
পোষা প্রাণীর মধ্যে পাখি অন্যতম। তবে এরা বেশ সংবেদনশীল। শীতে পোষা পাখিটিকে শীতল ঠাণ্ডা আবহাওয়া থেকে রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় পাখির বিশেষ যত্নে প্রয়োজন। তার খাবারের মান এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর রাখা জরুরি। পোষা পাখির যত্নের টিপস দেওয়া হলো-
পোষা পাখির খাঁচা বা এটি যে রুমে থাকে তার তাপমাত্রা ৬৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে না নেমে যায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। হঠাৎ করে আসা ঠাণ্ডা বাতাস পাখির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর প্রভাব বিস্তার করে পাখিকে অসুস্থ করে দিতে পারে। তাই এই শীতে আপনার পোষা পাখিকে সুস্থ-সবল রাখতে হলে অবশ্যই তার জন্য উষ্ণ ও আরামদায়ক পরিবেশের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া পাখির খাঁচাটি এমন জায়গায় রাখতে হবে, যেখানে সরাসরি রোদ পড়ে না, সরাসরি বাতাস এসে ধাক্কা দেয় না বা শীত হানা দেয় না।
শীতল বাতাস থেকে বাঁচতে পাখির পুরো খাঁচা মোটা কাপড়, চট দিয়ে ঢেকে দেবেন না। পর্যাপ্ত আলো, বাতাসের আসা যাওয়ার অভাবে পাখি অসুস্থ হতে পারে। পাখির মল, মূত্রে এক রকম গ্যাস তৈরি হতে পারে।
শীতকালে পাখির সিডমিক্সে তেলজাতীয় বীজ যেমন তিল/গুজি তিল, সূর্যমুখীর বীজ, ক্যানারির পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। এই সময় খনিজ উপাদানের জোগান দিতে কাটলফিশ বোনের টুকরা, মিনারেল ব্লক খাঁচায় রেখে দিন। ধান, গম, যব বা ভুট্টা খাওয়ানোর পাশাপাশি শাক, বরবটি, অ্যালোভেরার রসের মতো খাবার খেতে দিন। এ ছাড়া বাজারে পাখির জন্য প্যাকেটজাত খাবার কিনতে পাওয়া যায়, চাইলে সেগুলোও দেওয়া যেতে পারেন।
পানির ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করা পানি প্রতিদিন সকালে পাত্রে দিয়ে রাখুন। পানি নোংরা হওয়ামাত্রই আবার বদলে দিন। আর পানির পাত্রটি যেন প্রতিদিন পরিষ্কার থাকে, সেটাও খেয়াল রাখুন। এতে করে পাখি ব্যাকটেরিয়া অথবা ফাঙ্গাসের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত, সুস্থ ও সবল থাকবে, ফলে হঠাৎ করে ঠাণ্ডা লাগার ভয় কমে যাবে।
পাখিদের গোসলের জন্য আলাদা পাত্রে দুপুরের দিকে পানি দিয়ে রাখুন। গোসল শেষে সরিয়ে ফেলুন।
কোনো পাখি অসুস্থ মনে হলে সঙ্গে সঙ্গে আলাদা খাঁচায় রাখার ব্যবস্থা করুন। পাখির দোকান, অনলাইনে পাখির চিকিৎসকদের থেকে পরামর্শ করে রোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন। পোষা পাখির মধ্যে ওয়াক্সবিল ফিঞ্চসহ অনেক প্রজাতি আছে, যারা রোগ লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করে। মানুষ দেখলে স্বাভাবিক তৎপরতা দেখায়। এই বিষয়টা খেয়াল রাখতে হবে। পোষা পাখি বনের পাখির মতো শক্তপোক্ত নয়। এ জন্য সব সময় এদের সঠিক পরিচর্যা করা প্রয়োজন।
খাঁচায় থাকার ফলে পাখিদের ‘শরীরচর্চা’ ঠিকমতো করতে পারে না। খাঁচার পাখির জন্য শরীরচর্চার ব্যবস্থা করতে হবে। যেন বেশ কিছুটা সময় তারা শারীরিক কসরত করতে পারে। খাঁচার ভেতর ছোট মই, দোলনা, ঝুনঝুনি, প্লাস্টিকের বল রেখে দিলে পাখিরা এসব নিয়ে খেলাধুলা করলে তাদের শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকবে। শীত আসার আগে ‘রাণীক্ষেতের’ ভ্যাকসিন দিতে হবে। ম্যাকাও জাতীয় পাখির ক্ষেত্রে জন্মের ২১ দিনের মধ্যে ‘পোলিওমো ভ্যাকসিন’ দেওয়া উচিত।
কলি