
সংগীতে বিশেষ অবদানস্বরূপ একুশে পদক পাচ্ছেন প্রখ্যাত নজরুল সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা। একুশে পদক ও অন্যান্য কাজ নিয়ে খবরের কাগজের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এ মিজান
একুশে পদক পাওয়ার খবরে কেমন লাগছে?
এই অনুভূতি প্রকাশের ভাষা নেই। এত সম্মান, এত ভালোবাসা পেয়ে আমি সত্যিই ভীষণ আনন্দিত। আমার দীর্ঘ সংগীত জার্নিতে যারা পাশে ছিলেন, শ্রোতা, ভক্ত, অনুরাগী ও আমার পরিবারের সবার কাছেই কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার আরও দায়িত্ব বেড়ে গেল। সবার কাছে দোয়া চাই, যাতে সুস্থ থেকে গান করে যেতে পারি।
আগে থেকে বুঝতে পেয়েছিলেন?
কিছু দিন ধরেই বিভিন্নজন আমাকে খবর দিত। কেউ আবার বলত, ‘আপা হবে না’ আবার কেউ বলত, ‘আপনার পাওয়া উচিত ছিল।’ এরকম কয়েক বছর ধরেই আমার সঙ্গে হচ্ছিল। এসব দেখে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস এত কমে গিয়েছিল যে, মাঝে মাঝে ভাবতাম, খবর শুধু শুনেই যেতে হবে আমাকে, ভাগ্যে আর জুটবে না। অথচ আমার বরের জন্মদিনে আমার এই খুশির সংবাদ পেলাম। আমার মেয়েও কানাডা থেকে এসেছে। এই সংযোগটা একান্তই আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় হয়েছে। সবকিছুর জন্যই সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা।
এমন আনন্দের খবরে কার কথা বেশি মনে পড়ছে-
আমার ছেলে-মেয়ে, স্বামী ও পরিবারের কথা। গানের জন্য প্রতিনিয়ত সহায়তা করেছেন আমার বাবা। মা ভীষণ যত্ন করেছেন। খবরটি শোনার পর প্রথমেই বাবার চেহারাটা ভেসে উঠেছে, মায়ের যত্নের কথা মনে পড়েছে। আমি তখন স্বামীর সঙ্গেই ছিলাম। এ ছাড়া আমার গানের ওস্তাদদের কথা মনে পড়েছে।
রাষ্ট্রীয় এই সম্মাননাপ্রাপ্তিকে আপনি কীভাবে দেখেন?
আমার ক্যারিয়ারে সব শ্রেণির মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, পাচ্ছি। যখন কোনো শ্রোতা আমার গানের প্রশংসা করেন তখন মনে হয়, এটাই বোধহয় বড় প্রাপ্তি। প্রজন্মের পর প্রজন্মকে গানের মাধ্যমে একটু হলেও ধরতে পেরেছি। সবাই আমাকে যে সম্মান করেন, তা আসলে বলে শেষ করা যাবে না। এতদিন শ্রোতাদের ভালোবাসা পেয়েছি, এবার এর সঙ্গে ক্যারিয়ারে প্রাপ্তি যোগ হলো। সবকিছু মিলিয়ে জীবনে পূর্ণতা এলো।
এর আগে একুশে পদক নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। এবার পদক পাওয়ার যে তালিকা সেটাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
এটা আসলে একেকজনের ক্ষেত্রে একেকটা হয়। কারও ক্ষেত্রে অনেক দিনের চাওয়া থাকে। তিনি পেলে সবাই বলে সঠিক মানুষটি পেল। আবার কেউ মানুষের চাওয়ায় তৈরি হওয়ার আগেই পেয়ে গেছেন। সে ক্ষেত্রে ওসব কথা আসে। তবে এবারের তালিকা নিয়ে কোনো ধরনের সমালোচনা আমার চোখে পড়েনি।
গান নিয়ে বর্তমান ব্যস্ততা কেমন?
এখন আমার গানের ব্যস্ততা অনেক। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের পাশাপাশি স্টেজ শো’তেও গান করছি। এ ছাড়া আমার গানের স্কুল সুরসপ্তক নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। নতুন গানের রেকর্ডিং করছি। সবকিছু মিলিয়ে সময়টা ভালো কাটছে।
/ফারজানা ফাহমি