ঢাকা ১০ আষাঢ় ১৪৩২, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
English

নীলুর ‘সেলাইঘর’

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৪:০৮ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৪:১০ পিএম
নীলুর ‘সেলাইঘর’
তাসলিমা নীলু

তাসলিমা নীলু ২০০৭ সাল থেকে হোপ ইন্টারন্যাশনাল বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করছেন। ২০১৮ সালে শিক্ষকতার পাশাপাশি কিছু করার ইচ্ছায় উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তা করেন। সেই চিন্তা থেকে কিছু পোশাক এনে স্কুলের কলিগ ও আত্মীয়স্বজনদের কাছে বিক্রি করেন। ভালোই সাড়া পেয়েছিলেন। একটা ফেসবুকে পেজ খুলেছিলেন। কিন্তু কীভাবে পণ্যের ছবি তুলতে হয়, সে সম্পর্কে একেবারেই ধারণা ছিল না। যা বিক্রি হতো পরিচিতের মধ্যে।

কিন্তু চাকরি ও ব্যবসা একসঙ্গে করতে পারছিলেন না। তাই ২০১৯ সেটা বন্ধ করে দেন। এরপর ২০২০ সালে করোনাকালীন যখন সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। স্কুলের কাজে তেমন চাপ ছিল না। এ ছাড়া তার স্বামীর চাকরি চলে যাওয়ার কারণে তিনি তার ফেসবুক পেজটা আবার চালু করেন। পুরোনো পেজটা কাজ না করার কারণে সেটা খুলতে পারছিলেন না। তাই সেলাইঘর নাম দিয়ে আরেকটা পেজ খুলেন। একটু আলাদা ধরনের নাম দেওয়ার জন্য পেজটির নাম দিয়েছিলেন সেলাইঘর। যাতে সবার মুখে মুখে থাকে। অনেকভাবে সেলাইঘর মানে সেলাই শিখানো হয়, আসলে কিন্তু তা নয়। সেলাইঘর মানে পোশাক বিক্রি হয়। তিনি সেলাইয়ের কাজ জানতেন বলে এই নামটি দেওয়া। নীলু সবসময় নিজের এবং তার শাশুড়ির জন্য অনেক কাপড় ও লেইস কিনে রাখতেন। করোনাকালীন এটি কাজে দিয়েছিল। শিশুদের একটা পোশাক বানিয়ে হাতের কাজ করে প্রথম সেলাইঘরে পোস্ট করেন। পোশাকটি ছবি পোস্ট করার পর অনেকগুলো প্রি-অর্ডার পেয়ে গেলেন। তখন নিজের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেল, সবগুলো অর্ডারই সময়মতো নিজেরাই ডেলিভারি করলেন। যেহেতু পেজ থেকে সাড়া ভালোই পেলেন, তাই চিন্তা করলেন একটা শোরুম দেওয়ার। ২০২১ সালে দিয়েও ফেললেন। সেখানে নিজের তৈরি পোশাকের পাশাপাশি বাইরের পোশাকও বিক্রি করা শুরু করলেন।

এই ক্ষেত্রে প্রথম যেটা হয়েছে সেটা হলো কাপড় সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা ছিল না। শোরুম দেওয়ার পর মার্কেটে মার্কেটে ঘুরেছেন, কোথায় ভালো শাড়ি পাওয়া যায়, কোথায় থ্রি-পিস পাওয়া যায়, সেখানে গিয়ে সেগুলো সংগ্রহ করেছেন। যত দিন গিয়েছে ততই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। এসএমই থেকে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ধাপে ফ্যাশন ডিজাইনারের কোর্স করে সার্টিফিকেট পেয়েছেন। এটা তার জীবনের একটা বড় প্রাপ্তি। এ ছাড়া ব্লক বাটিকের ওপরে অনেকগুলো কোর্স করেছেন। বিভিন্ন রকমের মেলায় অংশগ্রহণ করে অনেকের ভালোবাসা পেয়েছেন। উদ্যোক্তা হতে গিয়ে অনেক সমস্যায় সম্মুখীন হয়েছেন। পেজের লাইভ করার সময় অনেক নেতিবাচক মন্তব্য শুনতে হয়েছে। এ ছাড়া যেখানে শোরুম দিয়েছেন সেখান থেকে কটূক্তি শুনতে হয়েছিল। কিন্তু তার স্বামী এবং তার শাশুড়ি অনেক সাপোর্ট কারণে তাকে পারিবারিকভাবে তেমন কোনো বাধা পেরোতে হয়নি। বরং অনেক বেশি সাপোর্ট পেয়েছেন।

নীলু যেহেতু দেশীয় প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করেন। তিনি চান ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী ভালো মানের পোশাক দিতে। তাই তার মূল ফোকাস হচ্ছে দেশীয় পোশাক নিয়ে কাজ করা। দেশের পণ্যকেই তুলে ধরা। দেশের গণ্ডি পেরোনোর ইচ্ছা কার না থাকে, তারও ইচ্ছা আছে। কিন্তু তার আগে দেশের ভেতরেই নিজের একটা শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে চান। তিনি চান তার পোশাক দেশের প্রতিটি জেলায় ছড়িয়ে যাক। সবার মুখে মুখে সেলাই ঘরের নাম থাকুক। এরপর দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করবেন। এখনই দেশের অনেক জেলায় তার অনেক ক্রেতা আছে। সেসব ক্রেতাও ইনবক্সে খোঁজখবর নেন। নীলু বলেন, নারীরা কেন বসে থাকবেন। সংসার চালানোর পাশাপাশি যেকোনো কিছু করতে পারেন। সে শিক্ষিত, অশিক্ষিত যেকোনো নারীই হতে পারে। যে বিষয় তিনি দক্ষ সেটা নিয়েই কিছু করতে পারেন। পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে অনেকে শিক্ষার সুযোগ পায় না।

তারাও যেন পিছিয়ে না থাকে। তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে তুলে পারি। এখন নারীরা অনেক আগ্রহী তাই অনেক উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। নারীরা যে যা পারেন তাই নিয়ে কাজ করেন। সেটা ক্রাফটের কাজ হোক, কিংবা গয়না তৈরি। নারীকে সৃজনশীল কাজ করতে হবে। নিজে স্বাধীনভাবে থাকতে চাইলে, নিজের যে গুণ আছে সেটা কাজে লাগাতে হবে। তারা কাজ করে আয় করে স্বনির্ভর হতে পারে। তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে। সরকারের কাছে নীলুর চাওয়া হলো স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা। সরকার যদি আমাদের স্বল্প সুদে ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন থাকলে নারীরা আরও এগিয়ে যাবে।

কলি  

টিম গ্রুপের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা শাহীন

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ০২:১৮ পিএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫, ০৩:১৮ পিএম
টিম গ্রুপের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা শাহীন
টিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিসেস আফরোজা শাহীন। ছবি: সংগৃহীত

টিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিলেন সদ্য প্রয়াত আবদুল্লাহ হিল রাকিবের সহধর্মিণী মিসেস আফরোজা শাহীন। টিম গ্রুপের প্রতিটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠানে সুপরিচিত মুখ আফরোজা শাহীন সাবেক এমডি আবদুল্লাহ হিল রাকিবের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের প্রত্যয় ব্যক্ত করে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চান।

টিম গ্রুপের অন্যতম জনপ্রিয় অঙ্গপ্রতিষ্ঠান টুয়েলভ ক্লদিং-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে আগে থেকেই নিয়োজিত রয়েছেন মিসেস আফরোজা শাহীন। এবার পুরো গ্রুপের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলেন তিনি। একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি সাবেক এমডি রাকিবের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য আরও এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা চান তিনি।

এ ছাড়া পোশাক রপ্তানি শিল্প, ওষুধ শিল্প কিংবা ডেভেলপার শিল্পেও দেশীয় পরিমণ্ডলসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে টিম গ্রুপের সুনাম আরও বাড়িয়ে প্রয়াত স্বপ্নদ্রষ্টা আবদুল্লাহ হিল রাকিবের অসমাপ্ত কাজ এগিয়ে নিতে চান তিনি।

/আবরার জাহিন

বোহেমিয়ান ধারায় অন্দরসজ্জা

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ১২:৫৭ পিএম
বোহেমিয়ান ধারায় অন্দরসজ্জা
ছবি: সংগৃহীত

আধুনিক সাজসজ্জার অন্যতম একটি ধারা হচ্ছে বোহেমিয়ান ধারা। সংক্ষেপে যা বোহো থিম হিসেবে পরিচিত। বোহেমিয়ান মানেই এলোমেলো নয়, এটি সৃজনশীল বিশৃঙ্খলা। বোহেমিয়ান ঘর মানেই কোনো নিয়মে বাঁধা নয়। এটি একটি শিল্পের মতো, আপনি যা ভালোবাসেন, তাই দিয়ে সাজাতে পারেন।

সাজাবেন যেভাবে 
বোহেমিয়ান বা বোহো অন্দরসজ্জা ব্যক্তির শৈল্পিক চিন্তাভাবনাকে ফুটিয়ে তোলে। তাই ঘরের মধ্যে যদি এলোমেলো ভবঘুরে বিষয়টাকে ফুটিয়ে তুলতে হলে অবশ্যই অনেকগুলো দিকে খেয়াল রাখতে হয়। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উপাদানের সমন্বয় এবং পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহারের মাধ্যমে এখানে নান্দনিকতার প্রকাশ করা হয়। বর্তমানে অন্দরমহল সাজাতে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বোহো থিম। কুরুশে বোনা পর্দা, পুঁতির ঝালর, টুপি, ঝুড়ি, রঙিন কার্পেট, আদিবাসী শিল্পকর্ম, এমনকি ফেলে দেওয়া গাছের ডালেও সাজাতে ব্যবহার করা হয়েছে এই থিমে। বেতের ল্যাম্পশেড, নানা ধরনের কুশন ও মোড়া ব্যবহার করে বোহেমিয়ান ধারায় সাজানো হয়। চেয়ার, ম্যাট কিংবা ডিভান বোহেমিয়ান কুশন কভার দিয়ে সাজালে সৌন্দর্য সৃষ্টি হয়। লণ্ঠন, সুগন্ধি মোমবাতি, প্রদীপ, হারিকেন থেকে শুরু করে হারিয়ে যাওয়া ল্যান্ডফোন, রেডিও, ছোটখাটো বাদ্যযন্ত্র ঘর সাজাতে ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া সেকেন্ড হ্যান্ড আসবাব নতুন রূপে ব্যবহার করা হয় এই সাজে। নানি-দাদিদের আমলের সিন্দুক, আলমারি, ড্রেসিং টেবিলগুলো নতুন আঙ্গিকে সাজিয়ে ঘরের ঐতিহ্যবাহী এবং ব্যক্তিগত স্পর্শ যোগ করা হয়।

বিভিন্ন রঙের মিশ্রণ
বোহেমিয়ান ধারায় অন্দরে সাজাতে উজ্জ্বল রঙের প্রাধান্য বেশি পেয়ে থাকে। উজ্জ্বল রংগুলো অনেক বেশি প্রাণবন্ত করে তোলে ঘরকে। সবুজ, ব্রাউন, কমলা, নীলের শেড ব্যবহার করে ঘর সাজাতে পারেন। রঙের নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে আধুনিক পরিবেশ তৈরি করে। 

প্রকৃতির মিশ্রণ
প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার বোহো থিমে আসবাব এবং সাজসজ্জার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের নকশা ও কারুকার্য প্রাধান্য পায়। বোহো থিমের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো ‘মিশ্রণ’। এখানে সবকিছুই একত্রে মিশে থাকে, কোনো একটি নির্দিষ্ট সাজানোর প্যাটার্ন অনুসরণ করা হয় না। বিভিন্ন স্টাইল এবং উপাদানের মিশ্রণ এই থিমকে তার অনন্য পরিচয় দেয়। প্রতিটি জিনিস আলাদা আলাদা করে গল্প বলে, ঘরে আসা অতিথিরাও মুগ্ধ হয়ে যাবেন আপনার ঘরের সাজসজ্জা দেখে।

নরম আলো বোহেমিয়ান লাইটিং
নরম আলো ব্যবহার বোহো সজ্জা ঘরকে বেশি আকর্ষণীয় করে। নিয়মিত আলোর পরিবর্তে পরী লাইট, স্ট্রিং লাইট, লণ্ঠন বা সুগন্ধযুক্ত মোমবাতি বেছে নিতে পারেন। এ ছাড়া হাতে তৈরি নকশা করা টেবিল ল্যাম্প ব্যবহার করে আপনার ঘরে ছায়াময় পরিবেশ তৈরি করতে পারেন। 

আসবাবপত্র
বোহো স্টাইলে ঘরকে সাজাতে হলে ঘরের আসবাবপত্রের মধ্যেও একটা বোহেমিয়ান লুক আনতে হয়। বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে সাজাতে পারেন ঘরকে। খাবার টেবিলে প্রথাগত গোল বা চারকোনা টেবিলের পরিবর্তে অন্য কোনো আকারের ডাইনিং টেবিল রাখতে পারেন। কাঠের, পুরোনো বা হস্তশিল্পজাত আসবাব বেছে নিন। নিচু বসার জায়গা যেমন- বিন ব্যাগ, ফ্লোর কুশন বা মরোক্কান পুফ ব্যবহার করতে পারেন।

অতিরিক্ত না হয়ে ভারসাম্য রাখুন
বোহেমিয়ান স্টাইলে ঘর সাজাতে স্বাধীনতা থাকলেও কিছু নির্দিষ্ট দিক খেয়াল রাখলে সাজটা সুন্দর, ভারসাম্যপূর্ণ ও আরামদায়ক হয়। ঘর পুরোপুরি বোঝাই না করে কিছু খালি জায়গা রাখলে মনও হালকা লাগে। বেশি রং বা প্রিন্ট ব্যবহার করলেও যেন চোখে ধাঁধা না লাগে। কিছু নিউট্রাল বা হালকা ব্যাকগ্রাউন্ড রাখতে হবে।

কলি

যত্নে থাকুক হবু মা

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ০১:৪২ পিএম
যত্নে থাকুক হবু মা
মডেল: নীলা, ছবি: আদিব আহমেদ

মাতৃত্বের অনুভূতি হলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অনুভূতি। একজন নারীর জীবনে পূর্ণতা আনে মাতৃত্বের স্বাদ। সন্তান ধারণ থেকে শুরু করে সন্তানের পৃথিবীর আলোর মুখ দেখা পর্যন্ত একজন মাকে বিভিন্ন শারীরিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। অনাগত সন্তানের প্রতি তাদের এতটাই দুর্বলতা থাকে যে, নিজের রূপচর্চা ও স্বাস্থ্য চর্চার কথা ভাবে না। কিন্তু এই সময় হবু মাকে থাকতে হবে সদা প্রফুল্ল। কোথাও যেন যত্নের কোনো অবহেলা না করা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

আরামদায়ক পোশাক 
গর্ভকালে শারীরিক পরিবর্তন আসে বলে দৈনন্দিন জীবনের ছন্দে আসে পরিবর্তন। শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, কুর্তি বা নিজের স্বাচ্ছন্দ্য অনুসারে অন্য যেকোনো পোশাকই পরা যাবে এ সময়। নার্সিং কুর্তি, গাউন, মিডি বা কাফতান নিজের ওয়্যারড্রবে রাখতে পারেন। ফ্রক হতে পারে অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য অন্যতম একটি পোশাক। তবে সব পোশাক ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অতিরিক্ত টাইট পোশাক পরলে শরীরে স্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালন বাধাপ্রাপ্ত হয়। পেশিতেও টান লাগে। অসুস্থ বোধ হয়। এ ছাড়া এই সময় হরমোনের মাত্রায় পরিবর্তন হয়। তাই শরীরে ওজন বাড়ে। টাইট পোশাক পরলে অস্বস্তি বাড়বে। হালকা রঙের সুতি কাপড়ের ও আরামদায়ক পোশাক বেছে নিতে পারেন। নকশার ক্ষেত্রে খুব হালকা নকশার পোশাক পরা উচিত। যেকোনো অবস্থা থেকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যেকোনো ব্যাপারে খুব দ্রুত অস্বস্তি অনুভূত হয়। তাই খুব বেশি নকশা আছে এসব পোশাক অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে। 

গর্ভাবস্থায় ত্বকে পরিবর্তন
গর্ভাবস্থায় ত্বক আর চুল নিয়েও সমস্যায় পড়তে হয়। এসবই মায়ের সুস্থতার অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই হবু মায়ের ত্বক কিংবা চুলের ব্যাপারেও হতে হবে যত্নশীল। গর্ভের শিশু আকারে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে পেটের ত্বকে টান পড়তে থাকে। ফলে ত্বকে ফাটা দাগ দেখা দেয়। এই সময়ে হরমোনজনিত কারণে ত্বকের তৈলাক্ততা বেড়ে যায়‌। মুখের ত্বকের তৈলাক্ততা বাড়ার কারণে ব্রণ দেখা দেয়। মুখে মেছতাসহ গলা, ঘাড় ও ত্বকের বিভিন্ন ভাঁজে গাঢ় দাগ দেখা দিতে পারে।

যেভাবে যত্ন নেবেন
ত্বকে দাগ দূর করতে গর্ভধারণের শুরু থেকেই লিপিড রেপ্লিনিশিং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। স্ট্রেচ মার্ক ক্রিমও ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া নারকেল তেল, জলপাই তেল, কোকো বাটার ব্যবহার করতে পারেন। যেটিই বেছে নিন না কেন, তা মালিশ করুন চক্রাকার গতিতে, গোসলের পরে আর রাতে ঘুমানোর আগে পেট, ঊরু ও কোমরে। ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করতে নিয়মিত ক্লিনজার বা স্ক্র্যাবার দিয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে। ত্বকের মসৃণতা ঠিক রাখতে ইমোলেন্ট বা ময়েশ্চারাইজার ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করতে পারেন। গর্ভাবস্থায় ত্বক সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। ঘরের বাইরে গেলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। ব্রণ প্রতিরোধে নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার থাকতে হবে। 
বাড়িতেই নিজের একটু যত্ন নিলে ত্বক-চুল সুস্থ থাকবে, মনও থাকবে সতেজ। চুলের আগা ফেটে যাওয়া, চুল পড়ার মতো সমস্যা হতে পারে গর্ভাবস্থা থেকে তাই সপ্তাহে অন্তত এক দিন চুলে জলপাই তেল মালিশ করতে পারেন। এরপর ১০ মিনিট উষ্ণ তোয়ালে পেঁচিয়ে রেখে ভালোভাবে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে, বাতাসে চুল শুকিয়ে নিন।

ঘটা করে রূপচর্চা করার মতো অবস্থা অনেকেরই থাকে না। নিজে ঘরে স্ক্রাব তৈরি করে নিন আর গোসলের সময় প্রতিদিন ব্যবহার করুন। এই স্ক্রাব এক থেকে দেড় মাস পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন। বারবার বানানোর ঝক্কিও সামলাতে হবে না।

আধা কাপ মুলতানি মাটি, আধা কাপ শুকনো কমলা লেবুর খোসার গুঁড়া ১, আধা কাপ চন্দন গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে ছোট কাচের জারে রেখে দিন। প্রতিদিন এই স্ক্রাব পানির সঙ্গে পেস্ট করে নিয়ে মুখে, গলায় ও ঘাড়ে মাখবেন ১৫ মিনিট এর জন্য। এরপর গোসল করে ফেলবেন। আলাদা করে আর কোনো প্যাক লাগানোর প্রয়োজন হবে না এতে।

পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম
পর্যাপ্ত ঘুম শারীরিক দুর্বলতা কাটানোসহ মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে শরীরকে কর্মক্ষম করে। দুপুরে খাওয়ার পর অন্তত ৩০ মিনিট ঘুমানো উচিত। ঘুমানোর সময় পা একটু উঁচু রাখতে পায়ের নিচে বালিশ রেখে ঘুমাতে হবে। এতে পায়ে রক্ত সঞ্চালন ভালো হবে। গর্ভাবস্থায় হাঁটাচলা, ব্যায়াম, সাঁতার কাটা ইত্যাদি বিষয়ে চিকিৎসকের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী চলুন।

কলি

কালো জামের উপকারিতা

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ০৪:৪১ পিএম
কালো জামের উপকারিতা
ছবি: সংগৃহীত

গ্রীষ্মকালের একটি জনপ্রিয় ফল কালো জাম। জাম স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এবং বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ। মিষ্টি রসালো ফলটি ছোট-বড় সবার খুব প্রিয়। ত্বক, চুল ও সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী জাম। 

পুষ্টিগুণ 
কালো জামে গ্লাইসেমিক সূচক কম। প্রচুর পুষ্টি উপাদান থাকা সত্ত্বেও কালো জামে ক্যালরি খুব বেশি নেই। তাই ওজন বাড়ায় না। রক্তস্বল্পতা থাকলে কালো জাম প্রতিদিন খান। কারণ, এতে আছে প্রচুর আয়রন ও পটাশিয়াম। ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘সি’ আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে, যা ত্বক ও চোখের সুস্থতার জন্য জরুরি। পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতায় ও বদহজম সারাতেও জাম উপকারী। তাই এই গরমে প্রতিদিন কালো জাম রাখুন আপনার খাবারের তালিকায়। পটাশিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম-সমৃদ্ধ জাম শরীরের অনেক সমস্যার সমাধান করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
জামে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যেমন- ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সি থাকে। তাই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে জাম কাজ করে।

হাড়কে শক্তিশালী করে
কালো জাম হাড়কে শক্তিশালী করে। আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় খনিজগুলোর উপস্থিতি হাড় এবং দাঁতগুলোকে মজবুত করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এক গ্লাস দুধের সঙ্গে আধা চা-চামচ কালো জামের গুঁড়া হাড়কে শক্তিশালী করে তোলে।

হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়
আয়রন-সমৃদ্ধ কালো জাম হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। ফলে রক্ত শরীরের অঙ্গগুলোতে আরও অক্সিজেন বহন করে এবং শরীর সুস্থ রাখে। এ ছাড়া রক্ত পরিশুদ্ধ করতেও জামের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

ত্বককে উজ্জ্বল করে 
কালো জামে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।  

ডায়াবেটিসের চিকিৎসায়
ডায়াবেটিসের চিকিৎসা করে কালো জাম। এতে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স রয়েছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। জামের বীজ, গাছের ছাল ও পাতা ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে। জামে কম গ্লাইসেমিক সূচক রয়েছে, যা দেহে রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। এটি ডায়াবেটিসের স্বল্প-শক্তি এবং ঘন ঘন তৃষ্ণা এবং প্রস্রাবের লক্ষণগুলোকে নিরাময় করে।

ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে
ক্যানসার প্রতিরোধে কালো জাম বেশ কার্যকর। রঙিন ফলের ভেতর যে পরিমাণ যৌগিক উপাদান রয়েছে, এর মধ্যে কালো জামে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ যৌগিক উপাদান রয়েছে, যা স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাহায্য করে। জাম দেহকে রক্ষা করে ক্যানসার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

হার্ট ভালো রাখে 
জামে উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম থাকে, যা হৃদস্পন্দন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি পটাশিয়াম স্ট্রোক এবং উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সাহায্য করে। 

কলি

করোনায় নিজেকে ভালো রাখবেন যেভাবে

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ০৪:২৭ পিএম
করোনায় নিজেকে ভালো রাখবেন যেভাবে
ছবি: এ আই

করোনা আবার ভয়ংকররূপে ফিরছে। কোভিড-১৯-এর নতুন উপধরন অমিক্রন এক্সবিবি দ্রুত বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন এই ধরনটি পূর্ববর্তী ধরনগুলোর তুলনায় বেশি সংক্রামক হবে। অনেক ক্ষেত্রে এটি সাধারণ লক্ষণ বা উপসর্গ প্রকাশ করে না, কিন্তু ছড়িয়ে পড়তে থাকে। অমিক্রন এক্সবিবি হলো একটি রিকম্বিন্যান্ট সাবভ্যারিয়েন্ট, যা দুটি অমিক্রন স্ট্রেনের সংমিশ্রণে গঠিত। এই সময়ে নিজেকে সুস্থ রাখতে যা করা উচিত। 
 
নতুন রূপে করোনা
আগে করোনার উপসর্গ ছিল হাঁচি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, গলায় ব্যথা, প্রচণ্ড জ্বর। এখন জ্বর কম থাকে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টও হয় না। মাথাব্যথা বেশি থাকে। এদিকে বর্তমানে ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরের মৌসুম। এ কারণে প্রচণ্ড মাথাব্যথা হলে অনেকে মনে করে, এটা ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর। তাই চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে ঘরে বসে থাকেন। উপসর্গহীন করোনা রোগীদের মাধ্যমেও সংক্রমণ ছড়ায়। তাই ফ্লুর মতো উপসর্গ হলেও করোনার পরীক্ষা করাতে হবে।

সুরক্ষিত থাকতে যা করবেন 
এই ভাইরাস ঠেকানোর অন্যতম উপায় হলো, ভালো করে হাত পরিষ্কার করা। এর মানে কিন্তু এই নয় যে প্রতি ঘণ্টাতেই আপনাকে হাত ধুতে হবে। কমপক্ষে ২০ সেকেন্ডের জন্য সাবান এবং পানি দিয়ে আপনার হাত ধুয়ে ফেলুন। বাইরে বের হলে সঙ্গে ছোট একটি সাবান ও ৭০ শতাংশ অ্যালকোহল আছে এমন স্যানিটাইজার নিন। কিছু টিস্যু পেপার বা পরিষ্কার রুমাল রাখুন ব্যাগে। বাইরে হাত ধোয়ার সুযোগ থাকলে সাবান পানিতে হাত ধুয়ে নিন। না হলে স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। 

কোভিড এড়াতে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো খোলা জায়গায় থাকা। বন্ধ জায়গায় কোভিড সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এমন জায়গায় যাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত, যেখানে বায়ু চলাচল ব্যবস্থা ভালো নয়। কোথাও বের হলে কমপক্ষে দেড় মিটার শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন।

অপরিষ্কার হাতে আপনার চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় একটি টিস্যু দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন এবং আপনার হাত ধুয়ে নিন। 

বাইরে গেলে সব সময় মাস্ক পরুন। জীবাণু থেকে দূরে থাকতে সাধারণ কাপড়ের মাস্ক পরাই যথেষ্ট। মাস্ক পরা ও খোলার নিয়ম অনুসরণ করুন। মাস্ক পুনঃব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতিবার ব্যবহারের পর হালকা গরম পানিতে সাবান গুলিয়ে ভালো করে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিন। 

সুস্থ থাকতে পুষ্টিকর খাবার খান। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন টাটকা সবজি, ফল, আমলকী। তুলসী পাতা ফুটিয়ে মধু দিয়ে পান করুন। ভেষজ চা পান করার বিকল্প নেই। দিনে অন্তত দুইবার করে গরম ভাপ নিন। কারণ সামান্য ভুলের জন্য পরিবারের সবাই আক্রান্ত হতে পারেন। অসুস্থ ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়িয়ে চলুন এবং আপনি অসুস্থ হলে বাড়িতে থাকুন। যদি কোনো উপসর্গ দেখা যায়, প্রথমেই করোনা আক্রান্ত রোগীকে আইসোলেট করতে হবে।

টিকা নেওয়া না থাকলে কোভিড ভ্যাকসিন এবং বুস্টার ডোজ গ্রহণ করুন।

কলি