![অনলাইন কাস্টমার সামলানোর ৭টি টিপস](uploads/2024/12/10/Untitled-1-1733813374.jpg)
অনলাইনে আপনার পণ্য বিক্রি অনেকটাই নির্ভর করে আপনি কীভাবে আপনার অনলাইন কাস্টমারদের সামলাচ্ছেন তার ওপর। অনেক সময় দেখা যায়, সঠিকভাবে কাস্টমার সামলাতে না পারার জন্য আপনার বিক্রি ভালো হয় না।
আপনার অনলাইন বিজনেস থাকলে আপনাকে অনলাইনে কাস্টমারদের কীভাবে সামলাতে হয়, কীভাবে তাদের সঙ্গে ম্যানারলি কথা বলা যায় তা শিখে নিতে হবে। একজন কাস্টমার আপনার ব্যবহারে সন্তুষ্ট হলে সে আপনার থেকেই বারবার প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী হবে।
এখানে অনলাইন কাস্টমারকে সামলানোর ৭টি টিপস তুলে ধরা হলো।
ধৈর্য ধারণ করুন
প্রথম প্রথম অনলাইন বিজনেস শুরু করলে আপনার ধৈর্য থাকাটা আবশ্যক। আপনাকে অন্তত ২-৩ মাস সময় ব্যয় করতে হবে আপনার বিজনেসে কাস্টমার আনার জন্য। ধীরে ধীরে আপনার কাস্টমার বাড়বে, তখন বিক্রিও বাড়বে। কিন্তু যে জিনিসটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, রাতারাতি কেউই সফল হয় না। কথায় আছে, ‘সফলতার কোনো শর্টকাট নেই।’ তাই প্রথম প্রথম ভালো সেল হচ্ছে না দেখে আপনি হতাশায় পড়ে যেতে পারেন। এ সময় ধৈর্যহারা হলে চলবে না। আবার আরও অনেক ক্ষেত্রে আপনাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। প্রথম প্রথম আপনাকে অনেকেই নক দেবে আপনার পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য। ধরুন আপনার জামার বিজনেস। কাস্টমারদের কোনো ড্রেস ভালো লাগলে আপনার পেজে নক দিয়ে ড্রেসের দাম, কোন ফেব্রিকস দিয়ে তৈরি ইত্যাদি জানতে চাইবে। কিন্তু সবাই কি প্রোডাক্টটি কিনবে? কখনোই না। তাই বলে আপনার ধৈর্য হারানো যাবে না। পরিস্থিতি যত প্রতিকূলেই থাকুক না কেন, আপনার ধৈর্যটাই আসল। কাস্টমার যদি পণ্য না কেনেন, তাহলে কি আপনি তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবেন? কখনোই না। কাস্টমারদের ভালোভাবে সামলানোর একটা ভালো মাধ্যম হলো তারা প্রোডাক্ট কিনুক আর না কিনুক- আপনাকে ধৈর্য নিয়ে তাদের সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলতে হবে। প্রোডাক্ট না কিনলেও কখনো খারাপ ব্যবহার করা যাবে না।
কাস্টমারের কথায় মনোযোগ দিন
অনলাইন বিজনেসে আপনার পেমেন্ট সিস্টেম যদি ফিক্সড না থাকে, তাহলে কাস্টমার পণ্যটি কেনার সময় দর কষাকষি করবেই। কিন্তু এটা নিয়ে যদি আপনি খারাপ ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার কাস্টমার পণ্যটি কখনোই কিনবে না। তাই সে যখন আপনাকে কোনো প্রাইজ অফার করবে সেটা মেনে নিন, ইনসাল্ট করবেন না। পণ্যটি কেনার সময় সে তো বিস্তারিত জানতে চাইবেই। তাই আপনার উচিত হবে তার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা। তারপর বুঝেশুনে বিনয়ের সঙ্গে রিপ্লাই দেওয়া। সব সময় আপনার কথার মাঝে পজিটিভ ভাইভস বজায় রাখুন। এতে কাস্টমার সামলানো অনেক সহজ হয়ে যায়।
সঙ্গে সঙ্গেই রিপ্লাই করুন
জাস্ট টাইমে কাস্টমারের মেসেজের রিপ্লাই করুন। আপনি আপনার অনলাইন পেজে লিখে রাখলেন ২৪/৭ খোলা। কিন্তু এদিকে আপনার কাস্টমার আপনাকে মেসেজ দিয়েই যাচ্ছে, আপনার কোনো রেসপন্স নেই। তাহলে এক্ষেত্রে কাস্টমার আপনার বিজনেস সম্পর্কে নেগেটিভ ধারণা পোষণ করবে। এতে কাস্টমারের মেজাজও খারাপ হয়ে যাবে। তাই কাস্টমার ধরে রাখতে চাইলে আপনার অনলাইন বিজনেসের সব ম্যানেজমেন্ট ঠিকমতো করুন। কিছু কর্মীও নিয়োগ করতে পারেন ভালোমতো কাস্টমার হ্যান্ডেলিংয়ের জন্য।
সমস্যা সমাধানে পরামর্শ
অনেকেই আছেন যারা পণ্য বিক্রি করেই কাস্টমারের সঙ্গে সব সম্পর্ক শেষ করে দেন। আপনি এমনটা করবেন না। আপনার প্রোডাক্ট নিয়ে কোনো ক্রেতা সমস্যায় পড়লে তা সমাধান না করলে সেটা আপনার বিজনেসে খুবই বাজে প্রভাব ফেলবে। আপনার উচিত হবে কাস্টমারের কাছ থেকে রিভিউ নেওয়া। যদি খারাপ হয়, তাহলে আপনার উচিত সেটাকে ব্যাক নেওয়া।
মানসম্পন্ন পণ্য বিক্রি করুন
সব সময় ভালো পণ্য বিক্রি করার চেষ্টা করুন। নিম্নমানের পণ্য বিক্রি করে আপনি হয়তো সাময়িক সময়ের জন্য উপকৃত হবেন ঠিকই, কিন্তু এটি আপনার বিজনেসে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিসাধন করবে। হয়তো দেখতে সুন্দর দেখে কাস্টমারটি আপনার থেকে প্রোডাক্টটি একবার কিনবে, কিন্তু যখন কিছুদিন ব্যবহার করার পর প্রোডাক্টটি নষ্ট হয়ে যাবে, তখন ওই কাস্টমারটি আপনার প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলবে। তাই মানসম্মত প্রোডাক্ট সেল করে কাস্টমারদের সন্তুষ্ট রাখা উচিত। কখনোই খারাপ পণ্য দিয়ে কাস্টমারদের উত্তেজিত করবেন না, যাতে তাদের সামলানোই মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়।
সময় মেনে চলুন
আপনার পেজের ফলোয়ারদের সঙ্গে কথা দিয়ে কথা রাখুন। ধরুন আপনার অনেকগুলো অনলাইনে বিজনেস আছে। এখন আপনি আপনার একটি অনলাইন পেজে পোস্ট করলেন আগামীকাল লাইভে আসবেন, কিন্তু অন্য একটি পেজে কাস্টমার সামলাতেই আপনার লাইভ টাইম পার হয়ে গেল। এক্ষেত্রে আগের পেজটিকে যারা ফলো করেন, তারা বিভ্রান্তিতে পড়বেন। এক্ষেত্রে আপনার উচিত হবে একদম অন টাইমে লাইভে আসা, নতুন পোস্ট করার শিডিউল থাকলে পোস্ট করা ইত্যাদি। ঠিকমতো টাইম ম্যানেজ করতে না পারলে কিছু কর্মীও নিয়োগ দিতে পারেন।
সব সময় আপডেট থাকুন
অনলাইন বিজনেস অথবা অফলাইন বিজনেস আপনার দোকান যেখানেই হোক না কেন, আপনার উচিত সব সময় আপডেট থাকা। মার্কেটে যে প্রোডাক্টটি নতুন বের হবে, ক্রেতাদের সেই জিনিসের প্রতি বেশি চাহিদা থাকবে। দাম বেশি হলেও মেয়েরা চায় তাদের সবার থেকে একটু বেশিই আকর্ষণীয় লাগুক। তাই আপনি তরুণীদের টার্গেট করে তাদের পছন্দের নিউ কালেকশনের হিজাব, বোরকা সবার আগে আপনার অনলাইন শপে নিয়ে আসুন। দরকার হলে পুরোনো ড্রেসগুলোর ওপর ২০ শতাংশ ছাড় দিন। এতে করে পুরোনো প্রোডাক্টগুলোও সেল হয়ে যাবে এবং আপনি নতুন প্রোডাক্টও বেশি বেশি আনতে পারবেন। আর আপনি যত বেশি লেটেস্ট প্রোডাক্ট আনবেন, তত আপনার বিজনেস সবার কাছে চাহিদার শীর্ষে থাকবে। যার ফলে কাস্টমার সামলানো আপনার কাছে কোনো ব্যাপারই মনে হবে না।
তারেক