
শীতকালে যারা বাইক চালান তাদের পোশাক-আশাকে আসে বিশেষ পরিবর্তন। দ্রুতবেগে মোটরসাইকেল চালানোর ফলে ঠাণ্ডা বাতাস শরীরের জন্য বিপজ্জনক। ফলে এই বাতাস থেকে রক্ষা পেতে বাইকারদের জন্য বিশেষ পোশাক খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় বাইকারদের পোশাক হবে এমন, যা শীত থেকে রক্ষা করবে, আবার স্বাচ্ছন্দ্যও পাওয়া যাবে।
জ্যাকেট
বাইকারদের জন্য আদর্শ পোশাক হলো রাইডিং জ্যাকেট। রাইডিং জ্যাকেট ভেড়ার চামড়া বা কৃত্রিম চামড়ার হয়ে থাকে। তবে আমাদের দেশে অনেকেই লাইনার অথবা ইনার দেওয়া জ্যাকেট পরা পছন্দ করেন। লাইনার বা ইনার কিছুটা র্যাক্সিনের মতো কৃত্রিম তন্তু দিয়ে তৈরি। জ্যাকেটের সঙ্গে লাগানো থাকে। এ ছাড়া লেদার জ্যাকেট শীতে ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা করে। লেদার জ্যাকেটের ক্ল্যাসিক কালো রং ছাড়া বাদামি, লাল, বেগুনি, মেরুন জ্যাকেটের বেশ কদর বেড়েছে। শীতে বাইকারদের স্টাইলিশ লুক আনতে চাইলে ক্রপড বাইকার জ্যাকেট ব্যবহার করতে পারেন। এ রকম জ্যাকেট সবচেয়ে ভালো লাগে হাই ওয়েস্ট ডেনিম প্যান্ট এবং হালকা টি-শার্টের সঙ্গে। জম্পেশ একটা লেদার জ্যাকেট আর জিনস আপনার সাহসী সাজকে ফুটিয়ে তুলবে।
এয়ার প্রটেক্টর জ্যাকেট
শীতের ঠাণ্ডা বাতাস থেকে রক্ষা পেতে ভালো মানের একটি এয়ার প্রটেক্টর জ্যাকেট ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে চলন্ত অবস্থায় ঠাণ্ডা বাতাস শরীরে ঢুকবে না। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এয়ার প্রটেক্টর জ্যাকেট পাওয়া যায়।

প্যান্ট
আমাদের দেশের আবহাওয়ায় সাধারণত জিনস, কডের কাপড়ের প্যান্ট পরে আরামেই বাইক চালানো যায়। এ ছাড়া অনেক বাইকার লেদার প্যান্ট পরতে পছন্দ করেন। লেদার জ্যাকেট খুব একটা আরামদায়ক নয় বলে বেশির ভাগ বাইকার জিনসে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। নারীদের মধ্যে বাইক চালানোর সময় আগে স্কিনি জিনস পরার চল থাকলেও, এখন সবাই স্ট্রেট লেগ বা বুটকাট জিনস পরে থাকেন।
চেস্ট প্রটেক্টর
শীতে বুকে লাগা বাতাস ঠেকানোর জন্য চেস্ট প্রটেক্টর ব্যবহার করতে পারেন। সাধারণত রেক্সিন চেস্ট প্রটেক্টর জ্যাকেটের পিঠ সামনের দিকে রেখে চেন পেছনে রাখা হয়। চাইলে আপনি আপনার পছন্দমতো চেস্ট প্রটেক্টর কিনে নিতে পারেন।
অল ব্ল্যাক লুক
নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য ক্ল্যাসিক লুক হলো অল ব্ল্যাক লুক। সব কালো পরে এই লুক আনা হয়। যেমন কালো ডেনিম প্যান্টের সঙ্গে ব্ল্যাক জ্যাকেট, বড় কালো বেল্ট, হাতে স্কাল হেড বা ড্রাগন হেড রিং, কালো ব্যান্ডানা পরে অল ব্ল্যাক লুক আনতে পারেন। এ ছাড়া নারী বাইকাররা পার্টিতে গাউন বা শাড়ির ওপর ব্ল্যাক জ্যাকেট চাপিয়ে পায়ে ব্ল্যাক বুট পরে হাজির হতে পারেন।
জুতা
সাধারণত বাইকিংয়ে সব সময় জুতা পরা উচিত। জুতা হিসেবে বাইকারদের পছন্দ লেদার বুট। এ ছাড়া শীতের দিনে অবশ্যই কেডস- জাতীয় জুতা পরলে ভালো। এতে পায়ে ঠাণ্ডা লাগবে না।
গ্লাভস
রাইডিং গ্লাভস মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি হলো আধা ঢাকা ও অন্যটি পুরো হাত ঢাকা। আধা গ্লাভসে হাতের তালু ঢাকা থাকলেও আঙুল খোলা থাকবে। তবে শীতের সময়ে দরকার পুরো ঢাকা গ্লাভস। এ ধরনের গ্লাভস আঙুলসহ পুরো হাতের অংশ ঠাণ্ডায় জমে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে। চামড়ার তৈরি গ্লাভস শীতের জন্য আদর্শ। আমাদের দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী ফুলহাতা গ্লাভসও ভালো কাজ করবে।
ফুল ফেস মাস্ক
শীতে বাইক চালানোর সময় ফুল ফেস মাস্ক ব্যবহার করা ভালো। এতে ধুলোবালি থেকে রেহাই পাবেন। এ ছাড়া ঠাণ্ডা বাতাস নাক দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না ফলে ঠাণ্ডাও কম লাগবে।
হেলমেট
বাইক চালানোর সময় হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক। তবে শীতে একটু ভালো মানের হেলমেট ব্যবহার করা উচিত। সে ক্ষেত্রে ফুল ফেস মানে গলা ও মাথা ঢেকে যায় এমন হেলমেট ব্যবহার করুন। এই হেলমেট ব্যবহার করলে বাতাসের তীব্রতা শরীরে প্রবেশ করতে পারবে না। পারসোনালিটির সঙ্গে মিলিয়ে ডিজাইন করা হেলমেট ব্যবহার করতে পারবেন।
ব্যান্ডানা
অনেকসময় হেলমেটের ভেতর দিয়ে কিছুটা বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা থাকে। ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা পেতে নরম কাপড়ের ব্যান্ডানা ব্যবহার করতে পারেন। এটি নাকের ওপর যেমন পরা যায়, তেমনি মাথায়ও স্কার্ফের মতো পরতে পারবেন। ধুলা, ময়লা ও শীতের ঠাণ্ডা বাতাস থেকে সুরক্ষা দেবে। আবার চাইলে গলাতেও মাফলার হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
কোথায় পাবেন
ঢাকার মিরপুর ১০, আগারগাঁওয়ের আইডিবি ভবনের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া ৬০ ফিট, বংশাল, হাজারীবাগ এবং বসুন্ধরা সিটির বিপরীতে বেশ কিছু দোকানে কিনতে পারবেন বাইকারদের অনুষঙ্গগুলো। এ ছাড়া ঢাকা শহরের বেশ কিছু অভিজাত আউটলেটে বিক্রি হয় বাইকারদের এসব জিনিসপত্র। ঢাকার বাইরের যেকোনো জেলা শহরেও মিলবে এসব।
কলি