ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঠাকুরবাড়ির সাজে

প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০২:৫৩ পিএম
আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০৫:২৫ পিএম
ঠাকুরবাড়ির সাজে
কনসেপ্ট ও ফ্যাশন নিদের্শনা: বিপ্লব সাহা, মডেল: মৌসুমী মৌ, পোশাক: বিশ্বরঙ, মেকআপ:পিয়াস, ছবি:সুজন

কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িকে বাঙালি নারীর ফ্যাশনের সূতিকাগার বলা যায়। এই বাড়ির আধুনিকতা কেবল পোশাক-আশাক বা সাজসজ্জায় যে সীমাবদ্ধ ছিল তা কিন্তু না। বরং তাদের এই আধুনিকতার ছোঁয়া আমরা দেখতে পাই শিক্ষা এবং নারী জাগরণের ক্ষেত্রেও। বর্তমান সময়ে এসে যে কেউই ঠাকুরবাড়ির সাজসজ্জার সঙ্গে এখনকার সাজসজ্জার মেলবন্ধন ঘটিয়ে সাজে আনতে পারেন ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার মিশেল। পোশাকে রাবীন্দ্রিক সাজ নিয়ে লিখেছেন মেরিনা আহমেদ

শাড়ির ইতিহাস মূলত মোঘল আমলেই গুরুত্ব পায়। ওই সময় তাঁতিরা শাড়ির বুননে নিজেদের পুরো মনঃসংযোগ একত্র করে বুনে চলেন একের পর এক নানা ধরনের শাড়ি। ফলে শাড়ির বুননেও আসে বৈচিত্র্য। কিন্তু নারীরা আধুনিক শাড়ি পরার চলন, ঢং শিখেছেন মূলত ঠাকুরবাড়ির কল্যাণে। সামনে কুচি দিয়ে পেছনে আঁচল দিয়ে শাড়ি পরার কৌশল তারাই শুরু করেন। এরপর সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শাড়ি পরার ধরন-ধারণও পাল্টেছে বহুরূপে। যেমন, শাড়ির আঁচল ছোট করে পরা, হাতকাটা ব্লাউজে সামনে আঁচল দিয়ে শাড়ি পরা, এক প্যাঁচে বা খোলা আঁচলের স্টাইলসহ আরও নানা স্টাইলে এখন মেয়েরা শাড়ি পরে । 

ঠাকুরবাড়ির মেয়েরা সেই সময়ে অন্দরমহল থেকে বের হয়ে আসতে শুরু করেছিলেন, মিশতে শুরু করেছিলেন বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে। তাই তাদের সবকিছুতেই আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছিল। এ কারণেই আমরা তাদের শাড়ি পরার স্টাইলের মধ্যেও খুঁজে পাই প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মিশেল। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ঠাকুরবাড়ির একটি ঐতিহ্য ছিল বিয়ের সময় পুরুষর্ একটি কালো বেনারসি শাল গায়ে চাপিয়ে তবেই বিয়ে করতেন, যা স্বয়ং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথও করেছিলেন। কালো রংকে সব সময় বিয়ের আয়োজন থেকে শত হাত দূরে রাখলেও ঠাকুরবাড়িতে ঘটেছিল ঠিক উল্টোটিই। আর এভাবেই ঠাকুরবাড়ির ঐতিহ্য আর আধুনিকতা এখন পর্যন্ত মিলেমিশে চলে আসছে আমাদের সমাজেও।

ঠাকুরবাড়ির মেয়েরা সে সময় বিয়ের সাজে পরতেন একহারা ঢঙে শাড়ি। কখনো সেই শাড়ি কোমরে স্কার্ট বা লেহেঙ্গার মতো গুঁজে দিয়ে অনেকটা বিলেতি কেতায় পরা হতো। আবার সেসব শাড়ির আঁচলে দেখা যেত অনেক ভাঁজ। এই ভাঁজগুলো কাঁধের কাছে আটকে রাখা হতো ব্রোচ দিয়ে। চিত্রা দেবের লেখা ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল বইটিতে বিয়ের যে ছবিগুলো আছে, তার সব কটিই মূলত মসলিন, বেনারসি বা ঢাকাই শাড়ি পরা কনের ছবি। এ থেকে সহজেই বোঝা যায়, ঠাকুরবাড়িতে বুনন-বৈচিত্র্যসমৃদ্ধ শাড়ির চলই বেশি ছিল। আর সেই ঐতিহ্য মাথায় রেখে আমরা এখনকার বিয়েতে ব্যবহার করতে পারি জামদানি শাড়ি। লাল, সোনালি, কোরা রঙের জামদানি শাড়িতে জরির কাজ আর তার সঙ্গে মানানসই ওড়না বিয়েতে অনায়াসে আনতে পারে ঠাকুরবাড়ির বউদের সাজসজ্জার ছোঁয়া। ব্লাউজে লম্বা হাতায় লেইসের ব্যবহারে আসবে রাবীন্দ্রিক ঢং।

আবার জামদানির বাইরে গিয়ে কনেরা মসলিনের শাড়ি পরেও আনতে পারবেন একই ধরনের লুক। ঠাকুরবাড়ির বিয়ের সাজগুলো ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, তাদের বিয়ের সাজসজ্জায় আভিজাত্যের পাশাপাশি রুচির ছাপও ছিল যথেষ্ট মাত্রায়। সেই সময়ে তাদের মধ্যে সাজসজ্জার যে চল ছিল, তা আমরা এখনো নিয়ে আসতে পারি আমাদেরই বৈচিত্র্যপূর্ণ শাড়িগুলোর মাধ্যমে। এই ফ্যাশনে যেমন রুচির পরিচয় দেওয়া যায়; তেমনি বিয়ে আয়োজনের আড়ম্বরে নিজের আরামকেও প্রাধান্য দেওয়া সম্ভব। গহনার ক্ষেত্রে অনেক বেশি প্রাধান্য ছিল সোনার পেটানো গহনার। গলায় কয়েক লহরের চেইন, সীতাহার, চোকার এবং কানে ঝুমকার চেয়ে বেশি চোখে পড়ত কানজুড়ে থাকা দুল বা লম্বাটে নকশার কোনো দুল। সোনা ছাড়া গহনার নকশায় মুক্তোর ব্যবহারও দেখা গেছে। হাতভর্তি  সোনার চুড়ি, সেই সঙ্গে গোলাপবালাও। বাহুতে বাজুবন্ধের ব্যবহারও ছিল লক্ষ্যণীয়।

সে সময়ে অনেক বেশি গহনার ব্যবহার দেখা যেত চুলের সাজে। বেণি করে সেই বেণি পেঁচিয়ে খোঁপায় বেঁধে ছোট ছোট সোনালি কাঁটায় খোঁপা সাজানো যেতে পারে। সেই সময়ে টিকলির পাশাপাশি দুই পাশে গোল এক ধরনের গহনা লাগানো হতো। সেগুলোও ব্যবহার করা সম্ভব। কনে সাজের বিষয়ে চিত্রা দেব তার ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলে লিখেছেন ‘সোনালি ফিতে লাগিয়ে খোঁপায় সোনার কাঁটা ও চিরুনি, কপালে ও গালে চন্দনের পত্রলেখা। লাল টুকটুকে বেনারসির সঙ্গে টিকলি, দুল, নথ, বাজুবন্ধ, শাঁখা, চুড়ি, বালা, আলতা পরা পায়ে রুনুঝুনু মল, হাতে লাল লক্ষ্মীকাঠের চুড়ি-এমনই ছিল কনের সাজ।’ 

রেড বিউটি স্যালনের স্বত্বাধিকারী ও রূপ বিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন বলেন, ‘একটা সময় কনেকে অনেক বেশি মেকআপ দেওয়া হতো। কিন্তু কয়েক বছর ধরেই এই সাজে এসেছে ভিন্নতা। এখনকার কনেরা মেকআপ পছন্দ করে, তবে তাতে থাকতে হবে সাধারণত্ব। চুলের বাঁধন কিংবা মেকআপ যাই হোক, তাতে চাই পুরোনো ঢঙের ছোঁয়া। আর এ ক্ষেত্রে অবশ্যই ঠাকুরবাড়ির সাজসজ্জাই সবার পছন্দ। উঁচু করে চূড়োর খোঁপা বা বেণি খোঁপা, সামনে ঢেউখেলানো চুলের বাঁধন- সবই যেন ঠাকুরবাড়ির কনেদের সাজসজ্জা মনে করিয়ে দেয়। এই সাজের সার্থকতা তখনই পাওয়া যায়, যখন মসলিনের ওড়নার ফাঁকে চেলি করা খোঁপায় দেখা যায় আভিজাত্যের ছোঁয়া’।

টিপস
•    মেকআপের আগে ফেশিয়াল করতে পারলে ভালো। সম্ভব না হলে ফেশিয়াল মাস্ক লাগাতে পারেন।
•    স্কিনের ন্যাচারাল টোন বজায় রাখুন। মেকআপের বেস ভালো করে করুন।
•    নিজের মুখের সবচেয়ে সুন্দর অংশটি হাইলাইট করুন। আইলাইনার ও মাসকারা অন্যভাবে ব্যবহার করে চোখের অন্যরকম শেপ দিতে পারেন। ব্লাশন দিয়ে চিকবোন হাইলাইট করতে পারেন।
•    ত্বকের যে অংশে কালার লাগাচ্ছেন সেই অংশের ভাঁজ, রেখার সঙ্গে কালার যেন ভালোভাবে মিশে যায়। একই সঙ্গে মেকআপ ন্যাচারাল ও ড্রামাটিক হবে। 

বিপ্লব সাহা

ডিজাইনার ভাবনা
নন্দিত ফ্যাশন ডিজাইনার ও ফ্যাশন হাউস বিশ্বরঙের কর্ণধার বিপ্লব সাহা বলেন, আধুনিক বাঙালি হিসেবে রবীন্দ্রনাথকে কিছুতেই অস্বীকার করা যাবে না। সর্বযুগের সেরা আধুনিক বাঙালি তিনি। আমরা পাশ্চাত্যের হাওয়ায় গা ভাসাই ঠিকই, তবে সত্যিকার বাঙালির আভিজাত্য প্রকাশ করতে চাইলে তার সান্নিধ্যে যেতেই হবে। শুধু তিনিই নন, ঠাকুরবাড়ির প্রতিটি সদস্যই ছিলেন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। প্রত্যেকেরই গল্প আছে, গান আছে এবং সব কিছুতেই তাদের ব্যাপক অবদান আছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা-বাবা সবাই বাঙালি সংস্কৃতিতে প্রভাব ফেলেছিলেন। চলচ্চিত্র, চিত্রকলাসহ বাঙালির সব জায়গায় তারা আষ্টেপৃষ্ঠে  জড়িয়ে আছেন।

তিনি আরও বলেন, বাঙালির সেই সময়ের ফ্যাশন আবার ফিরে আসুক। আমরা চাই আমাদের ফ্যাশনের মধ্য দিয়েই আমাদের আধুনিকতাকে প্রকাশ করি। আর সেই জন্য ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলে যারা বাস করতেন তাদের সাজ-পোশাক, তাদের জ্ঞান, শিক্ষা সব কিছু যেন আমরা ধারণ করতে পারি। ব্যক্তিগতভাবে রবীন্দ্রনাথ আমার ওপর প্রভাব ফেলেছেন। আমি তার কবিতা ও বই পড়ি, তার গান শুনি, তার সাজ-পোশাক, ফ্যাশন অনুসরণ করি। ব্যক্তিগতভাবে আমি রবীন্দ্রনাথকে একজন স্টাইল আইকন হিসেবেই বুঝি। একজন বাঙালি হিসেবে তার জন্মদিন কিংবা মৃত্যুদিন মনে রাখা আমাদের কর্তব্য। তাকে নিয়ে প্রচুর কাজ করার সুযোগ আছে। যার যার মাধ্যম থেকেই তাকে নিয়ে কাজ করা উচিত।

কলি

রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায়

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৫:৩৩ পিএম
রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায়
ছবি: সংগৃহীত

আধুনিক জীবনে প্রায় সব বয়সী মানুষই এখন ঘুমের সমস্যায় ভুগেন। যার প্রভাব পড়ে মন, স্বাস্থ্য ও দৈনন্দিন কাজকর্মের উপর। ঘুমের সমস্যা মানেই তা ইনসমনিয়া পর্যায়ে পৌঁছে গেছে এমনটা নয়। ছোটখাটো কিছু অভ্যাস পরিবর্তন ও পদ্ধতি মেনে চললে চাইলে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানো যায়।

ঘুমের সময় নির্ধারণ রাখুন
তাড়াতাড়ি ঘুমানোর জন্য সবচেয়ে জরুরি হল ঘুমাতে যাবার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা। শহুরে জীবনে কাজের ব্যস্ততা কিংবা গল্পগুজব করতে করতে প্রায়ই বিছানায় যেতেই আমাদের দেড়ি হয়ে যায়। যত বেশি রাতে ঘুমের প্রস্তুতি নিবেন অনিদ্রাও কিন্তু ততটাই চেপে বসবে। তাই দ্রুত ঘুমানোর জন্য রাত নয়টা থেকে এগারোটার মধ্যবর্তী একটি সময় নির্ধারণ করুন। তাছাড়া কিছুদিন নির্দিষ্ট একটি সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস করলে মস্তিষ্ক এতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। এতে করে প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমিয়ে পড়া সহজ হয়।

ব্লু লাইট দূরে রাখুন
ব্লু লাইট মূলত স্মার্টফোন, ল্যাপটপ বিভিন্ন প্রযুক্তি মাধ্যম থেকে বেরিয়ে আসা নীল আলো। এই নীল আলো শুধু আমাদের দেখতেই সাহায্য করে না সেই সঙ্গে আমাদের ঘুম নিয়ন্ত্রণকারী মেলাটোনিন হরমোনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। ফলে রাতের বেলাও আমাদের মস্তিষ্কে দিনের মতো উদ্দীপনা অনুভব হয় এবং ঘুমের চাহিদা কমে যায়। তাই রাতে ঘুমাতে যাবার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে ফোন ব্যবহার বন্ধ করুন।

ঘুমের পরিবেশ তৈরি করুন
অনেকে  যেকোনো জায়গায় যেকোনো সময় চাইলেই ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। কিন্তু যারা ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য বিষয়টি মোটেই এমন সহজ নয়। সেক্ষেত্রে ঘুমানোর জন্য হালকা রঙের বিছানা, বালিশ ব্যবহার করুন। ঘর অন্ধকার এবং শব্দহীন থাকলে সহজে ঘুম চলে আসে। ঘুম না আসলেও চোখ বন্ধ করে রাখার অভ্যাস তৈরি করতে ব্যবহার করতে পারেন আই মাস্ক। সঙ্গে শুনতে পারেন প্রাকৃতিক কিংবা স্বস্তিদায়ক কোনো সুর। এভাবে কিছুক্ষণ ঘুমানোর জন্য অপেক্ষা করলে সহজে ঘুম চলে আসবে।

ব্রেদিং মেডিটেশন করুন
পরিবেশ, সময়, ব্লু লাইট এর ব্যবহার এসবকিছু ঠিক রাখার পরও যদি ঘুমাতে দেড়ি হয় তাহলে করতে পারেন ব্রেদিং মেডিটেশন। এটি ৪-৭-৮ পদ্ধতি নামেও পরিচিত এবং জনপ্রিয়। ব্রেদিং মেডিটেশন এর জন্য প্রথমে ঘুমের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে বিছানায় যান। এরপর আপনার জিহবার সামনের অংশ উপরের দাঁতের পেছন অংশে লাগিয়ে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে ছেড়ে দিন। পরে ঠোঁট বন্ধ করে আবার ৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে জোরে শ্বাস নিন। ৭ সেকেন্ড পর্যন্ত নিঃশ্বাস ধরে রেখে ৮ সেকেন্ডের মাথায় ধীরে ছেড়ে দিন। এভাবে তিনবার শ্বাস-প্রশ্বাস এর ব্যায়াম করলে স্নায়ুতন্ত্র ঠান্ডা হয় এবং দ্রুত ঘুম আসে।

গরম দুধ পান করুন
সুন্দর ত্বক ও পুষ্টির জন্য অনেকে নিয়মিত দুধ পান করে থাকেন। প্রতিদিনের এক কাপ দুধ যদি ঘুমাতে যাবার আগে আগে খাওয়ার অভ্যাস করেন তাহলে দ্রুত ও ভালো ঘুম হবার ক্ষেত্রেও উপকার পাবেন। দুধ খেলে শরীরে সেরোটোনিন নামক হরমোন উতপাদন বেড়ে যায় যা মস্তিষ্ক শান্ত করে ঘুম পেতে সাহায্য করে। দুধে থাকা বিভিন্ন উপাদান মেলাটোনিন হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে রাতের ঘুমের চক্র ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

 

ক্লাসিক কাট বুটিক সেলুনের যাত্রা শুরু

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০২:১১ পিএম
আপডেট: ০২ জুন ২০২৫, ০২:১২ পিএম
ক্লাসিক কাট বুটিক সেলুনের যাত্রা শুরু
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশানে উদ্বোধন হয়েছে ক্লাসিক কাট বুটিক সেলুনের। শুক্রবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় এই সেলুনের উদ্ধোধন করা হয়। রাজধানীর গুলশান ২-এর আর এম সেন্টারে সেলুনটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চিত্র নায়ক শিপন মিত্র, অভিনেতা ও মডেল ইমরান খান, মাসুদ রানা ও আরজে নিরবসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

পাঁচজন স্বপ্নবাজ তরুণের উদ্যোগে এই সেলুনে স্থাপন করা হয়েছে। উদ্যোক্তরা জানান, রূপচর্চা এখন আর বিলাসিতা নয়। সৌন্দর্য চর্চা একজন পুরুষকে আত্নবিশ্বাসী করে তোলে। লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 কলি

ঈদের আগে ফ্রিজ পরিষ্কার

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০১:৪৪ পিএম
ঈদের আগে ফ্রিজ পরিষ্কার
মডেল: রাইসা

ফ্রিজ নিয়মিত পরিষ্কার রাখা জরুরি। এতে ফ্রিজ ভালো থাকে অনেক দিন। কিন্তু নানা ব্যস্ততায় অনেকেই ফ্রিজ পরিষ্কার করেন না। ফ্রিজের ভেতরে মাছ বা মাংসের রক্ত জমে থাকতে পারে। এই জমে থাকা রক্ত থেকে ব্যাকটেরিয়া ছড়াতে পারে। কোরবানির তাজা মাংস সংরক্ষণের পরও অনেক সময় স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে। ঈদের আগে ফ্রিজ পরিষ্কারে করে নিতে হবে।  

ফ্রিজ পরিষ্কার করার আগে পুরোনো খাবারগুলো খেয়ে নিতে হবে। যদি সম্ভব না হয় তাহলে ফ্রিজ পরিষ্কারের দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগে খাবারগুলো বাইরে বের করে রাখতে হবে।

ফ্রিজ পরিষ্কার করার আগে বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করতে হবে। নাহলে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ ছাড়া বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা থাকলে খুব সহজেই ফ্রিজ থেকে বরফ আলাদা হয়ে যাবে। তখন বরফ তুলতে কষ্ট হবে না। এরপর ফ্রিজের ভেতর থেকে তাকগুলো বের করে নিতে হবে এবং ড্রয়ারগুলো খুলে ফেলতে হবে। তারপর ডিটারজেন্ট মেশানো হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। একটি ব্রাশ দিয়ে ফ্রিজের রাবারগুলো ও কোনাগুলো ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে নেবেন। পরিষ্কার করা হয়ে গেলে খেয়াল রাখবেন তাক, ড্রয়ারগুলো যেন শুকনো থাকে। ভেজা অবস্থায় তাক, ড্রয়ারগুলো ফ্রিজের ভেতর রাখবেন না।

দরকার হলে তোয়ালে ভিজিয়ে পুরো ফ্রিজ মুছে নিয়ে তাক, ড্রয়ারগুলো ফ্রিজে রাখতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় ফ্রিজ চালু থাকলেও খাবার ঠাণ্ডা হয় না। সেক্ষেত্রে প্রথমেই লক্ষ করতে হবে টেম্পারেচার সুইচ প্রয়োজনমতো বাড়ানো আছে কি না। মাঝে মাঝে দরজায় লাগানো প্লাস্টিকের প্যাডে ফাটল ধরলেও এ সমস্যা হতে পারে। প্রয়োজনে সার্ভিসিং করে নিতে হবে।

যাদের ম্যানুয়াল ডিফ্রস্ট ফ্রিজ রয়েছে, তাদের এটি পর্যায়ক্রমে ডিফ্রস্ট করা প্রয়োজন। কারণ বরফ জমা হওয়া ফ্রিজের শীতল করার ক্ষমতাকে হ্রাস করে। তাই ফ্রিজে বরফ জমে গেলে, তা নির্দিষ্ট সময় পরপর গলিয়ে ফেলা প্রয়োজন।

ফ্রিজের দরজার কোণায় থাকা রাবারটি আঠালো হয়ে গেলে পানিতে ভিনেগার মিশিয়ে কাপড় ও ব্রাশের সহায়তায় ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে পারেন। এরপর ভিনেগার মেশানো পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে ফ্রিজের বাইরের অংশটাও ভালোভাবে মুছে পরিষ্কার করে নিতে পারেন।

যদি আপনার ফ্রিজে দুর্গন্ধ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে তাহলে পানিতে বেকিং সোডা ও লেবুর রস মিশিয়ে মুছে নিতে পারেন। এ ছাড়া ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করতে এক কোণে খাবার সোডা রাখতে পারেন। সামান্য ভিনেগার এক টুকরো কাপড়ে মেখে ফ্রিজে রেখে দিলে দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাবেন।

মাংস সংরক্ষণের সময় চর্বি ও ময়লা ফেলে ফ্রিজে মাংস রাখবেন। প্রতিদিনের জন্য আলাদা আলাদা করে ভাগ করে রাখতে পারেন। এতে খুঁজে পেতে সহজ হবে। রান্না করার অন্তত ১৫ মিনিট আগে ডিপ ফ্রিজ থেকে মাংস বের করে নেবেন।

 কলি

কোরবানির ঈদে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০১:৩২ পিএম
কোরবানির ঈদে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
ছবি: এ আই

কোরবানির ঈদ মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই দিনে আল্লাহর নামে পশু কোরবানি করা হয় এবং সেই মাংস আত্মীয়স্বজন ও গরিব-দুঃখীর মধ্যে বিতরণ করা হয়। ঈদ আনন্দ ও উৎসবের বার্তা নিয়ে এলেও, পশু কোরবানি করা, মাংস কাটাকুটি ও বিতরণের কারণে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠে। সঠিকভাবে পরিষ্কার  না করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও দূষণের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। শুধু ঈদের দিন নয়, আগাম প্রস্তুতি ও পরবর্তী করণীয় মিলিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থাপনা থাকলে ঝামেলা এড়ানো যায় সহজে।

কোরবানির কয়েক দিন আগে থেকে পুরো বাড়ি পরিচ্ছন্ন করার উদ্যোগ নিন। বিশেষ করে রান্নাঘর ভালোভাবে পরিষ্কার করে জীবাণুমুক্ত করা প্রয়োজন, যেখানে মাংস কাটা ও রান্না করা হবে। মেঝে পরিষ্কার রাখতে হবে। রান্নার জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখলে ঈদের দিন কাজের সুবিধা হবে।

ঈদের আগে বাজারের একটি তালিকা তৈরি করে প্রয়োজনীয় পরিচ্ছন্নতার সামগ্রী কিনে রাখুন। শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়ো এড়াতে আগে থেকে ডিটারজেন্ট, জীবাণুনাশক (যেমন- ব্লিচিং পাউডার, স্যাভলন), গার্বেজ ব্যাগ ও গ্লাভস কিনে রাখা ভালো।

পশু জবাইয়ের স্থান নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। সম্ভব হলে পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি করুন। যদি বাড়িতে কোরবানি করতে হয়, তবে এমন একটি খোলা জায়গা নির্বাচন করুন, যা সহজে পরিষ্কার করা যায় এবং যেখানে জনসাধারণের চলাচল কম থাকে। জবাইয়ের স্থানটিতে পাটি বিছিয়ে নিলে রক্ত সরাসরি মাটি বা মেঝেতে লাগবে না। রক্ত ধুয়ে ফেলার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির ব্যবস্থা রাখুন।

রক্ত ও অন্যান্য বর্জ্য জমে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করে এবং রোগজীবাণু ছড়াতে পারে। প্রথমে প্রচুর পরিমাণে পানি দিয়ে জবাইয়ের স্থানটি ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এরপর জীবাণুনাশক যেমন ব্লিচিং পাউডার, স্যাভলন বা ডেটল পানির সঙ্গে মিশিয়ে সেই স্থানে ব্যবহার করলে জীবাণু ও দুর্গন্ধ দূর হবে। গরম পানি ব্যবহার করলে আরও ভালো ফল পাওয়া যায়। কোনো জমাট বাঁধা রক্ত বা আবর্জনা থাকলে তা ঝাড়ু বা ব্রাশ দিয়ে ঘষে তুলে ফেলতে হবে। খোলা জায়গায় কোরবানি করা হলে ধোয়ার পর ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিন।

কোরবানির পশুর বর্জ্য সঠিকভাবে অপসারণ করা পরিবেশ সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্ভব হলে বাড়ির আশপাশে গর্ত করে বর্জ্য মাটি চাপা দিন। শহরাঞ্চলে যেখানে মাটি চাপা দেওয়ার সুযোগ নেই, সেখানে বর্জ্যগুলো শক্ত গারবেজ ব্যাগে ভরে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানে ফেলুন। কোনোভাবেই খোলা জায়গায়, ড্রেনে বা জলাশয়ে বর্জ্য ফেলবেন না।

মাংস কাটার কাজে ব্যবহৃত ছুরি, বঁটি এবং অন্যান্য সরঞ্জাম সাবান ও গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। জীবাণুমুক্ত করার জন্য ব্লিচের হালকা দ্রবণ ব্যবহার করা যেতে পারে অথবা কিছুক্ষণ গরম পানিতে ফুটিয়ে নেওয়া যেতে পারে। লোহার সরঞ্জাম ধোয়ার পর ভালোভাবে মুছে শুকিয়ে রাখুন, নাহলে মরিচা ধরতে পারে।
কোরবানির ঈদের পরে ঘরের ভেতর পরিষ্কার করুন। মাংস ঘরে আনার পর যেখানে কাটা-বাছা করা হয়েছে, সেই স্থানটি ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। প্রথমে রক্তের দাগ বা মাংসের টুকরা সরিয়ে ফেলতে হবে। এরপর সাবান ও গরম পানি দিয়ে সেই স্থান ধুয়ে পরিষ্কার করুন।

মেঝেতে রক্তের দাগ লাগলে ঠাণ্ডা লবণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে দাগ সহজে উঠে যায়। পানি ও ট্যালকম পাউডার মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে দাগের ওপর লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর ঘষে ধুয়ে ফেললেও রক্তের দাগ দূর হয়। ভিনেগারও কাপড়ে রক্তের দাগ তোলার জন্য খুব কার্যকর। দাগের ওপর ভিনেগার স্প্রে করে কিছুক্ষণ ঘষে নিলে দাগ উঠে যায়। গরম পানির সঙ্গে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে মেঝে পরিষ্কার করলে মাংসের আঠালো ভাব ও রক্তের দাগ দূর হয়ে যায়।

মাংসের গন্ধ দূর করার জন্য হাতে লেবুর রস ঘষলে উপকার পাওয়া যায়। ঘরের দরজা-জানালা খুলে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা করলে মাংসের গন্ধ দূর হয়। এ ছাড়া ভিনেগার ফুটিয়ে বা বাটিতে করে ঘরের বিভিন্ন স্থানে রাখলে দুর্গন্ধ শোষণ করে নেয়। পরিষ্কার করার পর এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করা যেতে পারে। মেঝের তেলতেলে ভাব দূর করতে গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে মেঝে মোছা যেতে পারে। মাংস প্রক্রিয়াকরণের জন্য ব্যবহৃত থালা-বাসন লিকুইড ডিশওয়াশার ও গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন।

 কলি

 

ঢাকায় শুরু হলো দেশীয় আমের মেলা

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫, ০২:৩০ পিএম
ঢাকায় শুরু হলো দেশীয় আমের মেলা
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কবি হাসান হাফিজ । ছবি: সংগৃহীত

প্রতি বছরের মতো এবারও কামাল এগ্রো ফার্ম ঢাকায় আয়োজন করেছে দেশীয় আমের মেলা। ধানমন্ডির কলাবাগান ক্লাব মাঠের সামনে এ মেলা শরু হয়েছে। আজ শনিবার (৩১ মে) দুপুরে প্রধান অতিথি হিসেবে এ মেলার উদ্বোধন করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কবি হাসান হাফিজ বলেন, বাংলাদেশের আমের সুনাম রয়েছে বিশ্বজুড়ে। অনেক দেশে বাংলাদেশের আম রপ্তানি হচ্ছে। সেজন্য বলা যায়, বিশ্বজুড়ে আম আমাদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। এ ছাড়া আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও আমের উল্লেখ রয়েছে ব্যাপকভাবে। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কামাল এগ্রো ফার্মের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম ছরোয়ার লিটন বলেন, বাবার হাত ধরেই আমাদের ব্যবসার যাত্রা। ২০০৪ সাল থেকে ঢকায় আমরা ফরমালিনমুক্ত আম মেলার আয়োজন করে আসছি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন লেখক-গবেষক গাজী মুনছুর আজিজ, কামাল এগ্রো ফার্মের পরিচালক মো. ওমর ফারুক, নারী উদ্যোক্তা উর্মি আক্তার ভূঁইয়া, শবনম পারভীন, নুসরাত জাহান, শিল্পী তালুকদার প্রমুখ।

মেলায় পর্যায়ক্রমে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, রংপুর, নওগাঁসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নানা প্রজাতির আম পাওয়া যাবে। মেলা চলবে ৩১ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত। খোলা থাকবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলার পাশাপাশি ফোনে অর্ডার করে ঘরে বসেও আম কেনা যাবে।

 কলি