জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠা বিখ্যাত নাট্যকার সেলিম আল দীন। ছবি: সংগৃহীত
নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার । ২০০৮ সালের এই দিনে (১৪ জানুয়ারি) মারা যান তিনি। দিনটি উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ, নাট্য সংগঠন ঢাকা থিয়েটার, স্বপ্নদল নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের আয়োজনে স্মরণ শোভাযাত্রা ও সেলিম আল দীনের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় রয়েছে আলোকচিত্র প্রদর্শনী। ১১টা ৪০ মিনিটে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ‘এসো আলোক তীর্থে’। পরে রয়েছে ‘তাঁহার কথামালা’। নির্দেশনায় ড. সোমা মুমতাজ। বেলা সাড়ে ১২টায় রয়েছে স্বপ্নীল সোহেলের পরিবেশনায় ‘ভেনট্রিলোকুইজম’।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃৎমঞ্চে দুপুর ১টায় নাট্যস্লাতকদের পরিবেশনায় হবে ‘যেমন খুশি তেমন করো’। বেলা ৩টায় বিভাগের সেটল্যাবে ‘সেলিম আল দীনের নাটক: প্রসঙ্গ ভাষা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে ৪৯তম আবর্তনের পরিবেশনায় মঞ্চায়ন হবে নাটক ‘ধাবমান’। এটি নির্দেশনা দিয়েছেন আনন জামান।
ঢাকা থিয়েটার ও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার যৌথভাবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীনের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় সকাল ১০টায়। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তারা আগামী ১৭ জানুয়ারি শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চায়ন করবে নাটক ‘নিমজ্জন’। ১৮ জানুয়ারি বিকেলে থাকছে সেমিনার ‘যুগচলতি রীতিবিরোধী কথাকারুকার: সেলিম আল দীন’।
শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটারে আয়োজিত এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন স্বকৃত নোমান। ১৯ জানুয়ারি রাত ১০টায় ঢাকা থিয়েটার ও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের ফেসবুক পেজে ভিডিও মাধ্যমে দেখানো হবে সেলিম আল দীনের কীর্তি-কর্মের উপস্থাপনা ‘বহুমাত্রিক সেলিম আল দীন’।
স্বপ্নদল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ও ১৭-১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজন করেছে ‘নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন স্মরণোৎসব-২০২৫’। ‘চিত্রাঙ্গদা’র দুটি এবং নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনকে উৎসর্গ করে নির্মিত বাঙলা মূকাভিনয়রীতির মূকনাট্য ‘ম্যাকবেথ’-এর দুটি প্রদর্শনী হবে। এ ছাড়াও থাকছে স্মরণ-শোভাযাত্রা, সমাধিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ, নাট্যাচার্যের প্রতিকৃতি সহকারে শিল্পকলা চত্বর সজ্জা, নাট্যাচার্যের জীবন-কর্ম-দর্শন নিয়ে আলোচনা।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি মারা যান সেলিম আল দীন। ঐতিহ্যবাহী বাংলা নাট্যের বিষয় ও আঙ্গিক নিজ নাট্যে প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলা নাটকের আপন বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠা তার হাত ধরেই। নাট্যাঙ্গনে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, নান্দিকার পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
আসছে নতুন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘প্রজাপতি টিভি’। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জলপাই রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন প্রজাপতি টিভির চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন জামিল।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, খুব শিগগির প্রজাপতি টিভি ওটিটিতে যাত্রা শুরু করবে পে চ্যানেল হিসেবে। আপাতত তারা ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্ট্রাগ্রাম ও টিকটকে তাদের কনটেন্ট দর্শকদের দেখাবে।
নতুন প্ল্যাটফর্মটির জন্য নির্মিত দুটি সিরিজ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হয়। দুটি সিরিজ হলো কপিলা মাঝি ও আলীবাবা ৪০ বউ। দুটি সিরিজই নির্মাণ করেছেন জনপ্রিয় নাট্য নির্মাতা শিমুল সরকার। রচনা করেছেন তারেক মাহমুদ ও শিমুল সরকার। সিরিজ দুটি কমেডি ধাঁচের বলে জানান নির্মাতা শিমুল সরকার।
আজ মঞ্চস্থ হবে নৃত্যনাট্য ‘দিলনাওয়াজ’। ছবি: সংগৃহীত
ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় আজ বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে মঞ্চস্থ হবে নৃত্যনাট্য ‘দিলনাওয়াজ’। নৃত্য পরিচালনা করেছেন সাব্বির আহমেদ খান, সংগীত পরিচালনা করেছেন রাতুল শংকর ঘোষ, শিল্পনির্দেশনা দিয়েছেন লুবনা মারিয়াম। এটি প্রযোজনা করেছে সাংস্কৃতিক সংস্থা সাধনা।
দিলনাওয়াজ প্রাসাদে আসার পর অসুস্থ রাজপুত্র সুস্থ হয়ে ওঠেন। রানির চোখে সৌভাগ্যের প্রতীক হয়ে ওঠে ছোট্ট দিলনাওয়াজ। রাজাপ্রাসাদেই শিশু থেকে তরুণী হয়ে ওঠে সে, তারপর একদিন হয়ে ওঠে শাহজাদা শমসেরের চোখের মনি। কিন্তু তাদের প্রেম পরিণতি পায় না। বরং রাজপুত্রের জন্য মালা গাঁথতে গাঁথতে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয় রূপবতী বাঁদি দিলনাওয়াজ। এমন গল্প নিয়েই সাজানো হয়েছে ‘দিলনাওয়াজ’।
রাজপুত্রের সঙ্গে বাঁদির প্রেমের এ কাহিনি লেখা হয়েছে প্রায় শত বছর আগে। উর্দু ভাষায় গল্পটি লিখেছিলেন রাহাত আরা বেগম। তার এই গল্পকে উপজীব্য করে প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে দিলনাওয়াজের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তরুণ নৃত্যশিল্পী মুবাশশিরা কামাল ইরা। শাহজাদা শমসেরের ভূমিকায় নৃত্যাভিনয় করেছেন শিল্পী আবু নাঈম ও রাজবধূর ভূমিকায় উম্মে হাবিবা শোভা। তারা ছাড়াও এ নৃত্যনাট্যে অংশ নেবেন ঢাকার একঝাঁক নৃত্যশিল্পী।
আজ পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। বসন্তবরণ বাঙালির সংস্কৃতির এক অনন্য উৎসব। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনকে স্বাগত জানানোর জন্য উদযাপিত হয় এই উৎসব। প্রথম ফাল্গুনকে বরণ করে নেওয়ার পাশাপাশি প্রিয়জনদের সঙ্গে ভালোবাসা ভাগাভাগি করে নেবেন সাধারণ মানুষ থেকে শোবিজ অঙ্গনের তারকারাও। এসব বিষয় নিয়ে আয়োজন করা হয়ে খবরের কাগজের আজকের রঙ। তারকাদের সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন এ মিজান।
অভিনেতা সোহেল রানা । ছবি: সংগৃহীত
আমাদের সময় প্রপোজ করতেই ৫ বছর লেগে যেত: সোহেল রানা বিশ্ব ভালোবাসা নিয়ে বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক শফিক রেহমান যখন ‘লাল গোলাপ’ শো শুরু করেন তখন আমি তার বিরোধিতা করেছিলাম। সে সময় পত্রিকাতেও আমি এসবের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলাম তাকে নিয়ে। কারণ এসবের জন্য আমাদের সংস্কৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদেশি কালচার আমাদের কালচারে প্রভাব বিস্তার করেছে। বাঙালির সংস্কৃতি অনেক বেশি সমৃদ্ধ। ১২ মাসে ১৩ পার্বণের দেশ বাংলাদেশ। বৈশাখ, চৈত্রসংক্রান্তি, ফাল্গুনসহ বাঙালিদের নানা রঙিন সংস্কৃতি রয়েছে। বিদেশি সংস্কৃতির বিভিন্ন ডে দিয়ে আমাদের সংস্কৃতি আজ ধ্বংসপ্রায়। তাদের আবেগ আর আমাদের আবেগ এক নয়। বিদেশিরা লিভ টুগেদার করেন। বিয়ের আগেই তাদের ছেলেমেয়ে হয়।
১৮ বছর বয়স হলেই ছেলেমেয়েরা মা-বাবার কাছ থেকে আলাদা থাকে। এটা আমাদের সংস্কৃতিতে ভাবাই যায় না। আমরা পরিবারনির্ভর। পরিবার আমাদের সারা জীবনের জন্য। আমরা পারিবারিক ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে চাই। আমরা ঘরের বাইরে গেলেও বাবা-মাকে বলে যেতাম। তাদের ভালোবাসা সব সময় আমার মাথার ওপর ছিল। এখন কে কোথায়, কার সঙ্গে যায় এসব নিয়ে কেউ খবর রাখেন না। সবাই নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত। আর ভালোবাসা নিয়ে বিশেষ কোনো দিবস আমার খুবই অপছন্দের। ভালোবাসার বিশেষ কোনো দিবস কেন থাকবে? প্রিয় মানুষকে আমরা সব সময়ই ভালোবাসব। প্রতিদিনই ভালোবাসার দিন আমাদের। ভালোবাসার সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ বা সময় থাকা উচিত না।
এখন ভালোবাসা বিষয়টি ঠুনকো হয়ে গেছে। এখন মানুষ অর্থ এবং এনজয় করাতেই বেশি বিশ্বাসী। সবকিছু একেবারেই রোবোটিক হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স। আমাদের সময় প্রোপজ করতেই ৫ বছর লেগে যেত। কাউকে ভালোবাসার কথা প্রকাশ করা ছিল অনেক কঠিন বিষয়। এখন প্রথম দিনেই কফি ডেট, প্রথম দিনেই তুমি সম্বোধন। সবকিছু কেমন যেন এলোমেলো লাগে। প্রজন্ম অনেক আবেগহীন হয়ে যাচ্ছে। কেউ মারা গেলেও এখন আর সবাই কাঁদেন না। কিছু মানুষ কাঁদেন, আর কিছু মানুষ যেন দায়িত্ব পালন করতেই ছুটে যান। সবকিছুই আর্টিফিশিয়াল। আমি পর্দায় অসংখ্য প্রেম করেছি। কিন্তু ব্যক্তিজীবনে প্রেমের অভিজ্ঞতা ভালো না। কারণ আমার সব সময় ফোকাস ছিল আমার ক্যারিয়ার নিয়ে। আমি রাজনীতি করেছি, খেলাধুলা করেছি। পড়াশোনা নিয়েও তুমুল ব্যস্ত থাকতাম। ব্যস্তময় জীবনে ওইভাবে প্রেম করা হয়নি। তবে আমি আমার প্রিয় মানুষদের অনেক ভালোবাসি। দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা আছে এবং থাকবে। সবার জন্যই অনেক ভালোবাসা ও শুভকামনা।
অভিনেত্রী ববিতা। ছবি: সংগৃহীত
ভালোবাসার চেয়ে মূল্যবান কিছু নেই: ববিতা বিশেষ দিন বা সময় ভালোবাসার জন্য নির্ধারণ করা উচিত নয়। ভালোবাসা হচ্ছে সাংঘাতিক একটা ব্যাপার। এর চেয়ে সত্য, সুন্দর ও চিরন্তন কিছু নেই। ভালোবাসার চেয়ে মূল্যবান আর কিছু নেই। সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের ভালোবাসা, স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা, ভাই-বন্ধুদের প্রতি ভালোবাসা, প্রেমিক-প্রেমিকার ভালোবাসা- সবকিছু মিলিয়ে ভালোবাসাটা স্বর্গীয় একটা বিষয়। এই পৃথিবীতে ভালোবাসা না থাকলে পৃথিবী এত সুন্দর হতো না। আমাদের সময় যে ভালোবাসা ছিল, আর এখন বর্তমান সময়ে ভালোবাসার যে ধরনের ভালোবাসা দেখি তা হচ্ছে আকাশ-পাতাল ব্যবধান। আমাদের সময়ে ভালোবাসা ছিল আস্থার, শ্রদ্ধা ও একে অপরের প্রতি দারণ বিশ্বাসের। ভালোবাসা এখনো আছে কিন্তু তার পরও এখনকার ছেলেমেয়েরা কীসের পেছনে যেন ছুটে বেড়ায় সব সময়। এক ধরনের অস্থিরতা দেখি তাদের মাঝে। ভালোবাসা নিয়ে আমার বেশ স্মৃতি আছে। আমি যদি বলি আমার ভালোবাসা ছিল না, তাহলে ভুল বলা হবে। তবে বিভিন্ন পত্রিকায় তখন বিভিন্নজনের সঙ্গে আমার গসিপ লেখা হতো। এগুলো পড়ে আমি হাসতাম।
ছোট বয়সেই মিডিয়ায় কাজ শুরু করেছিলাম। আমার ক্যারিয়ারে অনেক নায়কের সঙ্গেই কাজ করেছি। কিন্তু জাফর ইকবালের প্রতি আমার একটা ভালোলাগা ছিল। সেটা ভালোবাসাও বলতে পারেন। জাফর ইকবাল ছিল ভীষণ স্মার্ট, গুড লুকিং। অভিনয়ও যেমন দারুণ করতেন আবার গানও গাইতেন চমৎকার। কেউ কেউ বলেন, ভালোলাগার তীব্রতা নাকি জাফর ইকবালের বেশি ছিল। আমারও কিন্তু ভালোই ছিল। অভিনয়ের কারণে অসংখ্য ভক্তের ভালোবাসা পেয়েছি। অনেক ভক্ত আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য পাগলামীও করেছেন। একবার প্রেস ক্লাবের সামনে এক ভক্ত মশারি টাঙিয়ে বসে গেলেন আমার জন্য। তার দাবি ছিল আমার সঙ্গে দেখা করে ভালোবাসার কথা প্রকাশ করবেন। সে সময় এ ঘটনা পত্রিকাগুলো ফলাও করে ছাপিয়েছিল। পুলিশ নাকি বুঝিয়ে সেই ভক্তকে ফিরিয়ে দিয়েছিল। আমি কী কারণে যেন সেই ভক্তের কাছে যেতে পারিনি। এখনো অনেক মানুষ আমার বাসার নিচে এসে দেখা করতে চায়। সবার সঙ্গে তো আর দেখা করা সম্ভব নয়, তবে আমি চেষ্টা করি ভক্তদের অনুরোধ রাখতে। কোথাও গেলে ভক্তদের কারণে আমি কখনই বিরক্ত হই না। কারণ তাদের ভালোবাসার জন্যই আমি ববিতা হতে পেরেছি। আমি দোয়া করি সবাই সবার ভালোবাসার মানুষগুলো নিয়ে সুখে থাকুক। সবাইকে ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা। কারণ ভালোবাসা সুন্দর হলেই মানুষগুলো ভালো থাকে। ভালোবাসায় ভালো থাকুন পৃথিবীর সব মানুষ।
আমি হলুদ শাড়ি পরব: সাফা কবির প্রতিদিনই আমার কাছে ভালোবাসার দিন। তারপরও ভালোবাসার জন্য একটি বিশেষ দিন থাকলে এটা আরও বেশি উপভোগ্য হয়। আমার কাছে মনে হয়, ভালোবাসা মানে শুধুই প্রেমিক-প্রেমিকা এমনটি নয়। ভালোবাসার মানুষ মা-বাবা, ভাইবোন, বন্ধুরা যে কেউই হতে পারেন। তবে যেকোনো বিশেষ দিন বা সময় আমার ভালো লাগে। পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসের পরিকল্পনা হয়ে গেছে। আমি দুপুরে হলুদ শাড়ি পরব, আর রাতে লাল পোশাক পরে সেলিব্রেট করব। আমার কাছে ভালোবাসার মানে হচ্ছে ‘ওপেন টু লাভ’। ভালোবাসার দিনে সবাই ভালো থাকুক সেই কামনা করি। সবাই তার ভালোবাসার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দিনটি ভালোভাবে উদযাপন করুক।
অভিনেত্রী মুমতাহিনা টয়া। ছবি: সংগৃহীত
শুধু মুখে বলে দিলেই ভালোবাসা হয় না : মুমতাহিনা টয়া আমার কাছে ভালোবাসা দিবসের বিশেষ পরিকল্পনা নেই। প্রতিদিনই প্রিয় মানুষদের ভালোবাসার দিন। ভালোবাসার দিনে আমি একটা বার্তা দিতে চাই, সেটা হলো ভালোবাসা পাওয়ার চেয়ে সেটা রক্ষা করাটা বেশি কঠিন। ভালোবাসা মেইনটেইন করতে হয়। আমি তোমাকে ভালোবাসি শুধু মুখে বলে দিলেই ভালোবাসা হয় না। কাজে ও ব্যবহারে বোঝাতে হয়। নিজের পার্টনারকে অথবা পরিবারের মানুষকে যাকেই ভালোবাসেন, কাজ দিয়েই তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে, আপনি আসলে কতটা ভালোবাসেন।
সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুল। ছবি: সংগৃহীত
ভালোবাসা শুধু একটা শ্রেণিতে আবদ্ধ নয় : ইমরান ভালোবাসা একেকজনের কাছে একেক রকম। আমরা এটাকে আসলে প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে আবদ্ধ করে ফেলি। এটা সঠিক নয়, প্রেমিক-প্রেমিকা ছাড়াও ভালোবাসা হচ্ছে মা-বাবার প্রতি, দেশ, সমাজের প্রতি বিশেষ অনুভূতি। ভালোবাসা মানে সংগ্রাম ও সেক্রিফাইস। ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের মাস। ভাষার জন্য অনেকেই রক্ত দিয়েছেন। ভাষার প্রতি যারা জীবন দিয়েছেন তাদের এই ভালোবাসাটা শ্রদ্ধা ও সম্মানের। তাই ভালোবাসা দিবস শুধু একটা শ্রেণিতে আবদ্ধ নয়। ভালোবাসা দিবস আমি গানে গানে ভক্তদের সঙ্গে উদযাপন করব। এই মাসে আমার অনেক শো আছে। তাই ভালোবাসা দিবস নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা করতে পারিনি। তবে একজন শিল্পী হিসেবে ভক্তদের সঙ্গে ভালোবাসা শেয়ার করার যে সুযোগ পাচ্ছি, এটাই আমার অনেক বড় প্রাপ্তি।
ছোটপর্দার প্রিয় মুখ অভিনেতা সাব্বির আহমেদ। যদিও-বা অভিনয়ে তার যাত্রা শুরু আজ থেকে ২৯ বছর আগে ‘চিলড্রেনস থিয়েটার’-এর হয়ে খালেদ মাহমুদ রকির পরিচালনায় ‘শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। কিন্তু পেশাগতভাবে তার অভিনয়ে যাত্রা শুরু হয় আজ থেকে দেড় যুগ আগে।
দেড় যুগ আগে তিনি প্রথম টিভি নাটকে অভিনয় করেন। তারেক খান পরিচালিত ‘প্রেম সৈনিক’ নাটকে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। তার অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক নাটক ছিল সুমন আনোয়ার পরিচালিত ‘ডোরাকাটা’ নাটকটি। এরপর থেকে আজ অবধি সাব্বির আহমেদ বহু নাটকে অভিনয় করে দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন।
মাগুড়ার ‘অনন্যা থিয়েটার’-এর সঙ্গেও বহুদিন সম্পৃক্ত ছিলেন সাব্বির। এরপর ঢাকায় এসে প্রাঙ্গণে মোর নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ‘লোকনায়ক’, ‘শ্যামার প্রেম’ নাটকেও অভিনয় করে মঞ্চপ্রেমী দর্শককে অভিনয় দিয়ে মুগ্ধ করেছেন তিনি। সাব্বির আহমেদ বেশকিছু সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন। তার মধ্যে বিশেষত উল্লেখযোগ্য হলো গোলাম মোস্তফা শিমুলের ‘কারণ তোমায় ভালোবাসি’, ‘হরিজুপিয়া’, শ্যাম বানেগালের ‘মুজিব একটি জাতির রূপকার’। ইতোমধ্যে প্রায় শেষ করেছেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত ‘অপারেশন জ্যাকপট’ সিনেমার কাজ।
সাব্বির আহমেদ একজন পেশাদার অভিনেতা। যে কারণে অভিনয়ের বাইরে আর কোনোকিছু নিয়েই তার ভাবনা ছিল না কখনো। চেষ্টা করছেন অভিনয়কে ভালোবেসে একজন সুঅভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে। ২০২১ সালের ২০ জুন সাব্বির আহমেদ (স্ত্রী বীথি) প্রথম বাবা হন। তার একমাত্র মেয়ের নাম প্রিয়।
সাব্বির আহমেদ বর্তমানে তিনটি ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করছেন। নাটক তিনটি হলো ‘জীবন সংসার’, ‘লোকাল প্রেম’ ও ‘ভাইরাল গ্রাম’। এ ছাড়া সাব্বির এরই মধ্যে খণ্ড নাটক ‘একটি ডায়েরি’, ‘ড্রাইভার এবং সুন্দরী বউ’, ‘সুখের খোঁজে’ নাটকের কাজ শেষ করেছেন। খণ্ড নাটকগুলো শিগগিরই প্রচারে আসবে বলে জানালেন সাব্বির।
দীর্ঘদিনের অভিনয় জীবন প্রসঙ্গে সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘আমার শ্রদ্ধেয় মা (শাহনাজ পারভীন) শুরুতে আমাকে অভিনয়ের ব্যাপারে ভীষণ অনুপ্রেরণা দিতেন। মায়ের অনুপ্রেরণাতেই আজ পেশাগতভাবে একজন অভিনেতা। পরে ঢাকায় আসার পর আমার বড় ভাই ফজলে রাব্বি সাইপ্রাস থেকে টাকা পাঠাতেন। তিনি টাকা না পাঠালে আমার থিয়েটার চর্চা করাই হতো না, আমার অভিনেতাও হয়ে ওঠা হতো না। তাই মা এবং বড় ভাইয়ার প্রতি আমার আজীবন কৃতজ্ঞতা। আন্তরিক কৃতজ্ঞতা আমার সব নাটক সিনেমার প্রযোজক পরিচালকের প্রতি, বিশেষ কৃতজ্ঞতা আমার ভক্ত-দর্শকের প্রতি।’
ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে আজ (১৪ ফেব্রুয়ারি) দেশের ১৬ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে ভালোবাসার গল্পে নির্মিত সিনেমা ‘ময়না’। এই সিনেমাটির মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হচ্ছে নবাগত নায়িকা রাজ রিপার। এতে তার বিপরীতে রয়েছেন চারজন নায়ক। তারা হলেন- আমান রেজা, কায়েস আরজু, আফফান মিতুল ও আরেফিন জিলানী।
অভিষেক সিনেমা নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত রাজ রিপা। তিনি বলেন, ‘অবশেষে আমার কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে, এতে আমি খুশি। দিনটি একটি বিশেষ দিন। আর এই দিনে দর্শকদের কাছে ‘ময়না’ একটি উপহার হবে, এমনটাই আশা করি। সবাইকে অনুরোধ করব আমার অভিনীত প্রথম সিনেমাটি হলে গিয়ে উপভোগ করবেন।’
মঞ্জুরুল ইসলাম মেঘ পরিচালিত সিনেমাটির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রাজ রিপা। ‘ময়না’ নারীকেন্দ্রিক গল্পের সিনেমা। চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার সিইও মোহাম্মদ আলিম উল্লাহ খোকনের গল্পে সিনেমাটির চিত্রনাট্য, সংলাপ পরিচালনা করেছেন পরিচালক নিজেই।
সিনেমাটিতে আরও অভিনয় করেছেন মোমেনা চৌধুরী, নাদের চৌধুরী, সুব্রত, সুচনা, খলিলুর রহমান কাদরী, আনোয়ার, সীমান্ত, জারা, তাহমিনা মোনা প্রমুখ। বিশেষ চরিত্রে রয়েছেন নায়ক শিশির সরদার, নায়িকা এঞ্জেলা জলি, আপন, শিশুশিল্পী জান্নাতুল ভোর।