
সর্বজনের মঙ্গলসাধনার আহ্বান ধ্বনিত করে সংস্কৃতিচর্চা আরও প্রসারিত, বেগবান ও সার্থক করতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ঢাকায় শুরু হচ্ছে ৪৩তম জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন। জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের তিন দিনের এ আয়োজনে অংশ নেবেন দেশের পাঁচশতাধিক শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী ও সংগঠক।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের রমেশচন্দ্র মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এই আয়োজনের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন আয়োজকরা।
এতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সহসভাপতি ডা. সারওয়ার আলী। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তানিয়া মান্নান। বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি বুলবুল ইসলাম, আমিনুল হক বাবুল ও লাইসা আহমদ লিসা। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবুল ফারাহ্ পলাশ, সদস্য দিলীপ দত্ত, রশীদ আল্-হেলাল ও মামুনুর রশিদ।
তারা জানান, আগামীকাল বিকেল সাড়ে ৪টায় সম্মেলন উদ্বোধন করবেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী ফাহমিদা খাতুন; সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন শিল্পী রফিকুন নবী। এবারের আসরে ‘রবীন্দ্র পদক’ প্রদান করা হবে প্রয়াত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী পাপিয়া সারোয়ারকে। উদ্বোধনী আসর শুরু হবে বোধন সংগীত ‘এই কথাটা ধরে রাখিস- মুক্তি তোরে পেতেই হবে’ গানের মাধ্যমে।
তিন দিনের সান্ধ্য-অধিবেশন সাজানো হয়েছে গুণীজনের সুবচন রবিরশ্মি, গীতি আলেখ্য, আবৃত্তি, পাঠ, নৃত্য ও গান দিয়ে। ৪৩তম অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার বিকেল ৪টায় আয়োজিত হবে সেমিনার। এবারের বিষয় ‘বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথের বাংলাদেশ’। এ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক ফকরুল আলম। আলোচনা করবেন আলম খোরশেদ ও হামীম কামরুল হক। সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সহসভাপতি মফিদুল হক।
এবারে তিন দিনের অধিবেশনের শেষের দিন শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর শ্যামলীতে এসওএস শিশুপল্লীতে আয়োজিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এবারের সম্মেলনে সংগীতানুষ্ঠানের ফাঁকে জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের নানা কার্যক্রমের সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে। বার্ষিক অধিবেশন উপলক্ষে যথারীতি প্রকাশিত হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির নানা দিক নিয়ে বিশিষ্টজনদের লেখা প্রবন্ধের সংকলন ‘সংগীত সংস্কৃতি’।
তানিয়া মান্নান বলেন, ‘অন্ধকারের শক্তি সমাজে সদা ক্রিয়াশীল। ব্যক্তি-মানস বিভ্রান্ত ও কলুষিত করার আয়োজন অনেক ব্যাপক। বিবিধ অনাচার যখন চারপাশে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, তখন অকুতোভয়ে শোধনের কাজে সর্বজনকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, আমরা এমন আহ্বান জানিয়েছিলাম ২০২২ সালে। হিংসা-বিভেদ নয়, সম্প্রীতির বন্ধনে সকলের মিলনে প্রীতি-স্নিগ্ধ বাসযোগ্য সমাজ গঠনে সহযাত্রী হওয়ার ডাক ছিল সবার প্রতি। রবীন্দ্রনাথকে অবলম্বন করে বাঙালি সংস্কৃতির সমগ্রতা ধারণ করে নিরন্তর পথচলার এই প্রত্যয় আজ আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।’