
কেউ কেউ সারা বছর স্যুট পরেন। শীতের পোশাক হিসেবে স্যুটের চাহিদা বেশি দেখা যায়। অফিস আর পার্টির গণ্ডি পেরিয়ে অনেকের পছন্দের পোশাকের জায়গা দখল করে নেয় স্যুট ও ব্লেজার। ফরমাল পোশাকের পাশাপাশি ক্যাজুয়াল হিসেবেও স্যুট পরেন অনেকেই। তাদের কথা মাথায় রেখে স্যুটের ফেব্রিকস, কাটিং প্যাটার্ন, স্টিচ, বোতাম আর রঙে আসে বেশ পরিবর্তন।
স্যুটের নতুন লুক
শীতের ফ্যাশন-সচেতনদের কথা মাথায় রেখে ফ্যাশন হাউসগুলো শীতের পোশাকে ফরমাল, সেমি-ফরমাল বা ক্যাজুয়াল পোশাক নিয়ে আসে। যার মধ্যে অ্যাশ সিঙ্গেল ব্রেস্টেড স্যুট, ব্ল্যাক স্ট্রাইপড স্যুট, বিস্কুট টাক্সিডো বা স্যুট উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া ক্যাজুয়াল কাটিংয়ের সিঙ্গেল ব্লেজারও পাওয়া যায়। প্যান্টের সঙ্গে কালার মিলিয়ে বা কনট্রাস্ট করে, যা সেমি-ফরমাল বা ক্যাজুয়াল স্টাইলের আধুনিক স্যুটগুলো সবার কাছে জনপ্রিয় হয়েছে।

স্যুটের ক্ষেত্রে কাপড়, ফিটিং ও নকশা তিনটি বিষয় জরুরি। ফরমাল ও ক্যাজুয়াল স্যুট মূলত হালকা কাপড় দিয়ে তৈরি হয়। বেশির ভাগ ফরমাল ও ক্যাজুয়াল স্যুট কালো ও মিডনাইট ব্লু হয়ে থাকে। তবে কেউ চাইলে ক্যাজুয়াল কাপড় দিয়েও তৈরি করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে রঙের ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এই স্যুট সব সময় খুবই বোল্ড স্টেটমেন্ট বহন করে। স্যুটের সঙ্গে মিলিয়ে ভেতরের পোশাকটাও পরতে হবে। সাধারণত সাদা বাটন আপ শার্টের সঙ্গে পরলে ভালো দেখায়।
স্যুটের রঙ
একটা সময় স্যুটে নির্দিষ্ট কয়েকটি রঙের রাজত্ব ছিল। এখন রং ও ফেব্রিকস- দুটিতেই আমূল পরিবর্তন এসেছে। কালোর পাশাপাশি বিস্কুট ছাই, নীল, নেভি ব্লু, মেরুন, অফহোয়াইট ও ক্রিম রঙের স্যুটও চলছে। এ ছাড়া সাদা, সবুজাভ, মেরুন, বারগ্যান্ডি, ক্যামেল শেড লক্ষণীয়। শীতে পলিউল বা একটু ভারী ফেব্রিকের তৈরি স্যুটের চাহিদা বেশি। সুতি কাপড়ের স্যুট শীত-গরম সব সময়ই আরামদায়ক। পাশাপাশি ইতালিয়ান ভারসেস, ডিক জ্যাম, ডরমেনি, রেমি কটন, টুইড কাপড়ের স্যুটের চাহিদা রয়েছে। রিংকল ফ্রি উলেন কাপড়ের কদরও রয়েছে। ওভেন, ভেলভেট কাপড়ের স্যুট বাজারে চলছে বেশ।

কোথায় পাবেন
ব্লেজার-স্যুটের কথা এলে চলে আসে রেমন্ড, সানমুন টেইলার্স, টপটেনের নাম। রেডিমেড স্যুট মিলবে অঞ্জন’স, ইজি, প্লাস পয়েন্ট, এক্সটাসি, ক্যাটস আই, ইনফিনিটি, আর্টিস্টি, ফ্রিল্যান্ড, মেনজ ক্লাব, রিচম্যানের মতো ফ্যাশন ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে। এ বছরও নানা ছাঁটের, নানা রঙের স্যুট এসেছে বাজারে। এ ছাড়া বসুন্ধরা সিটি, নিউ মার্কেট, বঙ্গবাজারেও পাওয়া যাবে নানা ডিজাইনের স্যুট। সাধারণত ফেব্রিক ও ডিজাইনভেদে এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়, যা ক্রেতাসাধারণের সাধ্যের মধ্যেই।
খেয়াল রাখুন
• স্যুট-ব্লেজারের কাপড় যাচাই-বাছাই করার অভিজ্ঞতা না থাকলে এক দামের দোকান থেকেই কাপড় কেনা উত্তম।
• খুব বেশি ঢিলেঢালা কিংবা আঁটসাঁট না, মধ্যম মাপের স্যুট বানানোই উত্তম।
• স্যুট বানানোর জন্য মানসম্পন্ন ফেব্রিক নির্বাচন করতে হবে।
• পুরুষের স্যুট বানাতে ২ গজ, প্যান্টসহ বানাতে ৩ গজ কাপড় লাগে। তবে স্বাস্থ্য, উচ্চতা ইত্যাদি কারণে কাপড় কমবেশি হতে পারে।
• স্যুট ভাঁজ করে রাখা যাবে না। আলমারিতে হ্যাঙারে ঝুলিয়ে রাখুন।
• ব্যবহারের আগে নরম কাপড়ের তৈরি ব্রাশ দিয়ে ধুলা পরিষ্কার করে নিন।
• বাসায় পরিষ্কার করতে চাইলে মাইল্ড ডিটারজেন্ট এবং কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন। খেয়াল রাখবেন অতিরিক্ত গরম পানিতে পরিষ্কার করা যাবে না।
• শীত শেষে তুলে রাখার আগে সিলড ব্যাগে রাখবেন এবং সেটি ঝুলিয়ে রাখবেন।
• ধোয়ার পর ভেজা অবস্থায় শুকানোর জন্য ঝুলিয়ে রাখা যাবে না। পানি ঝরিয়ে সমতল কোথাও বিছিয়ে রাখতে হবে।
• ওয়াশ করতে চাইলে অবশ্যই ড্রাইওয়াশ করা ভালো। এতে স্যুটের রং নষ্ট হওয়ার ভয় থাকবে না।
• ফরমাল লুককে বলা হয়ে থাকে ‘জেন্টলম্যান লুক’। করপোরেট প্রফেশনের ফুল ফরমাল লুক কখনোই এড়ানো যায় না।
কলি