
জিঙ্ক অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খনিজ, যা আমরা খাদ্য এবং খাদ্যে বরাদ্দ সম্পূরক থেকে সংগ্রহ করি। প্রোটিন ও ডিএনএ সংশ্লেষণ, গর্ভাবস্থা ও শৈশবকালীন বৃদ্ধি ও বিকাশ, উপযুক্ত স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি, ক্ষতের নিরাময় এবং রোগপ্রতিরোধের মতো একাধিক শারীরিক ক্রিয়াকলাপে জিঙ্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী উপাদান। নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে জিঙ্ক শরীরে গ্রহণ করা প্রয়োজন। কারণ মানুষের দেহে এর কোনো সঞ্চয় ব্যবস্থা নেই। শরীরে জিঙ্ক গ্রহণ ও জিঙ্কের উপস্থিতি কমে যাওয়ার সমস্যাকে জিঙ্কের অভাব বলে।
লক্ষণ ও উপসর্গ
জিঙ্কের অভাবজনিত সব থেকে পরিচিত উপসর্গ হলো খিদে কমে যাওয়া। এ ছাড়া বিলম্বিত বৃদ্ধি ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া অন্যতম। এ সমস্যার বিরল ও গুরুতর উপসর্গগুলো হলো ডায়রিয়া, চুল পড়া, যৌন অক্ষমতা, বিলম্বিত বয়ঃসন্ধি, ত্বক ও চোখের ক্ষত ও পুরুষদের মধ্যে হাইপোগোনাডিজম। পাশাপাশি ক্ষত সারতে বেশি সময় লাগা, ওজন হ্রাস, লেথার্জি বা অতিরিক্ত আলস্য, স্বাদের অনুভূতি কমে যাওয়া প্রভৃতি উপসর্গও জিঙ্কের অভাবে ঘটতে পারে।
কারণ
পর্যাপ্ত পরিমাণে জিঙ্ক গ্রহণ না করলে স্বাভাবিকভাবে শরীরে জিঙ্কের অভাব দেখা দেয়। এ ছাড়া ত্রুটিপূর্ণ শোষণ, শরীরে জিঙ্কের চাহিদা বৃদ্ধি এবং শরীর থেকে অতিরিক্ত জিঙ্ক বেরিয়ে গেলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। অপর্যাপ্ত খাদ্যগ্রহণ, মদ্যপান, পৌষ্টিকতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ যা খাদ্য থেকে জিঙ্কের শোষণের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। যেমন- ক্রোনস ডিজিজ, আলসারেটিভ কোলাইটিস, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম, ট্রপিক্যাল স্প্রু ইত্যাদি বিষয় জিঙ্কের অভাবের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া গর্ভাবস্থা ও দুগ্ধক্ষরণের সময় শরীরে জিঙ্কের চাহিদা বেড়ে যায়।
রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা
রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তে উপস্থিত জিঙ্কের মাত্রা দেখে শরীরে জিঙ্কের গুরুতর অভাব নির্ণয় করা হয়। জিঙ্কের অভাবের মূল চিকিৎসা হলো কমে যাওয়া জিঙ্কের সরবরাহ করা। সমস্যাটির অন্তর্নিহিত কারণের ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন ডোজের জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হয়। জিঙ্কের অভাবের ফলে ত্বকে সৃষ্ট ক্ষতগুলোর চিকিৎসায় ময়েশ্চারাইজার এবং টপিক্যাল স্টেরয়েড ব্যবহার করা যায় না। এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণের একটি কার্যকর উপায় হলো জিঙ্কযুক্ত খাদ্য বেশি খাওয়া।
জিংকসমৃদ্ধ খাবার
প্রাণিজ খাবারের মধ্যে জিংকের সর্বোত্তম উৎস মাংস। ১০০ গ্রাম খাসির মাংসে ৪.৮ মিলিগ্রাম জিংক থাকে। মুরগির মাংসও জিংকসামগ্রী সমৃদ্ধ। ৮৫ গ্রাম মুরগিতে ২.৪ মিলিগ্রাম জিংক থাকে। কাজু জনপ্রিয় এবং সাশ্রয়ী বাদাম। ২৮ গ্রাম কাজুতে ১.৬ মিলিগ্রাম জিংক থাকে। বেশি ক্যালরি যুক্ত খাবার না খেয়ে আপনি যদি আপনার ডায়েটে জিঙ্ক যুক্ত করতে চান, তবে মাশরুম খান। কুমড়োর বীজে জিংকসহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকে। ২৮ গ্রাম কুমড়োর বীজে ২.২ মিলিগ্রাম জিংক থাকে।
কলি