কবি, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, বুদ্ধিজীবী ও মানবাধিকার কর্মী ফরহাদ মজহার। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পেছনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে বলে মনে করা হয়। তার জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, অন্তর্বর্তী সরকার, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক, আগামী নির্বাচন ও আওয়ামী লীগের পতনের কারণ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন খবরের কাগজের সঙ্গে। তার দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় কিস্তি প্রকাশ হলো আজ। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন খবরের কাগজের হেড অব ডিজিটাল গোলাম রাব্বানী
খবরের কাগজ: সিএনএনসহ বিশ্বের কয়েকটি গণমাধ্যম ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থানকে জেন-জিদের অভ্যুত্থান বলছে। কিন্তু আপনি এর বিরোধিতা করছেন, এর কারণ কী?
ফরহাদ মজহার: প্রথমত জেন-জি বিষয়টা হচ্ছে বিল গেটস মার্কা কর্পোরেট টার্ম। এক ধরনের কর্পোরেট মিথ। যুক্তরাষ্ট্রের ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন জেনারেশান বোঝাতে এই টার্ম ব্যবহার করা হয়। মনে করা হয় জি-জেন আসলেই কিছু জানে না, যা কিছু জানে তার সীমানা হচ্ছে এই ফেসবুক, ইন্সট্রগাম, টিকটক -- এতটুকুই তাদের জগৎ। তারপরও তারা তথাকথিত ‘স্মার্ট’, কারণ তারা ইমিডিয়েট অ্যাকশন চায়। যা চাইবার তা সরাসরি চায়, ইত্যাদি।
কিন্তু বাংলাদেশের তরুণতা তো সেই রকম না। তারা একটা বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে, তার ঐতিহাসিক ও ভূরাজনৈতিক তাৎপর্য নেক গভীর। তার মানে সমাজ, ইতিহাস এবং বাস্তবতা সম্পর্কে তাদের উপলব্ধি ও জানাশোনা অনেক গভীর।
তাছাড়া বাংলাদেশের তরুণরা তো একটা অ্যান্টি কলোনিয়াল এন্টি ইম্পেরিয়ালিস্ট মুভমেন্টের সঙ্গে জড়িত। দীর্ঘকাল তারা ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। জেন-জিদের পক্ষে এই ধরণের বিপ্লব ঘটানো অসম্ভব। ইম্পসিবল। বিপ্লব করেছে তারাই, যারা সমাজ, ইতিহাস ও বস্তবতা সম্পর্কে জানে। কোথায় জেন-জিরা বাংলাদেশের মতো বাংলাদেশে বিপ্লব করেছে আমাকে দেখান তো। তাছাড়া জেন-জি সংক্রান্ত কর্পোরেট ধারণার অনুমান হচ্ছে তারা তাৎখণিক ভাবে প্রতিক্রিয়া জ্ঞাপন করতে, তারা রাষ্ট্র চালাতে অক্ষম।। বাংলাদেশে তরুণদের সম্পর্কেও একটা অত্যন্ত ভুল ধারণা আছে যে, তারা রাষ্ট্র চালাতে পারবে না। এটা বাজে কথা। তারা খুবই সক্ষম।
যারা এই নেতৃত্ব দিয়েছে আমি তো প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। দীর্ঘকাল তাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। তারা এই বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে পরিচালনা করতে খুবই সক্ষম। এরা এই বিপ্লব ব্যররথ হতে দেবে না। এরা জেন-জি বা ফেন-জি না, এরা বিল গেটস ফিল গেটস বুঝে না। এরা জাকারবার্গ বুঝে না, জাকারবার্গকে ব্যভার করে মাত্র, টেকনলজি ওদের কাছে অস্ত্র মাত্র। কিন্তু তারা টেকনলজির প্রডাক্ট না।
খবরের কাগজ: দেশে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে এই সরকারকে কতদিন সময় দেওয়া দরকার বলে আপনি মনে করেন?
ফরহাদ মজহার: এটা আগে থেকে বলা মুশকিল। এ ক্ষেত্রে আপনি কিছু নীতিগত বিষয়ে একমত হতে পারেন। আমি যতটুকু জানি বিএনপি এবং জামায়াত অত্যন্ত ভালো পজিশন নিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর পজিশন আরও ভালো। তারা বলছে, আমরা জনগণের জন্য কাজ করি, তাদের ভালোর জন্য কাজ করি। চফলে এ সরকার যতদিন ভালো কাজ করবে আমরা তাদের সঙ্গে থাকব। আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে যাইনি। হেফাজতে ইসলামের নেতাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা বলেছেন, যেভাবেই হোক এই সরকারকে রক্ষা করতে হবে। আমরা ইসলামি সরকার চাইছি বলে ইন্ডিয়া যে ক্যাম্পেইন করছে, এটা ভুল ধারণা।
যতোটকু বুঝি চরমোনাই পীরের যে দল তারাও চাইছে এই সরকার দীর্ঘকাল থাকুক। নির্বাচনের জন্য যখনই যারা চাপ দেবেন তখন আপনি বুঝবেন তাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে। আমরা কেমন দেশ চাই জনগণের কাছ থেকে তার রায় নিতে হবে। গঠনতন্ত্র জনগণের ইচ্ছাকে ধারণ করে, আর আইন জনগণের ইচ্ছাকে আইনি ভাষায় ব্যক্ত করে।
খবরের কাগজ: আপনি যে গঠনতন্ত্রের কথা বলছেন সেখানে আপনি কী কী দেখতে চান?
ফরহাদ মজহার: এক নম্বরে চাই ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণ করার অধিকার রাষ্ট্রের থাকবে না, ব্যাক্তির মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা যাবে না। দ্বিতীয়ত চাই মানুষের জানমাল জীবিকা রক্ষা করবে রাষ্ট্র, তিন নম্বর আমাদের প্রাকৃতিক যত সম্পদ আছে, জনগণ সেই সম্পদের মালিক। এই সম্পদ যেন কোনোভাবে বিষাক্ত না হয়, নপষ্ট না হয়, বিদেশী শক্তি লুট করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এই সম্পদকে একটা শক্তিশালী অর্থনীতির ভিত্তি হিসেবে রূপান্তর করাই এখনকার কাজ। এরপর আদালত, প্রশাসন কীভাবে চলবে ঠিক করতে হবে, ইত্যাদি তো আছেই।
খবরের কাগজ: বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যে ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন তাদের হত্যার বিচার কার্যক্রম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে করা হবে। এই প্রক্রিয়াটি কী খুব সহজ হবে?
ফরহাদ মজহার: তিনি বলেছেন বাংলাদেশের আইনের অধীনে, এটা তিনি ভুল বলেছেন। আমি তো বলেছি বাংলাদেশের সংবিধান তো বেআইনি, তো এই সংবিধানের অধীনে প্রণিত সকল আইন ও সরকারও তো বেআইনি। বর্তমান সংবিধানের মাধ্যমে আপনি কী আইন করবেন? বাংলাদেশের যে আইনের অধীনে জামায়াতে ইসলামের নেতাদের বিচার হয়েছে সেটা আন্তর্জাতিক আইনের দিক থেকে ন্যায়বিচার হয় নি। তিনি কি সেই আইন দ্বারাই বিচার চাইছেন, এখনও তা পরিষ্কার না।
এর আগে তো আমরা দেখেছি কী হয়েছে। প্যারালাল আইন দিয়ে আপনি অন্যায় কাজ করেছেন। আন্তর্জাতিকভাবে আমরা বিতর্কিত হয়েছি। আপনি লোকজনকে ফাঁসিতে ঝোলাচ্ছেন। এটা কিন্তু ন্যায় বিচার হয়নি। আন্তর্জাতিক আইন তো আছে, আমরা কেন তাকে হেগে পাঠাতে পারব না।
আমরা অবশ্যই হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইসিসি বা আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করব।
খবরের কাগজ: ৫ আগস্ট গণভবন লুট, বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আগুন দেওয়া এবং সারা দেশে যে লুটপাট ও অগ্নি-সন্ত্রাস হয়েছে এই বিষয়গুলো কি নিয়ন্ত্রণ করা যেত না?
ফরহাদ মজহার: এটা করতে দেওয়া হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। গণভবন থেকে পাহারা তুলে নেওয়ার কোনো কারণ ছিল না। এটা কেন তুলে নেওয়া হলো? আমার প্রশ্ন আছে এখানে। গণভবন, বঙ্গভবন বা আমাদের আরও যত রাষ্ট্রীয় স্থাপনা আছে সেখান থেকে কি পাহারা তুলে নেওয়া যায়? মব তৈরি করা হয়েছে। এটা যারা আমাদের শত্রু হয়তো তারা করতে পারে।
শ্রীলঙ্কা থেকে আমরা শিখেছি যে, কী করে পুরোনো সরকারকে ফেরত আনা হয়েছে। মডেল তো আছে ওদের কাছে। শেখ মুজিবের ৩২ নম্বরের মিউজিয়াম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শেখ মুজিবের প্রতি ঘৃণা থাকতে পারে, কিন্তু তার ওখানে মিউজিয়াম থাকলে সমস্যা কী? পোড়ানো হলো কেন?
ডক্টর ইউনূস ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে কী সুন্দর একটা কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, সবার আগে আমরা মানুষ। আপনারা কে হিন্দু কে মুসলমান, কেন ভাগ হয়ে যান? আমরা তো একটা পরিবার। এই পরিবারটা রক্ষা করতে হবে। এই পরিবারে ঝগড়া-বিবাদ থাকতে পারে। এই বোধটুকু আমাদের জাগিয়ে তোলা প্রয়োজন। আমাদের প্রয়োরিটি হচ্ছে এই গুজবগুলো বন্ধ করা এবং যেখানে-যেখানে সত্যিকার অর্থেই নির্যাতন-নিপীড়ন হয়েছে সেগুলো শক্ত হাতে বন্ধ করা।
আমাদের বুকের ক্ষত বিশাল, এটা সহজে শুকাবে না। এই সময়টায় আমাদের ঠাণ্ডা মাথায় কাজ করতে হবে। কোনো ব্যক্তির মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা যাবে না। সেটা আওয়ামী লীগের হলেও না। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কৌশল ছিল বাংলাদেশের মানুষকে বিভাজিত রাখা। এটা তার রাজনৈতিক রণকৌশলের অন্তর্গত। এটা বলেই সে ক্ষমতায় ছিল এতদিন এবং দিল্লির সমর্থন পেয়েছে।
খবরের কাগজ: আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল। সে ক্ষেত্রে দেশের এই রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে জামায়াত-শিবিরের ভবিষ্যৎ আসলে কী?
ফরহাদ মজহার: যখন এটা ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন জামায়াত যে মন্তব্য করেছে, সেটা ছিল সঠিক, বুদ্ধিমান এবং দূরদর্শী। তারা বলেছে, আমরা আইন মেনে চলি- নিষিদ্ধ করলে নিষিদ্ধ হয়ে যাব, আর তো কিছু করার নেই।
আমরা দেশকে ভালোবাসি, আমাদের কাজ করতে দিচ্ছে না। না দিলে কী করব, যখন কাজ করার সুযোগ পাব তখন কাজ করব। ড. ইউনূস সরকারের তো উচিত এই তথাকথিত নিষিদ্ধের বিষয়টি আইন করে তুলে দেওয়া। নিষিদ্ধ আবার কী? প্রতিটি সংগঠনের অধিকার আছে বাংলাদেশে রাজনীতি করার।
কী নিয়ে রাজনৈতিক দল কাজ করবে, কি নিয়ে করতে পারবে না তার একটি ক্রাইটেরিয়া আমরা করে দিতে পারি। জামাতে ইসলামি কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের পর একবারও বলেনি যে, আমরা একটা ইসলামি রাষ্ট্র চাই। এই যে রাজনৈতিক বিচক্ষণতা আমাদের ইসলামি দলগুলোর মধ্যে গড়ে উঠেছে, আমি এটাকে স্যালুট জানাই। এই সরকারকে মানুষ আরও সাধুবাদ জানাবে যদি তারা জামায়াতকে অনুরোধ করে যে, আপনারা জামায়াত ইসলামী নামটা বদলে ফেলেন।
খবরের কাগজ: আওয়ামী লীগ ও হাসিনা সরকারকে কী কী ভুলের কারণে এভাবে ক্ষমতা ছেড়ে পালাতে হলো?
ফরহাদ মজহার: পপুলারিজমে ভর করে যে ফ্যাসিজম গড়ে উঠেছিল এটা যে দুর্বল এবং ঠুনকো এই বিষয়টি তার শেখ হাসিনার মাথার মধ্যে ছিল না। আমরা দীর্ঘকাল থেকে এই ফ্যাসিজমের সমালোচনা করছি, বাকশাল থেকে এই হাসিনা সরকার পর্যন্ত। ধীরে ধীরে পিপলকে এডুকেট করেছি। পলিটিক্যাল এডুকেশন যে এরকম একটা পরিস্থিতিতে যেতে পারে, এটা তিনি অনুমান করতে পারেননি।
তিনি আমাদেরকে অপমান করেছেন। কিন্তু পলিটিক্যাল এডুকেশন তো সমাজের বিশাল একটা অংশ পেয়ে গেছে। এটা তিনি ধরতে পারেননি। তিনি মনে করেছেন, তার থ্রেটটা আসছে জামায়াত আর বিএনপি থেকে।
দ্বিতীয় হচ্ছে আপনি যখন ড. ইউনূসের সঙ্গে পারসোনাল কনফ্লিক্টে গেছেন, ড. ইউনূস নোবেল পেয়েছেন আপনিও নোবেল পেতে চান, এই যে হাস্যকর বিষয়গুলো, এই সকল বালখিল্য বিষয়ের কারণে আপনি ইন্টারন্যাশনালি আইসোলেটেড হয়ে গেছেন।
তিন নম্বর হলো ছাত্রদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, তাদের যে রাজনৈতিক কৌশল, এটার শক্তি সম্পর্কে তার কোনো ধারণা ছিল না। আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে ছাত্রদের এই প্রজ্ঞা ও কৌশলের হাতে পরাস্ত হয়েছে।
খবরের কাগজ: বর্তমান বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের যে অবস্থা, তাতে তাদের আর ফিরে আসা সম্ভব কি না? ফিরে আসতে হলে কী কী বিষয় সংশোধন করা উচিত বলে আপনি মনে করেন?
ফরহাদ মজহার: আমি তো একটু ভিন্ন ধরনের মানুষ। আমি মানুষে বিশ্বাস করি। এটা সংশোধনের ব্যাপার না। যখনই সিস্টেমটা আমরা শক্ত করব, তখন এই শক্ত ব্যবস্থার সুফল আওয়ামী লীগ নিজেও দেখবে।
ওদের অনেকের মধ্যেই পরিবর্তন হবে। যেসব অপরাধ হয়েছে, তার ন্যায়বিচার হতে হবে। আমি এক তরফা বিচারের পক্ষপাতী নই। তারা যেন মনে বল পায়, তাদেরকে মব জাস্টিসের কাছে ছেড়ে দেওয়া ভুল হবে।
খবরের কাগজ: ইনসাফ বা ন্যায় বিচার কীভাবে নিশ্চিত হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
ফরহাদ মজহার: বিচারের আগে আমরা নেলসন ম্যান্ডেলার স্ট্র্যাটেজিটা একটু ভাবতে পারি। আমি বিনয়ের সঙ্গে চিন্তা করতে বলব যে, আমরা ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস কমিশনের মতো একটা কমিশন করতে পারি কি না, যাতে আওয়ামী লীগের নেতারা যারা ভুল করেছেন, তাদের বলব আসেন, আমরা ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস কমিশনে যাই।
আমি এক তরফা বিচারের পক্ষে না। আমি নেলসন ম্যান্ডেলার লোক। ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস কমিশনের সবচেয়ে ভালো দিকটা হচ্ছে আমরা সত্যটা জানব। সত্য যখন আমরা জানি, তখনই কিন্তু জাস্টিস হয়। সত্য যখন আমরা জানি না, তখন আপনাকে আমি যতই শাস্তি দিলাম, তখন মনে হয় শাস্তিটা ঠিক হয়নি।
খবরের কাগজ: এই সরকারে আপনার স্ত্রী ফরিদা আখতার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছেন। এতে কি আপনি কোনো সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছেন?
ফরহাদ মজহার: ডক্টর ইউনূস বা আমাদের ছাত্ররা যদি তাকে চান আমার তো কিছু বলার নেই। নিজের গুণে তিনি ওখানে আছেন এবং তিনি জানেন আমার রাজনৈতিক বিশ্বাস কী। তিনি ডক্টর ইউনূসকে ভালোবাসেন, আমিও ডক্টর ইউনূসকে ভালোবাসি।
খবরের কাগজ: আপনার নয়াকৃষি আন্দোলনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাই?
ফরহাদ মজহার: খুব ভালো। আমরা তো প্রায় ৩ লাখ কৃষক পরিবার নিয়ে কাজ করি। দীর্ঘকাল ধরে একটা বিপুল পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে আমরা অগ্রসর হয়েছি। এক একটা পর্যায়ে আমাদের কাজ বেড়ে গেছে। যদি আমরা নিজস্ব সরকার গঠন করতে সক্ষম হই তাহলে এই কৃষকদের নিয়ে অনেক বড় কাজ করার ইচ্ছা আছে। কারণ ডক্টর ইউনূস এগুলো নিয়ে চিন্তা করেন। কারণ তিনি তো গরিবদের নিয়েই কাজ করেন।
ফলে অতি সহজে তাকে আমরা অনেক সমস্যার কথা জানাতে পারব। সার এবং কীটনাশক ছাড়া নয়াকৃষির যে দশটা নীতি, এটা দ্বারা উৎপাদন আড়াই থেকে তিন গুণ বাড়ানো যায়। আমাদের খাদ্যে সার্বভৌমত্ব অর্জনের জন্য আমরা কৃষিকে গুরুত্ব দেব। তথাকথিত মর্ডান কৃষি না। যেটা ক্ষতিকর।
খবরের কাগজ: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সময় আপনার লেখা ‘আমাকে তুমি দাঁড় করিয়ে দিয়েছ ইতিহাসের সামনে’ কবিতাটি ভাইরাল হয়েছে। কবিতা, গান লেখার সময় বের করতে পারেন এখন?
ফরহাদ মজহার: হ্যাঁ, আমি সময় পেলেই লিখতে বসে যাই। লেখালেখি আমার থেমে নেই।
খবরের কাগজ: ধন্যবাদ আপনাকে সময় দেওয়ার জন্য।
ফরহাদ মজহার: আপনাকেও ধন্যবাদ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলাপ করার জন্য।
> প্রতিবিপ্লব ঠেকাতে ইউনূসের হাতে সব ক্ষমতা দিতে হবে: ফরহাদ মজহার