
রমজান মাসে সুস্থ থাকার গুরুত্ব অনেক বেশি। রমজানে আমাদের খাবার বেশি খাওয়া হয়। অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণের অভ্যাসের কারণে বেড়ে যেতে পারে শরীরের ওজন, দেখা দিতে পারে অন্যান্য শারীরিক সমস্যা। অলস সময় বা পরিস্থিতির কারণে এমন হলে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে খাদ্যাভ্যাস।
পরিমাণে কম নেওয়া
একসঙ্গে সব খাবার প্লেটে নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। আর যদি সব আইটেম খেতে চান, তবে পরিমাণে অল্প নেবেন। সম্ভব হলে ছোট প্লেটে খাবার খাবেন।
খেতে হবে সময়মতো
খাদ্যগ্রহণের সময় যেন নির্দিষ্ট থাকে। নিয়মে অভ্যস্ত না হলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি খাবার গ্রহণ করবেন, এটাই স্বাভাবিক। শরীর সময়মতো খাবার না পেলে নিজেই অতিরিক্ত চাহিদা তৈরি করে রাখে। ফলে খাবার সামনে এলে আপনি মানসিকভাবেও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে বেশি খেতে চাইবেন। ফলে প্রতিদিন ইফতার ও সাহরিতে নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেতে হবে।
ধীরে ধীরে খাবার খাওয়া
লোভনীয় সব খাবার এড়াতে ধীরে ধীরে খান। খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খান। এতে খাওয়া শেষে তৃপ্তি পাবেন, পাশাপাশি বাড়তি খাবার খাওয়ার সুযোগও থাকবে না।
খাবারকে না বলুন
আমরা সাধারণত যে খাবার পছন্দ করি বা খেতে ভালোবাসি, সেটাই একটু বেশি খাই। ক্ষতিকর খাওয়ার ক্ষেত্রে ‘না’ বলতে শিখুন। ভাজাভুজি, রিচ ফুড, ফাস্টফুড আর অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার গ্রহণ করা থেকে রিবত থাকুন।
সাহরি খাওয়া
সাহরির খাবার দীর্ঘসময়ের জন্য শরীরে শক্তি সরবরাহ করে। এ সময় ফল, সবজি, বাদাম এবং কিশমিশ, ওটস ইত্যাদি উচ্চ ফাইবারযুক্ত কার্বোহাইড্রেট খাবার বেছে নিন। এ ছাড়া ডিম, দুধ, মুরগির মাংস বা ডাল দিয়ে প্রোটিন পূরণ করার চেষ্টা করুন। এসব খাবার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে যেমন করবে শক্তিশালী, তেমনি আপনার সুগার লেভেলকে ঠিক রাখবে। খাদ্য হজমে সহায়তা করবে। সারাদিন সতেজ রাখবে।
বাড়িতে ইফতার করুন
ইফতারের জন্য বাড়িতে রান্না করা খাবার বেছে নিন। অতিরিক্ত খাওয়া রোধ করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো আগে থেকে ইফতারে কী খাবেন তা ঠিক করে রাখা। খেজুরের মতো হালকা কিছু দিয়ে ইফতার খাওয়া শুরু করুন। বেশি করে পানি খান। রেস্টুরেন্টগুলোর অফারে প্ল্যাটার দিয়ে ইফতার করা থেকে বিরত থাকুন।
খাওয়ায় হতে হবে মনোযোগী
খাবার গ্রহণে মনোযোগী হতে হবে। অধিকাংশ সময় দেখা যায়, কম্পিউটার-ল্যাপটপে কোনো কাজ করতে করতে, টিভি দেখতে দেখতে বা মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে খাই। এমনটা কোনোমতেই করা যাবে না। খাওয়ায় মন না দিয়ে বেশি সময় ব্যয় করে যখন খাবেন, তখন বেশিই খেতে মন চাইবে। নির্দিষ্ট টেবিলে বা জায়গায় বসে মন দিয়ে সময় নিয়ে খেতে হবে।
খাওয়ার আগে পানি পান করুন
ইফতার ও সাহরি যেকোনো খাবারের আগে এক গ্লাস পানি পান করুন। ধীরে ধীরে পানির পরিমাণ বাড়িয়ে নিন। দুই-তিন গ্লাস পানি পানের অভ্যাস গড়ে তোলা ভালো। এটি অতিরিক্ত খাওয়া থেকে রক্ষা করবে।
পরিমিত ও সুষম খাবার
অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে মুক্তির পথ হলো ব্যালেন্সড ডায়েট বা সুষম খাবার। সুতরাং সব খাবার বাদ না দিয়ে বরং প্রয়োজনীয় খাবারগুলো চাহিদার অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয়, নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে বরং একজন পুষ্টিবিদের শরণাপন্ন হন। তিনিই দিতে পারেন সুষম খাবারের তালিকা।
বেঁচে যাওয়া খাবার না খাওয়া
খাবার নষ্ট করা মোটেও ভালো না। তবে তার মানে এই না যে, আপনি আপনার শিশুদের ফেলে রাখা খাবারও খেয়ে ফেলবেন। কম রান্না করুন। এতে করে খাবার নষ্ট হবে না। এর পরও যদি খাবার থেকে যায়, সেগুলো পশুপাখিকে খাওয়াতে পারেন।
কলি