
দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখিতার কারণে জীবনযাপনের নানা ক্ষেত্রে খরচ বেড়ে গেছে। এতে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য করতে হিমশিম খাচ্ছে সবাই। মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত পরিবারই বেশি ভুক্তভোগী। নিত্যদিনের খরচ প্রতিনিয়ত বাড়াছে, অথচ আয় বাড়ছে না। সংসার বাজেটের লাগাম টানতে বছরের শুরতেই বাজেট পরিকল্পনা করে ফেলুন। বছরের শুরু থেকেই সচেতন হলে সংসারের খরচ সামলানো এবং বিভিন্ন খাতে সাশ্রয়ী হওয়া সহজ হবে। পরিবারের বাজেট ঠিক রাখতে পারলেই সারা বছর সংসার চলবে স্বাচ্ছন্দ্যে।
আয় বুঝে পরিকল্পনা করুন
বছর শুরু থেকেই বাজেট পরিকল্পনায় মনোযোগ দিতে হবে। পরিবারের মোট আয় ও ব্যয় বের করে নিলে ভালো। সঠিক আয় জানা থাকলে আয় বুঝে ব্যয় করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া কোন কোন খাতে খরচ তুলনামূলক কমানো যাবে বা বাড়তি আয়ের কোনো ব্যবস্থা করা যাবে কি না সেটাও বোঝা যাবে। চাইলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে খরচের একটি খসড়া তৈরি করতে পারেন। কারণ, পরিবারের সবাই বাজেটে অংশগ্রহণ করলে বাজেট পূরণ করা সহজ হবে।
খাবারের জন্য বাজেট করুন
সংসারের খরচ বাবদ একটা অংশ ব্যয় হয় খাবারে। তাই বাজারের ক্ষেত্রে পরিকল্পনাটা খুব জরুরি। আয় থেকে কতটুকু অংশ বাজারে ব্যয় করবেন, সেটা বছরের শুরুতেই ঠিক করে নিন। পুরো মাসের যে বাজারগুলো একবারে করে রাখা সম্ভব, তার তালিকা করে নিন। এতে টাকা-পয়সা ও সময়-শক্তি সবই সাশ্রয় হবে। এ ছাড়া পরিবারের সদস্য সংখ্যা হিসাব করে, কোন জিনিস কতটুকু কিনবেন, হিসাব করুন। একবারে কেনার ফলে কোনো বাজার যদি বেশি হয়, তাহলে সেটা পরের মাসের তালিকায় যুক্ত করে নিন। চাইলে মাসে একটা তালিকা ধরে এমনভাবে বাজার করুন, যাতে অপচয় না হয়।

খরচের হিসাব রাখুন
দিনশেষে খরচের হিসাব রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। খাওয়া-দাওয়া, বাড়িভাড়া, বিদ্যুতের বিলের মতো কিছু খরচ নির্দিষ্ট থাকে। এগুলোর হিসাবও নির্দিষ্ট। তবে প্রতিদিন কোথায় কত খরচ হলো তার হিসাব একটা খাতায় লিখে রাখুন। মাস শেষে এটা নিয়ে বসুন। দেখুন কোন কোন খাতে খরচ বেশি হয়েছে এবং সেগুলো চেষ্টা করলেই কমানো সম্ভব কি না। যেসব খাতে আপনি বেশি টাকা খরচ করেছেন, সেখানে দাগ দিয়ে রাখুন। পরের মাসে চেষ্টা করবেন সেই খাতে খরচ কমিয়ে আনতে।
কিছু কেনার আগে পরিকল্পনা করুন
নিজের কিছু পছন্দ হলেই কোনো জিনিস হুট করে কিনে ফেলবেন না। এটা এড়াতে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, বাজারে যাওয়ার আগেই একটা তালিকা তৈরি করে নিন। এতে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারবেন। বড় অঙ্কের টাকার প্রয়োজন এমন জিনিসগুলোর আলাদা তালিকা তৈরি করুন। সব একবারে না কিনে ধীরে ধীরে কিনুন। শখের পণ্য কেনার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে নিন। পণ্য কেনার জন্য আলাদা করে টাকা জমান। অনেক সময় অনলাইন শপিং অ্যাপে প্রায়ই সেল বা ডিসকাউন্ট দেওয়া হয়। সেগুলো কাজে লাগিয়ে কেনাকাটা করতে পারেন।
সঞ্চয় করুন
বছরে কত টাকা জমাতে চান সেটি আগে ঠিক করে নিন। তারপর প্রতি মাসে অল্প অল্প করে সঞ্চয় করুন। পরিকল্পনার বাইরে খরচ না করার চেষ্টা করুন। দরকার হলে ব্যাংকে একটি ফিক্সড ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট খুলুন। এই জমানো অর্থটাই হবে আপনার ভবিষ্যতের সঞ্চয়।
প্রতিদিনের খরচের বাজেট করুন
প্রতিদিনের বাজেট থেকে হিসাব শুরু করুন। এক দিনে আপনার খাওয়ার খরচ, যাতায়াতের খরচ ইত্যাদি লাগে। কোনো কোনো দিন খাওয়ার খরচ কম-বেশি হতে পারে। আবার বৃষ্টি হলে বা যানবাহন চলাচলে কোনো সমস্যা হলে যাতায়াতের খরচ বেড়ে যেতে পারে। কাজেই এই খাতে কিছুটা বেশি টাকা রাখুন । খরচ হয়ে গেলে তো গেলই, থাকলে সেটা সঞ্চয়ে রাখা যাবে।
কলি