বিটিভির ডিজি, জিএমসহ দুর্নীতিবাজ সব কর্মকর্তার অপসারণ ও বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। ‘বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ শিল্পী ও সাংস্কৃতিককর্মী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ গতকাল মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনের সামনে এক সাংস্কৃতিক গণজমায়েতে নেতারা এসব দাবি জানান।
জানা গেছে, আগামী ডিসেম্বর মাসের ২৫ তারিখ বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৬০ বছর পূর্ণ হতে চলছে। বাংলাদেশে শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশ এবং বিনোদনের জন্য বিটিভির রয়েছে ব্যাপক ভূমিকা। বিশেষ করে ৭০ ও ৮০-র দশকে বিটিভির বিভিন্ন নাটক, গান ও ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে অনেক কালজয়ী গান, নাটক, শিল্পী ও কলাকুশলীর জন্ম দিয়েছে বিটিভি।
আজকে যারা বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে নানাভাবে প্রতিষ্ঠিত এক সময় তাদের প্রাণের জায়গা ছিল বাংলাদেশ টেলিভিশন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ৬০ বছর পেরিয়ে বর্তমানে বিটিভিতে নানা চরম অব্যবস্থাপনা, কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও অদক্ষতার কারণে বাংলাদেশের জনগণের টাকায় চলা ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটি ডুবতে বসেছে।
এক্ষেত্রে চরম সত্য যে, মনে হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানটি রক্ষার জন্য কোনো কর্তৃপক্ষই বাংলাদেশে নেই। সম্প্রতি বিটিভির বর্তমান মহাপরিচালক নিজের ফেসবুক পেজে নিজের এক পোস্টে নিজেই প্রশ্ন তুলেছেন- বিটিভিকে কে রক্ষা করবে? এ এক নজিরবিহীন ঘটনা! বিটিভিকে রক্ষা করা বা দেখভাল করা যার দায়িত্ব তিনিই প্রশ্ন তুলেছেন বিটিভিকে কে রক্ষা করবে? এর মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয়েছে অব্যবস্থাপনা, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, অনিয়ম, চরম স্বেচ্ছাচারিতা, অডিশন কেলেঙ্কারি ইত্যাদির মধ্য দিয়ে আসলেই ডুবতে বসেছে বিটিভি।
বিটিভির অনুষ্ঠানের মান এতই নিচে নেমে গেছে যে, বিটিভি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সাধারণ দর্শক। অথচ সরকার প্রতিবছর রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটির পেছনে খরচ করছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। যার মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রে শিল্পী সম্মানী বা অনুষ্ঠান নির্মাণের জন্য সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যয় হয়েছে ৬৯ কোটি টাকা। যার বড় অংশ লুটপাট ও নয়ছয় হয়েছে এবং অনুষ্ঠানের কাজে ব্যবহৃত হয়নি।
এসব ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ শিল্পী ও সাংস্কৃতিককর্মী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা দাবি তুলেছেন যে, বিটিভির ব্যর্থ ও অপদার্থ ডিজি ড. জাহাঙ্গীর আলম ও ঢাকা কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার ৩৪ কোটি টাকা দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত মাহফুজা আক্তারকে পদ থেকে অবিলম্বে দ্রুত অপসারণ করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। সেই সঙ্গে ঢাকা কেন্দ্রের দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের নেতা প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোল্লা আবু তৌহিদ ও তার সহযোগী সুমন রেজা, ডিজাইন শাখার কন্ট্রোলার দুর্নীতিবাজ মো. সেলিম ও হিসাব শাখার মো. আতাউর রহমানসহ সিন্ডিকেট সদস্য সব প্রযোজক ও কর্মকর্তাদের পদ থেকে অপসারণ ও বিচার করতে হবে।
জাহ্নবী