
ঘাম হওয়া একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া। ঘামের মাধ্যমে আমাদের শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় ও বর্জ্য পদার্থ বের হয়। ঘামের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা হয়। অতিরিক্ত ঘাম হলে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যায়। তাপমাত্রা কমে যায়। এমনকি মানুষ শকে চলে যেতে পারে। যেমন Heatstroke হয়। ঘাম পুরো শরীরে হতে পারে, আবার নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় বেশি হতে পারে। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় অস্বাভাবিক ঘাম হলে উদ্বিগ্ন হওয়ারই কথা।
ঘাম কী
ঘাম হলো আমাদের ঘর্মগ্রন্থি (Sweatgland) থেকে নিঃসৃত এক ধরনের তরল পদার্থ।
অতিরিক্ত ঘামের কারণ কী?
সাধারণ কারণ
অতিরিক্ত গরম বা তাপমাত্রা আর্দ্রতা।
ব্যায়াম করা- শারীরিক পরিশ্রম করা।
গরম খাদ্য- ঝাল ও মসলাযুক্ত খাদ্য খাওয়া।
অতিরিক্ত চা ও কফি পান করা।
টেনশন বা ভয়ে ঘাম হওয়া।
জ্বরের ও ব্যথার ওষুধ খাওয়ার পর ঘাম হওয়া ইত্যাদি।
বিশেষ কারণ
ডায়াবেটিস কমে বা বেড়ে গেলে।
রোগী শকে গেলে
প্রেশার কমে গেলে, হার্টঅ্যাটাক হলে।
অন্তঃসত্ত্বার রক্তশূন্যতা ও মাসিক বন্ধ হওয়ার পর।
Sympathetic Nervous System-এর কিছু রোগ।
কিছু ওষুধের কারণে।
কিছু রোগ যেমন Pheochromocytoma, Lymphoma, Carcinoid Syndrome ইত্যাদি।
হাত-পা বেশি ঘামা
অনেকের হাতের তালু, পায়ের তলা ও বগলে ঘাম বেশি হয়। এটা সারা বছরেই হতে পারে, আবার মাঝে মধ্যে হতে পারে। ঘাম বেশি হওয়ার কারণে দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হয়। অনেকে সব সময় টিস্যু বা রুমাল ব্যবহার করেন। বেশি ঘামার কারণে আক্রমণ স্থান ঠাণ্ডা, চামড়া স্যাঁতসেঁতে এবং অনেক সময় দুর্গন্ধযুক্ত হয়।
হাত-পা ঘামার কারণ কী?
প্রকৃত কারণ এখনো অজানা। তবে বংশগতভাবে (Autosomal Dominant) হতে পারে। অতিরিক্ত টেনশন, মানসিক চাপ ও ভয় বেড়ে যেতে পারে। এসব লোকের Sympathetic Over Activity হয়। ফলে অল্পতেই নার্ভাস হন ও দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। বড় হওয়ার পর কারও কারও কমে যায়। ঘুমের সময় সাধারণত হাত-পা ঘামে না।
চিকিৎসা
পুরো শরীরে বেশি ঘাম হলে তার কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা দিতে হবে।
টেনশন ও দুশ্চিন্তামুক্ত থাকুন। চর্মরোগ ছাড়া অস্বাভাবিক ঘাম হলে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
লেখক: চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ, সিনিয়র কনসালট্যান্ট, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর, ঢাকা