
মশা কিংবা অন্যান্য পোকামাকড় থেকে বাঁচতে আমরা অনেক সময় ঘরে অ্যারোসল, কয়েলসহ নানা ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করি। এই কয়েল বা অ্যারোসল স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এতে ব্যবহৃত ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান আমাদের শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এগুলো ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে।
মশার কয়েলের প্রধান উপাদান হচ্ছে পাইরোফ্রয়েড। এর আসল সক্রিয় উপাদান হচ্ছে কীটনাশক ডিডিটি বা ক্লোরিনেটেড হাইড্রোকার্বন। কয়েলের ধোঁয়ায় ফরমালডিহাইড, হাইড্রোকার্বনসহ আরও কিছু উপাদান থাকে, যেগুলো আমাদের ফুসফুসের ক্ষতির কারণ হতে পারে। ঘরে কয়েল জ্বালিয়ে রাখলে ১৪০টি সিগারেটের ধোঁয়া উৎপন্ন করে যা হার্ট, ফুসফুস এবং শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত করতে থাকে। বিশেষ করে ছোট শিশুদের, হাঁপানি রোগীদের জন্য বেশ ক্ষতিকর। এছাড়া অ্যারোসল স্প্রেতে পাইরিথোয়েড নামের রাসায়নিক উপাদান থাকে, যা খুব বেশি ক্ষতিকর না হলেও হাঁপানি, ব্রংকাইটিস রোগীদের শ্বাসকষ্ট বাড়াতে পারে। কখনো কখনো চোখ জ্বালা করতে পারে, মাথা ব্যথারও কারণ হতে পারে। আবার কারও অ্যালার্জির সমস্যা হয়।
কয়েলের ধোঁয়ায় থাকা রাসায়নিক পদার্থ দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। অ্যারোসলের বিষাক্ত কণা স্নায়ুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা স্নায়বিক ব্যাধি সৃষ্টি করতে পারে।
সতর্কতা
ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে স্প্রে করুন এবং ঘর থেকে বেরিয়ে যান। স্প্রে করার সময় এবং পরপরই ঘরে শিশুদের থাকতে দেবেন না। অন্তত দু-এক ঘণ্টা পর ঘরে প্রবেশ করুন এবং ফ্যানের হাওয়ায় ভাসমান কণাগুলোকে বেরিয়ে যেতে দিন।
লেবেলবিহীন কিংবা অখ্যাত কোম্পানির তৈরি মশা মারার ওষুধ ব্যবহার করবেন না। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন আছে, শুধু এমন পণ্যই ব্যবহার করুন। প্যাকেটের গায়ে লেখা ব্যবহারবিধি আগে ভালোভাবে পড়ে নিন।
ঘরে অ্যারোসল স্প্রে করা অবস্থায় কিংবা কয়েল জ্বালানো অবস্থায় কিছু খাবেন না। অ্যারোসল বা কয়েল ব্যবহারের সময় খাবার ঢেকে রাখুন।
টেবিলের ওপরের অংশ, বিছানা, চেয়ার এগুলোর ওপর কীটনাশক ছিটাবেন না বা স্প্রে করবেন না।
প্রাকৃতিকভাবে মশা দূর করার কিছু উপায়
কর্পূরের গন্ধে মশা দূর হয়। তাই ৫০ গ্রাম কর্পূরের ট্যাবলেট পানিতে মিশিয়ে ঘরে রেখে দিন, মশা কমে যাবে।
মাঝ বরাবর কেটে ভেতরের অংশে বেশ কয়েকটি লবঙ্গ গেঁথে দিন। এরপর লেবু জানালার গ্রিলে ও ঘরের কোণায় রাখুন। ঘরে মশা তাড়াতে প্রাকৃতিকভাবে এটি বেশকার্যকর।
ঘরের ভেতরে টব থাকলে সেখানে থাই লেমন গ্রাস রাখতে পারেন। থাই লেমন গ্রাসে যে সাইট্রোনেলা অয়েল আছে, এর স্ট্রং স্মেলের কারণে মশা ঘর থেকে বের হয়ে যায়। কিচেনে, ডাইনিং টেবিলের সাইডে থাই লেমন গ্রাস রাখলে মশার উৎপাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
/ কলি