
রোজার মাসে ইফতারের পাতে ছোলা থাকবেই। স্বাস্থ্যসচেতন অনেক মানুষের কাছেই ছোলার একটা আলাদা কদর রয়েছে। পুষ্টিগুণে ভরপুর ছোলাকে সিদ্ধ ও কাঁচা দুভাবেই খাওয়া যায়। তবে বহুল প্রচলিত এই খাবারের পুষ্টিমান, উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নেই অনেকের।
ছোলার পুষ্টিগুণ
প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় আছে প্রায় ১৮ গ্রাম প্রোটিন, ৬৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৫ গ্রাম ফ্যাট, ২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১৯২ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ। আর আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১, বি২, বি৬। এ ছাড়া ছোলায় বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন, খনিজ লবণ, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, কপার ও আয়রন রয়েছে।
যেভাবে খাবেন
ছোলা কাঁচা অথবা সিদ্ধ করে খাওয়া হলে সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। খাওয়ার আগে অবশ্যই ভিজিয়ে রাখতে হবে। ছোলা সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে বা অন্তত ৬ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পর খেতে হবে। এতে ছোলার কেমিক্যাল এবং জীবাণু চলে যাবে। না ভিজিয়ে দ্রুত সিদ্ধ করে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এ ছাড়া ছোলা থেকে কতটুকু পুষ্টিগুণ পাওয়া যাবে তা নির্ভর করে সেটি কীভাবে রান্না বা পরিবেশন করা হচ্ছে তার ওপর। ছোলায় তেল, মসলা দিয়ে যেভাবে রান্না করা হয়, সেটা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তাই ছোলা ভুনা করে পুষ্টিগুণ নষ্ট না করে বরং সিদ্ধ করে এর সঙ্গে টমেটো, শসা, চাটমসলা এবং অল্প অলিভ অয়েল বা সরিষার তেল দিয়ে মিশিয়ে খেতে পারেন। ছোলার সঙ্গে টকদই এবং বিভিন্ন সালাদ মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
উপকারিতা
ছোলায় রয়েছে ‘বিউটারেট’নামক ফ্যাটি অ্যাসিড। এই ‘ফ্যাটি অ্যাসিড’ মানুষের শরীরের রোগাক্রান্ত ও মৃতপ্রায় কোষ দমন করে, যাতে সুস্থ কোষগুলো সুরক্ষিত থাকে। এভাবেই ‘কলোরেক্টাল ক্যানসার’ দমন করে ছোলা। ছোলার বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান ক্যানসার ও টিউমারের বৃদ্ধি রোধ করে।
ছোলায় রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম। যা হাড়ের ঘনত্ব বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। বয়সকালে হাড়ের নমনীয়তা ধরে রাখতেও এই উপাদানগুলোর গুরুত্ব অনেক। আর্থ্রাইটিস এবং অস্টিওপোরোসিসের সমস্যা প্রতিরোধ করতে চাইলে নিয়মিত ভেজানো ছোলা খেতে হবে।
নারীদের মধ্যে অনেকেই রক্তস্বল্পতায় ভোগেন। কাঁচা ছোলার আয়রন লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন করে, এনিমিয়ার সমস্যা রোধ করে। তাই নিয়মিত ভেজানো ছোলা খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ে।
সিদ্ধ ছোলা সহজে হজম হয় এবং গ্যাস্ট্রিকের ঝুঁকি কমায়।
উচ্চ প্রোটিন-সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি মাংসপেশি গঠনে সাহায্য করে। ফাইবার থাকার কারণে হজমের সমস্যা কমায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। এটি শক্তি বৃদ্ধি করে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে।
কলি