
সিরাজগঞ্জের বাহিরগোলার সন্তান এই সময়ের দর্শকের প্রিয় একজন অভিনেতা তারিক স্বপন। নিজের ভালো লাগা থেকেই অভিনয়ের দুনিয়ায় তার পথচলা। আজ থেকে ৩৩ বছর আগে ১৯৯২ সালে সিরাজগঞ্জের ‘অনুস্বর থিয়েটার’ দিয়ে তার মঞ্চে অভিনয় শুরু। পরবর্তী সময়ে ‘প্রসূণ থিয়েটার’র হয়ে তিনি ‘হামেদ আলীর সর্পদর্শন’, ‘১৯৭১’, ‘মহাপুরুষ’, ‘রাজাকারের পতন’সহ বেশ কয়েকটি মঞ্চনাটকের নির্দেশনা দেন।
জনপ্রিয় অভিনেতা জাহিদ হাসান যখন তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জে যেতেন, তখন তারিক স্বপন জাহিদ হাসানের সঙ্গে দেখা করতেন। জাহিদ হাসানের অনুপ্রেরণা ও সাহসে ১৯৯৯ সালে তারিক স্বপন ঢাকায় আসেন। ঢাকায় এসে প্রথম ‘থিয়েটার সেন্টার’-এ যোগ দেন। যোগ দেওয়ার চার দিনের মাথায় তিনি ‘মন তার শঙ্খিনী’ নাটকে অভিনয় করেন। এর পর ২০০২ সাল থেকে ‘নাট্যকেন্দ্র’র সঙ্গে তার পথচলা। ‘নাট্যকেন্দ্র’তে যোগ দিয়েই ‘বিচ্ছু’, ‘আরজ আলী মাতব্বর’, ‘প্রতিসরণ’সহ আরও কয়েকটা নাটকে অভিনয় করেন। তবে ‘নাট্যকেন্দ্র’র সঙ্গে তারিক স্বপন যুক্ত থাকলেও মঞ্চে অভিনয়ে এখন অনিয়মিত। কারণ এখন টিভি নাটকেই তিনি ভীষণ ব্যস্ত।
নাট্যকেন্দ্রের রন্টুর নির্দেশনায় প্রথম তিনি টিভি নাটক ‘অজনা অজান্তে’তে অভিনয় করেন। নাটকের তিনটি প্রধান চরিত্রে সুইটি, তারিক স্বপন ও শামীম শাহেদ অভিনয় করেন। টিভিতে তার অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘লাল নীল বেগুনী’। এর পর মোশাররফ করিমের রেফারেন্সে মাসুদ সেজানের ‘লংমার্চ’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে আলোচনায় আসেন তারিক স্বপন। একই পরিচালকের ‘রেড সিগন্যাল’, ‘চলিতেছে সার্কাস’, ‘এইম ইন লাইফ’ নাটকে অভিনয় করে ভীষণ জনপ্রিয়তা লাভ করেন তারিক স্বপন। তারিক স্বপনের প্রথম অভিনীত সিনেমা প্রয়াত আবিদ হাসান বাদলের ‘আলী বাবা’।
এর পর তাকে ‘পাওয়ার’, ‘হঠাও দুর্নীতি’, ‘অন্ধকারের রাজনীতি’, ‘মুখোশ’ সিনেমায় অভিনয়ে দেখা যায়। মুক্তির অপেক্ষায় আছে অঞ্জন আইচের ‘কানামাছি’ সিনেমাটি। খণ্ড নাটকের মধ্যে স্বপন অভিনীত আলোচিত নাটক হচ্ছে মাসুদ সেজানের ‘চোরের ভবিষ্যৎ’, অরণ্য আনোয়ারের ‘তিন মাত্রা’ ইত্যাদি। স্বপনের বাবা ফরিদুল ইসলাম তালুকদার, মা আফরোজা বেগম লিলি। দুজনের কেউ আজ বেঁচে নেই।
নিজের অভিনয় জীবন ও আগামীর ভাবনা নিয়ে তারিক স্বপন বলেন, ‘দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিনয় করছি। ঢাকায় অভিনয় করছি দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে। তবে দীর্ঘদিনের অভিনয় জীবনের পথচলায় হুমায়ূন আহমেদ স্যার, সালাহ উদ্দিন লাভলু ভাই, ফারুকী ভাইয়ের নাটকে অভিনয় করার সুযোগ হলো না। এটা আমার খুব কষ্টের একটা বিষয়।
আমার মনে হয় লাভলু ভাই, ফারুকী ভাইয়ের নির্দেশনায় কাজ না করতে পারলে অভিনেতা হিসেবে আমি পূর্ণতা লাভ করতে পারব না। আর ভবিষ্যতে আমি কিছু ভালো ভালো গল্প রচনা করে নিজেই নির্দেশনা দেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। এখন আপাতত অভিনয়টাই মন দিয়ে করে যেতে চাই।’
/শাকিল