
ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা রাখতে হলে খাদ্যতালিকায় সচেতনতা জরুরি। সঠিক খাবার বেছে নিলে রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব।
ইফতারে যা খাবেন
ইফতারের পর হঠাৎ রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া এড়ানোর জন্য ধীরে হজম হয় এমন খাবার খাওয়া উচিত।
১. খাবার ও পানীয়
▶ খেজুর (১-২টি, বেশি নয়): খেজুরে প্রাকৃতিক চিনি থাকলেও ফাইবার রয়েছে, যা ধীরে শর্করা শোষণ করতে সাহায্য করে।
▶ পানি, ডাবের পানি, লেবু পানি (চিনি ছাড়া): তরল খাবার শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে।
▶ টক দই বা লো-ফ্যাট দই: এসব দই হজমে সহায়ক ও উপকারী ব্যাকটেরিয়া সরবরাহ করে।

২. স্বাস্থ্যকর খাবার
▶ শাকসবজি (শসা, গাজর, লেটুস, টমেটো, ব্রকলি): এসব খাবার ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
▶ প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার (গ্রিলড মাংস, মাছ, ডাল, ছোলা, বাদাম): এসব খাবার রক্তে শর্করার ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে।
▶ কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট (লাল আটা রুটি, ওটস, ব্রাউন রাইস): এসব খাবার ধীরে হজম হয় এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি দেয়।
▶ বাদাম (কাঠবাদাম, আখরোট, চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্স সিড): এসব খাবার স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও প্রোটিন দেয়।
ইফতারে যা খাবেন না
▶ অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার (জিলাপি, রসগোল্লা, হালুয়া, মিষ্টি শরবত): মিষ্টি জাতীয় খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়।
▶ ভাজাপোড়া (সমুচা, বেগুনি, পিয়াজু, চপ): এসব খাবার উচ্চ ক্যালরি ও অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট রক্তে শর্করার ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
▶ সফট ড্রিংকস (কার্বোনেটেড ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংকস): এসব পানীয় দ্রুত শর্করা বৃদ্ধি করে এবং ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করে।
▶ অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার (আচার, চিপস, ফাস্ট ফুড): এসব লবণজাতীয় খাবার রক্তচাপ বাড়াতে পারে।
▶ ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় (চা, কফি): এসব খাবার বেশি খেলে পানিশূন্যতা তৈরি হয়।

সাহরিতে যা খাবেন
▶ সাহরিতে এমন খাবার খাওয়া উচিত যা ধীরে হজম হয় এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি ধরে রাখে। যেমন-
▶ কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট (লাল আটার রুটি, ওটস, ব্রাউন রাইস, ডালিয়া): এসব খাবার ধীরে হজম হয়, দীর্ঘক্ষণ শক্তি দেয়।
▶ প্রোটিন (সেদ্ধ ডিম, মাছ, চিকেন, বাদাম, দই, ছোলা): এসব খাবার ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় ও ক্ষুধা কমায়।
▶ শাকসবজি ও সালাদ: এসব খাবার ফাইবার সমৃদ্ধ, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
▶ পানি ও লো-ফ্যাট দুধ: এসব খাবার পানিশূন্যতা রোধ করে।
সাহরিতে যা খাবেন না
▶ চিনিযুক্ত খাবার, সফট ড্রিংকস, ভাজাপোড়া ও ফাস্ট ফুড।
▶ সাদা ভাত ও ময়দার রুটি বেশি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যেতে পারে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
▶ পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত ৮-১০ গ্লাস হলে ভালো।
▶ অল্প পরিমাণে বারবার খান। ইফতারে বেশি না খেয়ে ধাপে ধাপে খান।
▶ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। রোজা রাখার আগে ব্লাড সুগার পরীক্ষা করে নিন।
▶ হালকা ব্যায়াম করুন। বিশেষ করে ইফতারের পর হাঁটাহাঁটি করতে পারেন।
▶ নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পর্যবেক্ষণ করুন। বেশি কমে গেলে বা বেড়ে গেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন।
সূত্র: হেলথ লাইন