-1740989871.jpg)
খেজুর একটি জনপ্রিয় ও পুষ্টিকর ফল, যা খেজুর গাছ (Phoenix dactylifera) থেকে পাওয়া যায়। এটি মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার কিছু অঞ্চলে ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়। খেজুর মিষ্টি স্বাদের এবং উচ্চ শক্তিযুক্ত ফল হিসেবে পরিচিত। এটি প্রাকৃতিক চিনির উৎস এবং ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেল (যেমন পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম) সমৃদ্ধ।
খেজুর শুকনো বা তাজা উভয়ভাবেই খাওয়া যায়। এটি সরাসরি খাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন খাবারে ব্যবহার করা হয়, যেমন- ডেজার্ট, স্মুদি বা সালাদে। রোজার সময় ইফতারে খেজুর খাওয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, কারণ এটি দ্রুত শক্তি দেয়। এখানে খেজুর খাওয়ার ১২টি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-
১. শক্তি বৃদ্ধি করে
খেজুরে প্রাকৃতিক চিনি (গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ) থাকায় এটি দ্রুত শক্তি জোগায় এবং ক্লান্তি দূর করে।
২. হজমশক্তি বাড়ায়
খেজুরে থাকা উচ্চমাত্রার ডায়েটারি ফাইবার হজমে সহায়তা করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং অন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে।
.jpg)
৩. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
এতে থাকা পটাসিয়াম ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
৪. রক্তশূন্যতা দূর করে
খেজুর আয়রনে সমৃদ্ধ, যা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৫. হাড় মজবুত করে
ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম থাকার কারণে খেজুর হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে এবং অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে।
.jpg)
৬. মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে
খেজুরের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স নিউরনের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, যা স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধি করে।
৭. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
যদিও এতে প্রাকৃতিক চিনি রয়েছে, তবে এটি কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত হওয়ায় পরিমিত খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও উপকারী।
৮. ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে
খেজুরের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি ত্বককে উজ্জ্বল ও বলিরেখা মুক্ত রাখতে সহায়তা করে।
.jpg)
৯. ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে
খেজুরে থাকা ভিটামিন সি, ডি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক।
১০. ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
▶ ওজন বাড়াতে চাইলে— খেজুরের ক্যালোরি ও প্রাকৃতিক চিনি ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক।
▶ ওজন কমাতে চাইলে— ফাইবার থাকায় এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে, ক্ষুধা কমায় এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায়।
১১. অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য উপকারী
গর্ভকালীন ও প্রসবের সময় শক্তি জোগায়, জরায়ুর সংকোচন বাড়িয়ে স্বাভাবিক প্রসবে সহায়তা করে।
১২. চোখের জন্য ভালো
ভিটামিন এ ও ক্যারোটিনয়েড থাকার ফলে খেজুর দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে এবং রাতকানা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
.jpg)
দিনে কতটি খেজুর খাবেন
প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার পরিমাণ নির্ভর করে বয়স, শারীরিক অবস্থা ও জীবনধারার ওপর। সাধারণত, ২-৪টি খেজুর খাওয়া বেশির ভাগ মানুষের জন্য উপকারী। তবে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে এই সংখ্যা পরিবর্তিত হতে পারে—
▶ সাধারণ সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য: ৩-৫টি খেজুর খাওয়া ভালো।
▶ শক্তি বৃদ্ধি ও ওজন বাড়ানোর জন্য: ৫-৭টি খেজুর খাওয়া যেতে পারে।
▶ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য: ২-৩টি খেজুর খাওয়া নিরাপদ, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
▶ অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য: ৪-৬টি খেজুর শরীরে আয়রন ও শক্তির ঘাটতি পূরণে সহায়ক।
▶ ওজন কমানোর জন্য: ২-৩টি খেজুর খেলে মিষ্টির ক্ষুধা মেটে, কিন্তু ক্যালরি অতিরিক্ত হয় না।
খেজুর উচ্চ ক্যালরিযুক্ত হওয়ায় অতিরিক্ত খেলে ওজন বৃদ্ধি বা রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে, তাই পরিমিত পরিমাণেই খাওয়া উত্তম।