
সংসারের মোহ ত্যাগ করে সন্ন্যাসিনী হলেন বলিউডের একসময়ের লাস্যময়ী অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নি। গত শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভে যোগ দিয়েই জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেন তিনি।
জানা যায়, মহাকুম্ভে কিন্নর আখড়ায় সেখানকার মহামণ্ডলেশ্বর আচার্য লক্ষ্মী নারায়ণের হাত ধরেই শুরু করেন জীবনের আধ্যাত্মিক যোগ। আর সন্ন্যাসিনী হওয়ার ফলে নিয়মানুযায়ী বদলে গেল বলিউডের একসময়কার হিট নায়িকা মমতা কুলকার্নির পরিচয়। তার নতুন নাম মমতানন্দ গিরি।
১৯৭২ সালের ২০ এপ্রিল মারাঠি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম হয় মমতা কুলকার্নির। মাত্র ২০ বছর বয়সেই তিনি পা রাখেন গ্ল্যামার দুনিয়ায়। রঙিন জগতে মমতার সৌন্দর্যের জাদুতে মুগ্ধ হয় মায়ানগরী। ১৯৯২ সালে তিরাঙ্গা ছবি দিয়ে বলিউডে তার হাতেখড়ি। এরপর তাকে সাইফ আলি খানের বিপরীতে আশিক আওয়ারা ছবিতে প্রধান চরিত্রে দেখা যায়। ১৯৯৩ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবির গান আজও দর্শকদের মুখে মুখে।
১৯৯৩ সালেই নতুন মুখ হিসাবে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পান এই অভিনেত্রী। এর পর একে একে সুনীল শেঠীর বিপরীতে ওয়াক্ত হামারা হ্যায়, অতুল অগ্নিহোত্রীর বিপরীতে ক্রান্তিবীর, সালমান খানের বিপরীতে করণ অর্জুন, অক্ষয় কুমারের বিপরীতে সবসে বড়া খিলাড়ি ও আমির খানের বিপরীতে বাজি ছবিতে অভিনয় করে নজর কাড়েন মমতা।
কিন্তু সাফল্যের সিঁড়ি বেশিদিন মসৃণ ছিল না মমতার কাছে। ঘাতক ছবিতে একটি গানে ক্যামিও করেন মমতা। রাজকুমার সন্তোষি পরিচালিত সেই ছবির গান কই জায়ে তো লে আয়ে... আজও সুপারহিট। এরপর পরিচালক ১৯৯৮ সালে চায়না গেট ছবিতে মমতাকে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু কোনো কারণে এই পরিচালকের সঙ্গে মতভেদ হয় মমতার। এরপর সেই ছবি থেকে বাদ পড়েন তিনি।
তবে বলিউডের অন্দরে গুঞ্জন, আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন ছোটা রাজন মমতা কুলকার্নির হয়ে কথা বলেন। এর পর সেই ছবিতে কাজ করেন মমতা। তবে সেই ছবিতে নজর কাড়েন উর্মিলা মাতন্ডকর। সিনেমার বক্স অফিস মোটামুটি হলেও ছম্মা ছম্মা.. গানে ছাপিয়ে যান উর্মিলা।
এরপর নিজের রাগ সামলাতে পারেন না মমতা। কোনো এক অনুষ্ঠানে সকলের সামনে রাজকুমার সন্তোষিকে নিয়ে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তিনি। বলা হয়, সেখান থেকেই মমতার ক্যারিয়ারে পতন শুরু। তার শেষ সফল ছবি ছুপা রুস্তম: আ মিউজিক্যাল থ্রিলার মুক্তি পায় ২০০১ সালে। ২০০২ সালে কভি তুম কভি হাম ছবির পর বলিউড ছাড়েন মমতা কুলকার্নি।
এর পর ২০১৬ সালে দুই হাজার কোটি টাকার মাদক পাচার চক্রের সঙ্গে নাম জড়ায় মমতার। ভিকি গোস্বামীর সঙ্গে তার সম্পর্ক থাকায় বিপদে পড়েন মমতা। এর জন্য তাকে দেশ ছাড়তে হয়। এরপর দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার পর নির্দোষ প্রমানিত হন তিনি। পরে দীর্ঘ ২৫ বছর পর ভারতে ফিরেন।
এর পর আর বলিউডমুখী না হয়ে চাকচিক্যময় দুনিয়া ছেড়ে ধর্মের পথ ধরেন মমতা। মহাকুম্ভের সাগরে ডুব দিয়ে সন্ন্যাসিনী মমতা পরিচিত হবেন শ্রী যমাই মমতানন্দ গিরি নামে। সূত্র: জিনিউজ
মেহেদী/অমিয়/