চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন গৃহকর্মী পিংকি আক্তার (২৪)। ভুক্তভোগী পিংকি নেত্রকোনা জেলা সদরের মৌগাতী ইউনিয়নের ফাদুলিয়া গ্রামের মো. মোজাম্মেলের মেয়ে।
মারধর, হত্যাচেষ্টা ও ভয়ভীতির অভিযোগ এনে দণ্ডবিধির ৩২৩/৩২৪/৩০৭/৫০৬/৩৪ ধারায় দায়ের করা পরীমণিকে ১ নম্বর আসামি এবং একই ফ্ল্যাটে বসবাস করা সৌরভ (২৮) নামের এক ব্যাক্তিকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি মামলাটি করা হয়।
ভুক্তভোগী পিংকির আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাসিদুস জামান নিশান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট আমলি আদালতের বিচারক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তার বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। মামলার ঘটনা তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে আগামি ৮ মে তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত বছরের মার্চে মামলার বাদী পিংকি আসামিদ্বয়ের বাসায় কাদের অ্যাজেন্সি নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গৃহপরিচারিকা হিসেবে চাকরি নেন। একটি বাচ্চাকে দেখাশোনার দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলে অ্যাজেন্সি হতে বাদীকে নিয়োগ দেওয়া হলেও তাকে দুটি বাচ্চার দায়িত্ব পালন করতে হতো।
এছাড়া দিনে ও রাতে বাসার রান্নার কাজ করতে হতো। চাকরি একান্ত আবশ্যক হওয়ায় তিনি মুখ বুঝে সহ্য করে আন্তরিকতার সাথে সে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তবে চলতি বছরের ২ এপ্রিল দুপুর ১টায় আসামি পরীমনি তার মেকআপ রুম থেকে মাদক গ্রহণ করে বাচ্চার রুমে এসে বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।
গালিগালাজ কেন করছেন জানতে চাইলে পরীমনি বাদীকে বলেন, ‘তুই আমার বাচ্চার জন্য দুধ কেন তৈরি করছিস, এখন ওকে সলিড খাবার দিবি।’
বাদী বলেন, ‘বাচ্চার খাওয়ার রুটিন অনুসারে এখন দুধ খাওয়ানোর কথা, তাই আমি দুধ তৈরি করেছি।’
এ সময় পরীমনি ক্ষিপ্ত হয়ে এলোপাতাড়িভাবে বাদীর মাথায়, মুখে ও চোখে চড়-থাপ্পড় মেরে আহত করে।
পরীমনির মারধরে একসময় অজ্ঞান হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফেরার পর বাদী ভীত-সন্ত্রস্ত্র হয়ে পড়েন। ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য পিংকি পরীমনিকে হাসপাতালে নেওয়ার অনুরোধ করতে থাকেন। ঘটনার সময় ২নং আসামি সৌরভ উপস্থিত ছিলেন।
আসামিরা বাদীর কোনো কথা শোনেননি। উপরন্তু আসামি সৌরভ পিংকিকে নির্যাতন করার জন্য পরীমনিকে উৎসাহিত করতে থাকেন ও বাদীকে বাসার বাইরে যাওয়া থেকে বিরত করেন।
পরে ভুক্তভোগী পিংকি ৯৯৯ এ কল করে পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদে যান। পরে ভুক্তভোগী পিংকি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
এ ঘটনায় পিংকি গত ৩ এপ্রিল ভাটারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
ওই জিডি-র কোনো অগ্রগতি না থাকায় আদালতে মামলা করেন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এম এ জলিল উজ্জ্বল/অমিয়/