় গত ১৫ বছর প্রবাসে সাংবাদিকতা করতে গিয়ে বিভিন্ন বাধা-বিপত্তির কথা তুলে ধরেন তিনি। 

তিনি বলেন, 'হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক হিসেবে যেন কাজ না করতে পারি, সে জন্য মরিয়া ছিল পতিত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হাসিনার বড় বড় মন্ত্রীরা আমার পেশাগত কাজের প্রতিবন্ধকতার জাল বুনেছিল। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আমার বিরুদ্ধে স্টেট ডিপার্টমেন্টে চিঠি লিখেছিল।'

এ সময় তিনি শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশে শত শত সাংবাদিককে নির্যাতনের দৃষ্টান্তগুলো তুলে ধরেন। 

রাষ্ট্রদূত বলেন, 'একটি গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ে তুলতে অবশ্যই একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠন করতে হবে। নির্বাচিতদের হাতে শাসনভার হস্তান্তর বর্তমান সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। এ জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সাহায্য করতে হবে।'

দেশে ও বিদেশে আওয়ামী সরকারের নির্যাতনের বিবরণ তুলে ধরতে গিয়ে মুশফিক আবেগপ্রবণ হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

মতবিনিময় সভায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন, গিয়াস আহমেদ, কামাল পাশা বাবুল, মোশাররফ হোসেন জসিম ভূঁইয়া, আব্দুস সবুর, মোশাররফ হোসেন সবুজ, মাকসুদুল এইচ চৌধুরী, মোতাহার হোসেন, নাসিম আহমেদ, বাচ্চু মিয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতিকুল হক আহাদ, মিজানুর রহমান, মূলধারার রাজনীতিক অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, জাস্টিস সোমা সাঈদ, জাহাঙ্গীর সরওয়ার্দী, বদিউল আলম, সেলিম রেজা, মাযহারুল ইসলাম মিরন, তরিকুল ইসলাম মিঠু, আহমেদ সোহেল, সাইফুর রহমান খান হারুন, মৃধা মোহাম্মদ জসিম,  মনির হোসেন, অনিক রাজ প্রমুখ অংশ নেন।

শফিকুল/মেহেদী

‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব’

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম
‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব’
ছবি: সংগৃহীত

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব বলে জানিয়েছেন জেনেভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘রাখাইনে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা, নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার জন্য বাংলাদেশ সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের অধিকার ও মর্যাদা সমুন্নত রাখা এবং তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য দ্রুত একটি অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব।’ 

জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫৯তম অধিবেশনে আজ বিকেলে ওআইসির উদ্যোগে উত্থাপিত ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক রেজ্যুলুশন গৃহীত হওয়ার শুরুতে মানবাধিকার পরিষদে তিনি এসব কথা বলেন।

রাখাইনে মায়ানমার সামরিক বাহিনী এবং আরাকান আর্মির মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে চলমান সংঘাত মানবিক সহায়তা কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং রোহিঙ্গাদের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে বলে বাংলাদেশের বক্তব্যে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। 

এ সময় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মানবাধিকার পরিষদকে অবহিত করে উল্লেখ করেন, রাখাইন রাজ্যে চলমান হত্যাযজ্ঞ, নিপীড়ন এবং সহিংসতা এড়াতে শুধু ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

এ ছাড়া আগামী সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা বিষয়ে আয়োজিতব্য উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানকল্পে বাস্তবমুখী এবং সময়াবদ্ধ সমাধান খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান অধিবেশনে মায়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কিত রেজল্যুশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। রেজল্যুশনে রোহিঙ্গাদের জন্য ক্রমহ্রাসমান মানবিক সহায়তার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অধিকতর দায়িত্বগ্রহণের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। 

এ ছাড়া এতে জাতিসংঘ ও সংশ্লিষ্ট অন্য সংস্থাগুলোকে রাখাইনে নিরবচ্ছিন্ন এবং পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা করার আহ্বান জানানো হয়।

রেজল্যুশনটিতে রাখাইনে বিচারহীনতা ও দায়মুক্তির সংস্কৃতি অবসানের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যের সব স্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের অংশগ্রহণ এবং অর্থপূর্ণ প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনকাঠামো স্থাপনের আহ্বান জানানো হয়।

গত ১৬ জুন শুরু হওয়া জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫৯তম অধিবেশন আগামী ৯ জুলাই  সমাপ্ত হবে। 

বিজ্ঞপ্তি/পপি/

মেক্সিকোতে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী ও ঈদ পুনর্মিলনী

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ০৬:২৫ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫, ০৬:৪৭ পিএম
মেক্সিকোতে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী ও ঈদ পুনর্মিলনী
ছবি: সংগৃহীত

মেক্সিকোর বাংলাদেশ দূতাবাস রবিবার (২৯ জুন) এক অনন্য সাংস্কৃতিক সম্মিলনের আয়োজন করেছে। যেখানে একত্রে উদযাপিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী, পাশাপাশি ঈদুল আজহা পরবর্তী পুনর্মিলনী।

দূতাবাসের এই বিশেষ আয়োজনে মেক্সিকো প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের সূচনাপর্বে মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে রাষ্ট্রদূত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী কবিতা ‘১৪০০ সাল’ আবৃত্তি এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রবন্ধ ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’ পাঠ করে উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধ করেন। তার কাব্যিক উপস্থাপনা অনুষ্ঠানকে দেয় এক ভিন্ন মাত্রা।

সাংস্কৃতিক পর্বের বিশেষ আকর্ষণ ছিল দুই ক্ষুদে শিল্পীর মনোমুগ্ধকর বাংলা গান পরিবেশনা। তাদের সুরেলা কণ্ঠ উপস্থিত সবার হৃদয় ছুঁয়ে যায়।

রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল বাংলাদেশ-মেক্সিকো কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দূতাবাসের উদ্যোগে আগামী দিনে আয়োজিতব্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরেন এবং উপস্থিত সবাইকে এসব আয়োজনে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানান।

অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার ও মিষ্টান্ন দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন। অনুষ্ঠান উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণকে সাজানো হয়েছিল বাংলাদেশের গ্রামীণ সংস্কৃতির রূপে, যা উপস্থিত সবার মধ্যে বাংলাদেশের একটি আবহ সৃষ্টি করে।

অনুষ্ঠানের সমাপ্তিতে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রবাসে বসবাস করেও আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধারণ করে চলেছি। এমন আয়োজনের মাধ্যমে আমরা ল্যাটিন আমেরিকায় বেড়ে ওঠা প্রজন্মের মাঝে বাংলার চেতনা ও মূল্যবোধ ছড়িয়ে দিতে চাই।’

সালমান/

মেলবোর্ন জাতীয়তাবাদী দল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের মতবিনিময় সভা

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ০৮:৪৯ পিএম
মেলবোর্ন জাতীয়তাবাদী দল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের মতবিনিময় সভা
মেলবোর্ন জাতীয়তাবাদী দল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের মতবিনিময় সভায় দলের নেতাকর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল কবীর পলের মেলবোর্ন গমন উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ভিক্টোরিয়া শাখার উদ্যোগে মতবিনিময় সভা আয়োজিত হয়।

গত রবিবার (১৫) জুন সন্ধ্যায় মেলবোর্নের মধুমতি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিত ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সহ-সভাপতি আরিফ খানের সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ভিক্টোরিয়া শাখার সদস্য সচিব আব্দুল রব।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রেজাউল কবীর পল। তিনি তার বক্তব্যে যুবদলের সাংগঠনিক কার্যক্রম, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং ভবিষ্যৎ আন্দোলন-সংগ্রামের রূপরেখা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, প্রথমেই আমি অস্ট্রেলিয়া বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল-সহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানাই। তারা ব্যস্ত প্রবাসজীবনের মাঝেও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এই পর্বে একাত্ম হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রবাসে থেকে অস্ট্রেলিয়া বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো বিগত ১৭ বছর ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে চলেছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। অস্ট্রেলিয়া বিএনপির নেতৃত্বে প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মাঝে বিএনপির পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে হবে। দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য যুবদলকে আরও সংগঠিত, সক্রিয় ও দৃঢ়চেতা হতে হবে।

উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক নেতাকর্মী বক্তব্য রাখেন এবং নিজেদের পরিচয় তুলে ধরেন। সবার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, বর্তমান রাজনৈতিক পরিচয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতি প্রথম ভালবাসার মুহূর্তগুলো স্থান পায় সবার বক্তব্যে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সহ-সভাপতি আরিফ খান, অস্ট্রেলিয়া বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অমর শরীফ শিহান, সাবেক ছাত্রনেতা মোহাম্মদ বদিউজ্জামান শিপন, বিএনপি নেতা রাশিদুল আমিন মুনির, বিএনপি নেতা ওমর, যুবদল নেতা শাকিব, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ভিক্টোরিয়া শাখার আহ্বায়ক মো. রহমত উল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরান হোসেন এলান, যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর কবির চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক সোহাগ সরকার নিলয়, যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান, সদস্য খাইরুল সাদমান, সদস্য মির্জা সাইফুল ইসলাম এবং মনিরুল ইসলাম-সহ আরও অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

মাতৃভাষায় সাংবাদিকতা বিস্তারে সার্ক দেশগুলোকে ভূমিকা রাখার আহ্বান

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ১০:৫০ এএম
আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫, ০৩:১৩ পিএম
মাতৃভাষায় সাংবাদিকতা বিস্তারে সার্ক দেশগুলোকে ভূমিকা রাখার আহ্বান
ছবি: সংগৃহীত

মাতৃভাষায় সাংবাদিকতার সুরক্ষা ও বিকাশে অন্তর্ভুক্তিমূলক গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সার্কভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। 

দুই দিনব্যাপী ‘মাতৃভাষায় সাংবাদিকতা’বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে গৃহীত সাত দফা ঘোষণার মাধ্যমে ‘কাঠমান্ডু ডিক্লারেশনে’ এ আহ্বান জানানো হয়।

ঘোষণাপত্রে সার্কভুক্ত দেশগুলোর সরকারপ্রধানদের নীতিগত অঙ্গীকার ও রাষ্ট্রীয় সহায়তার ওপর জোর দেওয়া হয়। স্থানীয় ও আদিবাসী ভাষাভিত্তিক গণমাধ্যমের বিকাশ ও টিকে থাকার জন্য বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।

সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীগত ভাষায় সাংবাদিকতাকে সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ ও সামাজিক ন্যায়বিচারের হাতিয়ার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এসব সম্প্রদায় যেন নিজেদের কথা বলার ও প্রাসঙ্গিক তথ্য পাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত প্ল্যাটফর্ম পায়, তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

ন্যাশনাল ফোরাম অব নিউয়ার জার্নালিস্টসের (এনএফএনজে) উদ্যোগে এবং সার্ক জার্নালিস্ট ফোরাম (এসজেএফ) ও ফেডারেশন অব নেপাল ইন্ডিজেনাস জার্নালিস্টসের (ফনিজ) সহায়তায় অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে সার্ক অঞ্চল থেকে আসা সাংবাদিকরা অংশ নেন।

সম্মেলনটি শুক্রবার (১৩ জুন) উদ্বোধন করেন নেপালের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার দেবরাজ ঘিমিরে এবং শনিবার (১৪ জুন) সমাপ্তি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যপুর থিমি মিউনিসিপ্যালিটির মেয়র সুরেন্দ্র শ্রেষ্ঠ।

ঘোষণায় মাতৃভাষাভিত্তিক সাংবাদিকদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ, কর্মশালা এবং ফেলোশিপ আয়োজনের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি মাতৃভাষাভিত্তিক সাংবাদিকতায় অর্থায়ন, কারিগরি সহায়তা ও দক্ষতা উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সমাপনী অনুষ্ঠানে মেয়র সুরেন্দ্র শ্রেষ্ঠ বলেন, এই সম্মেলন মাতৃভাষা সাংবাদিকতা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

অনুষ্ঠানে সার্ক জার্নালিস্টস ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজু লামা সম্মেলনের গৃহীত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের উদ্যোগে সার্কভুক্ত দেশগুলোর সমর্থন কামনা করেন।

ফনিজ সভাপতি লাকি চৌধুরী, এসজেএফের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মো. আবদুর রহমান (বাংলাদেশ), বিহার চ্যাপ্টারের সভাপতি ড. শশী ভূষণ কুমার, সম্মেলন সমন্বয়ক সুনীল মহার্জন এবং এনএফএনজের মহাসচিব কেকে মানান্ধর তাদের বক্তব্যে মাতৃভাষায় সাংবাদিকতার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

ঘোষণাপত্রে জানানো হয়, সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো সার্কভুক্ত দেশগুলোর সরকারপ্রধানদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করা হবে এবং জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোসহ স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হবে।

পপি/

স্টকহোমে চার দিন: ঈদ, ইতিহাস আর হৃদয়ছোঁয়া এক ভ্রমণ

প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৫, ১২:২০ পিএম
স্টকহোমে চার দিন: ঈদ, ইতিহাস আর হৃদয়ছোঁয়া এক ভ্রমণ
ছবি: লেখক

সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। রাত ৯টায় নতুন এক শহরের হাতছানি। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান গ্রীষ্মের এই সময়েও আকাশে রয়ে গেছে সূর্যের কোমল আলো। আমি ও আমার স্ত্রী সোনিয়া ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি বিমানবন্দর থেকে সুইডেনের স্টকহোমে আরলান্দা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামলাম। নির্জন কিন্তু রঙিন আলোয় ভাসমান এই রাতের শহর যেন আমাদের অপেক্ষাতেই ছিল।

আমাদের বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতেই চোখে সামনে হাজির প্রিয় শরীফ আহমেদ লস্কর ভাই ও ভাবী। সুইডেনে ৪১ বছর ধরে থাকা এই প্রিয় মানুষদ্বয় নিজেই গাড়ি নিয়ে এসেছেন আমাদের নিতে। গাড়িতে উঠতেই মনে হলো, এটি শুধু কোনো শহরের দিকে যাত্রা নয় - এ যেন অতীত, বর্তমান আর অচেনা ভবিষ্যতের এক অন্তরঙ্গ আবেগের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলা।

শান্ত রাস্তা, গাছপালা আর আলো-ছায়ার খেলা আমাদের গ্রহণ করে নিঃশব্দে! শরীফ ভাইয়ের মুখে শুধু সুইডেনের গল্প। সুইডেনের রাজতন্ত্র, নাগরিক সচেতনতা, প্রবাস জীবনের আবেগ আর এই শহরের ইতিহাস। তাদের সান্নিধ্যে পথ যেন হয়ে উঠেছিল এক উষ্ণ কবিতা।

পরের দিন শুক্রবার ঈদের সকাল। আমি প্রথমবার স্টকহোমে ঈদ উদযাপন করতে যাচ্ছি। আবহাওয়া মেঘলা, হালকা ঠান্ডা, আর বাতাসে এক নিঃশব্দ আনন্দের গন্ধ। ঈদের নামাজ আদায় করি ব্রেদেং মসজিদে, যেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঈদের আনন্দে পরিপূর্ণ। মনে হচ্ছিল, শহরের ভেতরে একখণ্ড বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে।

নামাজ শেষে প্রিয়জনদের সালাম, হাসি, কোলাকুলি - সব কিছু যেন হৃদয়ের গভীর থেকে বেরিয়ে আসা ভালোবাসার ভাষা। দিনভর ঘুরে বেড়াই চার প্রবাসী বন্ধুর বাড়ি। সেমাই, পোলাও, রোস্ট আর মেহমানদারিতে ঈদের সেই চেনা ঘ্রাণ যেন হৃদয়ের তৃপ্তি হয়ে ওঠে। প্রবাসে থেকেও এ যেন পরিবার, আত্মীয়তা ও দেশকে নতুন করে পাওয়া।

রাত আসে আনন্দের আরেক রূপ নিয়ে। স্টকহোম বোট ক্লাবে অংশ নিই একটি প্রাণবন্ত ঈদ পার্টিতে।

কাকতালীয়ভাবে ঈদের সেই আনন্দময় দিনটিই ছিল সুইডেনের জাতীয় দিবস (৬ জুন)। এই দিনে ইতিহাসের দুটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় স্মরণ করা হয় ১৫২৩ সালে গুস্তাভ ভাসার রাজ্যাভিষেক, আর ১৮০৯ সালের সংবিধান প্রণয়ন। সেদিন আমি সৌভাগ্যক্রমে রাজা কার্ল গুস্তাফ ষোড়শ, রানি সিলভিয়া, ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া, প্রিন্স ড্যানিয়েল, প্রিন্সেস এসতেল্লা, প্রিন্স অসকার, প্রিন্স কার্ল ফিলিপ এবং প্রিন্সেস মেডেলাইনকে ড্রটনিংহোম প্যালেসের এক রাষ্ট্রীয় আয়োজনে সরাসরি দেখার সৌভাগ্য হয়। বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ, জাতীয় সংগীত, পতাকার ঢেউ, শিশুদের নৃত্যগীত - সব মিলিয়ে এক অপার উৎসবের আবহ।

স্টকহোম শুধু একটি দেশের রাজধানী নয় - এটি ইউরোপের ইতিহাস, নান্দনিকতা ও রাষ্ট্রনৈতিক ভারসাম্যের প্রতীক। ১৪টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই শহরের চারপাশে মেলারেন হ্রদ ও বাল্টিক সাগরের সৌন্দর্য, যা একে দিয়েছে “ভেনিস অব দ্য নর্থ” উপাধি। এখানেই প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় নোবেল পুরস্কার অনুষ্ঠান - আলফ্রেড নোবেলের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী স্টকহোম সিটি হলে।

এর পরের দিন শনিবার সকাল থেকে শুরু হলো আমাদের স্টকহোম শহরে ইতিহাস ছুঁয়ে দেখার স্বপ্ন। দিনভর এই ভ্রমণে আমার সহযাত্রী ছিলেন সুইডেনে ৩৮ বছর ধরে বসবাসরত, প্রবাসী সমাজে অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন মহিউদ্দিন আহমেদ জিন্টু ভাই। তিনি শুধু স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির একজন পরিচিত মুখই নন, বরং একজন উষ্ণ হৃদয়ের মানুষ, যিনি প্রবাসীদের পাশে থাকেন নিরলসভাবে। তার গাড়িতে চড়ে আমরা শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে চলি - নানা দর্শনীয় স্থান আর ইতিহাসের ছোঁয়া নিতে। তার অভিজ্ঞতার বর্ণনায় স্টকহোম শহরের প্রতিটি ইট-পাথরের মধ্যেই যেন জীবন্ত হয়ে উঠছিল এক দীর্ঘ প্রবাস ইতিহাস।

বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সময় দেন আরেক গর্বিত প্রবাসী নাহিদ হাসান। যিনি “শান্তি” নামে আটটি রেস্টুরেন্টের কর্ণধার। তার গাড়িতে চড়ে আমি যেন শুধু এক শহর দেখিনি, দেখেছি একজন উদ্যোক্তার দৃঢ় পথচলা। তার হাসিমুখ, আত্মবিশ্বাস, আর শহরের প্রতিটি অলিগলি চিনে নেওয়ার গল্প আমাকে মুগ্ধ করেছে।

রবিবার দুপুরে আমরা দাওয়াতে যাই স্বপন ভাইয়ের বাসায়। যার আতিথেয়তায় ছিল দেশি আবেগের নিখুঁত মিলন। ঘরোয়া পরিবেশ, হাসি আর পরিচিত খাবারের ঘ্রাণ - মনে হচ্ছিল, প্রবাসে এসেও যেন এক টুকরো বাংলাদেশকে ছুঁয়ে ফেললাম।

রাতের পর্বটি ছিল আরেক সম্মানিত প্রবাসী নেতার সান্নিধ্যে। নাজমুল আবেদীন মোহন ভাই, যিনি স্থানীয় কমিউনিটির অগ্রজ, একজন প্রতিষ্ঠিত রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। তার আমন্ত্রণে আমরা উপস্থিত হই তার রেস্টুরেন্টে। কথা হয় বাংলাদেশের রাজনীতি, প্রবাসের দায়িত্ববোধ ও আগামীর সম্ভাবনা নিয়ে। এইসব মুহূর্তে মনে হচ্ছিল, আমরা কেবল খাবার খেতে নয় - ভবিষ্যতের কিছু স্বপ্ন একসঙ্গে ভাগ করে নিতে এসেছি।

এই দুই দিন আমরা ঘুরে দেখেছি স্টকহোমের প্রাণ-খ্যাত কিছু স্থান। প্রথমেই পা রাখি গামলা স্তান-বে (Gamla Stan)। এটি স্টকহোমের প্রাচীনতম শহরকেন্দ্রে। এখানে রাজপ্রাসাদ, আঁকাবাঁকা পাথরের গলি আর রাজকীয় প্রহরীদের কুচকাওয়াজ যেন আপনাকে শতাব্দী পেছনে নিয়ে যায়। প্রতিটি দেওয়ালে, প্রতিটি অলিতে যেন লুকিয়ে রয়েছে ইতিহাসের গল্প।

এরপর যাই ভাসা মিউজিয়ামে (Vasa Museum)। ১৬২৮ সালে সমুদ্রযাত্রার প্রথম দিনেই ডুবে যাওয়া বিশাল যুদ্ধজাহাজ “ভাসা” এখানেই সংরক্ষিত। আজও সেটি দাঁড়িয়ে আছে - একজন ব্যর্থতা থেকে শেখা ইতিহাসের নিদর্শন হয়ে।

স্ক্যানসেন ওপেন-এয়ার মিউজিয়ামে দেখি সুইডেনের পুরনো গ্রামীণ জীবন, কুটির শিল্প, গৃহস্থালি, কৃষিকাজ আর সংস্কৃতির বাস্তব নিদর্শন। আর ড্রটনিংহোম প্যালেসে এসে আমরা পরিচিত হই সুইডিশ রাজপরিবারের বর্তমান বাসভবনের সঙ্গে - যা ইউরোপের আধুনিক রাজতন্ত্রের এক প্রতীক।

৯ জুন সকাল সাড়ে সাতটায় ছিল আমাদের ফিরতি ফ্লাইট স্টকহোম থেকে হেলসিংকির উদ্দেশ্যে। শরীফ আহমেদ লস্কর ভাই সেদিনের মতো নিজের গাড়িতে করেই আমাদের বিমানবন্দরে পৌঁছে দিয়ে আন্তরিক বিদায় জানান। বিদায়ের সময় গাড়ির জানালা দিয়ে তাকিয়ে ছিলাম সেই স্টকহোমের দিকে, যে শহর আমাদের চার দিনের আশ্রয় ছিল - তবে আজ মনে হলো, সে যেন চিরদিনের আত্মীয়।

শহরের সৌন্দর্য যেমন মন ছুঁয়েছে, তার মানুষের আন্তরিকতা, ঈদের অনুভব, ইতিহাসের ভার আর নদীর ধারে সূর্যাস্ত - সব কিছু মিলে তৈরি করেছে এক অদ্বিতীয় অভিজ্ঞতা।

স্টকহোম আমার কাছে আর শুধু একটি শহর নয় - এটি একটা গল্প, একটা অনুভব, একটা স্মৃতির নাম।

অমিয়/