ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

ডাক্তার দেখানোর সময় যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে

প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ০৪:৪০ পিএম
আপডেট: ১১ মে ২০২৫, ০৪:৫০ পিএম
ডাক্তার দেখানোর সময় যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে
ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার আগে কিছু প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। ছবি এআই

ডাক্তারের সঙ্গে অসুস্থতা নিয়ে আলোচনা করার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ, সঠিক তথ্য আদান-প্রদান এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া চিকিৎসার গুণগত মান ও কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। 

১. প্রস্তুতি নিয়ে যান
ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার আগে কিছু প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। রোগের উপসর্গ, কখন থেকে শুরু হয়েছে, কীভাবে পরিবর্তন হচ্ছে, আগের চিকিৎসা, ব্যবহৃত ওষুধ—এসব তথ্য গুছিয়ে নিয়ে যাওয়া উত্তম। একটি নোটবুক বা মোবাইল নোটে পয়েন্ট আকারে বিষয়গুলো লিখে নিতে পারেন। এতে কথা বলার সময় ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
প্রস্তুতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে—
• মূল উপসর্গ ও তার সময়কাল
• ব্যথা বা অস্বস্তির ধরণ (তীব্র, মৃদু, নিয়মিত, অনিয়মিত)
• পূর্ববর্তী চিকিৎসার ফলাফল
• পূর্বে ব্যবহৃত ওষুধের নাম ও ডোজ
• পারিবারিক রোগের ইতিহাস

 

ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার সময় অনেকেই ভয়ে, সংকোচে বা অজ্ঞতার কারণে প্রশ্ন করতে পারেন না। ছবি এআই

 

২. উপসর্গগুলো স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করুন
অনেক সময় রোগীরা অস্পষ্টভাবে ব্যথা বা সমস্যার কথা বলেন, যা ডাক্তারের সঠিক রোগ নির্ণয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই ব্যথা কোথায়, কেমন (ধরুন, জ্বালা করা, চাপা দেওয়া, সূচ ফোটানোর মতো), কখন হয়, কতক্ষণ স্থায়ী হয়—এসব বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা জরুরি।
উদাহরণ—
• ভুল: আমি শরীরে খারাপ বোধ করছি।
• সঠিক: গত এক সপ্তাহ ধরে রাতে জ্বর আসে, সঙ্গে মাথা ব্যথা থাকে এবং গলা শুকিয়ে যায়।

 

৩. প্রশ্ন করতে ভয় পাবেন না
ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার সময় অনেকেই ভয়ে, সংকোচে বা অজ্ঞতার কারণে প্রশ্ন করতে পারেন না। মনে রাখতে হবে, আপনার সুস্থতার জন্য আপনার পক্ষ থেকে তথ্য ও প্রশ্ন তুলে ধরা অত্যন্ত জরুরি। যদি চিকিৎসকের কোনো কথা বা পরামর্শ বোঝা কঠিন হয়, অনুগ্রহ করে সেটি পরিষ্কারভাবে জানতে চান।
জিজ্ঞাসা করতে পারেন—
• এই রোগের প্রকৃতি কী?
• এই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী হতে পারে?
• আর কোনো পরীক্ষা করা দরকার কি না?
• জরুরি অবস্থা হলে কী করব?

 

ডাক্তারের কাছে তথ্য গোপন না করাই ভালো। ছবি এআই

 

৪. খোলামেলা ও সৎ থাকুন
ডাক্তারের কাছে সব তথ্য গোপন না করাই ভালো। ব্যক্তিগত বিষয় মনে করে কিছু তথ্য লুকিয়ে রাখলে তা চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন: ধূমপান, মদ্যপান, যৌন আচরণ, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ইত্যাদি। এগুলো চিকিৎসকের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করা উচিত। কারণ এসবই আপনার রোগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হতে পারে।

 

৫. ব্যবহৃত সব ওষুধের তালিকা দিন
অনেক সময় রোগীরা একাধিক ডাক্তারের পরামর্শে বা নিজের ইচ্ছায় বিভিন্ন ওষুধ খান। ডাক্তারকে এ বিষয়ে জানালে তিনি বুঝতে পারবেন কোনো ওষুধ একে অপরের সঙ্গে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে কি না। যদি সম্ভব হয়, ওষুধের প্যাকেট বা প্রেসক্রিপশন সঙ্গে নিয়ে যান।

 

৬. চিকিৎসকের পরামর্শ নোট করে নিন
অনেক সময় ডাক্তারের পরামর্শ শোনার পর ভুলে যাওয়া স্বাভাবিক। তাই কথা বলার সময় মোবাইলে রেকর্ডিং নেওয়া (যদি অনুমতি দেন) বা মূল পরামর্শগুলো লিখে নেওয়া উত্তম। এতে করে বাড়ি গিয়ে সঠিকভাবে চিকিৎসা গ্রহণে সহায়ক হবে।

 

ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার সময় রোগীর দায়িত্ব সঠিক তথ্য দেওয়া। ছবি এআই

 

৭. অনুসরণ করতে হবে ফলো-আপের সময়সূচি
প্রথমবার দেখা করার পর হয়তো কিছু পরীক্ষা বা ওষুধের প্রভাব পর্যবেক্ষণের জন্য ডাক্তার আপনাকে আবার দেখতে চাইবেন। এই ফলো-আপ না করলে চিকিৎসার ধারাবাহিকতা ভেঙে যেতে পারে। তাই ডাক্তারের দেওয়া সময় অনুযায়ী পরবর্তী দেখা করা গুরুত্বপূর্ণ।

 

৮. একজন সঙ্গীকে সঙ্গে রাখা যেতে পারে
যদি আপনি মানসিকভাবে দুর্বল বা অনেক কিছু মনে রাখতে অসুবিধা হয়, তাহলে পরিবারের একজন সদস্য বা বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। তারা আপনার পক্ষ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে বা পরামর্শ মনে রাখতে সাহায্য করতে পারেন।

 

৯. ভাষা ও ব্যবহারে ভদ্রতা বজায় রাখুন
চিকিৎসকের প্রতি সম্মান দেখানো ও ধৈর্য ধরে কথা বলা প্রয়োজন। কখনো চিকিৎসক ব্যস্ত থাকলে বা একটু সময় নিয়ে কথা বললে বিরক্ত না হয়ে শান্ত থাকাই উত্তম। আপনার কথা যেন স্পষ্ট ও বিনীত হয়।

 

চিকিৎসকের প্রতি সম্মান দেখানো ও ধৈর্য ধরে কথা বলা প্রয়োজন। ছবি এআই

 

১০. দ্বিতীয় মতামত নিতে দ্বিধা করবেন না
কোনো জটিল রোগ বা দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় যদি চিকিৎসায় সন্তুষ্ট না থাকেন, তাহলে দ্বিতীয় মতামত নেওয়া অযৌক্তিক নয়। তবে তা বিনয়ের সঙ্গে এবং চিকিৎসকের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে করতে হবে।

 

সবশেষ 
ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার সময় রোগী হিসেবে আপনার দায়িত্ব শুধু অসুস্থতা জানানো নয়, বরং রোগ সম্পর্কে সচেতনতা, সঠিক তথ্য দেওয়া, পরামর্শ বোঝা এবং তা মেনে চলার প্রতিও সচেতন থাকা উচিত। চিকিৎসকের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও কার্যকর যোগাযোগই একটি সফল চিকিৎসা প্রক্রিয়ার মূল চাবিকাঠি। একটু সচেতন হলেই আপনি পেতে পারেন সঠিক ও সময়োচিত চিকিৎসা, যা আপনাকে দ্রুত সুস্থতার পথে নিয়ে যাবে।

হাঁটার আগে-পরে যে নিয়ম মেনে চলবেন

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫, ০১:৪২ পিএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৪ পিএম
হাঁটার আগে-পরে যে নিয়ম মেনে চলবেন
জগিং শরীর সুস্থ ও ফিট রাখার জন্য একটি দারুণ কার্যকর ব্যায়াম। ছবি এআই

জগিং শরীর সুস্থ ও ফিট রাখার জন্য একটি দারুণ কার্যকর ব্যায়াম। তবে ভালো ফল পেতে ও ইনজুরি এড়াতে জগিংয়ের আগে ও পরে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। নিচে সেগুলো তুলে ধরা হলো।

 

জগিং করার আগের নিয়মগুলো

◉ ওয়ার্ম-আপ (Warm-up): ৫–১০ মিনিট হালকা হাঁটা, জাম্পিং জ্যাক, বা শরীর ঝাঁকানো টাইপের ব্যায়াম করুন। এতে পেশি উষ্ণ হয়, রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, ইনজুরির ঝুঁকি কমে।

◉ স্ট্রেচিং (Dynamic Stretching): হ্যামস্ট্রিং, কাফ মাসল, হিপ ফ্লেক্সর ইত্যাদি পেশিতে ডাইনামিক স্ট্রেচ করুন। উদাহরণ: লেগ সুইং, হাঁটু উঁচু করে হাঁটা, আর্ম সার্কেল ইত্যাদি।

◉ পানি পান করুন: শরীর হাইড্রেটেড রাখার জন্য জগিংয়ের ১৫–৩০ মিনিট আগে পানি পান করুন।

◉ সঠিক পোশাক ও জুতা পরুন: আরামদায়ক, শ্বাস নিতে পারে এমন পোশাক এবং পায়ের জন্য সঠিক গ্রিপ ও কুশনযুক্ত জুতা ব্যবহার করুন।

◉ হালকা খাওয়া: খালি পেটে জগিং না করে হালকা কিছু (যেমন কলা, টোস্ট বা ওটস) খাওয়া যেতে পারে।

 

খালি পেটে জগিং না করে হালকা কিছু খাওয়া যেতে পারে। ছবি এআই

 

জগিং করার পরের নিয়মগুলো

◉ কুল-ডাউন (Cool-down): হঠাৎ থেমে না গিয়ে ৫–১০ মিনিট ধীরে হাঁটুন যাতে হার্টবিট ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়।

◉ স্ট্যাটিক স্ট্রেচিং (Static Stretching): জগিংয়ের পরে পেশি রিল্যাক্স করার জন্য স্ট্যাটিক স্ট্রেচ করুন। উদাহরণ: পায়ের পেশি টেনে ধরা, পিঠ বাঁকানো, হাত ও ঘাড় টেনে ধরা ইত্যাদি।

◉ পানি ও ইলেকট্রোলাইট গ্রহণ করুন: ঘাম ঝরার ফলে শরীর থেকে তরল বেরিয়ে যায়, তাই পানি বা ইলেকট্রোলাইট ড্রিঙ্ক খাওয়া উচিত।

দীর্ঘ সময় ধরে জগিং করার পর বিশ্রাম নিন। ছবি এআই

 

◉ প্রোটিন যুক্ত খাবার খান: মাংসপেশির পুনর্গঠনের জন্য জগিংয়ের পর প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খান। যেমন—ডিম, দই, স্যান্ডউইচ, ফল।

◉ বিশ্রাম নিন: শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ না দিয়ে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে, বিশেষ করে যদি দীর্ঘ সময় ধরে জগিং করা হয়।

গরমে যদি ডায়রিয়া হয়

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৫, ০২:৫৫ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৫, ০৩:০৩ পিএম
গরমে যদি ডায়রিয়া হয়
ছবি এআই

এই গরমে ডায়রিয়া হলে দ্রুত ও সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া খুব জরুরি। কারণ ডায়রিয়া হলে শরীরে পানি ও লবণের ঘাটতি (ডিহাইড্রেশন) হয়ে যেতে পারে, যা শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য বিপজ্জনক। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ দেওয়া হলো—

• স্যালাইন (ORS) খাওয়ান
ডায়রিয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুখে খাওয়ার স্যালাইন (ওরস) খাওয়ানো শুরু করুন। প্রতিবার পায়খানার পর অন্তত এক গ্লাস ওরস খাওয়ানো উচিত। শিশুকে বুকের দুধ দেওয়া হলে তা চালিয়ে যেতে হবে।

• পানি ও তরল খাবার বেশি খাওয়ান
পরিমাণ মতো ফুটানো পানি, ডাবের পানি, স্যুপ, চালের মাড় ইত্যাদি দিন। পানিশূন্যতা ঠেকাতে দিনে অনেকবার অল্প অল্প করে তরল খেতে দিন।

• পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন
খাবার খাওয়ার আগে-পরে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে। নিরাপদ পানি ও রান্না করা খাবার খেতে হবে। টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

• পাশাপাশি...
খাবার বন্ধ না করে হালকা খাবার চালিয়ে যান। ডায়রিয়া হলে খাওয়া বন্ধ করা যাবে না। নরম ভাত, খিচুড়ি, সেদ্ধ আলু, কলা ইত্যাদি খেতে দিন।

• প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
যদি ডায়রিয়া ২ দিনেও না কমে, পায়খানার সঙ্গে রক্ত বা অতিরিক্ত পানি আসে, জ্বর, বমি, খিঁচুনি বা অজ্ঞান হওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

• বিশেষ সতর্কতা
শিশুরা ও বৃদ্ধরা দ্রুত পানিশূন্যতায় ভুগতে পারে, তাই তাদের প্রতি বেশি নজর দিন। অ্যান্টিবায়োটিক ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া ঠিক নয়।

যে কারণে কাঁচা খাবার খাওয়া যাবে না

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৫, ১০:০০ এএম
যে কারণে কাঁচা খাবার খাওয়া যাবে না
সব ধরনের কাঁচা খাবারই স্বাস্থ্যকর নয়। ছবি এআই

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গঠনের ক্ষেত্রে অনেকেই কাঁচা খাবার খাওয়াকে উপকারী মনে করেন। কারণ, কাঁচা ফল, শাকসবজি ও অন্যান্য খাবারে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান স্বাভাবিকভাবে সংরক্ষিত থাকে। তবে সব ধরনের কাঁচা খাবারই স্বাস্থ্যকর নয়। আসুন দেখে নেই, কেন কাঁচা খাবার খাওয়া নিরাপদ নয়।

❏ ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সংক্রমণ
কাঁচা মাংস, মাছ, ডিম ও দুধে সালমোনেলা, ই-কোলাই, লিস্টেরিয়া, ও ক্যাম্পিলোব্যাক্টারের মতো ক্ষতিকর জীবাণু থাকতে পারে। এগুলো খাদ্যে বিষক্রিয়া, জ্বর, ডায়রিয়া, পেটব্যথা ও বমি সৃষ্টি করতে পারে।

❏ পরজীবী আক্রমণ
কাঁচা বা আধসেদ্ধ মাছ ও মাংসে পরজীবী যেমন টেপওয়ার্ম, রাউন্ডওয়ার্ম বা ফ্লুক থাকতে পারে। এসব পরজীবী শরীরে প্রবেশ করে হজমপ্রক্রিয়া নষ্ট করে, পুষ্টিহীনতা ও বিভিন্ন রোগ তৈরি করতে পারে।

❏ হজমের সমস্যা
কিছু কাঁচা সবজিতে প্রাকৃতিক এনজাইম ইনহিবিটর বা অ্যান্টিনিউট্রিয়েন্ট থাকে, যা হজম ব্যাহত করে। যেমন, কাঁচা ব্রকোলি বা বাঁধাকপিতে গ্যাস ও অস্বস্তি হতে পারে।

❏ অ্যান্টিনিউট্রিয়েন্টসের উপস্থিতি
কিছু কাঁচা খাবারে ফাইটিক অ্যাসিড, অক্সালেট বা লেকটিন নামক অ্যান্টিনিউট্রিয়েন্ট থাকে, যা ক্যালসিয়াম, আয়রন ও জিঙ্কের মতো খনিজ উপাদানের শোষণ বাধাগ্রস্ত করে।

❏ ফুড পয়জনিংয়ের ঝুঁকি
অনিয়মিতভাবে সংরক্ষিত বা ধোয়া ছাড়া খাওয়া কাঁচা খাবার ফুড পয়জনিংয়ের অন্যতম কারণ। বিশেষ করে রাস্তার খাবারে বা রেস্তোরাঁয় কাঁচা খাবার ঠিকভাবে ধোয়া না হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

❏ শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য বিপজ্জনক
শিশু, গর্ভবতী নারী ও রোগপ্রবণ ব্যক্তিদের জন্য কাঁচা খাবার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে লিস্টেরিয়া সংক্রমণ গর্ভপাত বা শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।

❏ বিষাক্ত পদার্থ গ্রহণের আশঙ্কা
কিছু কাঁচা খাবারে প্রাকৃতিকভাবে বিষাক্ত উপাদান থাকে। যেমন, কাঁচা মুসুর ডালে লেকটিন নামক উপাদান থাকে, যা হজমে সমস্যা তৈরি করে। আবার কাঁচা আলুতে সোলানিন নামক বিষাক্ত রাসায়নিক থাকতে পারে।

❏ ভিটামিন ও মিনারেল অপচয় নয়, তবে ভারসাম্য জরুরি
কাঁচা খাবারে কিছু ভিটামিন যেমন ভিটামিন C বা B কমপ্লেক্স অক্ষত থাকে, কিন্তু অতিরিক্ত কাঁচা খাবার খেলে বিপাকের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। তাই পরিমিত ও সঠিকভাবে প্রস্তুত কাঁচা খাবার খাওয়াই ভালো।

❏ অ্যালার্জির ঝুঁকি
কিছু মানুষ কাঁচা বাদাম, ফল বা শাকসবজির প্রতি সংবেদনশীল হয়। এসব খাবার কাঁচা অবস্থায় খেলে অ্যালার্জি, ত্বকে চুলকানি বা শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

❏ জটিল রোগের ঝুঁকি
দীর্ঘমেয়াদে অপরিষ্কার বা অস্বাস্থ্যকরভাবে খাওয়া কাঁচা খাবার লিভার বা কিডনি সমস্যা, পেটের আলসার বা দীর্ঘমেয়াদি পরজীবী সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।

হার্ট ভালো রাখার টিপস

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ০১:৫৫ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫, ০২:০৪ পিএম
হার্ট ভালো রাখার টিপস
হৃদরোগ একটি নীরব ঘাতক। ছবি এআই

হৃদরোগকে নীরব ঘাতক বলা হয়। তাই ত্রিশোর্ধ্ব প্রত্যেকের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। অনেক সময় উত্তরাধিকারসূত্রেও কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন। হৃদরোগ থেকে প্রতিকারের জন্য মানসিক চাপ কমাতে হবে এবং দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে।

অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস মানুষকে স্বাস্থ্যঝুঁকির দিকে ঠেলে দেয়। এতে হজমের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইমগুলো ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না, ফলে হজমে ব্যাঘাত ঘটে। যাদের হৃদরোগ রয়েছে, তারা জগিং করলে দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়েন এবং জয়েন্টে ব্যথা অনুভব করেন। এজন্য জগিংয়ের চেয়ে হাঁটা বেশি উপকারী।

হার্ট ভালো রাখতে যা করণীয়:
১. খাবার বিষয়ে সচেতন হতে হবে। শর্করা ও চর্বিজাতীয় খাবার কম খেতে হবে, আমিষের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
২. সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন আধা ঘণ্টা করে হাঁটতে হবে। লিফটে ওঠা এড়িয়ে সিঁড়ি ব্যবহার করতে হবে। দীর্ঘক্ষণ একটানা বসে থাকা যাবে না।
৩. ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। ওজন, রক্তচাপ ও রক্তে শর্করার (সুগার) মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৪. সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত হাঁটাহাঁটি এবং আখরোট খাওয়ার মাধ্যমে কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

হৃদরোগ প্রতিরোধে ফল ও সবজি অত্যন্ত উপকারী। অন্যদিকে, তৈলাক্ত খাবার হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সুগার ও কোলেস্টেরলের মাত্রা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। রক্তচাপ পরিমাপ করাও জরুরি।

হার্ট অ্যাটাক হলে করণীয়:
রোগীকে প্রথমে শুইয়ে দিতে হবে। এরপর জিহ্বার নিচে একটি অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট রাখতে হবে। সম্ভব হলে একটি সরবিট্রেট ট্যাবলেটও দিতে হবে। এরপর দ্রুত রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে, কারণ প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যেই হার্টের মাংসপেশির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়।

লেখক: অ্যালোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০।

মৌমাছি কামড়ালে যা করবেন

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ০৪:১০ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৫, ০৪:১৫ পিএম
মৌমাছি কামড়ালে যা করবেন
মৌমাছির কামড় সবসময় ভয় পাওয়ার বিষয় নয়। ছবি এআই

গ্রীষ্ম কিংবা শরৎকালে গ্রামীণ বা পাহাড়ি এলাকায় ঘুরতে গেলে অনেক সময়ই মৌমাছির কামড়ের শিকার হতে হয়। সাধারণত এটি প্রাণঘাতী নয়, তবে কারও কারও ক্ষেত্রে তীব্র অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্টসহ গুরুতর প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি করতে পারে। তাই মৌমাছি কামড়ালে দ্রুত ও সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। আসুন দেখে নেই মৌমাছির কামড়ে কী করতে হবে—

শান্ত থাকুন

প্রথমত, আতঙ্কিত না হয়ে নিজেকে শান্ত রাখুন। ভয় পেলে বা বেশি নড়াচড়া করলে মৌমাছির বিষ দ্রুত শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

 

হুল থাকলে তা সরিয়ে ফেলুন

মৌমাছি কামড়ালে তাদের হুল চামড়ায় রয়ে যায়। হুল যত দ্রুত সম্ভব সরিয়ে ফেলতে হবে। তবে খেয়াল রাখবেন—নখ বা চিমটি দিয়ে হুল টানবেন না। এতে বিষ আরও গভীরে চলে যেতে পারে। বরং একটি প্লাস্টিক কার্ড বা পাতলা কিছু দিয়ে হুলটিকে চামড়ার উপর দিয়ে কেটে তুলে দিন।

 

বেশি নড়াচড়া করলে মৌমাছির বিষ শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ছবি এআই

 

ত্বক পরিষ্কার করুন

হুল সরানোর পর আক্রান্ত জায়গাটি পরিষ্কার পানি ও হালকা সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যাবে।

 

ঠান্ডা সেঁক দিন

ব্যথা ও ফোলাভাব কমাতে আক্রান্ত স্থানে বরফ জড়ানো কাপড় বা ঠান্ডা পানিতে ভেজানো তোয়ালে ১০–১৫ মিনিট চেপে ধরুন। প্রয়োজনে দিনে কয়েকবার এটি করা যেতে পারে।

 

ব্যথা ও চুলকানি কমাতে ওষুধ ব্যবহার করুন

প্রয়োজনে ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল বা ইবুপ্রোফেন খাওয়া যেতে পারে (চিকিৎসকের পরামর্শে)। চুলকানি বা লালভাব কমাতে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ বা অ্যালার্জি প্রতিরোধক মলম ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

কামড়ের জায়গা খোঁচাবেন না

চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার কারণে অনেকেই কামড়ের জায়গা খুঁটতে থাকেন, যা একেবারেই অনুচিত। এতে সংক্রমণ হতে পারে এবং ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

 

মৌমাছি কামড়ালে দ্রুত ও সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। ছবি এআই

 

অ্যালার্জির লক্ষণ খেয়াল রাখুন

মৌমাছির বিষে অ্যালার্জি থাকলে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যেমন হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, চোখ, মুখ বা গলার ফোলা, হাইপার একটিভ হার্টবিট, বমি বা মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান বা নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান।

 

পূর্ব-অ্যালার্জি থাকলে সতর্ক থাকুন

আপনার আগে মৌমাছির কামড়ে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকলে সবসময় সঙ্গে ‘ইপিপেন’ (Epinephrine ইনজেকশন) রাখুন, বিশেষ করে পাহাড়ি বা ঝোপঝাড় এলাকায় গেলে।

 

প্রাকৃতিক প্রতিকার প্রয়োগ করতে পারেন

বাসায় প্রাথমিক প্রতিকার হিসেবে বেকিং সোডা ও পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে কামড়ের জায়গায় লাগানো যেতে পারে। অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে জ্বালাভাব কমে। মধু প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে।

 

কামড়ের পর অনেকক্ষণ ধরে ফোলাভাব না কমলে ডাক্তার দেখান। ছবি এআই

 

বাচ্চাদের বিশেষভাবে নজর দিন

শিশুরা নিজেদের অস্বস্তি প্রকাশে পারদর্শী নাও হতে পারে। তাই যদি বাচ্চা কোনো অজানা কারণে কান্নাকাটি বা অস্বস্তি করে, তাহলে কামড় খেয়েছে কি না লক্ষ্য করুন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা নিন।

 

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?

○ শ্বাসকষ্ট বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে।
○ হুল ঢোকার জায়গা লাল হয়ে পুঁজ বের হলে।
○ অনেকক্ষণ ধরে ফোলাভাব না কমলে।
○ শরীরে ছড়িয়ে পড়া চুলকানি বা র‌্যাশ দেখা দিলে।

 

মৌমাছির কামড় সবসময় ভয় পাওয়ার বিষয় নয়, তবে সচেতন না হলে ছোট একটি কামড়ও বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই এ বিষয়ে সাবধানতা ও সঠিক প্রাথমিক চিকিৎসা জানা থাকা একান্ত প্রয়োজন।