ঠান্ডা ও সর্দি থেকে রক্ষায় মধু বেশ উপকারী। নিয়মিত মধু সেবন করলে অসংখ্য রোগবালাই থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। মধু সাধারণত অল্প পরিমাণে ব্যবহৃত হয়, তাই এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাড়িতে দীর্ঘ সময় ধরে থাকে। যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা না হয়, তাহলে মধু দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের মধু থাকলেও তার সংরক্ষণের উপায় একই এবং মধু সংরক্ষণ করাও খুবই সহজ।
•মধু রাখার জন্য কাঁচের পাত্র বেছে নিতে হবে। কারণ কাঁচের বয়ামে মধু রাখলে এর রঙ এবং স্বাদ উভয়ই দীর্ঘদিন ভালো থাকে। প্লাস্টিকের পাত্রে মধু রাখলে খুব দ্রুতই নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই প্লাস্টিকের বয়ামে মধু না রাখাই ভালো।
•মধুর বয়াম শীতল স্থানে রাখুন। মধু এমন কোথাও না রাখাই ভালো যেখানে সরাসরি রোদ এসে পড়ে।এছাড়া মধু রাখার পাত্র চুলার আশেপাশে কিংবা গরম কোথাও রাখা যাবে না। ভালোভাবে মধু সংরক্ষণের জন্য ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখুন।
•মধু ফ্রিজে রাখার কোন প্রয়োজন নেই। মধু ফ্রিজের তাপমাত্রায় মধুর অনেক এমাইনো এসিড ও ভিটামিন নষ্ট হয়ে উপকারী গুণাগুণ কমে যায়। এছাড়া এর স্বাদ পরিবর্তন হয়ে যায়।
•মধুর পাত্রে কখনো নোংরা বা ভেজা চামচ ডুবিয়ে রাখা যাবে না। এতে মধু দ্রুত নষ্ট করতে পারে। মধু দীর্ঘদিন ভালো রাখার জন্য প্রতিবার শুকনো চামচ ব্যবহার করুন। সঠিক ব্যবহারের ফলে মধু ছয় মাস পর্যন্ত ভালো ও টাটকা থাকবে।
•অনেক সময় মধু ঘোলাটে হয়ে যায়। এক বাটি গরম পানির মধ্যে মধুর বয়াম রেখে দিন। মধু আগের মতো স্বচ্ছ হয়ে যাবে।
•মধুর পাত্রের মুখ ভালো ভাবে বন্ধ করে রাখতে হবে। পাত্র সঠিকভাবে বন্ধ না করা হলে পোকা পড়তে পারে অথবা ফাঙ্গাস জন্মাতে পারে। এতে মধু নষ্ট হয়ে যাবে। গুণ, গন্ধ বা স্বাদের মান কমে যেতে পারে।
•মধুর ভেতরে ঠিক আছে কিনা সেটা দেখার জন্য সপ্তাহে দুইবার বোতলের মুখ খুলে দেখতে হবে।
ব্যাচেলরদের ঘর মানে অগোছাল একটি চিত্র ভেসে ওঠে। দু-একটি আসবাব অবিন্যস্ত। ব্যাচেলরদের বাসা আকারে ছোট হয়ে থাকে অথবা একটি রুমেই সীমাবদ্ধ থাকে। সেই সঙ্গে আর্থিক সীমাবদ্ধতা তো থাকেই। সবকিছু সামলিয়ে একা বাসা সাজানো কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু, বাসা আপনার বিশ্রাম আর আরামে সময় কাটানোর স্থান। সারা দিনের কর্মব্যস্ততার পর, শান্তির আবাস। সেটি যদি একটু গোছানো না হয়, তা মানসিক প্রশান্তি বাধাগ্রস্ত করে।
যেমন হবে ঘরের রং ব্যাচেলর ঘরের নিউট্রাল প্যালেট ব্যবহার করতে পারেন। সাদা, ধূসর এবং সঙ্গে আপনার ব্যক্তিত্ব ও স্টাইলকে তুলে ধরবে এমন রং ব্যবহার করতে পারেন। সবুজ, হালকা নীল, বাদামি রং বাসায় প্রশান্তি আনবে এবং সহজেই বাসার ডিজাইন আর আসবাবপত্রের সঙ্গে মিলে যাবে তাই এই রংগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া হালকা রঙের সোফায় সঙ্গে গাঢ় রঙের বালিশ রাখতে পারেন। আসবাব এবং ঘর সাজানোর জিনিস দিয়ে মিক্স ম্যাচ করে ঘর সাজালে ঘর সুন্দর দেখায়।
আলো পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকলে সবই ফিকে হয়ে যায়। আলোর সঠিক ব্যবহার সাধারণ একটি ঘরকে অসাধারণ করে তুলতে পারে। আপনার কাজের বা পড়ার টেবিলে আলো সরাসরি পড়ে তা খেয়াল রাখতে হবে। জানালার কাছে কোনো আসবাবপত্র না রাখাই ভালো। এলইডি লাইট ব্যবহার করলে খরচ কমবে। অন্য সময়ের জন্য ডিম লাইট ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া লাইটের আলো ঘরের কোথায় পড়বে সেখানেও আনতে পারেন পরিবর্তন। দেখতে হবে ঘরের আসবাবের কোনো কম্বিনেশনে ঘরটি আরও পরিপাটি লাগে। ঘরকে একটু নতুনভাবে সাজাতে চাইলে ল্যাম্পশেড, টেবিল ল্যাম্প, স্ট্রিং লাইট রাখতে পারেন।
আয়নার ব্যবহার ছোট সুন্দর এবং আলোকিত করতে আয়না একটি চমৎকার উপায়। দেয়ালে একটি বড় আয়না ঝুলিয়ে দিতে পারেন। বেত, বাঁশ বা প্লাস্টিকের তৈরি অর্গানাইজার আয়নার পাশে রাখতে পারেন। ছোট আয়না ব্যবহারের ফলে ড্রেসিং টেবিলের খরচ বাঁচবে, ঘরে নতুনত্ব আসবে। এ ছাড়া বাতিল জিনিসের ব্যবহার ফেলে না দিয়ে সেই জিনিসপত্রগুলো দিয়ে ঘরে ভিন্নতা আনতে ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে অনলাইনে ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখে বাতিল জিনিসগুলো দিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন সুন্দর সব শোপিস।
রান্নাঘর ব্যাচেলর বাসায় আলাদা রান্নাঘর পাওয়া বেশ কঠিন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শেয়ার করে কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে নিজের ব্যবহৃত জিনিসগুলো আলাদা কোনো শেলফ, বেতের ঝুড়ি বা কিচেন অর্গানাইজারে রাখতে পারেন। যদি আপনার নিজস্ব রান্নাঘর থাকে, তাহলে রান্নাঘরের একপাশে ছোট টেবিল আর চেয়ার দিয়ে ডাইনিং রুম বানিয়ে নিতে পারেন। আপনার খাবার আনা-নেওয়ার কাজও সহজ হবে।
বেডরুম বাসার আকারের ওপর নির্ভর করে বেডরুমটি বিভিন্ন রকম হতে পারে। বেডরুমে একটি ছোটখাটো, আলমারি, টেবিল, আয়না রাখতে পারেন। খাটের ক্ষেত্রে চাইলে বক্স খাট ব্যবহার করতে পারেন, যা একই সঙ্গে স্টোরেজের কাজ করবে। চাইলে মাল্টিফাংশন ফার্নিচার যেমন সোফা কাম বেড ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার অর্থ আর জায়গা দুটোই বাঁচবে।
ঘর সাজাতে যা করবেন • ঘরের কোণে ইয়োগা ম্যাট, জিমের সরঞ্জাম রাখতে পারেন। ঘরেই ব্যায়াম করলে, জিমের অর্থ বাঁচবে। খাটের পাশের সাইড টেবিলে পানি, ছোট ল্যাম্প, বই রাখতে পারেন। জানালার ধারে ছোট ছোট গাছ রাখতে পারেন, এতে ঘরের শোভা বাড়াবে।
• দেয়ালে বিভিন্ন শিল্পীর পেইন্টিং যোগ করতে পারেন, ছোট মেমোরি ওয়াল তৈরি করতে পারেন। যেমন- প্রাকৃতিক দৃশ্যের আইকনিক ল্যান্ডস্কেপ পেইন্টিং, প্রিয় খেলোয়াড় বা টিমের জার্সি, ব্যান্ড বা কনসার্টের পোস্টার অথবা ফ্রেম ইত্যাদি দিয়ে দেয়াল সাজাতে পারেন।
• মেঝেতে ছোট কার্পেট বা পাটি রাখতে পারেন। তুলা, উল বা পশমের মতো প্রাকৃতিক উপকরণ বেছে নিতে পারেন, যা নরম এবং আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করবে।
• ঘরে প্রকৃতির ছোঁয়া আনতে গাছের জুড়ি নেই। সেক্ষেত্রে কম রক্ষণাবেক্ষণের গাছগুলো বেছে নিন। যেমন স্নেক প্ল্যান্ট, অ্যালোভেরা, স্পাইডার, মানি প্ল্যান্ট ইত্যাদি। এগুলোর জন্য খুব বেশি সূর্যালোক বা যত্নের প্রয়োজন হয় না।
• ঘরের একটা অংশ বা কর্নারে নিজের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে কিছু রাখতে পারেন। একটি আরামদায়ক চেয়ার, কুশন আর চা রাখার ছোট টেবিল। যেখানে আপনি বসে বই পড়তে পারবেন, আকাশ দেখতে পারবেন।
• বাসাকে সহজ এবং ছিমছাম রাখতে চেষ্টা করুন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রই রাখুন। এতে ঘর পরিষ্কার করা সহজ হবে, বাসা বদলাতে কষ্ট কম হবে। এ ছাড়া খরচ কমবে ও ঘর সুন্দর দেখাবে।
অনেকেই ভুট্টা খেতে পছন্দ করেন। রাস্তাঘাটে বের হলেই চোখে পড়ে পোড়া ভুট্টার বেচাকেনা। ভুট্টা খেলে পাওয়া যায় নানা উপকারও। পুষ্টিগুণের কারণে একে সুপারফুড বলা হয়। চিরচেনা ভুট্টার তিন রেসিপি দিয়েছেন বাংলাদেশ টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ডের কুকিংয়ের ট্রেইনার এবং অ্যাসেসর শেফ আলভী রহমান শোভন।
আমেরিকান কর্ন সালসা
উপকরণ সেদ্ধ ভুট্টা ১০০ গ্রাম, শসা কিউব করে কাটা ৫০ গ্রাম, টমেটো কিউব করে কাটা ৫০ গ্রাম, গাজর কিউব করে কাটা ৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি ১৫ গ্রাম, পার্সলে কুচি ৫ গ্রাম, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, রসুন গুঁড়া ১/২ চা চামচ, মধু ২ টেবিল চামচ, অলিভ অয়েল ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ২ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি প্রথমে একটি বাটিতে একে একে মধু, অলিভ অয়েল এবং লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এবার এতে গোলমরিচ গুঁড়া, রসুন ২ চা চামচ এবং লবণ যুক্ত করে ভালোভাবে মিশিয়ে সালসা ড্রেসিং তৈরি করুন। অন্য একটি বাটিতে সেদ্ধ ভুট্টা, শসা, টমেটো, গাজর, পেঁয়াজ কুচি এবং পার্সলে কুচি একসঙ্গে মেশান। এবার এতে আগে থেকে বানিয়ে রাখা সালসা ড্রেসিং দিয়ে ভালোভাবে মেশান। এরপর পরিবেশন করুন।
তাইওয়ানিজ গ্রিলড কর্ন রিব
উপকরণ ভুট্টা ২টি, পার্সলে কুচি ৫ গ্রাম, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, রসুন গুঁড়া ১/২ চা চামচ, মধু ২ টেবিল চামচ, অলিভ অয়েল ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ২ চা চামচ, টমেটো পিউরি ১/৪ কাপ, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি প্রথমে প্রতিটি ভুট্টা ৮ ভাগ করে কেটে নিন। একটি বাটিতে একে একে টমেটো পিউরি, মধু, অলিভ অয়েল, লেবুর রস, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া, রসুন গুঁড়া ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। প্রতিটি ভুট্টার টুকরায় মিশ্রণটি ব্রাশ করুন। গ্রিলারে প্রতিটি কর্ন ১০ মিনিট গ্রিল করুন। উপরে আরেকবার মিশ্রণটি ব্রাশ করে উপরে পার্সলে কুচি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
ভেগান কর্ন স্যুপ
উপকরণ সেদ্ধ ভুট্টা ১০০ গ্রাম, ভুট্টা পেস্ট ২৫ গ্রাম, গাজর কিউব করে কাটা ২৫ গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি ১৫ গ্রাম, পার্সলে কুচি ৫ গ্রাম, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, রসুন গুঁড়া ১/২ চা চামচ, ভেজিটেবল স্টক ১ লিটার, সয়া চাংক ১০০ গ্রাম, লবণ স্বাদমতো, অলিভ অয়েল ১৫ মিলিলিটার।
প্রণালি সয়া চাংক গরম পানিতে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রেখে পানি চিপে বের করে মিহি করে নিন। প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি এবং গাজর কুচি দিয়ে হালকা ভেজে ভেজিটেবল স্টক দিয়ে নিন। বলক উঠলে ভুট্টা পেস্ট দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে মিশিয়ে নিন। সেদ্ধ ভুট্টা, গোলমরিচ গুঁড়া, রসুন গুঁড়া এবং লবণ দিন। আরও কিছুক্ষণ রান্না করে ওপরে পার্সলে কুচি ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
রাজধানীর আলোকি কনভেনশনের প্রাঙ্গণ রবিবার (১৯ জানুয়ারি) ছিল মিলেনিয়াল, জেন জি ও জেন আলফা—ফ্যাশনপ্রেমী নানা বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখরিত। সমাপনী দিনেও জমজমাট ছিল আয়োজনের মার্কেটপ্লেস, ডিজাইন ল্যাব ও ফুড জোন।
দর্শনার্থীদের মধ্যে থেকে আগ্রহীদের নিয়ে প্রথম দিন থেকেই মার্কেটপ্লেসের বাইরের আলো ঝলমলে ওয়াকওয়েতে করা হচ্ছে ফ্ল্যাশ রানওয়ে। মাঘের হিমেল সন্ধ্যায় গতকালের ফ্ল্যাশ রানওয়ে ছিল বেশ উপেভাগ্য। চারটি থিমে ভাগ করা চার দিনের আর্কা ফ্যাশন উইকের চতুর্থ দিনের থিম ‘সাসটেইনেবিলিটি’। থিমের সঙ্গে মিল রেখে গতকালও দর্শনার্থীদের পোশাকে দেখা গেছে ভিন্নতা।
আর্কা ফ্যাশন উইকের সমাপনী দিনের রানওয়েতে ঢং, তাসা, উড়ুক্কু বাংলাদেশ, ফ্রেন্ডশিপ-কালার অব চরস, গ্রীষ্ম বাই সৌহার্দ্য, ব্লিস ক্লদিং, তান, অরণ্য ও কুহু- ওয়্যারেবল আর্ট তাদের সাসটেইনেবল কালেকশন প্রদর্শনী করে। ৪টি স্লটে মোট ৯টি শো হয়।
প্রথম স্লটে অংশগ্রহণ করে ঢং। এথনিক আমেজের নবাবিয়ানা দেখা গিয়েছে তাদের কালেকশনে। পপিং কালার প্যালেটের শর্ট প্যান্ট ও প্রিন্স কোটের ফিউশন স্টাইল স্যুট, লং কোট, প্রিন্স কোট, সুফি আমেজের আর ওমর খৈয়াম স্টাইল লং কোট ছিল এই কালেকশনে।
পরের শোতে তাসা প্রদর্শন করে তাদের সিগনেচার বোহো কালেকশন। শাড়ি, কাফতান, টপ্স, হাফপ্যান্ট, প্যান্ট, স্কার্ট, সি থ্রু শার্ট, চটের হুডেড গাউন, শার্ট ও প্যান্ট ছিল। সুতি, বেনারসি, ডেনিমের উপর কড়ি, ফ্রিল ও পমপম নজর কেড়েছে পোশাকগুলোতে।
রিসাইকেল ও আপসাইকেল কালেকশন নিয়ে দ্বিতীয় স্লটের প্রথম শো করে উড়ুক্কু বাংলাদেশ। কাফতান, শ্রাগ, হারেম প্যান্ট, স্লিটেড স্কার্ট, স্ট্রেপলেস টপ, জাম্পস্যুট, জ্যাকেট, ওয়াইড লেগ প্যান্টও প্লাস সাইজ ড্রেস ছিল এই কালেকশনে। ‘শ্রমিকের সম্মান দেশের সম্মান’, ‘আমাদের ভূমিকা নিয়ে ভাবি’, ‘যাপন হোক পরিবেশবান্ধব’- শোতে এই বার্তাগুলো উপস্থাপন করেছে উড়ুক্কু। প্যাচ ও কাঁথাসেলাই দিয়ে নকশা করা ছিল তাদের পোশাক।
দ্বিতীয় শোতে ছিলো ফ্রেন্ডশিপ, যারা প্রাকৃতিক রঙ নিয়ে কাজ করে। শাড়ি, থ্রিপিস, কো-অর্ড সেট, কাফতান, শ্রাগ, মিনিড্রেস, শার্ট, ফতুয়া ও টপ ছিল এই কালেকশনে। সুতি, মসলিন, সিল্ক ও খাদি ফেব্রিকে তৈরি করা হয়েছে এই পোশাকগুলো।
তৃতীয় স্লটে ফিউশন ও নিরীক্ষাধর্মী ওয়েস্টার্ন কালেকশন নিয়ে অংশগ্রহণ করে গ্রীষ্ম বাই সৌহার্দ্য। কাট ও প্যাটার্নে ছিল বৈচিত্র্য। ধুতি, মিনি ড্রেস, শার্ট, প্লিটেড বটম, টপ, মিনি স্কার্টে সাজানো এই সংগ্রহ। সাদা, কালো ও বেগুনি রঙ প্রাধান্য পেয়েছে তাদের কালেকশনে। ফারদিন বায়েজিদের ব্লিস ছিল সাসটেইনেবল কালেকশন নিয়ে পরের শোতে।
চতুর্থ স্লটের শো শুরু হয় তানের পরিবেশনা দিয়ে৷ শুরুতেই সকলকে চমকে দিয়ে শোস্টপার হিসেবে র্যাম্প মাতান জনপ্রিয় অভিনেত্রী রুনা খান। স্কার্ট, কাট আউট স্ট্রেপলেস টপ, ওয়াইড লেগ প্যান্ট, স্যুট ছিল এই কালেকশনে। অ্যাপলিকে ও ডিজিটাল প্রিন্টে নকশা করা হয়েছে পোশাকগুলো।
অরণ্য শো করে ক্যাজুয়াল ও ফিউশনওয়্যারের কালেকশন নিয়ে। বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের ও প্যাটার্নের স্কার্ট, শ্রাগ, স্ট্রেপলেস টপ, বোম্বার্ড, কার্গো প্যান্ট, লং কোট, হারেম প্যান্ট, অ্যাসেমিট্রিক টপ দেখা যায় এই সংগ্রহে। সবগুলো পোশাকই মিনিমাল কিন্তু ট্রেন্ডি। পোশাকগুলোর সজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে লেইস ও কাঁথাসেলাই। নওশিন খায়ের-এর এই পুরো সংগ্রহটিতে ইন্ডিগোর ব্যবহার হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
আর্কা ফ্যাশন উইকের পর্দা নামে কুহুর রানওয়ের মাধ্যমে। ইউনি সেক্স পোশাকে সাজানো এই কালেকশন। ডিজাইনার কুহুর অনুপ্রেরণা মোগল আর্ট। ফেলে দেওয়া কাপড়ের টুকরোও কাজে লাগায় তারা৷ শাড়ি,পাঞ্জাবি, বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের ও শ্রাগ, কামিজ, শর্ট টপ, কাউল নেকের ফিউশনধর্মী কাফতানে সাজানো এই কালেকশন। কাটের বৈচিত্র্য নজরকেড়েছে সবার।
ফ্যাশন উইকের সমাপনী দিনেও যথারীতি ছিল মাস্টারক্লাস। আর গতকালের সঙ্গীতায়োজনে অংশ নেয় ইন্ডেলো ও দ্য ড্রেসট্রয়ার। তাদের গানগুলোর পরিবেশনায় দর্শকরা মুগ্ধ হয়েছেন।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় শিল্প ও সংস্কৃতি উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘বার্নিং ম্যান’। উৎসবটি যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা ব্ল্যাক রক সিটির মরুভূমিতে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিল্পী, উদ্যোক্তা এবং দর্শকেরা এসে একত্রিত হন। সৃজনশীলতা, মুক্ত পরিবেশ, স্বাধীনতা—এগুলোই হচ্ছে উৎসবের মূলমন্ত্র। একই আদর্শে সংগীত, শিল্পকলা ও প্রকৃতির মিশেলে ২৯ থেকে ৩১ জানুয়ারি অভিনব উৎসবের আয়োজন হতে যাচ্ছে কক্সবাজারের মারমেইড বিচ রিসোর্টে। উৎসবের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বার্নিং ক্র্যাব ফেস্টিভ্যাল’। এতে বিভিন্ন দেশের শিল্পী, উদ্যোক্তা আর সৃজনশীল মানুষেরা অংশ নেবেন।
উৎসবের আয়োজক মারমেইড ইকো ট্যুরিজম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল হক চৌধুরী বলেন, ‘টেক এ ব্রেক’–এ উৎসবের মূল ধারণা। আয়োজনের তিন দিনে অতিথিদের রোমাঞ্চকর সব অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। খাবারে শুধু স্বাদ নয়, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতাও খুব গুরুত্বপূর্ণ’।
বার্নিং ক্র্যাব ফেস্টিভ্যালের কিউরেটর হিসেবে থাকছেন জাপানের বিখ্যাত ফেস্টিভ্যাল আর্কিটেক্ট ও লাইটিং ডিজাইনার জিরো এনদো। উৎসবে ইনারা জামালের তৈরি খাবারগুলোর মধ্যে থাকবে সামুদ্রিক মাছের নানান পদ। এ ছাড়া থাকবে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবারের অভিনব সব পরিবেশনা।
এশিয়ার মর্যাদাপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসব বুসানের সেরা পুরস্কারজয়ী সিনেমা ‘বলী: দ্য রেসলার’ এবার প্রদর্শিত হবে বার্নিং ক্র্যাব ফেস্টিভ্যালে।
শীতের মৌসুমে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতি সপ্তাহে দাওয়াত লেগেই থাকে। উৎসবে নারীরা মেকআপ করে যেতেই পছন্দ করেন। প্রতিটি অনুষ্ঠানে তৈরি হতে ফ্যাশনেবল পোশাক বেছে নিচ্ছেন। কিন্তু মেকআপ যদি ঠিকঠাক না হয়, তবে দামি পোশাকও ফিকে পড়ে। শীতে গরমকালের মতো ঘাম হয় না দেখে অনেকেই কোনো কিছু চিন্তাভাবনা না করে ইচ্ছামতো মেকআপ করেন। কিন্তু এ সময়ে বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকায় মুখের শুকনা টান ধরা অংশগুলোয় ফাউন্ডেশন জমে গিয়ে পুরো লুকটাই নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া আরও অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মেকআপের আগে ত্বকের প্রস্তুতি সাজের আগে ত্বককে প্রস্তুত করতে হবে। দিনে বা রাতে যখনই মেকআপ করবেন, ত্বক ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। ঘরোয়া উপাদান দিয়ে স্ক্রাব করে নিতে পারেন। ত্বকের মৃত কোষ পরিষ্কার হবে। এরপর ফেস অয়েল মেখে নিন। শীতকালের শুষ্ক ত্বককে মেকআপের উপযোগী করতে ক্লিনজার-টোনার লাগিয়ে নিন। কিছু সময় অপেক্ষা করে এরপর মেকআপ শুরু করুন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেছে নেওয়া উচিত তেলবিহীন ফেসওয়াশ আর স্বাভাবিক ও শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ ক্লিনজার। কিন্তু সব ধরনের ত্বকের জন্যই বেছে নিতে হবে ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ টোনার। কারণ, মুখ পরিষ্কার করার পর সব ধরনের ত্বকেই আর্দ্রতার প্রয়োজন পড়ে।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার মেকআপ শুরুর আগে ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। শুষ্ক ত্বকে অয়েল বেসড ময়েশ্চারাইজার, তৈলাক্ত ত্বকে অয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা ভালো। মিশ্র ত্বকের জন্য ত্বকের যে অংশটিতে তেল থাকে সেই অংশটিতে অয়েল ফ্রি আর বাকি অংশে অয়েল বেসড ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। এ ছাড়া দিনের মেকআপে ময়েশ্চারাইজারের পর সানস্ক্রিন মাখতে হবে। এই সময় এসপিএফ ৫০ বা ৩০ সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
প্রাইমারের ব্যবহার মেকআপ হালকা বা ভারী যেমনই হোক না কেন, প্রাইমার লাগাতেই হবে। মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী করতে এর বিকল্প নেই। এ ছাড়া রোমকূপ ছোট করা, ত্বকের অতিরিক্ত তেল বা শুষ্কতা কমানো, বয়সের ছাপ কমাতে প্রাইমার ব্যবহার করা হয়। এমন আবহাওয়ায় ময়েশ্চারাইজিং প্রাইমার ব্যবহার করা উচিত।
কনসিলার ফাউন্ডেশনের পর ত্বকের দাগছোপ ঢাকতে কনসিলার ব্যবহার করতে হয়। বাজারে অনেক ধরনের কনসিলার পাওয়া যায়। শীতে কনসিলারও ফাউন্ডেশনের মতো ময়েশ্চারাইজিং বা হাইড্রেটিং হতে হবে।
ফাউন্ডেশন মেকআপের অপরিহার্য উপাদান হলো ফাউন্ডেশন। ত্বকের কালার টোন বুঝে সঠিক ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন। ফাউন্ডেশনের গায়ে স্কিন টোন অনুযায়ী নম্বর দেওয়া আছে। তা দেখেই ফাউন্ডেশন নির্বাচন করুন। শীতকালের জন্য সবচেয়ে ভালো ডুয়েল ফিনিশ ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশন পরিমাণে লাগে খুবই অল্প, কিন্তু সব ধরনের ত্বকেই খুব ভালোভাবে মিশে যায়। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেছে নিতে পারেন তেলবিহীন ফাউন্ডেশন, তেমনি স্বাভাবিক ও শুষ্ক ত্বকের জন্য বেছে নিতে পারেন ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ ফাউন্ডেশন। এ ছাড়া মেকআপ লুকের আরেকটি বিষয় হলো আপনার ত্বকের শ্রেষ্ঠ রূপটি বের করে আনা। এ কারণে ফাউন্ডেশন লাগালে খুবই হালকা ধাঁচের ফাউন্ডেশন লাগান, যেটা ত্বক ঢেকে ফেলবে না। ফাউন্ডেশনের বদলে বিবি ক্রিম বা সিসি ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
পাউডার ফাউন্ডেশন ব্যবহারের পর এটিকে ত্বকে স্থায়ী করতে ব্যবহার করা হয় পাউডার। এ ক্ষেত্রে সব ধরনের ত্বকেই ব্যানানা পাউডার বা হোয়াইট টোন পাউডার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পাউডার ব্যবহারের পর ত্বক বেশি শুষ্ক দেখালে সেটিং স্প্রে দিয়ে পাউডার ও ফাউন্ডেশনকে সেট করে নিতে হবে।
চোখের সাজ পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে চোখের পাতায় হালকা পিচ কালারের একটি আইশ্যাডো দিয়ে চোখের বেস তৈরি করুন। এর ওপরই অ্যাপ্লাই করুন গোল্ডেন আইশ্যাডো। এবার চোখের আউটার কর্নারে একটু ডিপ কফি বা আপনার পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে একটি আইশ্যাডো কালার দিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে পারেন। এ ছাড়া চোখের সাজের ক্ষেত্রে ম্যাট ফিনিশ আইলাইনার ব্যবহার করতে পারেন। চোখের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে চোখের পাপড়িতে ব্যবহার করতে পারেন ভলিউম মাসকারা। আজকাল চোখের সাজে গ্লসি আইশ্যাডো বেশ জনপ্রিয়। এর ব্যবহারে চোখে চলে আসবে ভিন্নতা।
ঠোঁটের সাজ শীতে ব্যবহার করুন গ্লসি লিপস্টিক। কারণ, এতে ময়েশ্চারাইজিং বা হাইড্রেটিং উপাদান থাকে, যা ঠোঁটকে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করে। এ সময় ঠোঁটে আর্দ্রতাযুক্ত লিপবাম বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে পারেন। এরপর ব্যবহার করতে পারেন গ্লসি লিপস্টিক। কারণ, চোখের মতোই ঠোঁটের সাজেও চলছে গ্লসি লুকের আধিপত্য।
ব্লাশঅন শীতে আবহাওয়ার কারণে অনেকের ত্বক বেশ ফ্যাকাশে হয়ে যায়। তাই ত্বকে প্রাকৃতিক আভা আনতে গোলাপি বা পিচ শেডের ব্লাশঅন লাগাতে পারেন। তবে সেটা ক্রিম বা লিকুইড হতে হবে। এ সময় যতটা সম্ভব পাউডার ভিত্তিক ব্লাশঅন এড়িয়ে চলুন। কারণ, এ ধরনের পণ্য ত্বককে অতিরিক্ত শুষ্ক করে দিতে পারে।